বিবর্ণ ব্যাথা
0
বার পঠিতরওমি বুকের মধ্যে চেপে বসা দুঃখটার কোনো সন্তোষজনক কারণ খুঁজে পায় না। এত্তো কষ্ট হচ্ছে যে রোজার ধকল পর্যন্ত তার কাছে কিছু মনে হচ্ছে না। মাঝে মধ্যে তার এমন কষ্ট পাওয়ার স্পর্শকাতর সময় গুলো আসে, প্রায়ই কারণহীন। কিংবা কারণ হিসেবে তখন যা দৃশ্যমান হয় তাতে কষ্ট পাওয়ার কথা মানুষ জানলে হাসবে, এমনি ঠুনকো, এমনকি ওই জন্যে এর পূর্বে ও পশ্চাতে কষ্ট পাওয়ার ঘটনা আর ঘটে না। একবার একটা অপরিচিত এক মেয়ের ছবিতে হাসিবের সামান্য একটা কমেন্ট দেখে তার বুক ভেঙে স্তব্ধতা নেমেছিল, কাউকে বলেনি, এমন কথা বলা যায়না কাউকে। কিজানি নিঝুম হয়তো বলে বসতো ভালোবাসিস বলে কি সিন্দুকে পুরে রাখতে চাস। রওমি লক্ষ্য করেছে এক টার্মের কষ্টের অনুভূতি অন্য টার্মের কষ্টের ভাবনার সাথে ঠিক মেলে না। যেন রঙ বদলে যায় ক্রমশ। একবার যদি বাষ্পের মত আচ্ছন্ন করে অস্বস্তি জাগায়, তো পরেরবার ঘন মেঘ করে আসে আর ভিজিয়ে দিয়ে যায়।
এইবার সে নিঝুমের সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করেছে। খুব জোর দিয়ে কয়েকবার বলেছে যে, দোস্ত আমি খুব কষ্ট পাচ্ছি। নিঝুম স্বাভাবিকভাবেই জানতে চেয়েছে কি জন্যে রে? কিন্তু এই কেন’র কোন জবাব দিতে পারেনি রওমি। কিছু দুঃখ এমন হয় তার কোন কারণ থাকে না, কাউকে দায়ী করা যায় না। রওমি এখন এরকম ব্যাথিত সময় পার করছে। নিঝুমের কাছে সে তীব্র ব্যাথার ভেতর থেকে বের হবার পথ জানতে চায়। কিন্তু স্পষ্টতই নিঝুম কিছু বলতে পারে না। কাল পরিক্ষা দিয়ে ফেরার পর থেকে তার এমন বিপর্যস্ত হাল। বাস হতে নামার সময় মুখটা অমন কালো করে ছিল। কী এমন ঘটেছিল বাসে? যার জন্যে উৎফুল্ল মেয়েটির মুখ এতটুকু হয়ে গিয়েছিল? তেমন কিছুই নয়, হাসিব আশুলিয়া থেকে জামগড়া পর্যন্ত একটাও কথা বলেনি তার সাথে। বৃষ্টি না কি নামে একটা মেয়ের সাথে তুখোড় আড্ডা দিচ্ছিল, তাকে বেমালুম উপেক্ষা করে। তারই পাশের ছিটে পেছনফিরে বসেছিল ওই মেয়ের মুখোমুখি। পাশদিয়ে আরেকটা বাস শা করে চলে যাবার সময় যখন কুন্ডলি পাকিয়ে ধুলো আসছিল তখন জানালাটা লাগিয়ে দেয়ার প্রয়োজনবোধ টুকু করেনি। বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিলে এতে রওমির মন খারাপ হবার কথা নয়। সে উদারতা ও ব্যাক্তিগত স্বাতন্ত্র্য বিশ্বাস করে। কোন মেয়ের সাথে হাসিব কথা বললেই তার জ্বলন হবে, এতটা ক্ষুদ্রমনা সে নয়। তবে হাসিবের আচরণে তার জ্বলন হয়েছে, কান্না পেয়েছে কারণ খুব অবজ্ঞা প্রদর্শন করা হয়েছে তার প্রতি। রওমির এতটা কষ্ট হচ্ছিল যে ফ্যান্টাসির সামনে এসে নেমে যাওয়ার সময় হাসিবকে বলতে পর্যন্ত ইচ্ছে করেনি তার। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই হাসিব ধাতস্থ হয়ে তাকে কিছু বলতে চাইলেও সে সুযোগ না দিয়েই নেমে গেছে। নেমে একবার জানালার দিকে তাকায়ও নি।
