ফটোফ্রেম “১৯৭১”- এর কারিগরেরা; পর্ব- ২
869
বার পঠিত
দূর থেকে দেখলে হয়তো লম্বা পিঁপড়ার সারি বলেই মনে হতো। কিন্তু দৃশ্যটি খুব কাছ থেকে দেখা। তাই মানুষ বলে চেনা যাচ্ছে মানুষগুলোকে। বহুদূর থেকে তারা আসছে পায়ে পায়ে। ক্লান্ত, অবসন্ন। তবু চলার বিরাম নেই। স্রোতের মতো চলমান মানুষের পেছনে উদ্যত মৃত্যু। সামনে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। চোখে আতঙ্ক-উদ্বেগ, মুখে শোকের ছায়া। চলছে তারা যশোর রোড ধরে। শিশু-যুবক-মধ্য বয়সী, বৃদ্ধ নর-নারী।
পূর্ব পাকিস্তানের গ্রামগঞ্জ থেকে জোয়ান বুড়ো বোঁচকা বুঁচকি ঘটিবাটি নিয়ে গ্রাম ছাড়ছে।
দুস্থ শরণার্থী কংক্রিটের পাইপে বসত গড়েছে।
রাস্তার ধারে ভাত ফুটছে। ভাতের পাতিলের সামনে কাত হয়ে শুয়ে আছে গর্ভবতী মলিন কিশোরী।
এক বুড়িকে ডুলিতে বসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দুটো লোক।
বিশাল পাইপ লাইনের ভেতর এক মধ্যবয়সী মানুষের পোর্ট্রেট। টপ অ্যাঙ্গেল থেকে তোলা ছবিতে মধ্যবয়সী মানুষের চোখের অবস্থান আলোকচিত্রের নিয়মমতে এক-তৃতীয়াংশ বরাবর। আর সেই চোখের শার্পনেস, অভিব্যক্তি চোখে পড়ার মতো। চোখজোড়ার মধ্যে রয়েছে বিষণ্নতা, হতাশা আর প্রতিবাদের মিশ্ররূপ।
সব ছবিই সাদাকালো। প্রিন্টের আকার নানা ধরনের। তবে অধিকাংশ ছবিই ২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি কিংবা তারও অধিক। ছবিগুলো দেখতে দেখতে মনের ভেতর এ ধারণা জন্মাতেই পারে যে—সেই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে আপনি যাচ্ছেন। শরণার্থীশিবিরের সারি সারি খড়ের তৈরি ঘরগুলোর পাশে দাঁড়ানো মানুষের নির্মোহ দৃষ্টি বিবেককে নাড়া দেবে। কোনো ছবি যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত সেতু, ঘরবাড়ি, যানবাহন যুদ্ধের ভয়াবহতাকে তুলে ধরে। কর্দমাক্ত পথে সারি সারি দেশান্তরিত মানুষের মিছিল, আশ্রয়ের খোঁজে ন্যূব্জ দেহে বৃদ্ধা-বৃদ্ধের অজানা গন্তব্যে পাড়ি জমানো, শরণার্থীশিবিরের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মাঝেই চলছে রান্না-বান্না, খোলা আকাশের নিচে বেঁচে থাকার নিরন্তর সংগ্রামের চিত্র দেখা যায় ছবিগুলোতে। একটি ছবি কিছুক্ষণের জন্য হলেও দর্শকদের ভাবিয়ে তোলে। শরণার্থীশিবিরে অবস্থানরত এক কিশোরী সাদা খাদির শাড়ি পরে হাঁড়ি-পাতিল, কলসি, ঘটি-বাটির একপাশে শুয়ে আছে হাতের তালুর ওপর। তার দৃষ্টি উন্মুক্ত কিন্তু উদ্দেশ্যহীন। ভাবলেশহীন সেই দৃষ্টিভঙ্গি দেখে হঠাত্-ই তাকে ঘরের বাসনপত্রের সঙ্গে প্রথম দর্শনেই একাকার করার একটা ভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। যুদ্ধের এত কষ্ট, জীবনের এত বেদনার পর মানুষ নিজের অস্তিত্বের প্রশ্নেও সংশয়চিত্ত হয়ে ওঠে!
