পতাকার জন্য লড়াই করে যাওয়া এক সংশপ্তকের উপাখ্যান…
বার পঠিত১৯৮৩ সালের অক্টোবরের ৫ তারিখে নড়াইল জেলার চিত্রা নদীর তীরে এক শ্যামল গ্রামে জন্ম হয় কৌশিক নামের এক ডানপিটে ছেলের। খুব ছোটবেলার থেকেই কৌশিক ছিল প্রচণ্ড দুরন্ত আর চঞ্চল। চিত্রা নদীতে যখন তখন ঝাঁপ দেয়া ছাড়া কৌশিক খেলাধুলায় ছিল খুবই ভালো। ফুটবল আর ব্যাডমিনটন ছিল সবচেয়ে প্রিয় খেলা। ধীরে ধীরে বড় হতে হতে পছন্দ বদলে গেলো তার। ক্রিকেট নামের একটা খেলা তার চিন্তাচেতনার প্রায় পুরোটাই দখল করে ফেলল। অনূর্ধ্ব ১৯ দলে রীতিমত আগুন ঝরাতে শুরু করল হালকাপাতলা ডানপিটে কৌশিক। একপর্যায়ে চোখে পড়ে গেল বাংলাদেশের তৎকালীন কোচ এবং ওয়েস্টইন্ডিজের গ্রেট লিজেন্ড অ্যান্ডি রবার্টসের। জহুরি জহুর চিনতে কখনও ভুল করে না। আর তাই বড়ই বিস্ময়করভাবে ২০০১ সালের ৮ই নভেম্বর তৎকালীন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নড়াইলের সেই তরুন কৌশিককে লাল বল হাতে দৌড়াতে দেখা গেল। অথচ এই অভিষেক টেস্টটি একই সাথে কৌশিকের অভিষেক প্রথম শ্রেণীর ম্যাচও বটে!! পৃথিবীর ৩১তম ক্রিকেটার ও ১৮৯৯ সালের পর ৩য় ক্রিকেটার হিসেবে কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ না খেলেই টেস্ট অভিষেক হওয়া কৌশিক যে আসলেই একটা অনন্য প্রতিভা, তার প্রমান পাওয়া গেলো একটু পরেই। কৌশিকের জীবনের প্রথম শিকার হবার পর গ্রান্ট ফ্লাওয়ারের বিস্ময়কর চাহনিই বলছিল, কি এক অবিস্মরণীয় ক্রিকেটারের আগমনী বার্তা শুনছে ক্রিকেট বিশ্ব। বৃষ্টির বাগড়ায় এক ইনিংস বল করতে পারা কৌশিক অভিষেকে সবমিলিয়ে ১০৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিজের জাত চিনিয়ে দিল। একই বছরের ২৩শে নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হল কৌশিকের। টেস্টে যেখানে ষে শেষ করেছিল, ঠিক সেইখান থেকেই আবার যেন শুরু হল। মোহাম্মদ শরীফের সাথে বোলিং ওপেন করে সে যে গোলাগুলো ছুড়তে শুরু করল, তার কোন জবাব ছিল না জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যানদের কাছে। কিন্তু বিধাতা তখন বোধহয় অলক্ষ্যে মৃদু হেসেছিলেন। নিউজিল্যান্ডের সাথে ৩য় টেস্টে বিধ্বংসী বোলিং করতে থাকা কৌশিক হঠাৎ হাঁটুতে প্রচণ্ড আঘাত পেল। ধরাধরি করে মাঠের বাঈরে নেয়া হল। তখন কি কৌশিক জানত, তার অকল্পনীয় সংগ্রামের মাত্র শুরু ছিল সেটা… pills like viagra in stores
///একটা সময় ক্রিকেট মানেই এই দেশে ছিল ভারত আর পাকিস্তান। ক্রিকেট হলে বাংলাদেশ দুই ভাগ—কেউ ভারতের সমর্থক, কেউ পাকিস্তানের। কারও ঘরে ইমরান খানের পোস্টার তো কারও দেয়ালে কপিল দেব…
অবস্থা বদলাতে শুরু করল বাংলাদেশ দল ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জেতার পর। ক্রিকেট নিয়ে আমাদের উন্মাদনার শুরু তখনই। ভারত-পাকিস্তান বা বিদেশি ক্রিকেটের সুবাদে এ দেশের মানুষের কাছে ক্রিকেটের একটা প্রেক্ষাপট আগে থেকে তৈরি হয়ে থাকলেও বাংলাদেশের মানুষ ক্রিকেটকে নিজেদের ভাবতে শুরু করে তখন থেকে///
