বড় পর্দার হাসিখুশি মানুষটির অপমৃত্যু
0
বার পঠিত comprar viagra natural en madridঅল্প কয়েকদিনের ব্যবধানে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির চারজন নামী মানুষ মারা গেলেন । ইরফান খান , ঋষি কাপুর , ওয়াজিদ খান আর আজ সুশান্ত সিং রাজপুত । আগের তিনজনকে নিয়ে কিছু লিখি নি , ইচ্ছে হয় নি কেন যেন । কিন্তু সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে একটুখানি লিখতে ইচ্ছে হলো ।
১৯৮৬ সালের ২১ জানুয়ারি ভারতের পাটনায় জন্মগ্রহণ করেন সুশান্ত । ২০০২ সালে মা মারা যাওয়ার পরে বিধ্বস্ত সুশান্ত পরিবারের সাথে দিল্লী চলে আসেন । পড়াশোনায় তুখোড় সুশান্ত ভর্তি পরীক্ষায় সপ্তম হয়ে দিল্লী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন । একইসাথে তিনি সেসময়ে ন্যাশনাল অলিম্পিয়াডে ফিজিক্সে গোল্ড মেডেল জিতে নেন । কিন্তু পড়াশোনার মাঝেই সুশান্ত থিয়েটার আর নাচের প্রতি ঝুঁকে পড়েন , ভর্তি হয়ে যান শামাক দাভারের নাচের ক্লাসে । সেখানকার কিছু ছেলেমেয়ের দেখাদেখি চলে যান ব্যারি জন’স ড্রামা ক্লাসেও । আস্তে আস্তে নাচ আর অভিনয়ের দিকে ঝুঁকে পড়তে পড়তে তৃতীয় বর্ষের মাথায়ই ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দেন । অভিনেতা হওয়ার নেশায় ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস , কমনওয়েলথ গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সার হিসেবেও অংশ নেন । অবশেষে ২০০৮ সালে বালাজি টেলিফিল্মসের কাস্টিং টিম তার থিয়েটারের পারফর্ম্যান্স দেখে স্টার প্লাসের কিস দেশ মে হে মেরা দিল সিরিজে ছোট্ট এক রোলে তাকে নিয়ে নেয় । সেই ছোট চরিত্রই টিভি জগতে মোটামুটি রকমের জনপ্রিয়তা লাভ করে । সেটির পরপরই তার অভিনয়জীবনের অন্যতম বড় ব্রেকথ্রু চলে আসে । ২০০৯ সালে কাজ শুরু করেন একতা কাপুরের পবিত্র রিশতা সিরিজের মূল চরিত্রে । সুশান্ত সিং তখনকার সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা বনে যান , জিতে নেন বেশ কিছু পুরস্কার । তার এবং অঙ্কিতা লোখান্ডের জুটি ব্যাপক প্রশংসা লাভ করে , দুজন হয়ে যান বাস্তব জুটিও । সাথে সাথেই নিজের নাচের প্রতিভাকে শানিত করতে অংশ নেন যারা নাচকে দিখা , ঝালাক দিখলাজার মতো জনপ্রিয় রিয়েলিটি শোতে ।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও সিনেমায় কাজ করাটাই বাকি ছিলো , সেটির জন্যেই তো এতকিছু করা । ২০১১ সালে টিভি ছেড়ে খুঁজতে থাকেন সিনেমায়ে কাজ করার সুযোগ । অবশেষে সুযোগ মিললো প্রায় তিনবছর পর । চেতন ভগতের ‘The Three Mistakes of My Life’ অবলম্বনে নির্মিতব্য কাই পো চে সিনেমার জন্য অডিশন দিয়ে লুফে নেন তিন মূল চরিত্রের একটি । তার অভিনয় এবং মিষ্টি হাসি মুগ্ধ করেছে বলিউডের দর্শক , সমালোচকদের । কিন্তু কোথায় যেন একটা অসঙ্গতি লেগেই ছিলো ।
ছয় বছরের ফিল্ম ক্যারিয়ারে দশটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সুশান্ত । সিনেমা হিট-ফ্লপ মিলিয়ে হলেও তার অভিনয় কখনই খারাপ কিংবা সমালোচিত হয় নি । কিন্তু বাকি নতুন অভিনেতাদের মতো স্বীকৃতি আসে নি কখনই । কাই পো চে সব মহলে প্রশংসিত হলেও বলিউডের বেশ কয়েকজন স্টার ক্যামেরার সামনে সিনেমাটিকে ‘ওভাররেটেড’ বলতে শুরু করেন । সেরা নবাগত অভিনেতা হিসেবে বেশকিছু মনোনয়ন পেলেও পুরস্কার জোটে মাত্র একটি । পরবর্তীতে শুদ্ধ দেসি রোম্যান্সের মূল চরিত্র , পিকের ছোট একটি অংশ ; সমালোচকদের প্রশংসা আসলেও বলিউডের লালিত নেপোটিজমের আড়ালে চাপা পড়ে যায় সুশান্ত সিং রাজপুতের জন্য কোন শুভকামনা । দিবাকর ব্যানার্জির ডিটেকটিভ ব্যোমকেশ বকশী বক্স অফিসে তেমন সাফল্য না পেলেও নাম ভূমিকায় সুশান্ত ছিলেন দুর্দান্ত , যেখানে খলনায়কের চরিত্রে ছিলেন নামী মঞ্চ অভিনেতা নিরাজ কবি । ২০১৬ সালে মুক্তি পায় সুশান্তের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিনেমা । ভারতের পক্ষে দ্বিতীয় ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনীর বায়োপিক ‘M.S. Dhoni: The Untold Story’তে ধোনী চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি । এই সিনেমার জন্য তার কঠের পরিশ্রম পর্দায় প্রতি মিনিটে ফুটে উঠেছে । শুধুমাত্র চেহারা বাদ দিলে ধোনীর সব গুণই আয়ত্তে এনেছিলেন তিনি । বক্স অফিস – সমালোচক ; দুই জায়গাতেই তার প্রমাণ মিললো । কিন্তু বছরশেষে পুরস্কার মিললো হাতেগোনা দুইটি । রাবতা , সোঞ্চিরিয়া বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়লো । সোঞ্চিরিয়া পজিটিভ রিভিউ পেলেও কম প্রমোশনের কারণে মানুষের কাছে পৌঁছালো না । কেদারনাথের সব লাইমলাইট গিয়ে পড়লো সাইফকন্যা নবাগত সারা আলী খানের ওপর । করণ জোহরের প্রযোজনার নেটফ্লিক্স সিনেমা ড্রাইভ বাজে গ্রাফিক্সের জন্য দুয়োধ্বনি শুনলো । শেষে মাল্টিকাস্ট ছিঁছোড়ে , যেটার গল্প নিয়ে এখন বেশি কথা হচ্ছে । হাতে বেশকিছু কাজ থাকলেও বাজেট স্বল্পতাসহ আরও অনেক কারণে আটকে যায় প্রায় সবগুলোই , যার মধ্যে ছিলো ‘The Fault in Our Stars’র হিন্দি রিমেক কিংবা জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক সঞ্জয় পুরান সিংয়ের সায়েন্স ফিকশন ।
মিষ্টি হাসির অধিকারী সুশান্ত সিং রাজপুত কখনই সেরকম লাইমলাইটের মাঝে আসতে পারেন নি । সমসাময়িক বরুণ , আয়ুশ্মান কিংবা কার্তিকের মতো জনপ্রিয়তা দেখা যায় নি কখনই । কখনও কোনো গ্ল্যামারাস টক শোতে ডাক পান নি , কোনো বড় স্টার কখনও সেভাবে তার সম্ভাবনার কথা বলে নি । কিন্তু তার সিনেমার লিস্ট কোনোভাবেই খারাপ ছিলো না , বরং অনেকের চেয়ে মানসম্মতই ছিলো । এই অভিনেতা সিনেমায় তার ছাত্রকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন , প্রেমিকার মৃত্যুতে রাস্তায় বসে কেঁদেছেন , আত্মহত্যা করতে যাওয়া সন্তানকে বাঁচাতে নিজের জীবনের ব্যর্থতা মেনে নেওয়ার গল্প শুনিয়েছেন ; কিন্তু বাস্তব জীবনে অন্যকিছুই ঘটে গেলো । হয়তো তার মৃত্যুর জন্য আত্মহত্যাকে প্রাথমিক কারণ বলা হয়েছে , কিন্তু তার হতাশার কথা ইন্সটাগ্রামের শেষ ছবিতেও উঠে এসেছিলো যেখানে তিনি তার মায়ের ছবি আর নিজের ছবি কোলাজ করে লিখেছেন , ”Blurred past evaporating from teardrops. Unending dreams carving an arc of smile. And a fleeting life, negotiating between the two…”
জীবনে হয়তো সাফল্যের চেয়ে সুখ অনেক বড় । কিন্তু মাঝেমাঝে কাজের স্বীকৃতি মানুষের জীবনের একমাত্র চাওয়া হয়ে দাঁড়ায় । আর হতাশা ? আমরা আজ হতাশা জিনিসটাকে খুব বেশি সাধারণ করে ফেলেছি । কেউ হতাশার কথা বলতে গেলে তাকে দূরে সরিয়ে দেই , নিজেকে ছাড়া হয়তো কাউকেই সময় দেই না । কিন্তু এর পরিণাম সবসময় সাধারণ হয় না । রূপালী পর্দার হাসিখুশি-প্রাণবন্ত সুশান্ত সিং রাজপুতও হয়তো বাস্তবে সেরকম কিছুর শিকার । কে জানে !
কোলাহল
Mohd Shahanoor Alam Bhuiyan Titu @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা
shapan @ প্রসঙ্গ নারী : ধর্মীয় আর সামাজিক বর্বর আইন নারী খৎনা Female Circumcision
Mkjk @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
পারভেজ আহমেদ @ বাংলা কবিতায় ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?
Md forid mia @ পা চাটা কুত্তার জলকেলি
Juel @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
Juel @ জলচর মৎস্য হতে স্তন্যপায়ী মানুষ; বিবর্তনবাদের মহা নাটকীয়তার পরিণতি
Ask2ans @ The Boy In The Striped Pajamas