সেলিনার সেই শিলালিপি
292
বার পঠিতস্বাধীন বাংলাদেশেই আজ কলম চালানো যে কত কঠিন তা চোখে মেললেই দেখতে পাওয়া যায়,তাহলে ভাবতে পারেন কি পরাধীন বাংলার মাটিতে কলম চালানো কতটা কঠিন ছিলো।কিন্তু তারপরো কলম চলেছিলো অনেকে,তাদের মাঝে একটি কলম চলে ছিলো সেলিনা পারভীনের হাত ধরে পরাধীনতার বৃত্ত থেকে স্বাধীনতার আলোর আশা বুকে নিয়ে।
শহরে তখন কারফিউ ডিসেম্বর সকালবেলা ১১৫ নং নিউ সার্কুলার রোডে তার বাড়ীতে থাকতো তিনজন মানুষ- পুত্র সুমন, মা আর তার ভাই জনাব উজির৷ সেদিন শীতের সকালে তারা সকলেই ছিলেন ছাদে। সেলিনা পারভীন সুমনের গায়ে তেল মাখিয়ে দিচ্ছিলেন। সুমন যখন ছাদে খেলাধুলা করছিল তখন সেলিনা পারভীন ছাদে একটা চেয়ার টেনে একটি লেখা লিখছিলেন।
সেই বাসার প্রধান গেইট ভেঙে ভিতরে ঢুকে গেল কিছু লোক তাদের সবাই একই রঙের পোশাক পরা ও মুখ রুমাল দিয়ে ঢাকা সুমনদের ফ্ল্যাটে এসে একসময় কড়া নাড়ে তারা৷ সেলিনা পারভীন নিজে দরজা খুলে দেন লোকগুলো তাঁর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয় এবং এ সময় সেলিনা পারভীনের সাথে লোকগুলোর বেশ কিছু কথা হয় এরপর তারা সেলিনা পারভীনকে তাদের সাথে ধরে নিয়ে যায়।
“ওই তো পড়ে আছে লাশের স্তুপে, হারিয়ে যাওয়া আলো,
সাদা মোজায় আবৃত পা দুটো ভেসে আছে সাদা পদ্মের মতো।
এখনো শীতে কুঁকড়ে আছে সে দেহ,
গুলি আর বেয়নেটে ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত যেন!”
১৮ ডিসেম্বর সেলিনা পারভীনের গুলিতে-বেয়নেটে ক্ষত বিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে খুব শীতকাতুরে সেলিনার পায়ে তখনও পড়া ছিল সাদা মোজা । এটি দেখেই তাকে সনাক্ত করা হয় । কোমরে গোঁজা সেই গামছায় চোখ মুখ বাঁধা, সেই সাদা শাড়িতে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে স্বয়ং তিনি পড়েছিলেন নিষ্প্রাণ দেহে, স্বাধীনতার শিলালিপি হয়ে।
৩১ মার্চ নোয়াখালী জেলার ফেনীর রামগঞ্জের ছোট কল্যাণনগর গ্রামে মৌলভি আবিদুর রহমান আর মোসাম্মৎ সাজেদা খাতুন এর ঘর আলো করে এলো এক কন্যা সন্তান নাম রাখা হলো মনোয়ারা বেগম মণি,পরে নাম পাল্টিয়ে হয়েছিলেন সেলিনা পারভীন।
স্থানীয় সরলা বালিকা বিদ্যালয়ে শুরু হয় লেখাপড়া,কিন্তু নারী হয়ে জম্নানোয় সমাজের অভিশাপ নেমে আসে তার জীবনে ১৯৪৩ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে নিজের অমতে সামাজিক ও পারিবারিক চাপে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে হয় কিন্তু মাত্র ১০ বছর টিকেছিলো সে সংসার সেলিনা পারভীন ঠিক করলেন তিনি লেখাপড়া এবং সাহিত্য সাধনা করবেন।একেবারে প্রস্তুতিবিহীন অবস্থায় ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিলেন। কিন্তু পাস করতে পারলেন না তাই বলে তাঁর উদ্যমের ঘাটতি হয় না।