প্রায় দুটো বছর মাঠের বাইরে থাকল কৌশিক। ক্রিকেটকে যার হৃদয়ের গভীরে গেঁথে গেছে, তার জন্য মাঠের বাইরে বসে থাকা যে কতটা কষ্টের, একমাত্র সে ছাড়া সেটা বোঝা অসম্ভব। ভয়াবহ সে ইনজুরিকে পরাজিত করে অদম্য মনোবলের অধিকারী কৌশিক মাঠে ফিরল ২০০৩ সালে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২য় টেস্টে। আর ফিরেই বাঘের গর্জনে সে বুঝিয়ে দিল, তার জন্ম বিনা কারণে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্জয় বীরের দেশে হয়নি। ইংল্যান্ডের বিশ্বখ্যাত লাইনআপ তার একেকটা আগুনের গোলার সামনে জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যেতে লাগলো। চিরকালই নাকউঁচু ইংলিশদের চোখে প্রথমবারের মতো এক অজানা বিস্ময় ও আতঙ্ক ভর করল। মাত্র ৬০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে টপ ও মিডলঅর্ডার ধ্বংস করে দিল কৌশিক। কিন্তু সে তোঁ আর ১০ জন সাধারন মানুষ না, তাই ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ঠিক যে হাটুঁটায় কয়েকদিন আগে অপারেশন হল, সেখানেই আবার চোটে মাঠের বাইরে চলে যেতে হল তাকে। প্রায় এক বছর অমানুষিক চেষ্টায় আর পাথরকঠিন সংকল্পের পর কৌশিককে আবার দেখা গেল ভারতের বিপক্ষে ২০০৪ সালের সিরিজে।
///আইসিসি ট্রফি জেতার পর বড় একটা ধাপ এগিয়ে গিয়েছিলাম আমরা। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেখানো চমক, পরের বছর টেস্ট মর্যাদা পাওয়া—বাংলাদেশের ক্রিকেট খুব দ্রুত অনেকটা পথ এগিয়ে যায়। দিনে দিনে এখন সেটা আরও এগিয়ে। এ দেশের মানুষ এখন আর বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে ভারত-পাকিস্তানকে সমর্থন করে না। ক্রিকেটে তাদের চিন্তাভাবনা বাংলাদেশকে ঘিরে। অন্য দলের খেলোয়াড়দের চেয়ে সাকিব, তামিমের ভক্তই এখন বেশি বাংলাদেশে। শক্তি-সামর্থ্য যতটুকুই থাকুক, ক্রিকেট হলে এখন পুরো জাতি আমাদের দলের দিকেই তাকিয়ে থাকে। আমরা কী করছি, কী করব তা নিয়েই ভাবে। ক্রিকেটাররা খারাপ কাজ করলে সেটাকে তারা ভালোভাবে দেখে না, ভালো কাজ করলে প্রশংসা করে। যেন এটাই আমাদের করা উচিত। ক্রিকেটের অবস্থান অনেক ওপরে উঠে গেছে এই দেশে///
এমন ভয়াবহ দুটো আঘাতের পরও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করা এক বীরযোদ্ধাকে দেখা গেল ভারতের বিপক্ষে। “দা ওয়াল” খ্যাত রাহুল দ্রাবিড়ের অফস্ট্যাম্প অকল্পনীয়,অভাবিত এক ইনসুইংইয়ে উড়িয়ে নিজের রাজসিক প্রত্যাবর্তন ঘোষণা করল কৌশিক। ফিল্ডাররা মাখনমাখা হাতে একের পর এক ক্যাচ মিস না করলে হয়তো সেদিন পৃথিবীবিখ্যাত ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ এক নিদারুন লজ্জার সম্মুখীন হত। তারপরই এলো সেই ২৬শে ডিসেম্বর। ভারত মহাসাগরে তৈরি হওয়া শতাব্দীর অন্যতম ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানল এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। ঢাকায় সেদিন বাংলাদেশ আর ভারতের প্রথম ওয়ানডে। বাংলাদেশের করা ৫০ ওভারে ২২৯ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমেছে ভারত। স্ট্রাইক এন্ডে তখনকার মারকুটে জল্লাদখ্যাত বীরেন্দর শেওয়াগ। ঠোঁটে বরাবরের মতই এক উদ্ভট তাচ্ছিল্যের হাসি। বোলিং প্রান্তে দৌড় শুরু করেছে কৌশিক। রয়েল বেঙ্গলের হাত থেকে বেরিয়ে এলো এক ভয়াবহ গোলা। স্বভাবসুলভ মারকাটারি ভঙ্গিতে ব্যাট চালালেন