নিউক্লিয়ার যুদ্ধাস্ত্র, বর্তমান বিশ্ব এবং কিছু ফাও প্যাচাল
951
বার পঠিতহিরোসিমা নাগাসাকিতে নিউক্লিয়ার বোমার ধংশযজ্ঞ দেখার পর একদিকে যেমন সারা বিশ্ব আতকে উঠেছিল এত ভয়াবহতা দেখে অন্য দিকে সারা দুনিয়ার ধংশের সমর নায়ক মোড়লদের চুলকানি বেড়ে গেল,যেভাবেই হোক সবার চাই এই জিনিস।
শুরু হয়ে গেল এমন এক প্রতিযোগিতা যা মানব ইতিহাসে কেও কোনো দিন দেখেনি। শুধুমাত্র এই নিউক্লিয়ার অস্ত্র পাল্টে দেবে শক্তির ভারসাম্য।কে কার থেকে কত বেশি বিধ্বংসী বোমা বানাতে পারে শুরু হবে তার প্রতিযোগিতা। এ পর্যন্ত সব থেকে বেশি বিধ্বংসি নিউক টেস্ট করেছে রাশিয়া!!
দা গ্রেট Tsar Bomb !! বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে স্রেফ এই একটা বোমা নাগাসাকি,হিরোসিমা তে ব্যাবহার করা বোমার ১৭৫০ গুন বেশি শক্তিশালী। তুলনা করা হলে কামানের গোলার পাশে ম্যাচের কাঠ জ্বালানোর মত অনেকটা।
কমবেশি ১৬২০০ বোমার উপরে বসে আছে আমেরিকা আর রাশানরা। অন্যান্য দেশ গুলো হিসেবের বাইরে রাখা যায় কারন এই বোমার গুলো ব্যাবহার করা হলে দুনিয়ার খুব বেশি অংশ বাসযোগ্য থাকবে না!! সুতরাং তাদের নিয়ে টেনশান না করলেও চলবে আপাতত।
চিন্তা করুন এমন একটা যোদ্ধাস্ত্র যেটা আপনাকে এমন ক্ষমতা এনে দিবে যাতে আপনাকে কেও ধমক দেয়ার সাহস পাবে না, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভাবে আপনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। ভস্রেফ একটা অস্ত্র ভূ-রাজনিতি পাল্টে দেবে চিরদিনের জন্য।সুতরাং সারা বিশ্বের রাজনীতির মোড়ল রা ঊঠে পড়ে লাগল নিউক্লিয়ার বোমার জন্য!!
কিন্তু এই নিউক প্রতিযোগিতার সাথে সবথেকে বড় যে বিপদটা দেখা দিল সেটা কিন্তু সমর নায়ক বা কোনো দেশ নয়, খোদ অস্ত্রই বিশাল এক হ্যাপা হয়ে দাড়াল!! about cialis tablets
#আজকের লেখাটা মুলত নিউক্লিয়ার অস্ত্রের নিরাপত্তা ব্যাবহার আর সারা বিশ্বে এর প্রভাব এর উপর কিঞ্চিত আলোকপাত বিষয়ক!! nolvadex and clomid prices
প্রথমত নিউক্লিয়ার অস্ত্রের রক্ষনাবেক্ষন টাই বিশাল এক প্যারা, নিউক্লিয়ার আর্সেনাল রক্ষনাবেক্ষন বিলিয়ন ডলারের মামলা। (কত খুদার্ত মানুষের মুখে না জানি খাবার তুলে দেয়া যেত )
তার পর আছে এর নিরাপত্তা বিষয়ক আরেক গেঞ্জাম,সারা দুনিয়ার মোরলদের বাথরুমে গেলেও নিউক্লিয়ার মিসাইল লঞ্চ কোড সাথে রাখতে হয় টাইপ অবস্থা!!! (G.I.JOE 2 মুভিতে যেরকম দেখায় সত্যিই ওরকম লঞ্চকোড সহ ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় মোড়লদের)
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার পর বিভিন্ন যায়গায় থেকে যাওয়া নিউক্লিয়ার ফ্যাসিলিটি এবং অস্ত্র গুলো চিন্তার কারন হয়ে দাড়ায়, আর বর্তমানে আমেরিকার সব থেকে বড় চিন্তা নিউক না আবার জঙ্গীদের হাতে পড়ে।
নিউক্লিয়ার বোমার সাথে আরেকটা যে বিষয় এসে পড়ে হচ্ছে সেটা হচ্ছে নিউক ডেলিভারি সিস্টেম, এই সিস্টেম কে বলা হয় Nuclear triad.
এর ভাগ তিনটে ICBM, SLBM, strategic bomber..
