আমার মায়ের মোটর বাইক এবং কিছু শুকর ছানার আচরন
670
বার পঠিতআমার মা একসময় বেশ কয়েকবছর ব্র্যাকের চাকরি করেছিল। সম্ভবত সেসব আরো ২০ বছর আগের কথা। তো ব্র্যাকে তাদের চাকরিতে অফিস থেকে সবাইকে একটি করে বাইক দেয়া হত। আমার মাও পেয়েছিল, আমার মা সহ তার আরও অনেক নারী সহকর্মীরা বাইক পেয়েছিল এবং তারাও বাইক চালাতো। বাইক চালিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গার ব্র্যাকের অধীনে থাকা স্কুলগুলো ভিজিট করতো। তাদের বাইক চালাতে যেই সমস্যায় পরতে হয়েছিল, সেটা হল, রাস্তায়ঘাটে তো কোন মেয়ে সচরাচর বাইক চালাতে দেখা যায় না, এখনই দেখা যায় না, আরও বিশ বছর আগে তো সেটা কল্পনাই করা যায় না। তো রাস্তায় ঘাটে সবাই অবাক হত, এসব মেয়েদের বাইক চালাতে দেখে। কেউ কেউ বাজে ভাবে তাকাতো, কেউ বাজে কথা বলতো, অঙ্গভঙ্গি করতো। এসব পাত্তা না দিয়েই তারা বাইক চালাতো। কিন্তু সবচেয়ে ভয়ংকর যেই কাজটি কিছু লোকে করতো, সেটা হল, কিছু ট্রাক, বাস, ট্যাক্সির ড্রাইভার তাদের গাড়ি বাইকের দিকে চাপিয়ে দিতো, বাইকের গা ঘেঁষে যেতো, ফলে বাইক চালক মেয়েগুলো বিচলিত হয়ে পরতো। এসবে বেশ কয়েকবার কয়েকজন এক্সিড্যান্ট ও করেছে। এইভাবেই একবার সিরিয়াস এক্সিড্যান্ট করে তাদের সহকর্মী, সুচরিতা নামে একটা মেয়ে মারা যায়। সেই মেয়ের তখন বিয়ে ঠিক হয়েছিল, আশীর্বাদ ও নাকি হয়ছিল। মেয়ে মারা যাওয়ার পর, পাত্রপক্ষ এসে মেয়ের পরিবারের কাছে মেয়ে দাবী করা শুরু করল। যেই মেয়ে মারা গেছে তাকে কিভাবে দিবে? এতো সম্ভব না। সেটা তো সবাই বুঝে, পাত্র পক্ষ ও বুঝে। তা হলে তাদের মেয়ে চাওয়ার কারণটা কি?? তাদের মেয়ে চাওয়ার কারন ছিল ভিন্ন। শেষ পর্যন্ত মেয়ে না দিতে পারলে, বিয়েতে যেসব যৌতুক দেয়ার কথা ছিল সেসব দিয়ে দিলে তারা আর ঝামেলা করবে না এই শর্তে তাদের লাখ খানেক টাকা সহ আরও কিছু ঘর সাজানোর সরঞ্জাম (সোফা, টিভি ইত্যাদি…) দিয়ে দেয়া হল।
মৃত মেয়েটির বিয়ের যৌতুকের টাকা দিয়ে পাত্র তার ঘর সাজালো, টাকা ব্যবসায় খাটিয়ে ব্যবসার উন্নতি করল, ঢাক ঢোল পিটিয়ে নতুন আরেকটি বিয়ে করল। এইদিকে মেয়ের পরিবার, মেয়ে হারালো, সাথে অর্থ সম্পদও।
এবার আপনি একবার ভাবুন তো, কি দোষে মেয়েটির প্রান হারাতে হল, কি দোষ করেছিল? বাইক চালানো কি কোন অপরাধ? নিশ্চয়ই না। তবে কি অপরাধ তার? তার একটিই অপরাধ, সে মেয়ে। মেয়ে হয়ে পুরুষের মত বাইক চালায় এরচেয়ে বড় অপরাধ আরেকটি আছে নাকি??
