শেকড়ের সন্ধানে… (পর্ব-০১)
290
বার পঠিত“শেকড়ের সন্ধানে…” আমার নিজের তৈরি একটি ক্ষুদ্র ডকুমেন্ট। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বই, পত্রিকা, একাত্তরের ভিকটিমদের নিজ মুখের ভাষ্য, সহব্লগারদের দেয়া অনেক অজানা তথ্য একত্র করে একটা ডকুমেন্ট বানাতে চেষ্টা করছি নিজের জন্য, আমার ছোট দুইটা ভাই আছে- যারা এখনো এসব কিছুই বুঝে না ওদের জন্য; যাতে ওরা কখনই নিজেদের শেকড়ের সন্ধান পেতে ভুল না করে সেই জন্য, ওদের মতো আরও অনেক অনেক ছোট ছোট ভাই-বোন আছে আমাদের ওদের জন্য, সর্বোপরি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। আমি জানি, এটা খুব সহজ কাজ হবে না আমার পক্ষে। আমি হয়তো এটা ঠিকভাবে করতেও পারবো না। হয়তো আমার অনেক ভুল থাকবে, যেটা শুধরে দেবার দায়িত্ব আপনাদের
এই ডকুমেন্টের শুরুটা ছিল -
“জন্মকথা ‘ ১৯৭১: শেকড়ের সন্ধানে, হ্যাঁ আমাদের নিজেদের শেকড়ের সন্ধান বের করাই আমাদের উদ্দেশ্য। আর এর জন্য জানতে হবে ৪৪ বছরের পুরনো এক ইতিহাসকে, যে ইতিহাস আমাদের মানচিত্রের, আমাদের লাল সবুজ পতাকার, আমাদের ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের। আর সেই ইতিহাসের মাঝেই লুকিয়ে আছে আমাদের শেকড়…….”
এই কথাগুলোর মাধ্যমে। efek samping minum obat viagra
কাজটা আমি শুরু করেছিলাম এ বছরেরই ২৫ শে জানুয়ারীতে। মূলত, এই লেখাগুলো সংক্ষেপে আমার ফেসবুকে দিতাম আমি। কিন্তু আমি মনে করছি ঘটনাগুলো শুধু ফেসবুকে সীমাবদ্ধ না রেখে ব্লগেও দেয়া উচিৎ। আমার প্রতিদিনের সকল কাজের পাশে একটি করে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা জানাটাও প্রায় রুটিনের মতোই করে নিয়েছি। আর সেসব ঘটনা থেকেই ২/৩ টি করে ঘটনা থাকবে এই ধারাবাহিক পোস্টের প্রতিটি পর্বে।
শেকড়ের সন্ধানে-০১
সময়টা ১৯৭১। যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়। চারিদিকে আতংক।সারাদেশের মানুষের মতোই মনছুরা খাতুনও খুব শঙ্কিত তাঁর পরিবার পরিজন এবং অনাগত সন্তানকে নিয়ে। পৃথিবীতে তাঁর ১ম সন্তান আসছে, এই ভেবে একজন মায়ের যতোটা উচ্ছ্বাসিত হবার কথা তার চেয়ে হাজার গুন বেশি উদ্বিগ্ন মনছুরা। মনে একটাই প্রশ্ন শেষ পর্যন্ত তাঁর অনাগত সন্তানটিকে কি সে পৃথিবীতে আনতে পারবে ?
সেদিন সকালে আর ১০ টা দিনের মতোই ঘুম থেকে উঠে সংসারের কাজে ব্যস্ত মনছুরা। হঠাৎ কিসের যেন একটা শব্দে প্রচণ্ড আতংকিত হয়ে ছুটে গেল বৃদ্ধ শ্বশুরের কাছে। “আব্বা, আইতাছে ওরা…”
কিছু বুঝে উঠার আগেই দানবের মতো কয়েকটা লোক দাঁড়ালো মনছুরাদের উঠোনে। সামনে তাকাতেই সে দেখতে পেল হিংস্র নেকড়ের মতো কয়েকটা লোক এগিয়ে আসছে তাঁর দিকে। প্রায় আধ ঘণ্টা পাকি হানাদারগুলা হায়নার মতো মনছুরার শরীরটাকে ছিন্নভিন্ন করে ভোগ করলো। নিজের চোখের সামনে ছেলের বউয়ের এই পরিণতি দেখে জ্ঞান হারালেন মনছুরার বৃদ্ধ শ্বশুর। এখানেই শেষ নয়; এরপরে সেখান থেকে মনছুরাকে রংপুর টাউন হলে ১৯ দিন আটক রাখে পাকি জানোয়ারগুলো। এ সময় পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর বিভিন্ন অফিসাররা তাকে নিয়মিত ধর্ষণ করত।একটু একটু করে শেষ হয়ে যেতে লাগলো অনাগত সন্তানকে নিয়ে দেখা সকল স্বপ্ন। সে বুঝতে পেরে গেলো তাঁর বুকের মানিকের আর আসা হবে না এই পৃথিবীতে, আর কোনোদিন মা ডাক শুনবে না ওর মুখ থেকে। এবং তা-ই হল। মারা গেল মনছুরার গর্ভের নিষ্পাপ শিশুটি।
কোনোরকমে মরার মতো বেঁচে রইলো সে। পরবর্তীতে তাঁর কাছ থেকে জানা যায়- তাঁকে যে রুমে আটক রাখা হয়েছিল, ঐ রুমে আরও ১০/১২ জন যুবতী মেয়ে এবং পাশের রুমেও ১০/১২ জন যুবতী মেয়ে আটক ছিল। তাদের কারও পরনে সালোয়ার-কামিজ, কারও পরনে শাড়ি ছিল। তাদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের কথা বলতে দেয়া হতো না।
তাদের সেখানে আলবদর ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনী পাহারা দিয়ে রাখত। রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে গাড়িতে আর্মি অফিসাররা টাউন হলে আসত এবং মনছুরা ও আটককৃত যুবতী মেয়েদরকে এক এক রুমে নিয়ে পাকিস্তানী সেনারা একেকজনকে ২/৩ জনে পালাক্রমে ধর্ষণ করত। মনছুরা খাতুন যে টাউন হলে আটক ছিল সেই হলের অনেক সময়েই জানালার ফাক দিয়ে দেখতে পায় যে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও আলবদররা প্রতিরাতেই অনেক পুরুষ এবং মহিলাকে উলঙ্গ করে ঝুলিয়ে চাকু দিয়ে শরীর ক্ষতবিক্ষত করত। একটা টিনের কৌটায় এ্যাসিড দিয়ে একটা কাপড় পেঁচানো লাঠি ঐ এ্যাসিডের মাঝে ভিজিয়ে কাটা জায়গায় দিত, নাকে, মুখে, চোখে দিত, যৌনাঙ্গে দিত, এবং মরে গেলে লাশ উত্তর পাশের কূপ এবং ঝোপ জঙ্গলে ফেলে দিত।
শেকড়ের সন্ধানে-০২
“বেশ বড় একটা আগাছার বন,তারই মধ্যে লেপ,কাঁথা,বালিশ তোষক পাটে পাটে সাজানো;এগুলো ধর্ষণ বা নারী সঙ্গমের শয্যা।পাশেই বিশাল একটা গর্ত। যেসব মেয়েরা একটা পর্যায়ে নির্যাতিত হতে হতে একেবারে মৃত্যুর দোরগোড়ায় চলে যেতো এবং যারা অপারগতা প্রকাশ করতো তাঁদের বেয়ানট দিয়ে খুঁচিয়ে,জবাই করে কিংবা টুকরো করে কেটে ফেলে দেয়া হতো সেই গর্তে।কখনো কুকুর, কখনো শিয়াল কিংবা পোকামাকড়ের খাদ্য হতে হতো তাঁদের।দেশী-বিদেশী সাংবাদিকরা মেপেঝুপে হিসেব করে বলেছিল সেই গর্তে প্রায় সাড়ে চারশো থেকে- পাঁচশো মেয়েকে ফেলা হয়েছে।উক্ত গর্তের মধ্যে তাঁদের এলোমেলো চুল,লম্বা বেণী গাঁথা চুল,সায়া,শাড়ি,সালোয়ার,কামিজ,মাথা,হাড়,খুলি আধপচা মাংসসহ পোকা ঘিন ঘিন করা মাথা পাওয়া গিয়েছিলো।সেখানে আরও পাওয়া গিয়েছিলো কয়েক ঝুড়ি ভাঙা চুড়ি”
—— বাংলাদেশের গনহত্যা ১৯৭১, খালেক বিন জয়েনউদ্দীন সম্পাদিত।
সেদিন এক জায়গায় কথায় কথায় একজনকে বলেছিলাম মুক্তিযুদ্ধে বীরঙ্গনা মায়ের সংখ্যা অবশ্যই ছয় লাখ।সংখ্যাটি এর চাইতে বেশি হলেও কিছুতেই কম নয়।তাতে তাঁর কাছে আমার কথাকে “আবেগের অতিশয্য” মনে হয়েছে। হতেই পারে এবং আমি হলফ করে বলতে পারি এরকম অনেকের কাছেই মনে হয় সেই সাথে অনেকসময় তাঁরা সেই দুই লাখ হিসেবের সংখ্যা মেলাতে ক্যালকুলেটর নিয়েও বসে পরে।তাঁদের সাথে আমি তর্ক করার মতো কোন ইচ্ছেই প্রকাশ করি নাহ্। শুধু একটা প্রশ্নই তাঁদের করতে চাই যে, একটা ছোট্ট ঝোপের গর্ত থেকে যদি সাড়ে চারশো থেকে- পাঁচশো নারীর গলিত লাশ পাওয়া যায়, তবে এই ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের দেশটাতে তৈরি অসংখ্য গর্তে কতো নারীর লাশ পাওয়া যেতে পারে ?
[চলবে...]
ফাহমিদুল হান্নান রূপক বলছেনঃ
চমৎকার প্রচেষ্টা। চালিয়ে যান।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ propranolol clorhidrato 10 mg para que sirve
ধন্যবাদ
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
৭১ যাদের কাছে গল্প তাদের কাছে তো ৩০ লক্ষ শহীদ এবং ৪ লক্ষ মা বোনের ইজ্জত অবিশ্বাস্য ঘটনাই মনে হবে।আসলে এরা সবই জানে কিন্তু জেনেও সত্যকে মিথ্যা দ্বারা প্রতিষ্ঠা করার ব্যার্থ চেস্টা চালায়।যাই হোক আবারো বেশ ভালো কিছু তথ্য পেলাম এবং অসাধারন একটা উদ্যেগ আপনি নিয়েছেন,সে জন্য শুভকামনা রইল।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
আপনাকেও ধন্যবাদ রইলো।
অপার্থিব বলছেনঃ
অসাধারন উদ্যোগ …চালিয়ে যান …শুভ কামনা রইলো…
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ cuanto dura la regla despues de un aborto con cytotec
কৃতজ্ঞতা রইলো
মষ্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
বানিয়ে ফেলুন। শুভকামনা।
আমার তো পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র বানানোর ইচ্ছা।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
কতো কিছুই তো ইচ্ছে আছে, দেখা যাক কতোটুকু ইচ্ছের প্রতিফলন ঘটানো যায়…
মস্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
শুভকামনা
কৃষ্ণ গহ্বর বলছেনঃ
খুব ভালো একটা উদ্যোগ, চালিয়ে যান। শুভ কামনা।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
অশেষ ধন্যবাদ রইলো