নিজের জীবনের সংগ্রাম চালাতে ১৯৫৬ সালে চলে আসেন ঢাকায়।১৯৫৭ সালে মিটফোর্ড হাসপাতালে (বর্তমানে সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ) নার্সি ট্রেনিং গ্রহণ করেন। কিন্তু নার্সিং পেশাটাকে সমাজ সুনজরে দেখে না বলে পরে ছেড়ে দেন। ১৯৫৯ সালে চাকরি নেন রোকেয়া হলে মেট্রনের চাকরি।কাজের সঙ্গে সঙ্গে আরেক কাজ, পাশাপাশি গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ লেখা চালালেন সমভাবে। viagra vs viagra plus
তিনি পরবর্তীতে একজন রাজনৈতিক এর সাথে সংসার শুরু করেন। তিনি ললনা পত্রিকায় কাজ করতেন বিজ্ঞাপন বিভাগে৷বিজ্ঞাপন সংগ্রহ, টাকা তোলা সব কাজ একাই করতেন।পত্রিকা অফিস থেকে বেতন হিসাবে অনেক সময় তেমন কিছুই পেতেন না।
ললনায় কাজ করতে করতে ১৯৬৯ সালে বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ১৯৬৯ বের করেন শিলালিপি নামে একটি পত্রিকা ৷ নিজেই এটি সম্পাদনা ও প্রকাশনার দায়িত্ব পালন করেন ৷ শিলালিপি ছিল সেলিনার নিজের সন্তানের মত ৷ দেশের প্রায় সব বুদ্ধিজীবীদের লেখা নিয়ে প্রকাশিত শিলালিপি সকলেরই নজর কাড়লো স্বাধীনতার পক্ষের পত্রিকা শিলালিপি এই সুবাদে ঢাকার বুদ্ধিজীবী মহলে অনেকের সাথেই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেন তিনি৷
১৯৬৯-এর রাজনৈতিক আন্দোলনে উত্তাল বাংলাদেশ জাতির ক্রান্তিকাল নিজেও শরিক হন গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলন কর্মকাণ্ডে ছেলেকে সঙ্গে নিয়েই বেরিয়ে পড়তেন ‘৬৯-এর ২১ ফেব্রুয়ারি পল্টনের জনসভায় বা শহীদ মিনার থেকে বের হওয়া নারীদের মিছিলে যোগ দিতে শরিক হতেন বুদ্ধিজীবীদের প্রতিবাদে আর সভায়ও অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখদের সাথে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে সমাজতন্ত্রের প্রতিও আস্থাশীল হয়ে পড়েন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শিলালিপির উপরও নেমে আসে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর থাবা। হাসেম খানের প্রচ্ছদ করা শিলালিপির প্রকাশিতব্য একটি সংখ্যা নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান সরকার৷ শর্ত সাপেক্ষে আবার শিলালিপি প্রকাশের অনুমতি দেয় পাকিস্তান সরকার। ৭১ সালের আগষ্ট-সেপ্টেম্বরে তাঁর সম্পাদনায় বের করেন শিলালিপির শেষ সংখ্যা। কিন্তু এর আগের সংখ্যাই স্বাধীনতার স্বপক্ষের বুদ্ধিজীবীদের লেখা দিয়ে বের করায় আবার পাকিস্তান সরকারের রোষানলে পরেন সেলিনা পারভীন।
স্বাধীনচেতা,লড়াকু, আত্মপ্রত্যয়ী এমন লাখো সেলিনা পারভীনের জীবনের মূল্যে কেনা আমাদের এই বাংলা এই দেশ। renal scan mag3 with lasix
অংকুর বলছেনঃ
নাম না জানা এমন কত বীর সেনানী যে আছেন কে জানে! ধন্যবাদ ভাই। নতুন কিছু জানতে পারলাম
লাল সবুজের ফেরিওয়ালা বলছেনঃ can levitra and viagra be taken together
levitra 20mg nebenwirkungenপড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই wirkung viagra oder cialis