পুরুষেরা আসলে নারীদের কিভাবে দেখতে চায়? তারা চায় মেয়েরা সবসময় এমনভাবে থাকুক যাতে মেয়েদের নিয়ে তারা হাসাহাসি করে পুরুষ বলে নিজেদের নিয়ে গর্ব করতে পারে। যেমন ধরুন, ছেলেদের মধ্যে বন্ধুরা কাউকে হেয় করতে চাইলে বলে, ‘ব্যাটা, তুই একটা লেডিস’ কিংবা বলে, ‘মেয়েদের মত করছিস কেন?’ ছেলেদের মধ্যে কাউকে মেয়েদের সাথে তুলনা করা হলে সেটা হয় তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি অপমানের। কেউ কোন কাজ না পারলে, বলে, ‘তোমার দ্বারা এসব হবে না, যাও ঘরে গিয়ে চুরি পরে বসে থাকো’। তার মানে যাদের দ্বারা কোন কাজ হয় না তারাই চুরি পরে। ছেলেদের মধ্যে কেউ ক্রিকেট ফুটবল ভাল খেলতে না পারলে বা হেরে গেলে, তারা বলে, ‘যাও তুমি গিয়ে কুতকুত খেলো গিয়ে, ক্রিকেট ফুটবল তোমার জন্য না’। মানে হল, ক্রিকেট ফুটবল বীরপুরুষদের খেলা। মেয়েদের খেলা নয়। মেয়েরা কুতকুত খেলবে, তাদের এই খেলা নিয়ে ছেলেরা ব্যঙ্গ করবে, হাসাহাসি করবে।
আচ্ছা কোন মেয়ে যদি বলে, আমি চুরি পরে ঘরে বসে থাকবো না, আমি কুতকুত না ক্রিকেট কিংবা ফুটবল খেলব, তবে কি পুরুষেরা খুশি হবে? মোটেই না, পুরো সমাজ মেয়েটির খেলা বন্ধ করতে, মেয়েটিকে চুরি পরিয়ে রাখতে উঠে পরে লাগবে। সুচরিতা নামের সেই মেয়েটিকে যেমন মেয়ে হয়ে বাইক চালানোর অপরাধে প্রান হারাতে হয়েছে……….।
নারী অক্ষম, নারী পারে না এবং নানান কাজে নারী পুরুষের তুলনা দিয়ে বিতর্ক টেনে নারীকে তারা পদানত করে রাখতে চায়। যারা এই ধরনের তুলনামুলক বিশ্লেষন গুলো করে, তাদের চিন্তা চেতনায় চরম চরম পুরুষতন্ত্র ছাড়া আর কিছু নেই। দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হচ্ছে অনেক প্রগতিশীলরাও এই বৈষম্যমুলক মানসিকতা থেকে মুক্ত নয়। এসব প্রগতিশীল পুরুষদের যাবতীয় প্রগতিশীলতা শুধু মাত্রই পুরুষদের জন্য।
পুরুষেরা শক্তির সব কাজগুলো দখলে নিয়ে নিজেরা শক্তির চর্চা করে নিজেদের শক্তিশালী করে নারীকে দুর্বল করে রাখে যাতে নারীর দুর্বলতা নিয়ে তারা হাসাহাসি করতে পারে, নারী যাতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে, পুরুষ ছাড়া যেন চলতে না পারে। যাতে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ টিকে থাকে যুগ যুগ ধরে। পুরুষের এই ষড়যন্ত্র সব নারীর বুঝতে আর কতকাল লাগবে?? doctorate of pharmacy online
নারীর সচেতন হবার এখনই সময়, ধর্মের দোহায় দিয়ে, শলীনতার দোহাই দিয়ে নারীর পথচলা তারা প্রতিনিয়ত থামিয়ে দিতে চায়। নারীর শালীনতা নিয়ে পুরুষের এত মাথা ব্যথা। পুরুষের শালিনতা তবে কিসে?? ধর্মের নিয়ম কি শুধুই নারীর জন্য?? ধর্ম যে পুরুষের তৈরি, পিতৃতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার একটি হাতিয়ার, নারীরা এসব কবে বুঝবে??
