দুটি বাস জার্নি
203
বার পঠিতটিকিটটা বুকপকেটে নিয়ে কাউন্টার থেকে বের হল স্বাধীন। ঘড়ির রেডিয়াম লাইট সময় বলছে বারটা বাজতে দশ।এখনো চল্লিশ মিনিট সময় কাটাতে হবে বাস ছাড়ার আগে।
সাধারণত রাত বাড়ার সাথে সাথে শহর নিস্তব্ধ হতে থাকে। বাসস্ট্যান্ডগুলোর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অন্যরকম। রাত যত বাড়ে, কাউন্টারগুলোতে ব্যস্ততাও বাড়তে থাকে সমানতালে। স্বাধীন এই ব্যস্ততা আর ভিড় এড়িয়ে ধীরে সুস্থে প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হেঁটে হেঁটে দূরে সরে যেতে লাগল। আবার বেশি দূরে যাওয়া যাবে না। সাড়ে বারটার আগে ফিরে না আসলে আবার বাস পাওয়া যাবে না।
মনে মনে হাসল স্বাধীন। এই বাস জার্নি নিয়ে তার মনে একসময় কত না অজানা আশঙ্কা কাজ করত! আর গত বছরআষ্টেক এই যান্ত্রিক শহর থেকে নিজের শহরে যাতায়াতে তার একমাত্র অবলম্বন চার চাকার এই যান। তার বাবাকে সে কখনো দেখে নি। শুনেছে তার বাবাও আজ থেকে অনেকদিন আগে এমনভাবে বাসে করেই কোথাও যাচ্ছিলেন। তারপর আর তাঁকে পাওয়া যায় নি। অনেকে অনেক কিছুই বলে। কেউ বলে বাস এক্সিডেন্ট হয়েছিল। কেউ বলে সবাইকে বাস থেকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। কি হয়েছিল সেটা শুধু স্বাধীনই না, আরো অনেকেই অনুমান করতে পারে, কিন্তু কোনকিছুরই নিশ্চয়তা পাওয়া যায় নি। তাই সত্যিটা কেউই জানেনা। স্বাধীনও না। বাবা নেই, হারিয়ে গেছেন-এটুকুই বাস্তবতা! কাজেই বাস নিয়ে স্বাধীনের এত যে আশঙ্কা-তার কিছুই অমূলক নয়।
এতকিছু যখন ঘটছে তখন সে তার মায়ের গর্ভে। তার বাবা নাকি আগের থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন যে সন্তান যদি ছেলে হয় তাহলে নাম রাখবেন স্বাধীন। নিজের ছেলের কথা একজন বাবা কতকিছু খুঁটিনাটি ভেবে ভেবে রাখতে পারেন, এমনকি নাম পর্যন্ত! আজকে সেটা ভেবে অবাক হয় স্বাধীন। আর আজকে তার নিজের ছেলেটাই অনেক বড় হয়ে গেছে। মৃত্যুর সময় বাবাও প্রায় এমনই ছিলেন। সেদিনের সেই বাচ্চা ছেলে এখন ইউনিভার্সিটিতে যায়। সময় কেমন দেখতে দেখতে চলে যায়!