১৯৭১ সালে প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে যাওয়া এই জনস্রোতকে ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন ভারতের স্টেটসম্যান পত্রিকার যে তরুণ আলোকচিত্রী, তিনিই আজ স্বনামখ্যাত রঘু রাই।’দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকার পক্ষ থেকে তাঁকে সীমান্তবর্তী এলাকার যুদ্ধপরিস্থিতির ছবি তুলতে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মূলত নারী ও শিশুদের ছবি বেশি তোলেন। তাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে এক সময় নিজেই পাগলপ্রায় হয়ে পড়েন। নিজের মনেই প্রশ্ন ভেসে ওঠে, এভাবে কি মানুষ বেঁচে থাকতে পারে? কত রকমের ছবি হয়- ছড়ার মত, ছোট গল্পের মত, বোবা কান্নার মত। কিন্তু রঘু রায়ের মত এক ফ্রেমে মহাকাব্য সৃষ্টি করতে পারঙ্গম খুব কম ফটোগ্রাফারই। ছবির সিরিজ দিয়ে গল্প তৈরি করার তেমন প্রয়োজন হয়নি রঘু রায়ের। তার একেকটা ছবিই একেকটা গল্প। কিভাবে এক সেকেন্ডের ভগ্ননাংশে একজন ফটোগ্রাফার আত্তস্ত আর ক্যামেরাস্ত করে ফেলেন একটি একটা বড়সড় গল্প টা আশ্চর্য হবার মতই। অন্যকোন ফটোগ্রাফারের ছবি বুঝতে দর্শকদের যদি লাগে ৩০সেকেন্ড; রঘু রায়ের ছবি বুঝতে লাগবে ৩০ মিনিট। রঘু রাই সাদাকালো ও রঙিন উভয় মাধ্যমের আলোকচিত্রেই সমান নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। সেই যে কথায় বলে না একটা ছবি হাজার কথার সমান –রঘু রায়ের ছবি দেখলে বোঝা যায়। একটা ছবি যে কত গল্প বলে যায়, যা ছবিতে আছে, যা নেই। রঘু রায়ের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ছবি যেন এক একটা ছোট গল্প। শেষ হয়েও শেষ হয় না, চোখ বন্ধ করে ফেলার পরেও মাথার মধ্যে দৃশ্য গড়ে ওঠে। সংক্রামিত করে দর্শককে।
অনেক বিচিত্র বিষয়েই কাজ করছেন রঘু রাই তাঁর দীর্ঘ প্রায় অর্ধশতাব্দীর কর্মজীবনে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রয়েছে ভূপালে গ্যাস ইউনিয়ন কার্বাইড কোম্পানির গ্যাস দুর্ঘটনা। তিনটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে সে ছবিগুলো নিয়ে। এ ছাড়া তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফি পত্রিকার হয়ে কাজ করেছেন ভারতের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে। এ কাজের জন্য পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ পুরস্কার। এ ছাড়া ইন্দিরা গান্ধী ও মাদার তেরেসাকে নিয়ে তাঁর অ্যালবাম রয়েছে। আছে তাজমহল ও স্বর্ণমন্দির নিয়ে কাজ। তবে সবকিছুর মধ্যে এগিয়ে রাখলেন একাত্তর সালের কাজগুলোকেই।