এইমলেস ভেনাম বলছেনঃ
\\পিতৃতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার একটি হাতিয়ার// কথাটার সাথে ও পুরুষদের প্রতি কিছু আক্রমণাত্মক কথার সাথে একমত হতে পারলাম না। কিন্তু বাকিটা খুবি ভালো ও সুন্দর হয়েছে। এ ধরনের পোস্ট আসা করছিলাম। viagra in india medical stores
লাল সবুজের ফেরিওয়ালা বলছেনঃ
সমাজে যেথায় অর্ধেক নারী সেথায় নারীর মুক্তি ছাড়া প্রকৃত মুক্তি মিলার কোন পথ নাই
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
ভালো লাগল।আর অমানুশগুলানের কথা আর কি বলব
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
side effects of quitting prednisone cold turkeyহাস্যকর পোস্ট! বাইক এক্সিডেন্টের সাথে নারী হবার সম্পর্ক খুজে পাই না!
আর চুরি পড়ে বসে থাকো কথাটা কি ভুল? আমি সব সময়ই বলি নারী মুক্তি তখনই সম্ভব যখন নারীরা নিজের মুক্তি চাইবে! তারা নিজেরাই দাসত্ব করছে, কয় জন আছে যে চিন্তা করে মুক্তির! বেশির ভাগেরই চিন্তা আমি মেয়ে কয়দিন পর বিয়ে হবে!
নারীরা শোষণের স্বীকার হয় না তা আমি বলছি না!
আপনার পোস্টটি নিতান্ত ছেলে মানুষী লেগেছে!
আর ছোট বেলায় ছেলে মেয়ে সবাই কুতকুত খেলেছে বলেই আমার ধারণা। আজ মেয়েরা ক্রিকেট খেলছে, ফুটবল খেলছে। সেই সব মেয়েরা অনেক কষ্ট করেই সে অবস্থানে গিয়েছে। এখানে যেতে যে শুধু পুরুষই বাধা দিয়েছে তা ভুল, তার নিজ বন্ধবীরাও তাকে কটুক্তি করেছে…
আর লিঙ্গ ভেদে কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে, ছেলেদেরও যেমন বলা হয় মেয়েদের মত করিস কেন। মেয়রাও বলে তুই ছেলেদের মত করিস কেন…
আপনার পোস্টটি নিয়ে বলব শুধু লিখতে হবে বলেই লিখেছেন…
এইমলেস ভেনাম বলছেনঃ
একমত
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
সহমত
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
একটা কথার শাব্দিক অর্থ কি, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সেটা কী অর্থে ব্যবহৃত হচ্ছে। যেমন শালা শব্দটি বঙ্গদেশে গালি হিসেবে বহুল প্রচলিত। এখন কেউ যখন কাউকে শালা বলে গালি দেয়, তখন কিন্তু তাকে শালার মত আপন বোঝায় না, তাকে বিরক্তিকর বা অপদার্থই বোঝায়।
ছেলেদের যখন বলা হয়, মেয়েদের মত করিস কেন, তখন সেটা অপমান করেই বলা হয়। আমি একটাও ছেলে পাই নাই, সিম্পল এক পিসও না, যাকে মেয়েদের সাথে তুলনা করা হলে সে সেটা গর্বের সাথে নিয়েছে। ঠিক অপর দিকে, একটু বেশি চঞ্চল বা পটু মেয়েদেরই ছেলেদের সাথে তুলনা করা হয়। আমি খুব কম মেয়েকেই দেখেছি এটা নেগেটিভলি নিতে।
হ্যাঁ, অবশ্যই মেয়েদের পশ্চাৎপদতার পেছনে তাদের নিজেদের অনেকাংশে দায় আছে। সেখানে দ্বিমতের কোন কারণ নেই। কিন্তু, বড় দায়টা আমাদের সামাজিক চিন্তাধারারই।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
//হাস্যকর পোস্ট! বাইক এক্সিডেন্টের সাথে নারী হবার সম্পর্ক খুজে পাই না!/// এটায় কি আপনার দ্বিমত আছে?
আপনি সম্পর্ক খুজে পান?