গ্যাঞ্জি
249
বার পঠিতকলিং বেল বাজানোর প্রায় ৩ মিনিট পর শ্বরণী বাবু দরজা খুললেন| দেখলাম শ্বরণী বাবুর খালি গা, পরনে জিন্স প্যান্ট, চুল থেকে টপ টপ করে পানি ঝরছে, কাধে ভেজা গামছা| গায়ের থেকে তখনও সাবান সেম্পুর ঘ্রাণ ভেষে আসছে, বুঝলাম এই মাত্র গোসল করে বেরিয়েছে| অনেক দিন পর শ্বরণী বাবু গোসল করেলেন, “তিনি প্রায়ই বলেন আমি নিজের কাছে নিজে নোংরা অবস্থাতেও প্রিয়, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আমি কখনই গ্রহণ করতাম না যদি সমাজের লোকেদের সাথে আমাদের চলতে না হত”| দরজা খুলে আমাকে ভেতরে আসার কথা না বলেই চোখ গুলো বড় বড় করে আমার পরনের গেঞ্জির দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় জিজ্ঞাস করলো
- গ্যাঞ্জিটা কবে কিনলি?
- গতকাল আজিজ সুপার মার্কেট থেকে বেশ দাম দিয়ে গ্যাঞ্জিটা কিনলাম, কেন কোন সমস্যা?
- গেঞ্জিটার বুকের উপর চে গুয়েভারার ছবি কেন?
- আসলে চে গুয়েভারার ছবি লাগানো গেঞ্জি পড়ে নিজেকে কমরেড ভাবতে বেশ লাগে|
আমার কথাটা শুনে আফসোসের ভঙ্গিতে দীর্ঘ শ্বাস ফেললেন শ্বরণী বাবু, এরপর হতাশ গলায় গেঞ্জির বুকের উপর চে গুয়েভারার ছবির দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলেন
- আমরা ভিতু, আমরা কাপুরুষ, আমরা ফ্যাশানের জন্য নিজেকে নাস্তিক বলি!,আমরা মার্ক্সবাদী, বিপ্লবী, চিকিত্সক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, গেরিলা নেতা, কূটনীতিবিদ, সামরিক তত্ত্ববিদ এবং কিউবার বিপ্লবের প্রধান ব্যক্তিত্বের লেখালেখি নিয়ে এখন পর্যন্ত বের হওয়া নয় খণ্ড রচনাবলি পড়ে নিজেকে চে গুয়েভারার কমরেড ভাবি এবং নিজেকে কমরেড প্রমান করতে গেঞ্জি আর টুপিতে চে গুয়েভারার ছবি চিকা মেরে ঘুরে বেড়াই! আফসোস হয় যে চে মরার আগে একটা ভুল ধারণা পোষণ করে মরে ছিল! তাকে গুলি করে মেরে ফেলার আগ মুহুর্তে সে চিত্কার করে বলেছিল “আমি জানি তুমি আমাকে হত্যা করতে এসেছো, গুলি করো কাপুরুষ, তুমি শুধু একজন মানুষকেই হত্যা করবে তার বিপ্লবী চেতনাকে নয়”। তুমি ভুল বলেছিলে চে গুয়েভারা তোমার বিপ্লবী চেতনাকে আমরা আমাদের চেতনায় কিংবা কাজে নয় আমাদের গেঞ্জি আর টুপিতে ধারণ করি| আমরা তোমার কমরেড নই কারণ অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আমরা জ্বলে উঠি না, তার বাস্তব প্রমান হলো রাজীব হায়দার, অভিজিত রায়, ওয়াশিকুর বাবু, অনন্ত বিজয় দাস এবং নীলাদ্রি চ্যাটার্জিকে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ড ছাড়াও ২০১৩ সালের ১৩ই জানুয়ারি রাজধানীর উত্তরায় ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে, ৭ই মার্চ রাতে মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের কাছে আরেক অনলাইন এক্টিভিস্ট সানিউর রহমানকে, জুন মাসে এলিফ্যান্ট রোডে ব্লগার রাকিব আল মামুন ও ১১ই আগস্ট ব্লগার ও বুয়েট ছাত্র তন্ময়কে ধারালো চাপাটি দিয়ে হত্যার প্রচেষ্টা করা সন্ত্রাসীদের দেখেও আমরা নিশ্চুপ! তুমি সবসময় বলতে চুড়ান্ত বিজয় অর্জিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত লড়াই করো, হাসি পায় ভেবে যে করা লড়াই করবে যারা শুধু গেঞ্জি আর টুপিতে চে গুয়েভারার চেতনাকে ধারণ করে বেড়ায়? আরে চে লড়াইতো দুরে থাক অস্ত্রটাই আমরা হাতে তুলতে ভয় পাই|
আমি অপরাধীর মত মাথাটা নিচু করে খুবই ক্ষীন গলায় শ্বরণী বাবুকে প্রশ্ন করলাম
- খুনের বদলে খুন, মানুষের বদলে মানুষ হত্যা অমানবিক নয়?