খানিক্ষণ এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে এক বোতল পানি কিনে নিয়ে যখন আবার কাউন্টারে ফিরল স্বাধীন তখন বাস এসে গেছে। উঠে নিজের সিট খুঁজে বসে পড়ল। বাস ছেড়ে দেবে আর খানিক্ষণের মধ্যেই। সহযাত্রী ছেলেটির বয়স কম। বোধহয় তার ছেলের বয়সী হবে। কানে ইয়ারফোন, চোখ বোজা। ইয়ারফোনের কথা ভেবে হাসি পেয়ে গেল স্বাধীনের। তার ছেলে তাকে অনেকবার দেখিয়ে দিতে চেয়েছে কিভাবে এই কিম্ভুতকিমাকার জিনিসটা ব্যবহার করতে হয়। স্বাধীন রাজি হয় নি। যন্ত্রের যন্ত্রণা যত কম নেওয়া যায় ততই ভাল। মাঝে মাঝে যে হঠাত একটু গান শুনতে ইচ্ছা করে না তা না, কিন্তু তার গানের রুচি তো আর এই বয়সী ছেলে-মেয়েদের সাথে মেশে না। আর কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রবীন্দ্র-নজরুলের গান শোনা তার কাছে অনেকটা তিতো রসগোল্লা খাওয়ার মতই।
সিটটা পিছনে হেলিয়ে নিল স্বাধীন। মাত্র একটা রাত। এরপরেই সে নিজের শহরে। বাসে চড়লে ভয়ে ঘুম হয় না স্বাধীনের। বারবার মনে হয় নিজের না-দেখা বাবার কথা। স্বভাবটা এতদিনের অভ্যাসের পরেও পাল্টায়নি। মাঝে মাঝে একটু তন্দ্রা আসে বটে, কিন্তু একটা ছোট্ট ঝাঁকুনির সাথে সাথেই আবার পুরোপুরি সজাগ। এই ভয়-দুশ্চিন্তাগুলো কি সময়ের সাথে সাথে কমে না? কে জানে! half a viagra didnt work
বাস সময়মত ছাড়লেও শহর ছেড়ে বের হতে বেশ সময় লাগিয়ে দিল। একগাদা গাড়ি-ঘোড়ার ভিড় ঠেলে বের হওয়া চাট্টিখানি কথা না। ছাড়াছাড়া ঘুমের মাঝে এসব দেখতে লাগল স্বাধীন। তবে সব ভিড় ঠেলে যখন বাস একবার হাইওয়েতে পড়ল তখন আর ড্রাইভারকে পায় কে? বাস তখন এরোপ্লেন। শেষ আট বছর সে এমনটাই দেখে আসছে। প্রতিদিনই খবরের কাগজ হাতে নিলে একটা না একটা সড়ক দুর্ঘটনার খবর থাকবেই। ড্রাইভারদের কিছু বলেও কোন লাভ নেই। তাদের অভ্যাস তারা পাল্টাতে নারাজ। কি আর করা! রাতের বেলা আবছা আলোতে রাস্তার আশেপাশের সবকিছুই কেমন অন্যরকম লাগে। অন্ধকারের একটা আলাদা সৌন্দর্য্য আছে বোধহয়। সেই সৌন্দর্য্যের স্বাদ নিতে নিতে মনোযোগটা অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করতে লাগল স্বাধীন।
মাঝে মাঝে একটু চোখ লেগে আসলেও বাস যে একটানা ছুটছে সেটা বেশ টের পাচ্ছিল স্বাধীন। ভোররাতের দিকে হঠাৎ এক হ্যাঁচকা ব্রেকে বাস থেমে গেল। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাসের সবার ঘুম গেল ভেঙ্গে। এমন বেপরোয়া ব্রেকের কারণ আর কিছুই না। রাস্তায় পড়ে আছে একটা গাছের গুড়ি। ততক্ষণে যা বোঝার সবাই বুঝে গেছে। রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতি নতুন কিছু না।
প্রায় সাথে সাথে বাসে উঠে এল কাল কাপড়ে মুখ ঢাকা একজন। হাতের আগ্নেয়াস্ত্রটা বোধহয় রাইফেল-টাইফেল কিছু একটা হবে। অস্ত্রপাতি সম্বন্ধে স্বাধীনের ধারণা একদমই নেই। বাবা থাকলে হয়ত দেখেই বুঝতেন। এখন নিশ্চয়ই যতদ্রুত পারা যায় সবার কাছে টাকা-পয়সা আর যা দামী জিনিস আছে নিয়ে সরে পড়বে এরা। মনে মনে প্রমাদ গুনল স্বাধীন। তার মোবাইল সস্তা। এইটা গেলে আরেকটা আসবে। কিন্তু গতমাসেই বই পড়ার সুবিধার জন্য একটা কিন্ডল কিনেছিল। যন্ত্রপাতি যতদূর সম্ভব এড়িয়ে চললেও এই জিনিসটা বেশ পছন্দই হয়েছিল। সেটা বুঝি যায় যায়!
