LIBERATION WAR IN DHAKA: PART-3: OPERATION HOTEL INTERCONTINENTAL
500
বার পঠিত…. সে এক অদ্ভুত যুদ্ধযাত্রা। উঁচু – নীচু – ধনী – গরিব – কম্যুনিস্ট – এন্টি কমিউনিস্ট সব রকম সব কিছু ভুলে দলে দলে ঢাকার তরুণেরা জড়ো হয়েছে মতিনগরে। মতিনগর হল ২ নং সেক্টরের ট্রেনিং ক্যাম্প।।। কুমিল্লা বর্ডারের খুব কাছেই। সেই মতিনগরেই ট্রেনিং পেতে থাকে প্রথম বারে যাওয়া তরুণেরা। এলএমজি, গ্রেনেড কিংবা মেশিনগান চালানো আর ঠিক সময়ে ঠিকভাবে লুকিয়ে যাওয়ার গেরিলা কৌশল শেখানো হত এখানে।
ক্যাম্পটা বর্ডারের খুব কাছে হয়ায় পাকিস্তানিরা বারবার এটার উপর আক্রমণ করতে থাকে।।। তখন মুক্তিযোদ্ধারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ মালপত্র বহন করে রওনা দেন মেলাঘরের পথে।। মেলাঘর ছিল বর্ডার থেকে ৩০-৩২ কিলোমিটার দূরত্বে…। এই মেলাঘরেই মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং নেওয়ার জন্য যোগ দেয় রুমী – বদি – জুয়েল – আজাদের মত সূর্যতরুণেরা। যেই ছেলে প্লেটে না দেখার মত কোনো দাগ থাকলেও মাকে দিয়ে বার বার প্লেট ধুইয়ে অভ্যস্ত,সেই রুমী পোকাসহ রুটির পোকাটা ফেলে দিয়ে রুটিটা খেয়ে নিতে অভ্যস্ত হয় – দেশের টানে, এই মেলাঘরে। রাতের বেলা পাহারা দেয়ার সময় রুমী দেখে দূরের একটা তাবুতে আলো জ্বলছে। আযম খান গান গাইছেন। হিমালয় থেকে সুন্দরবন, হঠাৎ বাংলাদেশ…
সেক্টর – ২ এর গেরিলাদের প্রথম মিশন ছিল কর্ণেল শাফায়াৎ জামিলের পরিবারকে ঠিকভাবে মেলাঘরে পৌঁছে দেয়া। মায়া আর তার দল এই কাজটা ঠিকভাবেই সম্পন্ন করে।।। এরপরে হাবিবুল আলম আর কাজী কামালের উপর দায়িত্ব ছিল মেজর নূরুল ইসলাম শিশুর পরিবারকে মেলাঘরে পৌঁছে দেয়া। তারাও সফল অপারেশন করে উপহার হিসেবে মেজর নূরুল ইসলামের কাছ থেকে জিতে নেয় একটা চাইনিজ এল এম জি আর একটা চাইনিজ পিস্তল। কাজী কামালের এই পিস্তলটার উপর লোভ ছিল জুয়েলের। ধরা পড়ার রাতেও জুয়েলের পাশেই ছিল পিস্তলটা…।
জুন মাসে মেজর খালেদ মোশাররফ খবর পান বিশ্বব্যাংক এর প্রতিনিধি আর কিছু বিদেশী সাংবাদিকেরা ঢাকা আসছেন। এ ঢাকা সফরে পাকিস্তানিদের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বব্যাংককে এরকম বোঝানো – আওয়ামী লীগ কর্মীরা সব জ্বালিয়ে ভেঙেচুরে গেছে। এগুলো পুনর্গঠন করতে টাকা দরকার। এই সফর দফল হলে পাকিস্তান সরকারের ২০০ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
এদিকে মেলাঘরে আমাদের যোদ্ধারা তখন তৈরি হচ্ছে। এই সুযোগ পুরো বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেওয়ার – লড়াই শুরু হয়ে গেছে। পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণে আর কিছুই নেই। পূর্ব পাকিস্তান নয় – গঙ্গা অববাহিকার তীরে ছোট্ট সমতলে পাহাড়ে সাগরে মেলানো ভূমিটি এখন বাংলাদেশ..।
৭ জুন ১৯৭১। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। এফ ডি সির বাদল গাড়ি চালাচ্ছেন। পাশে স্বপন এর হাতে পিস্তল। পিছনের সিটে জিয়া, মায়া আর হাবিবুল আলম। তিনজনের হাতে তিনটা গ্রেনেড। ২১ বছর বয়সী হাবিবুল আলম এই অপারেশনের কমান্ডার। অপারেশনের নাম – “অপারেশন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল “। উদ্দেশ্য – ঢাকা শহরের বুকে গেরিলাদের অাগমনবার্তা ঘোষণা। আর বিদেশী সাংবাদিক, বিশ্বব্যাংক সবার সামনে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা তুলে ধরা।
ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দার। বাঘের মত সাহসী লোকটা। আর আছেন মেজর খালেদ মোশাররফ। একাত্তরের গ্রিক দেবতা। বিচ্ছুগুলোকে তারাই ঢাকা পাঠিয়েছেন। পইপই করেবলে দিয়েছেন ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে কিছু দূরে ঢাকার মধ্যে বিস্ফোরন ঘটাতে যাতে হোটেলে থাকা সবাই সেই শব্দ শুনতে পায়। এতে পাকিস্তানিরাও বুঝবে – বঙ্গমুল্লুকে তাদের দিন শেষ। বিশ্বব্যাংক এর প্রতিনিধি আর সাংবাদিকেরাও বুঝবে – ঢাকার পরিস্থিতি আর যাই হোক, “স্বাভাবিক ” বলা যায় না।
