গার্ডিয়ান সমস্যা
249
বার পঠিতপাবলিক লাইব্রেরি থেকে বের
হয়ে হাটছে অনিরুদ্ধ। হঠাৎ তার চোখ
গেল আর্টস বিল্ডিংয়ের পাশের
রাস্তায়,
একা একা হেটে যাচ্ছে ঊষা।
প্রতিদিন অনিরুদ্ধ একা থাকলেও
ঊষাকে এর আগে কখোনই
দেখে নি অনিরুদ্ধ,
সানজিদা নামের একটা মেয়ে ওর
সাথেই থাকে…অনিরুদ্ধ
জানে ঊষা ঢাকায় থাকে মামার
বাসায়, মনিপুরীপাড়া। আজ
অনিরুদ্ধেরও একটা কাজ
আছে ফার্মগেট। ছিঁড়ে গেছে বেল্ট
আর চয়ন মামার বার্থডে, অনেকদিন
মামার সাথে দেখা হয়
না অনিরুদ্ধের।
অনিরুদ্ধের
ইচ্ছা হলো ফার্মগেট যাবার কারন
একটাই… যেহেতু গন্তব্য একই।
বেশ কিছুদুর হেটেই বাসে উঠে বসল
ঊষা।তারপর সামনের গেট দিয়ে উঠল
অনিরুদ্ধ আর রাহাত, রাহাত
অনিরুদ্ধের প্রায় সব
খুঁটিনাটি জানে। দুর্ভাগ্য
অনিরুদ্ধের, ঊষা ওঠার পূর্বে শুধু মাত্র
একটি বসার আসুনই ফাঁকা ছিল, এক
মেয়ের পাশে।ঊষা তা পূরন
করেছে আর এমনিতেই অনিরুদ্ধ
অতিপরিচিত মেয়ে ছাড়া কোন
মেয়ের পাশে বসে না।
যথারীতি মুড়ির টিন মার্কা ঐ
গাড়িতেই ঊষা থেকে ৩ ফুট মত
দুরে দাঁড়ালো অনিরুদ্ধ। রাহাত
কিছুটা দুরে চলে গেছে জনচাপে।
লুকিং গ্লাসে অপবর্তন, সমাবর্তন আর
প্রতিবিম্বের
মাধ্যমে ঊষাকে দেখার
চেষ্টা করছে অনিরুদ্ধ।
বেশ সাহসী ছিল আজ সে, বিশেষ
করে ঊষা একা থাকায়।
এমনটা সাধারণত হয় না, গার্ডিয়ান
লেগেই থাকে। হঠাৎ অনিরুদ্ধের
সাহসে আচমকা ছেদ ঘটল, ঊষার
মামার মেয়ে অর্থাৎ মামাতো বোন
সুমনা স্বয়ং উপস্থিত
হয়েছে গার্ডিয়ান হিশেবে।
অনিরুদ্ধ নিজেকে এবার
কিছুটা গুছিয়ে নিলো।
মামাতো বোন তার
পিষতুতো বোনকে আড়াল করার
চেষ্টা চালালো।ঊষা বসতে বললেও
বসল না সুমনা।জনস্রোতে এমনিতেই
ঝামেলা হচ্ছে আর তার
উপরে গার্ডিয়ান!
বাংলামটরের
কাছাকাছি গাড়ি কিন্তু
মনে হচ্ছে সব জনগন ফার্মগেট নামবে,
কমার জো পর্যন্ত নেই! সবাই মনে হয়
ফার্মভিউ মার্কেট আর ছন্দায় যাবে!