অবশ্য ডাকাতসর্দার কারো কিছু নেওয়ার ব্যপারে আগ্রহ দেখাল না। একটা বিশ্রী গালি দিয়ে পুরো বাসের সব মানুষকে নেমে আসতে বলল। সবাই মনেহয় ব্যাপারটা বুঝে উঠতে খানিকটা সময় নিয়ে ফেলেছিল। এর মাঝে আরেকটা রামধমক দিয়ে ফেলল ডাকাত সর্দার। সাথে ফ্রি গালি। বাসের সবাই এবার নেমে আসতে লাগল এক এক করে। ডাকাতের দলের বাকিরা ছিল নিচে। সব মিলিয়ে বোধহয় জনা বিশেক হবে। সবার হাতেই ছোটবড় অস্ত্রশস্ত্র।
সবাই নামার পর তাদেরকে একসাথে নিয়ে যাওয়া হল রাস্তার পাশেই এক ঝোপের আড়ালে। কেউ তখনো বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে। সবার মাঝেই একটা চাপা আতঙ্ক। একটু ফিসফাসের শব্দও আসছিল। ডাকাতদের কোন একজনের ধমকে ফিসফাসের শব্দ বন্ধ হয়ে গেল। রাতের অন্ধকার কেটে একটু আলো ফুটতে শুরু করেছে। মানুষগুলোকে একটু দেখার চেষ্টা করল স্বাধীন। স্যুট-টাই পরে পুরোপুরি কেতাদুরস্ত এক ভদ্রলোক আছেন। এক মায়ের কোলে তাঁর শিশুকেও দেখল। মায়ের চোখেমুখে দুশ্চিন্তা। ছেলেটিকে তেমন চিন্তিত মনে হল না। বরং ঘুম ভেঙ্গে গিয়ে যেন একটু বিরক্ত। সবার মাঝে নিজের সহযাত্রীকেও আবিষ্কার করল। ছেলেটি নিজের ইয়ারফোন খুলে প্যান্টের পকেটে রাখছে। এত চিন্তার মাঝেও হাসি পেল স্বাধীনের। এই ছেলে কিনা এখনো ঐ বিদঘুটে সুতো নিয়ে ব্যস্ত।
ডাকাতের দল তাদের সবাইকে নিয়ে দাঁড় করাল ঝোপের আড়ালে। এক লাইনে। জায়গাটা একটু জলা। সবারই অন্তত গোড়ালি অবধি ভিজে গেছে। এতক্ষণে সবাই মোটামুটি বুঝতে পেরেছে যে কি ঘটতে চলেছে তাদের অদৃষ্টে। স্বাধীন এখনো বুঝতে পারছে না কেন হচ্ছে এমন। বাস থামার পর থেকে ডাকাতেরা গালাগালি বাদে একটা কথাও বলে নি। তাদের কাছ থেকে কোন কিছু কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করে নি। তাহলে কেন এভাবে সবাইকে এক লাইনে দাঁড় করাল? কি চায় তারা? মানুষকে মেরে ফেলা কি এতই সহজ? শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত কি ওরা একটা কথাও বলবে না কারো সাথে?
ডাকাতদলের মধ্যে যাদের হাতে বন্দুক ছিল তারা এবার বন্দুক উঁচু করে ধরল। স্বাধীন আশেপাশে তাকাল। স্যুট-টাই পরা কেতাদুরস্ত ভদ্রলোক আপন মনে বিড়বিড় করছেন। বোধহয় ইষ্টনাম জপ করছেন। সহযাত্রী ছেলেটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছে। বোধহয় বুঝতে পারছে না কি করবে। সবার মাঝে স্বাধীন সেই মা-কেও খুঁজে বের করল। এমন সময়েও মা তার সন্তানকে গল্প বলে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছেন। সবটুকু ভালবাসা দিয়ে চেষ্টা করছেন সন্তানের জীবনের শেষ মুহুর্তের বিভীষিকাটুকু দূর করে দেওয়ার। আশেপাশের অনেকের কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে। can you tan after accutane
এর মাঝেই সবগুলো বন্দুক থেকে একসাথে কান ফাটানো আওয়াজ আসল। একবার হয়েই বন্ধ হল না। বারবার হতে লাগল। স্বাধীনের আশেপাশে সবাই দাঁড়ানো অবস্থা থেকে মাটিতে পড়ে যাচ্ছে। স্বাধীন নিজেও তার বুকের ডানপাশে একটা ধাক্কা অনুভব করল। আর দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। will metformin help me lose weight fast
গুলি চলেছিল আধা মিনিটের মত। স্বাধীনের কাছে মনে হল কয়েক যুগ। ডাকাতদল তাদের ওভাবেই ফেলে রেখে চলে গেল। বেশিরভাগেরই শরীর অসাড় হয়ে গেছে। হাতেগোনা দুয়েকজনের মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে হালকা গোঙানির শব্দ। স্বাধীন বাম হাতটা তুলে ওর বুকের যেখানে গুলি লেগেছে সে জায়গাটা ধরার চেষ্টা করল। পারল না। এই জলায় শুয়ে দেখা ভোরের আলোই কি ওর চোখে শেষবারের মত লাগা পৃথিবীর আলো?