আলোকচিত্রী রঘু রাইয়ের জন্ম পাঞ্জাবে ১৯৪২ সালে। ভারত ভাগের পর পাঞ্জাবের ওই অংশটি পড়ে পাকিস্তানে। ১৯৪৭ সালে তাঁরা চলে আসেন দিল্লিতে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করার পর ১৯৬০ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় চিফ ফটোগ্রাফার এবং ১৯৭৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কলকাতার সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘সানডে’তে ফটো এডিটর হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালে প্যারিসের গ্যালারি ডেলপিয়েরেতে অনুষ্ঠিত রঘু রাইয়ের প্রদর্শনীর আলোকচিত্র দেখে মুগ্ধ হয়ে বিশ্বখ্যাত আলোকচিত্রী হেনরি কার্টার ব্রেসন তাঁকে ‘ম্যাগনাম ফটোস’-এর জন্য নির্বাচিত করেন। তিনি ১৯৮২ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ ম্যাগাজিন ‘ইন্ডিয়া টুডে’তে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের ওপর কাজ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, উদ্বাস্তু, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ—ইত্যাদি নিয়ে কাজের জন্য ভারত সরকারের কাছ থেকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯২ সালে ন্যাশনাল জিওগ্র্যাফিতে প্রকাশিত ‘হিউম্যান ম্যানেজমেন্ট অব ওয়াইল্ড লাইফ ইন ইন্ডিয়া’ শীর্ষক কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফটোগ্রাফার অব দি ইয়ার’ পুরস্কার লাভ করেন। টাইম, লাইফ, জিও লে ফিগারো দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য টাইমস লন্ডন, নিউজউইক, ভোগ, জিকিউ, দি ইনডিপিন্ডেন্টসহ পৃথিবীর প্রায় সব বিখ্যাত ম্যাগাজিন এবং পত্রিকায় তাঁর আলোকচিত্র প্রকাশিত হয়েছে। লন্ডন, প্যারিস, নিউইয়র্ক, হামবুর্গ, প্রাগ, টোকিও, এবং সিডনিতে তাঁর প্রদর্শনী হয়েছে। রঘু রাই তিনবার ‘ওয়ার্ল্ভ্রপ্রেস ফটো’, দুবার ‘ইউনেস্কো’র আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন। ইন্দিয়ান-সাবকন্তিনেন্তে তিনিই একমাত্র ফটোগ্রাফার যিনি বিশ্বখ্যাত ম্যাগনাম ফটো এজেন্সির সদস্য। পাশাপাশি তিনিই একমাত্র ফটোগ্রাফার যিনি পদ্মশ্রী পুরষ্কার লাভ করেন। তার উল্লেখযোগ্য ফটোসিরিজ ১৯৮৪ সালের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইড বিপর্যয়ের ডকুমেনটেশন। ১৯৮৪ সালের ২ আর ৩ ডিসেম্বরের ভারতের ভোপাল বিপর্যয়ের পরদিনই ভোপাল শহরে গিয়ে হাজির হন ভারতের বিখ্যাত ফটোপ্রাফার রঘু রাই এবং ওই দূর্ঘটনার ক্যামেরায় ধারণ করেন ধ্বংসযজ্ঞ। পরবর্তী ১৮ বছর ধরে তিনি ক্যামেরায় ধারণ করেছেন ওই বিষের ফলাফল।ওই দূর্ঘটনার ছবি নিয়ে রঘু পরবর্তী সময়ে প্রদর্শনী ও ছবির বই তৈরি করেন, নাম ছিল ‘এক্সপোজার: পোরট্রেইট অফ এ কর্পোরেট ক্রাইম’।
এছারাও তার অন্যান্য প্রকাশনার মধ্যে আছে- সেইন্ট মাদার (বিষয়- মাদার তেরেসা), ক্যালকাটা ও দি শিখস।
রঘু রাইকে অনেকেই মনে করেন ক্যামেরার কবি হিসেবে। ১৯৭১ সালে যে ছবিগুলো তিনি তুলেছিলেন, সংবাদচিত্র হিসেবে তা বিষয়বস্তুর তথ্য-উপাত্তগত সীমা অতিক্রম করে এমন এক মানবিক মহিমার সীমা স্পর্শ করেছিল, যা রূপায়িত হয়েছিল মহৎ শিল্পকর্মেও। পরে নানা বিষয় নিয়ে কাজ করলেও এ বিশেষ গুণটি সব সময়ই বজায় থেকেছে এবং বিশেষ প্রাধান্য পেয়েছে। আলোকচিত্রকে শিল্প হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে যাঁরা অনন্য ভূমিকা রেখেছেন, রঘু রাই তাঁদের মধ্যে অন্যতম।