দুতিনটে ছেলের মধ্যে তাদের সাধারণ বান্ধবী মধ্যমণি হয়, আর একই স্তিতিতে কোন একজনের প্রেমিকা হয় অযাচিত উপদ্রব, থার্ড পারসন। রওমি এটা বুঝে গেছে। সে অন্যদেরও পরিচিত হলেও অনেকখানি বেখাপ্পা এখানে। রওমি কোনদিনই হাসিবকে এর সাথে মিশবা না, অমুককে আমার অপছন্দ এইসব বলতে যাবে না। কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা যে ফ্যাসিজম এটা সে জানে। কিন্তু কারো উপস্থিতির কারণে নিজের এমন এমন করুণ উপেক্ষিত হওয়াও তো মেনে নেয়া যায় না। আরো একটা ব্যাপার সে উপলব্ধি করে, কাছের মানুষকে অন্যদের সাথে জোর করে মিশতে না দেয়া যদি ফ্যাসিজম হয় তবে কাছের মানুষকে এত নির্মমভাবে অগ্রাহ্য করে সে কষ্ট না পাক এমন আশা করাও নিশ্চিতরুপে ফ্যাসিজম।
বাস হতে এমন নিরব নেমে যাওয়ায় হাসিবের খটকা লেগে থাকবে। রওমির হয়তো অনুচিত হয়েছে, নেমে যাবার সময় আরেকটু সংযম রাখলেও পারতো। কিংবা হয়তো ঠিকই করেছে, সবটাকে যদি সে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে মেনে নিতো তবে হয়তো এটাই প্রমাণিত হতো যে হাসিবের প্রতি তার কোন অধিকারবোধ নেই। তাছাড়া সবসময় রোবটের মত নিয়ম-মাফিক আচরণ করতে হবে এরও কোন মানে হয় না। কিন্তু এখন রওমি ঠিক করেছে হাসিবকে আর কিছু বুঝতে দেবে না। সন্ধ্যা পর্যন্ত অফলাইন থেকে নিজেকে গুছিয়ে নেবে। হয়তো কিছুক্ষণ কাঁদবে স্নানের সময় বা বিছানায় শুয়ে শুয়ে, কাঁদলে দুঃখ হালকা হয়ে যায়। সন্ধ্যার পর খুব স্বাভাবিক ভাবে কথা বলবে হাসিবের সাথে। আরো বেশি সময় নির্লিপ্ত থেকে হাসিবকে কষ্ট দিতে চায়না রওমি, কারণ হাসিব তাকে যত ভালোবাসে তারও চেয়ে বেশি হাসিবকে ভালোবাসে সে নিজে। সন্ধ্যার আগে এমন তীব্র যন্ত্রণার ব্যূহ হতে তাকে বেরতেই হবে।
কোলাহল
পারভেজ আহমেদ @ বাংলা কবিতায় ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?
Md forid mia @ পা চাটা কুত্তার জলকেলি
Juel @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
Juel @ জলচর মৎস্য হতে স্তন্যপায়ী মানুষ; বিবর্তনবাদের মহা নাটকীয়তার পরিণতি
Ask2ans @ The Boy In The Striped Pajamas
Ask2ans @ যুদ্ধ সাংবাদিকতা এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ
ABU RAYHAN @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা
ABU RAYHAN @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা