মানুষ
413
বার পঠিতমানুষ হিসেবে আমি বেশ নির্লিপ্ত। কারও সাতে পাঁচে নেই। চার পাশে কত কী ঘটে গেল তাতে আমার কিচ্ছুটি আসে যায় না। আমার জগত একটা কম্পিউটার টেবিল আর বিকেল বেলা চায়ের আড্ডার মাঝেই সীমাবদ্ধ। বাইরের পৃথিবীটা দেখার ইচ্ছে আমার কোনোকালেই খুব বেশি ছিল না। ইচ্ছে ছিল না বাইরের মানুষদের জানারও। সারাটা জীবন কাটিয়েছি ওভাবেই। তবে, মাঝে মাঝে যে মানুষরূপী গরু ছাগল ভেড়ার সাথে দেখা হয়ে যেত না, তেমনটি নেই। হত। আমি মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনার ভান করতাম। এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কান দিয়ে বের করে দেয়ার মধ্যবর্তী যে সময়টুকু কথাগুলো আমার মাথার ভেতরে থাকতো, তার মধ্যে আমি জানতে পারতাম ধর্ম আর ধর্মগ্রন্থগুলো কত মহান জিনিস। জানতে পারতাম, বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক আবিষ্কারগুলো দেড়, দুই, আড়াই হাজার বছর আগে লেখা ঐশী গ্রন্থে লেখা আছে। শুধু তোমার একটা বাক্যের এক হাজার একটা অর্থ বের করে, সেই অর্থের সাথেও মিলাতে না পেরে সেই অর্থের আবার এক হাজার একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে কোনভাবে একটা যোগসূত্র এনে দিতে শিখলেই চলবে। জানতে পারতাম, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ-মাধ্যমিক এবং সাম্প্রতিক পৃথিবীতে গ্যাঞ্জামের অন্যতম প্রধান কারণ ধর্মগুলোর মধ্যে কত শান্তি নিহিত আছে। আমি আরও জানতে পারতাম, ধর্মের নামে যারা গ্যাঞ্জাম করে তারা কেউ সহীহ ধর্ম পালন করে না। সহীহ ধর্ম পালন করে কেবল দিনরাত ফেসবুক গুঁতানো, আট-দশটা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ঘোরা, জীবনে ধর্মগ্রন্থ খুলে না দেখা মানুষগুলা। আমি শুনতাম। শুনতাম আর হাসতাম। কিছু বলতাম না। কোনোকালে বলার ইচ্ছেও ছিল না। মানুষ মানুষের মত থাকুক, ছাগল ছাগলের মত — এটাই ছিল আমার নীতি। can zoloft cause skin rash
নীতিটা হঠাৎ করেই বদলে গেল বছর খানেক আগে। এইচএসসি পরীক্ষা তখন শুরু হতে যাচ্ছে। পরীক্ষার দুশ্চিন্তায় ত্রাহি ত্রাহি দশা। এর মধ্যে হঠাৎ খবর পেলাম সহব্লগার কাজী রায়হান রাহী (ইলেকট্রন রিটার্নস) এর ওপর ওদের কলেজেরই কিছু ছেলে হামলা করেছে। প্রেক্ষাপট ছিল কলেজ ম্যাগাজিনে বিজ্ঞানসম্মত ধর্মের থিওরি কপচানো নিয়ে হাসাহাসি। পুরোটা ঘটনা আশপাশের সব মানুষ শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখেছে। নিখাদ বাংলা সিনেমার মত রাহী আর তার সহপাঠী উল্লাসের ওপর হামলার পরে যখন পুলিশ সেখানে পৌঁছে তখন মগের মুল্লুকের মত তাদেরই গ্রেফতার করে। অভিযোগ — ধর্মানুভূতিতে আঘাত।
খবরটা যখন পাই, পরদিন আমার এইচএসসি পরীক্ষা শুরু। কিন্তু, সেটার কথা বিন্দুমাত্র আর আমার মাথায় থাকলো না। মাথার ভেতরটা পুরোপুরি ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। কোন অনুভূতি নেই। একটার পর একটা সিগারেট টেনে গেছি আর নিজেকে ইলেকট্রনের জায়গায় কল্পনা করেছি। স্রেফ কথা বলার ওপরে কেউ আমার ওপর প্রবল আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। আমি অসহায়ের মত চারদিকে তাকাচ্ছি। এত মানুষ। অথচ কেউ নেই!
পরদিন আমি পরীক্ষা দিতে হলে গিয়েছিলাম ঠিকই। শুধু শরীরটা গিয়েছিল। পরীক্ষার সময়ে একটা কাকের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। জানালার ওপারে একটা বৈদ্যুতিক তারের ওপর বসে ছিল সে। খুব হিংসে হচ্ছিল কাকটাকে। একটা কাক! কতটা স্বাধীন। তার স্বরে সে যা খুশি বলতে পারে। তার গলা টিপে ধরার কেউ নেই। অথচ মানুষ! কত অসহায়। একটা শব্দ উচ্চারণ করার আগে তাকে দু’বার ভাবতে হয়। একটা অক্ষর লেখার আগে তাকে কলম নিবৃত করতে হয়। বেঁচে থাকার জন্য কলমকে শেখাতে হয় শিম্পাঞ্জিদের আচরণবিধি। afssaps motilium
ঘটনাটার পরে আমি বদলে গিয়েছিলাম অদ্ভুত ভাবে। আগের নির্লিপ্ত খোলসটা শরীর আর তার চেয়েও তীব্রভাবে মন থেকে খসে গেল। আগে হয়তো সুশীল অবিশ্বাসী ছিলাম। সেই সুশীল মনোবৃত্তিটাও কেন যেন আর ধরে রাখতে পারলাম না। ধর্ম নামক জিনিসটার ওপরই একটা ঘেন্না ধরে গিয়েছিল। কোথাও এই নিয়ে গ্যাঞ্জাম দেখলেই সেখানে তর্কাতর্কি শুরু করে দিতাম। ভার্চুয়ালিটিতে কিংবা রিয়ালিটিতে। কত মানুষের সাথে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে, কত মানুষের সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে — সেটা স্রেফ আমি জানি। এক সিগারেট দু’জনে ভাগ করে খাওয়া বন্ধুটার মুখেও শুনতে হয়েছে, “তুই আমার সামনে আসিস না। তোরে আমার অনুরোধ, তুই আমার সামনে আসিস না। তোরে খুন করে ফেললেও আমার মধ্যে কোন অনুশোচনা থাকবে না।” ধর্ম শান্তির জন্য, মানুষ ধর্মকে খারাপ করে তোলে — এসব বস্তাপচা কথা শুনলেই কেন যেন আর সহ্য হত না। পরিণামে, অনেকের অনেকে হম্বিতম্বি শুনেছি। অনেক হুমকি শুনেছি। গা করিনি। বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই যেন তখন কর্পূরের মত উবে গিয়েছিল। দিনশেষে গর্তজীবী আমি আরও বেশি গর্তের মধ্যে ঢুকে গেলাম। হাতে গোণা কয়েকটা বন্ধু আর মাসে একবার তাদের সাথে আড্ডা — ওটাই ছিল আমার “নিজের মত করে” কথা বলার সুযোগ।
এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হতেই, শুরু হয়ে গেল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নামের এক অলিখিত যুদ্ধ। সেই যুদ্ধের ডামাডোলে পরিচিত ভার্চুয়াল জগত থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম। এখন পর্যন্ত ব্লগ কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াতে আগের মত নিয়মিত হইনি। সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিরুপদ্রব একটা জীবন।
তার মধ্যে হঠাৎই একটা ঝটকা এলো গত মাসের আটাশ তারিখ। সুন্দরবন ঘুরে এসে মাত্রই আন্তর্জালে প্রবেশ করেছি। প্রবল বৃষ্টিস্নানের উচ্ছ্বাসে হঠাৎ বজ্রপাতের মতই। একটা মানুষের মৃত্যু সংবাদ। মানুষটাকে আমি কখনও দেখিনি। এমন কি তার ছবিও না। সে কী, সে কেমন — তা নিয়ে বিন্দুমাত্র জানাশোনা আমার ছিল না। আমি শুধু তার বই আর ব্লগপোস্ট পড়েছি। আমি শুধু তার নামটা জানতাম — অভিজিৎ। সেই মানুষটাকে প্রকাশ্য জনসম্মুখে হত্যা করা হয়েছে নির্দয়ভাবে। সাথে ছিল তার স্ত্রী বন্যা। কুপিয়ে জখম করা হয়েছে তাকেও। আমি হঠাৎ করেই আবিষ্কার করি, অভিজিতকে হত্যায় বাংলাদেশের জ্ঞান বিজ্ঞান কয়শো বছর পিছিয়ে গেল, সে নিয়ে আমার কোন আফসোস নেই, তার মত দ্বিতীয় একজন বিজ্ঞান লেখক পেতে আমাদের আরও কত বছর লাগবে সে নিয়ে আমার কোন চিন্তা নেই, হঠাৎ করেই আমি কেবল আমার গলা অবধি প্রবল আতঙ্ক আর বেঁচে থাকার প্রগাঢ় আকাঙ্ক্ষা অনুভব করতে থাকি।
হঠাৎ করেই আমার ভেতরের স্বাধীনচেতা মননটা কিভাবে যেন চুপসে গেল। সিজোফ্রেনিক রোগীর মত চারপাশের সবাইকে মনে হতে থাকে, সবাই আমার শত্রু। সবাই আমাকে মেরে ফেলতে চায়। আমি একা এক বিপদসংকুল অরণ্যের মাঝে পড়ে আছি। হঠাৎ করেই আমার বাঁচার ইচ্ছেটা প্রবল হয়ে ওঠে। সেই বেঁচে থাকা সিংহের মত হোক কিংবা ইঁদুরের মত। কিচ্ছু এসে যায় না, আমি শুধু বেঁচে থাকতে চাই।
হঠাৎ করেই আমি আবিষ্কার করি, আমি এতটা দিন ধরে যাদের মানুষ ভেবে এসেছি, তাদের মধ্যে মানুষের চেয়েও তাদের ধার্মিক সত্ত্বাটা আরও প্রবলভাবে বিরাজমান। তারা মানুষ দেখার আগে দেখে ধর্ম, আগে দেখে বিশ্বাস। মানুষ পরিচয়টা সবার পরে। আমি হঠাৎ করেই আবিষ্কার করি, এখানে সবচেয়ে বড় পাপ “কথা বলা”। এখানে সবচেয়ে বড় অন্যায় “লেখা”। সে হোক ব্রুনো কিংবা কোর্পানিকাস। সে হোক হুমায়ুন আজাদ বা অভিজিৎ। পাপের প্রতিবিধানের জন্য এখানে কেউ ঈশ্বরের ওপর নির্ভরশীল নয়। এখানে সবাই নিজেকে ঈশ্বর ভাবে। এখানে সবাই নিজেই পাপের প্রতিবিধান করে। prednisone hives come back
হঠাৎ করেই আমি নিজেকে অভিজিতের জায়গায় আবিষ্কার করি। আমার সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। মানুষের চামড়ার নিচে কিছু ধর্মানুরাগী আমাকে কুপিয়ে যাচ্ছে। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার ভালবাসার মানুষটাও রেহাই পাচ্ছে না। তার সারা গায়ে ছোপ ছোপ রক্ত। সে তার স্বরে চিৎকার করছে। চারপাশে এত মানুষ। চারপাশে কেউ নেই। তার চিৎকার সবাই শুনছে। তার চিৎকার কেউ শুনছে না। আমি দেখতে পাই, রাস্তার মাঝখানে আমার মৃতদেহ পড়ে আছে। মাথাটা থেঁৎলে দেয়া। মাংস কেটে পিঠের হাড় বেরিয়ে আছে। সবাই দেখছে ওখানে একটা মৃতদেহ পড়ে আছে। একটা নাস্তিকের মৃতদেহ। কেউ দেখছে না, ওখানে একটা মানুষ পড়ে আছে।
quanto custa viagra pramil
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
doxycycline monohydrate tab 100mgকিছু বলার নেই……
মষ্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
comprar viagra embalagem discretaএখানে সবচেয়ে বড় পাপ “কথা বলা”। এখানে সবচেয়ে বড় অন্যায় “লেখা”। সে হোক ব্রুনো কিংবা কোর্পানিকাস। সে হোক হুমায়ুন আজাদ বা অভিজিৎ।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ openwetware ampicillin
মিনহাজ শিবলির কবিতা না?
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
আমার জানামতে না। লাইনগুলো স্বকীয়। liquid tadalafil
তারিক লিংকন বলছেনঃ
কেবলই দীর্ঘশ্বাস!!
এই জঙ্গিরা মূর্তি ভেঙ্গে এমন এক ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছে যা মনুষ্যত্বকেই দুমড়ে মুচড়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত… আপনার অনুভূতি নয় যেন নিজের কথাই পড়লাম আরেকজনের লিখনিতে… impotenza psicologica e viagra
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
আসলে আমাদের সবার অনুভূতিটা দিনশেষে একই রেখায় গিয়ে মেশে। একই দিগন্তরেখায়। রক্তলাল দিগন্তরেখায়।