সেওয়াগ। অদ্ভুত এক শব্দ এলো পেছন থেকে। যতক্ষণে সেওয়াগ পিছনে তাকিয়ে দেখছেন তার তিনটে স্ট্যাম্প কিভাবে ছত্রখান হয়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে, ততক্ষনে কৌশিক হাত দুটো দুপাশে মেলে ছুটে যাচ্ছে। আর তার পেছন পেছন ছুটছেন বাকিরা। সেওয়াগের অবিশ্বাসের দৃষ্টি ওখানেই শেষ হয়ে যায়নি। বরং সেটা ছিল শুরু। দুটো গুরুত্বপূর্ণ উইকেট কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলির অবিশ্বাস্য ক্যাচ – এরকম অভূতপূর্ব কিছু পারফমেন্সের চেয়েও সেদিন কৌশিকের ম্যান অফ দা ম্যাচ হবার পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো রাজকীয় অ্যাটিচিউড। যা আজ পর্যন্ত ক্রিকেট মাঠে খুব কমই দেখা গেছে।
///আমরা ক্রিকেটাররাও চেষ্টা করি মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে। দেশ আর জাতির প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধের প্রকাশ ঘটাতে চাই সাফল্যের লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে। বিদেশের মাটিতে খেলতে গিয়ে যখন বাংলাদেশের পতাকা পতপত করে উড়তে দেখি, গায়ের পশম দাঁড়িয়ে যায়। আমাদের প্রিয় পতাকা অন্য দেশে ওড়ার সুযোগ খুব কমই পায়। হয়তো প্রধানমন্ত্রী কোথাও গেলে ওড়ে, কিংবা আন্তর্জাতিক কোনো সম্মেলনে। আর ওড়ে খেলার মাঠে, স্টেডিয়ামের হাজার হাজার দর্শকের সামনে। বিশ্বকাপে খেলার সময় সারা বিশ্বের মানুষ দেখে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা। নিজে ক্রিকেটার বলে বলছি না, সারা বিশ্বে দেশকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটা একমাত্র ক্রিকেটই পারে। আমি, সাকিব, মুশফিক বা তামিম তো আলাদা কেউ না। আমাদের দেশটাই যায় খেলতে। ভালো-খারাপ পরের বিষয়। আমাদের দেশকে সবাই চিনছে, দেশের পতাকা উড়ছে—এটা আলাদা একটা গর্ব। দেশের পতাকা বয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক বড় পাওয়া। খেলার মাঠে যখন জাতীয় সংগীত বাজে, অনেক সময় কান্না চলে আসে। লাল-সবুজ পতাকা উড়ছে, লাউড স্পিকারে বাজছে ‘আমার সোনার বাংলা’…ওই জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে থাকি! না বললে কেউ বুঝবে না বুকের ভেতর কেমন উথালপাতাল ঢেউ ওঠে তখন///
তার পরের দুটো বছর তিনটা বছর কাটল স্বপ্নের মত। শুধু কৌশিকেরই না, পুরো বাংলাদেশের দলেরই। এরমাঝে ২০০৫ সালে পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়াকে বধ, ২০০৬ সালের ক্রিকেট পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশী ৪৯ উইকেট শিকার আর ২০০৭ সালের সেই অবিস্মরণীয় বিশ্বকাপ। কৌশিক হয়ে উঠল বাঙলার দামাল টাইগার্সের প্রতিশব্দ। কিন্তু এরমাঝেও ইনজুরি তাকে ছাড়েনি। ২০০৯ সালে অধিনায়ক হিসেবে ওয়েস্টইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে আবারও গোঁড়ালিতে প্রচণ্ড আঘাত পেল কৌশিক। বোধহয় পৃথিবীর একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচেই চলে যেতে হল মাঠের বাইরে। এখানেই শেষ না, ২০১০ সালে যখন অধিনায়ক হিসেবেই আবার নিউজিল্যান্ড সিরিজে দায়িত্ব দেয়া হল কৌশিককে, ইনজুরি এখানেও তার পিছু ছাড়ল না। প্রথম ওয়ানডেতে সেই পুরনো জায়গায় আবার আঘাত পেল সে। আর এই আঘাতটাই শেষ করে দিল খুব পুরনো এক স্বপ্ন।
///টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে এবার শ্রীলঙ্কায় গেলাম। এক জায়গায় খেতে গিয়ে হল্যান্ডের দুই তরুণীর সঙ্গে কথা হলো। তাদের একজন আমার কাছে জানতে চাইল, ‘কোন দেশ থেকে এসেছ।’ আমি বাংলাদেশ বলার পর বলল, ‘তোমরা অনেক গরিব তাই না…।’ বললাম, কথাটা পুরোপুরি ঠিক নয়। তার পরও সে বলতে থাকে, ‘আমরা তো জানি, তোমাদের দেশে খালি বন্যা হয়। মানুষ খেতে পায় না।’ আসলে অনেকেই আমাদের দেশকে চেনে এভাবে। এই দেশে অপরাধ বেশি, দূষণ বেশি—এখানে যারা কাজ করতে আসে, তারাও এসব অভিজ্ঞতাই নিয়ে যায়। তার পরও সান্ত্বনা, ক্রিকেটের কারণে বাংলাদেশকে তারা ইতিবাচকভাবে চিনছে। সাফ গেমস বা অলিম্পিকই বলুন বা আমাদের ফুটবল-হকি দল, তারাও দেশের পতাকা নিয়ে বাইরে যায় এবং আমি তাদের জন্যও গর্ববোধ করি। কিন্তু ক্রিকেটের খোঁজখবর অনেক বেশি মানুষ রাখে। আমরা ভালো খেললে বহির্বিশ্বের মানুষ নেতিবাচক দিকগুলো ভুলে গিয়ে ভাবতে পারে, বাংলাদেশে ভালো কিছুও আছে। এই দেশের ছেলেরা অন্তত ক্রিকেট ভালো খেলে। হ্যাঁ, খেলা তো আর শুধু আবেগ দিয়ে হয় না। হয়তো আমরা সব সময় ভালো খেলতে পারি না। তবে খেলা দিয়ে আমরাও পারি ভিনদেশি মানুষের আবেগকে নাড়া দিতে///
কৌশিকের ইচ্ছা ছিল দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলার। কিন্তু নির্দয় স্রষ্টা নিদারুন নির্মমতায় তার লীলাখেলার একের পর এক বলি বানিয়ে যেতে থাকলেন কৌশিককে। কিন্তু কৌশিক থামে নি। কৌশিক হাল ছেড়ে দেয়নি। প্রায় ৬ বার বামপায়ে এবং তিনবার ডান পায়ে অপারেশনের পরও আজো কৌশিক ফিরে আসে। এক অকুতোভয় সংশপ্তক হয়ে ফিরে আসে বারবার বাঘের গর্জনে। কিভাবে সম্ভব এটা? কোন প্রেরনায় সে এভাবে বার বার ফিরে আসে? তার জবানিতেই শোনা যাক…
///ক্রিকেটে জয়-পরাজয় সবকিছুই দেশকেন্দ্রিক। আমরা খেলি পতাকার জন্য, ‘আমার সোনার বাংলা’র জন্য। আমি জাতীয় দলে প্রথম সুযোগ পাই ২০০১ সালে। কিন্তু বাংলাদেশ কী, বাংলাদেশের হয়ে খেলাটা কী, সেসব বুঝি আরও পরে। ২০০৩ বিশ্বকাপে যখন আমি বলটা প্রথম ধরি, বল করতে পারছিলাম না। কাঁদছিলাম। সেই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। বিশ্বকাপ হচ্ছে। বিশ্বকাপে আমি দেশের হয়ে বল করছি। অবিশ্বাস্য লাগছিল নিজের কাছেই। অথচ তার আগে দুই বছর জাতীয় দলে খেলেছি। আমি কিসের ভেতর আছি, সেই অনুভূতি এল দুই বছর পর! দক্ষিণ আফ্রিকায় দাঁড়িয়েও বুঝতে পারছিলাম বাংলাদেশের প্রতিটা মানুষ টেলিভিশনের দিকে তাকিয়ে, আমার দিকে তাকিয়ে। সেই রোমাঞ্চ ভোলার নয়। উত্তেজনায় প্রথম বলটা ওয়াইডই করে বসেছিলাম বোধ হয়।
সেদিন প্রথম বুঝি, দেশ আছে বলেই আমি আছি। টেলিভিশনে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস বা একুশে ফেব্রুয়ারির যেসব অনুষ্ঠান দেখায়, আমি সব দেখি। এগুলো তো অনেক পরে তৈরি করা জিনিস, তার পরও ওই সময়ের কথা মনে হলে আমার খারাপ লাগে। তাঁরা দেশের জন্য কী করে গেছেন আর আমরা কী করছি? তাঁদের জন্যই তো আমরা আজ অন্যের জুতা পরিষ্কার করছি না। ম্যাচ জিতলে সবাই বলে আমরা নাকি বীর। আসল বীর তো তাঁরা!
বারবার ইনজুরি থেকে ফিরে আসার প্রেরণাও পাই সেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকেই। এমনও ম্যাচ গেছে আমি হয়তো চোটের কারণে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছিলাম না। দুই-তিনটা বল করেই বুঝতে পারছিলাম সমস্যা হচ্ছে। তখন তাঁদের স্মরণ করেছি। নিজেকে বলেছি, ‘হাত-পায়ে গুলি লাগার পরও তাঁরা যুদ্ধ করেছিলেন কীভাবে? তোর তো একটা মাত্র লিগামেন্ট নেই! দৌড়া…
দেশের পতাকা হাতে দেশের জন্য দৌড়ানোর গর্ব আর কিছুতেই নেই। পায়ে আরও হাজারটা অস্ত্রোপচার হোক, এই দৌড় থামাতে চাই না আমি///
লেখাটার মাঝে কোট করা অংশগুলো মাশরাফির নিজের বলা কথা, প্রথম আলোতে দেওয়া সাক্ষাৎকার, পুরোটাই তুলে দিয়েছি…
মুক্তিযুদ্ধে দুই নম্বর সেক্টরের ক্র্যাক প্লাটুনের বঙ্গশার্দূল মাস দেড়েক আগে মাশরাফি সম্পর্কে সুপারকপ Mashroof ভাইকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “মাসরুফ, মেজাজ যে খারাপ হয়না তা না, দেশের অবস্থা দেখে মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে শালার আবার নামি যুদ্ধে, একাত্তরে যেই হারামীগুলো বাদ আছিল সেইগুলা ক্লিন আপ করি| কিন্তু এমন ঘটনাও ঘটে যখন আবার মনে হয় , না, এই যুদ্ধের জন্য যোগ্য লোক আছে, আমাদের বুড়াদের চিন্তা নাই| সেদিন ওই যে লম্বামত ছেলেটা, মাশরাফি, ওর কথা পড়লাম| পায়ের লিগামেন্ট ছেড়ার ব্যাথা এই ছেলে নাকি ভুইলা যায় পায়ে গুলি খাওয়া মুক্তিযোদ্ধার কষ্টের সাথে নিজেকে তুলনা করার সাথে সাথে! ছেলেটার কথা শুনে গায়ের পশম দাড়ায়ে গেসে বুঝলা মাসরুফ, বলে কি এই ছেলে! এ তো সেই মুক্তিযুদ্ধের আগুন, এই আগুন এই পিচ্চিরা এইভাবে জ্বালায়ে রাখসে!
“বুঝলা মাসরুফ, দেশ স্বাধীন করে কাজটা মনে হয় খারাপ করিনাই”-
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
Fantastic! as always. a question. is he as well as you really human?
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
lasix dosage pulmonary edemaমাই কোসচেন অলসো…
তারিক লিংকন বলছেনঃ domperidona motilium prospecto
কেবলই স্যালুট… ইমো কই আদিসভ্য সাহেব?
ধন্যবাদ ডন ভাই
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
দেখিয়ে দিক বাঘের গর্জন
জন কার্টার বলছেনঃ cialis 20 mg prix pharmacie
viagra lowest priceযেতে হবে অনেকদূর! স্বপ্ন কে ছুতে হবে! :স্যালুট:
অপার্থিব বলছেনঃ
বাংলাদেশের সবচেয়ে নিবেদিত প্রাণ ক্রিকেটার হল মাশ রাফি । ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে এক জন ফাষ্ট বোলারের যে রকম পরিচর্যা ও ফিজিক্যাল ডেভেলপ ম্যান্ট প্রয়োজন দুর্ভাগ্য জনক ভাবে সে তার কিছুই পায়নি। এত ঘন ঘন ইনজুরির এটাই হয়তো প্রধান কারন ।বারবার ইনজুরির শিকার না হলে সে হয়তো বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ফাষ্ট বোলারদের তালিকায় থাকতো।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ ampicillin working concentration e coli
sito sicuro per comprare cialis genericoইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ
মাশরাফি। বাংলাদেশ ক্রিকেটে আমার প্রথম ভালোবাসার নাম। লিখাটা আগেও আপনার ফেসবুক ওয়ালে পড়েছি। আবার পড়লাম। দারুণ!
মষ্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
দেশপ্রেম আর অনুপ্রেরণা’র উদাহরণের জন্য দূরে তাকাতে হয় না। মাশরাফি নিজেই সাক্ষাত সে অনুপ্রেরণা।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
একজ্যাক্টলি