আর ভাবতে পারছে না স্বাধীন। এর থেকে বোধহয় গুলি লাগার সাথে সাথে মরে যাওয়া ভাল ছিল। অন্তত এভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে মরা লাগত না। যন্ত্রণায় চোখটা বুজে এল। আজ তার নিজের শহরে থাকার কথা। সকালে কিছু মুখে গুঁজে নিজের বিছানায় ঘুমিয়ে থাকার কথা। আর সে কিনা এই জলায় শুয়ে আছে! কেউ কি তাদের বাঁচাতে আসবে না? নাকি এভাবেই কেটে যাবে শেষ কয়েকটা মুহুর্ত? nolvadex and clomid prices
আকাশ আরেকটু পরিষ্কার হতেই লাশের স্তুপ চোখে পড়ল কিছু মানুষের। এর মাঝে একজন স্বাধীনকেও আবিষ্কার করল। যখন বুঝতে পারল যে সে বেঁচে আছে তখন প্রথমে খানিক্ষণ ডাকাডাকি করল। তাতে কাজ না হলে গায়ে ধাক্কা দিয়ে তোলার চেষ্টা করল। স্বাধীন অসম্ভব যন্ত্রণায় যখন চোখ খুলল তখন দেখল বাসের সুপারভাইজার তার ঘুম ভাঙ্গানোর চেষ্টা করছে। zoloft birth defects 2013
-“নামবেন না? পৌঁছায়ে গেসি তো আমরা।” glyburide metformin 2.5 500mg tabs
স্বাধীনের ধাতস্থ হতে একটু সময় লাগে। সুপারভাইজার তাকে ডেকে দিয়ে আবার নেমে গেছে। বাস নিরাপদেই পৌঁছে গেছে তার নিজের শহরে। সে ধীরে সুস্থে ব্যাগ আর পানির বোতল নিয়ে নামে। আকাশ পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে গেছে। একটা রিকশা ডেকে তাতে চেপে বসে স্বাধীন।
রিকশায় উঠে রাতের স্বপ্নটার কথা আবার মনে হল স্বাধীনের। স্মিত একটা হাসি ফুটে উঠল তার মুখে। বাবা আজকে থেকে ৪৪ বছর আগে কিভাবে মারা গিয়েছিলেন এখন সেটা সে জানে! clomid over the counter
সে আরো জেনে গেছে পরাধীন থাকার কষ্ট। পরাধীন দেশে জীবনের দাম কত কম সেটাও সে জানে। এজন্যই বোধহয় বাবা যুদ্ধে গিয়েছিলেন। চেয়েছিলেন দেশটাকে স্বাধীন করতে। হয়ত তাঁর মনের কোন গোপনে এই আশঙ্কা ছিল যে তিনি স্বাধীন দেশটাকে দেখে যেতে পারবেন না। তাই তিনি মৃত্যুর আগে তাঁর অনাগত সন্তানকেই স্বাধীন করে গেলেন।
ভোরের আলোর দিকে তাকিয়ে স্বাধীন মৃদুস্বরে বলল, “থ্যাঙ্ক ইউ, বাবা!”
কোলাহল
Mohd Shahanoor Alam Bhuiyan Titu @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা
shapan @ প্রসঙ্গ নারী : ধর্মীয় আর সামাজিক বর্বর আইন নারী খৎনা Female Circumcision
Mkjk @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
পারভেজ আহমেদ @ বাংলা কবিতায় ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?
Md forid mia @ পা চাটা কুত্তার জলকেলি
Juel @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
Juel @ জলচর মৎস্য হতে স্তন্যপায়ী মানুষ; বিবর্তনবাদের মহা নাটকীয়তার পরিণতি
Ask2ans @ The Boy In The Striped Pajamas