এর মধ্যে ইন্টারকন্টিনেন্টাল (ICBM/SLBM)মিসাইল না থাকলে নিউক্লিয়ার বোমা মোটামুটি অকেজোই বলা চলে(যদি না আপনি নিজের দেশে নিউক রেখে অপেক্ষা করেন কখন শত্রু আসে,তার পর ফাটিয়ে দিব মনোভাব নিয়ে
অনেকেই হয়ত ভাবছেন স্টেলথ ফাইটার/বম্বার দিয়েও তো নিউক ডেলিভারি দেয়া যায়। বর্তমানে অপারেশনাল স্টেলথ এয়ার ক্রাফট আছে এক মাত্র ইউএস এর কাছে। রাশানদের Pak FA T-50 এখনো সার্ভিসে আসেনি। অন্য দিনে চায়নিজদের J-31 এর স্টেলথ ক্যারাক্টারিস্টিক নিয়ে যথেষ্ট গুজব আছে।
তো নিউক্লিয়ার আর্সেনালের মালিক যত দেশ তাদের সবার কাছে স্টেলথ এয়ারক্রাফট নেই। বাধ্য হয়ে তারা ল্যান্ড /এয়ার বেসড ব্যালাস্টিক মিসাইল টেকের দিকে ঝুকবে এটাই স্বাভাবিক।
অল্প কিসু নন স্টেলথ এয়ারক্রাফটও নিউক ডেলিভারি দিতে পারে(F-15 E, Mirage-2000, Rafael, FB-111 ইত্যাদি)
আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারতের মিরেজ-২০০০ সছে স্ট্র্যাটেজিক নিউক ডেলিভারি সিস্টেম আছে। কিন্তু এয়ারক্রাফট কখনো নির্ভর যোগ্য ডেলিভারি সিস্টেম হতে পারে না।কারন এখন দুনিয়ার যে সব দেশ নিউক বগলদাবা করে বসে আছে তারা সবার আগে কয়েকস্তর আকাশ নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করে রেখেছে। এয়ারক্রাফট গুলি করে নামানো মোটামুটি ডাল ভাত এখনকার দিনে।( দয়া করে আমাদের দেশের মত দেশের কথা এখানে টেনে আনবেন না)
আর স্টেলথ বম্বার/ফাইটার এখানে গোনার মধ্যে আসবে না।
সুতরাং সেই ICBM, SLBM(সাবমেরিন থেকে লঞ্চ করা যায় এমন) ব্যালাস্টিক মিসাইল প্রযুক্তি।
কিউবার মিসাইল ক্রাইসিস এর শুরু মুলত এই ICBM নিয়েই!! সোভিয়েত ইউনিয়নের যথেষ্ট লং রেঞ্জ ইন্টারকন্টিনেন্টাল মিসাইল ছিল না (১৯৬২) ,তাই তারা কিউবাতে কিছু ICBM বসায় আর আমেরিকার সাথে বেধে যায় গেঞ্জাম।
মুলত নিউক্লিয়ার অস্রের ব্যাবহার, এর নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্ব নেতারা চিন্তিত হয়ে পড়ে কিউবান মিসাইল ক্রাইসিস এর পর। কারন এমন একটা সমস্যা এই নিউক যে একটা ভুল হয়ে গেলে শুধরানোর কোনো উপায় থাকবে না।
খোদ আমেরিকার মাটিতে বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ টি নিউক্লিয়ার ওরহেড মিসিং হয়ে যায়।
১৯৬৮ এর ২২ মে Mark-45 নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড সহ তলিয়ে যায় USS Scorpion (সাবমেরিন)[[ বারমুডা ট্রায়াঙ্গল এলাকায়, রীতিমত দুনিয়াজুড়ে হাউ কাউ লেগে গিয়েছিল এটা নিয়ে]]
23 January 1961 তে ইউএস বিমান বাহিনি একটি প্লেন থেকে ভুল করে দুটি Mark 39 অ্যাটম বোম ফেলে দেয় North Carolina এর উপর!! :O যার একটা আরেকটু হলে ডেটনেট হয়ে গিয়েছিল। চারটা সেফটি মেকানিজমের শেষটা কপালজোরে অক্ষত ছিল।
১৯৬৫ সালে একটি A-4E SKY HAWK এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারের ডেক থেকে ১ মেগাটনের একটি থার্মোনিউক্লিয়ার (হাইড্রোজেন বোমা) ওয়ারহেড সহ গড়িয়ে পড়ে ১৬০০০ ফিট পানির নিচে তলিয়ে যায়(আকামের বেলায় আমেরিকা এক্সপার্ট :P)।
এছাড়াাও বিভিন্ন সময়ে নিউক্লিয়ার ফ্যাসিলিটির দুর্ঘটনায় বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয় বিভিন্ন দেশের(যদিও সামরিক নয়,তার পরও চেরনোবিল দূর্ঘটনা উল্লেখযোগ্য)
এতো গেল শুধু মাত্র দুর্ঘটনা, এখন আলোকপাত করা যাক রাজনৈতিক দিকে, শুধু মাত্র নিউক্লিয়ার অস্ত্রের জুজু দেখিয়ে নর্থকোরিয়ার Kim Jong-un যা খেল দেখাচ্ছে।আমেরিকা সহ সবার কালঘাম ছুটে যাচ্ছে হেতের কর্মকান্ড দেখিয়া।কে আর চায় পাগলার হাতে অ্যাটম বোম দেখতে!!
মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে আছে ইরান। সেম অবস্থা আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত আর ফাকিস্তানের ক্ষেত্রে। ভারতের নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স প্রজেক্টের অন্যতম একটা উদ্দেশ্য ছিল পাকিদের মাইনকা চিপায় ফেলানোর। যেটা সফল ভাবেই করেছে তারা। ভারতের হাতের ৭৫ এর দিকে নিউক এসে পড়ায় বাধ্য হয়ে ফাকি সরকার তাদের নিউক্লিয়ার প্রজেক্ট শুরু করে। যেহেতু এসব অস্ত্র (সাথে ডেলিভারি সিস্টেম,মিসাইল, ঘাটি, অন্যান্য লজিস্টিকস ইত্যাদি) রক্ষনাবেক্ষনের পেছনে প্রচুর টাকা খরচ হয়,ভারতের অর্থনীতি তার চাপ নিতে পারলেও ফাকিদের জঙ্গি সাপ্লাই দেয়া অর্থনীতির পক্ষে সেটা বগার ফাদ হয়ে গেছে! :3
যাই হোক
কিছু দিন হল কানাঘুষা শুনা যাচ্ছে মায়ানমারকে নিউক তৈরিতে সহায়তা দিবে North Korea… (আমি এই তথ্যটা পড়েছিলাম বাংলাদেশ পরমানু কমিশনের সভাপতি/এই টাইপ কারো একটা প্রবন্ধ থেকে,লিনক টা দিতে পারছি না বলে দুঃখিত)
সম্ভবত সবথেকে ভয়াবহ এবং হাস্যকর ঘটনাটা ঘটান US presidents Jimmy Carter, তিনি নিউক্লিয়ার মিসাইল লঞ্চ কোড তার সুটের পকেটে রেখে চলে আসেন,বলেন তো সে গুলো উদ্ধার করা হয় কোথা থেকে!! উত্তরটা হচ্ছে–ওয়াসিং মেশিন থেকে -_- (কেজিবি পাইলে বাশ ঝাড় দেখাই দিত)
এবার লৌহ যবনিকার ওপাশে আলোকপাত করা যাক -
১৯৯৫ সালে Norwegian একটা ওয়েদার বেলুন কে আমেরিকান SLBM (সাবমেরিন থেকে ছোড়া ব্যালাস্টিক মিসাইল) মনে করে আরেকটু হলে আমেরিকার বিরুদ্ধে নিউক্লিয়ার স্ট্রাইক করার অর্ডার দিয়ে ফেলেছিলেন President Yeltsin’s!!
পরিশিষ্টঃ
নিউক্লিয়ার অস্ত্র শুধু যোদ্ধের পট পরিবর্তন করে দেয়নি, বদলে দিয়েছে ভু-রাজনীতি।
প্রতিনিয়ত সারা পৃথিবীর মানুষ বসবাস করছে ঝুকির মাঝে,যে কোনো সময় ছোট্ট একটা ভুল সিদ্ধান্ত কিংবা একটা দূর্ঘটনা মানবসভ্যতাকে সম্পুর্ন নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। :/
লেখাটা লিখতে গিয়ে নিজেরই কেমন যেন লাগছে, আমরা কতটা ঝুকিতে বসবাস করছি!!
শেষ করি একটা ভাল খবর দিয়ে -১৯৯০ সাকে South Africa সম্পুর্ন সেচ্ছায় তাদের নিউক্লিয়ার অস্ত্র(৬ টি নিউক্লিয়ার warhead + ১৫০০ কিমি রেঞ্জ বিশিষ্ট ব্যালাস্টিক মিসাইল English Electric Canberra) ত্যাগ করে।
আশা করি এমন দিন আসবে যে দিন গুটিকয়েক বাটন আর পাগলাটে কিছু মানুষের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে না মানবসভ্যতার ভবিষ্যত।
অস্ত্রের প্রতিযোগিতা ছেড়ে মানুষ সত্যিকার অর্থেই সভ্য হয়ে উঠবে……
অপার্থিব বলছেনঃ
সারা বিশ্বের নানা প্রান্তের অসংখ্য মানুষ যখন প্রতি দিন রাতে না খেয়ে ঘুমোতে যায় তখন পরমাণু অস্ত্র উৎপাদনের নামে ক্ষমতাধর কিছু রাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করাকে নির্মম বিলাসিতা ছাড়া আর কিইবা বলা যায়। উগ্র জাতীয়তাবাদী ভাইরাসে আক্রান্ত কিছু অসুস্থ মানুষের কারনে সারা পৃথিবীর শান্তি শৃঙ্খলা হুমকির মুখে পড়ে । উগ্র জাতীয়তাবাদ আধুনিক মানব সভ্যতার জন্য অনেক বড় হুমকি। zoloft birth defects 2013