লুকিয়ে টুকিয়ে ঊষাকে দেখছিলো অনিরুদ্ধ,
গার্ডিয়ানের দু’চোখ ফাঁকি দিয়ে।
বড় ঝামেলায় পড়ল অনিরুদ্ধ, পাবলিক
বাসে এমনিতেই এলার্জি আছে তার
উপরে মাইগ্রেন সমস্যা, স্নায়ু
কোষগুলা অল্পতেই ঝামেলা শুরু করে।
ডাক্তার বলেছিল
বিশ্রামে থাকতে কিন্তু……………।
যাহোক
বাংলা মটরে এসে কিছুটা ফাঁকা হলো গাড়িটা।
ঊষার পিছনের, বামের আর
বামপার্শ্বের পিছনের
আসনগুলি ফাঁকা।গার্ডিয়ানের
প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে অনিরুদ্ধ
বামপার্শ্বের পিছনের আসনে বসল।
যদিও এ বসায় রাহাতের
ভূমিকা অনেক।
জনস্রোতকে এক্সরে করে অনিরুদ্ধের
একজোড়া চোখ
খুঁজে ফিরছে ঊষাকে।
ব্যস্ত রাস্তার বারংবারের হর্ন
বিরক্ত করছে অনিরুদ্ধকে।এই
জিনিসটা খুব ছোট বেলা থেকেই
নাকি অনিরুদ্ধকে জ্বালা দিতো।
যখন তার বয়স ১ বছর, তখন তার বাবা-
মা নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে যাত্রাবাড়ী যাবার সময়
প্রতিদিন ঘুম পাড়িয়ে নিয়ে যেত।
আর সেই আদুরে অনিরুদ্ধ
ঘুমাতো বাবার কোলে,
ঘাড়ে মাথা দিয়ে। অনিরুদ্ধের
বাবাকে খুব মনেপড়ে তার। ৯ বছর
আগে হারিয়েছে সে। এখন
অনিরুদ্ধের মাথায় এসব আসে না।
জনস্রোত উপেক্ষা করে তার চোখ
খুঁজছে ঊষার দুটি চোখ, চাঁদবদন মুখ,
সুঁচালো আঙুল……….
ইতোমধ্যে বাস ফার্মগেট পৌছেছে,
সবাইকে নামতে হলো- অনিরুদ্ধ,
রাহাত, ঊষা আর সুমনা।অনিরুদ্ধ
ইলেকট্রনের মতো নিজের কক্ষপথেই
আবর্তন করলো কয়েকবার।
ঊষা রাস্তার বামে রিচার্জ
পয়েন্টে গিয়েছে। অনিরুদ্ধের
পুরাতন এক বন্ধুর সাথে ওর দেখা হলো।
সে তেজগাঁও কলেজের ছাত্র।কিছু
কথাও বলল তিনজনে।ইতোমধ্যে লক্ষ্য
করল, ঊষারা হাটছে। অনিরুদ্ধ এবার
সম্মুখ দিকে যাবে। ঊষা আর তার
গার্ডিয়ান বুঝতেই
পারছে না কোনদিকে যাবে…….
অনিরুদ্ধের সহজ ইচ্ছা ফার্মভিউয়ের
নিচতলা থেকে দুই পাউন্ডের
মধ্যে একটা কেক নিয়ে যাবে,
মামার বার্থডে বলে কথা।গতকাল
অর্ডার দিয়েছিলো ফোনে, হঠাৎ
রাহাত বলে উঠল -
” দাদা তুমি আজ শেষ”
রাহাতের দিকে চোখ ফিরাতেই
অনিরুদ্ধ দেখা পেল ঊষার কিন্তু
যথারীতি গার্ডিয়ান সাহেবান
সঙ্গেই আছেন! ছোট দোকানের
একপাশে দাঁড়িয়ে জাং ফুড
টাইপের কিছু নিয়ে তারা প্রস্থান
করল। দোকানটা বেশ পরিচিত
অনিরুদ্ধের, ঢাকা আসার পরের
কেনা সব কেকই সে এখান
থেকে নিয়েছে। তাই ঊষার
পিছুপিছু হাটা থেকে বিরত
থাকে অনিরুদ্ধ, পাছে লোকে কিছু
বলে..আর সুদর্শন চক্রহাতে গার্ডিয়ান
তো আছেই।আর দোকানিরাও
চেষ্টা চালাচ্ছে কেক পাবার…..
শেষ পর্যন্ত ফেইল।
কোলাহল
Mohd Shahanoor Alam Bhuiyan Titu @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা
shapan @ প্রসঙ্গ নারী : ধর্মীয় আর সামাজিক বর্বর আইন নারী খৎনা Female Circumcision
Mkjk @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
পারভেজ আহমেদ @ বাংলা কবিতায় ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?
Md forid mia @ পা চাটা কুত্তার জলকেলি
Juel @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
Juel @ জলচর মৎস্য হতে স্তন্যপায়ী মানুষ; বিবর্তনবাদের মহা নাটকীয়তার পরিণতি
Ask2ans @ The Boy In The Striped Pajamas