কিন্তু এখানে কথা হচ্ছে বাদল – স্বপন – আলম – জিয়া – মায়াকে নিয়ে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য অন্তপ্রাণ এই তরুনেরা ভাবলেন – গ্রেনেড যদি মারতেই হয় তো বাইরে কেন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এই মারব! সেই মোতাবেক গাড়িটা এসে থামল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর সামনে। বিদেশী সাংবাদিকেরা তখন কেবল গাড়ি থেকে নামছে। পাকিস্তানি – বিশ্বমিডিয়া সবার চোখের সামনে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর লবিতে বিস্ফোরিত হল তিনটা গ্রেনেড। বিশ্ববাসী জানল বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। সফল হল অপারেশন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল।
বিবিসি তে এই অপারেশনের কথা শুনে মেলাঘরে মেজর খালেদ মোশাররফ হাসবেন না কাঁদবেন বুঝে উঠতে পারেন না। শুধু বলেন – “These all are crack people… বললাম হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল এর কাছাকাছি বোমা মারতে, এরা হোটেলের ভিতরেই বোমা মেরে দিয়ে আসছে… “
সেই থেকে ঢাকা শহরের বুকে জীবনকে তুচ্ছ করে একের পর এক অপারেশন চালিয়ে যাওয়া তরুণ এই গেরিলা দলটির নাম হল – “ক্র্যাক প্লাটুন “।
ক্রাক প্লাটুনের গর্বিত সদস্যরা : এই গেরিলা দলটিতে যারা ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম কয়েকজন হলেন- আবুল বারক আলভী, শহীদ আব্দুল হালিম চৌধুরী জুয়েল বীরবিক্রম, পপসম্রাট আযম খান, আমিনুল ইসলাম নসু, আলী আহমেদ জিয়াউদ্দিন বীরপ্রতীক, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, কাজী কামালউদ্দিন বীরবিক্রম, কামরুল হক স্বপন বীরবিক্রম, গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, চুন্নু, জহির উদ্দিন জালাল, জহিরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, নীলু, পুলু, ফতেহ চৌধুরী, শহীদ বদিউজ্জামান, বদিউল আলম বদি বীরবিক্রম, মতিন ১, মতিন ২, শহীদ মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ, মাহবুব, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, মাযহার, রাইসুল ইসলাম আসাদ, লিনু বিল্লাহ, শহীদ শাফি ইমাম রুমী, শহীদুল্লাহ খান বাদল, শাহাদত চৌধুরী, সামাদ, হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক, হিউবার্ট রোজারিও এবং হ্যারিস প্রমুখ।
ক্রাক প্লাটুনের কিছু উল্লেখযোগ্য অপারেশন : পাঁচ-ছয় জনের এক একটি দল তৈরি করে এই গেরিলা দলটি অপারেশনে অংশ নিত। ঢাকা শহরে তারা মোট ৮২টি অপারেশন পরিচালনা করেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো- অপারেশন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, অপারেশন গ্যানিজ পেট্রল পাম্প, অপারেশন দাউদ পেট্রল পাম্প, অপারেশন এলিফ্যান্ট রোড পাওয়ার স্টেশন, অপারেশন যাত্রাবাড়ী পাওয়ার স্টেশন, অপারেশন আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন, অপারেশন সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন, অপারেশন উলন পাওয়ার স্টেশন, অপারেশন ফার্মগেট চেক পয়েন্ট, অপারেশন তোপখানা রোড ইউএস ইনফরমেশন সেন্টার, এটাক অন দ্য মুভ প্রভৃতি…
is viagra safe for diabetics
নীহারিকা বলছেনঃ
খুব ভাল লাগ্ল ্,
মায়াবী তেজস্বিনী বলছেনঃ
free sample of generic viagraধন্যবাদ আপু…
S M Mehdi Hassan বলছেনঃ
দারুণ হয়েছে লেখাটা। দেশের বর্তমান অবস্থায় মাঝে মাঝে খারাপ লাগে। এ লেখা গুলো পড়ার পরে ভাল লাগে।