এবার প্রায় ধমকের ভঙ্গিতে বিপ্লবী আওয়াজে শ্বরণী বাবু বললেন
- মানবতাবাদির পরিচয়ে পরিচিত হতে গিয়ে যারা মশার কামড় সয্য করে এই ভেবে যে একটি মশার প্রান নাশকরাও অমানবিক, গায়ে লেগে রক্ত চুষতে থাকা জোকের গায়েও লবন ছেটাবে না এই ভেবে যে খুদার্ত প্রানীর খুধা নিবারনের মাঝে ব্যাঘাত ঘটান অমানবিক, অথবা ক্ষুদার্ত বাঘের পেটের আহার হওয়াটা মানবিক| আমার দৃষ্টিতে এরা প্রথম শ্রেণির অনভিজ্ঞ নবজাতক গাধা।
শ্বরণী বাবুর এমন জবাবের কোন প্রতিউত্তর আমার কাছে নেই| শ্বরণী বাবু আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরেই শান্ত এবং আন্তরিক ভঙ্গিতে বললেন
- আয় ভেতরে, আর তোর এই বিপ্লবী চেতনাধারী গেঞ্জি খুলে আমার আলমারি থেকে আমার একটা পাঞ্জাবি পড়ে নে, বাইরে যেতে হবে| বাইরে বেরিয়ে একটা সিগারেটর আর চা খাবো, অনেক দিন খায়নি রতন পন্ডিতের কলিজা মিঠা চা| metformin tablet
সভ্যতার কথনীয়া বলছেনঃ
thuoc viagra cho namপ্রিয় সভ্য,
লিখে দে যে স্বাভাবিক ব্লগিং এর সাথে আপনার ব্লগ পোস্ট দেয়া সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়!! আপনার পোস্টের হার সভ্যতা ব্লগ কর্তৃপক্ষের কাছে ‘মত ও নীতি প্ৰচারের জন্য সকল ক্ৰিয়াকলাপ এবং পরিকল্পনামূলক (প্রোপ্যাগান্ডামূলক)’ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে! আপনাকে যৌক্তিক সময়ের ব্যবধানে ব্লগিং করার জন্য অনুরধ করা হল।
এইখানে বলে রাখা ভাল আপনার প্রত্যেকটি পোস্ট নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনার যৌক্তিক সময় দেয়ার পর আরেকটি পোস্ট দিতে বলা হল… একই ব্লগারের একটির বেশি পোস্ট পরপর প্রকাশ করা যাবেনা বিধায় আপনার অন্যান্য পোস্টগুলো অপ্রকাশিত করা হলো। তা সময়মত প্রকাশ করা হবে।
ভাল থাকুন,
সভ্যতার সাথে থাকুন
‘বিনির্মাণে আগামীর পথে…’