তার একটি প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রী আছে প্রকৌশলী হিসেবে কিন্তু প্রকৌশলী হওয়ার কোনো ইচ্ছাই ছিল না তার। শুধু তার বাবার আগ্রহেই পুরকৌশলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। তবে বরাবরই ক্যামেরা তাকে খুব টানত। সেটি অবশ্য ছিল লন্ডন টাইমস-এ আলোকচিত্রী হিসেবে কর্মরত তার বড় ভাই এস পলকে দেখে। তিনিই মূলত তাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। কারিগরি দিকগুলো শিখিয়েছেন। তার প্রচেষ্টাতেই রঘু রাইয়ের প্রথম ছবিটি ছাপা হয়েছিল লন্ডন টাইমস-এ, ১৯৬৬ সালে। সেটি ছিল দিল্লির রাজপথে এক গাধার ছবি। ছবিটি ছাপার পর সিদ্ধান্ত পাকাপাকি, আলোকচিত্রী হবে সে।
রঘু রাইয়ের তিন মেয়ে, এক ছেলে। ছেলেও আলোকচিত্রী। নিতিন রাই। এখন কাজ করছেন কলকাতার বিখ্যাত সাময়িকী সানডেতে। নিজে এখন যুক্ত ম্যাগনাম ফটো এজেন্সিতে। কাজ করছেন সন্ত্রাসবাদ নিয়ে।
রঘু রাই ’৭১-এর এ ছবির নেগেটিভগুলো হারিয়ে ফেলেছিলেন। মনে তাঁর বড় খেদ ছিল এ নিয়ে। ১৯৭৬ সালে স্টেটসম্যান ছাড়ার পর অনেকবার কর্মস্থল বদল করেছেন। দিল্লিতে বাসা বদলও করতে হয়েছে তিন দফায়। এসব পাল্টাপাল্টি করতে গিয়ে অনেক নেগেটিভের মধ্যে একাত্তরের নেগেটিভগুলো যে কোথায় ছিল, তা আর হদিস করতে পারেননি। এ চাকরি বদল, বাসা বদল করতে গিয়ে অনেক নেগেটিভই হারিয়ে গেছে। সম্প্রতি তিনি তাঁর পুরোনো নেগেটিভগুলোকে ডিজিটাল মাধ্যমে রূপান্তরের কাজ শুরু করেছেন। সেটি করতে গিয়েই গত বছর তাঁর সহকারী একটি প্যাকেট খুঁজে পান। সেটির গায়ে লেখা ‘বাংলাদেশ’। প্যাকেটটি পেয়ে তিনি খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন। শক্ত করে বাঁধা ছিল। খুলে দেখলেন নেগেটিভগুলোর একটুও ক্ষতি হয়নি। এ নেগেটিভগুলো পাওয়াকে তিনি বলেছেন ‘একটা অন্য রকম অনুভূতি। এ ছবিগুলোর জন্যই তিনি ভারত সরকারের পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন। ২০১২ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৪১ বছর পর ঢাকায় প্রথমবার রঘু রাইয়ের তোলা সেই আলোকচিত্রগুলোর প্রদর্শনী হয়েছিল বিজয়ের মাসে।৫১টি ছবি নিয়ে প্রদর্শনীটি হয় ঢাকার ধানমন্ডির বেঙ্গল গ্যালারিতে। বেঙ্গল গ্যালারি ও ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাসের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র যৌথভাবে আয়োজন করেছে এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনী উপলক্ষে রঘু রায় এসেছিলেন ঢাকায়। ‘বাংলাদেশ : দ্য প্রাইস অব ফ্রিডম’ শিরোনামে এ প্রদর্শনীর ছবিগুলো ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন রঘু রাই। একাত্তরে তিনি ছিলেন আটাশ বছরের টগবগে তরুণ। তত্কালীন ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকার আলোকচিত্রী হিসেবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ছবি কাভার করতে আসেন। সে সময়ে তিনি প্রায় ৫-৬ মাস ভারতের বিভিন্ন শরণার্থীশিবিরে বাংলাদেশের রণাঙ্গনসহ নানা জায়গার ছবি তুলেছিলেন।
মানুষের সেই সুতীব্র যন্ত্রণা, গভীর শোক ও বেদনাকেই তিনি ধরতে চেয়েছিলেন সাদাকালো ছবিতে। এ বিষয়ে রঘু রাই অকপটে বললেন, ‘সে সময় ছবির কারিগরি জ্ঞানও আমার তেমন ছিল না, অভিজ্ঞতাও ছিল কম। আমি ছবির কারিগরি দিকের চেয়ে গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলাম লাঞ্ছিত মানবতার চিত্র তুলে ধরতে। ঝুপঝুপ করে বৃষ্টি হচ্ছে। কর্দমাক্ত যশোর রোড দিয়ে স্রোতের মতো রাত-দিন মানুষ আসছে। মাথায় একটি পুঁটলি। ছোট শিশুটিকে কাঁধে তুলে নিয়েছেন বাবা। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের শরীরে সামর্থ্য নেই। কিন্তু তাঁরাও হাঁটছেন ছেলের কাঁধে ভর দিয়ে। ছোট ছোট ছেলেমেয়ে কাঁদছিল ক্ষুধায়। খাবারের জন্য, দুধের জন্য। তারা যেন কিছুই দেখছিল না। শুধুই এগিয়ে চলছিল পায়ে পায়ে। তাদের চোখে-মুখে এমন এক গভীর বেদনার ছাপ, যা আমাকে খুবই বিচলিত করে তুলেছিল। আমি তাদের ছবি তুলেছি। স্টেটসম্যান-এ ছাপা হয়েছে সেই ছবিগুলো। পরে আশ্রয়শিবিরে আরও বিপর্যয়কর হয়ে উঠেছিল তাদের জীবনযাত্রা। মানুষগুলোর সামনে গেলে তারা কথা বলত কমই। কিন্তু এমন করে তাকাত, সেই দৃষ্টিই বলে দিত তাদের না বলা দুঃখ-কষ্টের কথা। ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে কোনো কৃত্রিম অভিব্যক্তি প্রকাশ বা চাহনি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না তাদের। মানুষের বেদনাকে, তাদের আতঙ্ক, যন্ত্রণা, ক্ষুধা ও অনিশ্চয়তার উৎকণ্ঠাকে তুলে ধরাই ছিল আমার লক্ষ্য।’
শরণার্থী শিবিরে সন্তান সম্ভবা অনেক মা জানেন না সন্তানের পিতৃপরিচয় ছবি : রঘু রাই
ভ্যানগাড়িতে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে চলেছেন মুক্তিযোদ্ধারা; আলোকচিত্র: রঘু রাই
আত্মসমর্পণের আগে বাঁ দিক থেকে জেনারেল অরোরা, জেনারেল নিয়াজি ও জেনারেল জ্যাকব৷ ছবি: রঘু রাই
তারিক লিংকন বলছেনঃ
আপনি নিজেও হয়তো বুঝতে পারছেন না কি অসামান্য একটা কাজ করতেছেন আপনি!! অফুরন্ত ধইন্যা আর স্যালুট… আর এইসব আলোকচিত্রশিল্পীদের অনন্ত অসীম শ্রদ্ধাবনত লাল সালাম!!
একেকটা পর্ব যেন একেকটা মহাকাব্য… অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
সিমপ্লি মাইন্ডব্লোইং ব্রাদার…
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
pfizer sildenafil 100mgহুম সেটাই…
মুক্ত বিহঙ্গ বলছেনঃ kamagra jelly paypal zahlen
মাইন্ড ব্লোয়িং। ছবি গুলোকে কখনোই এভাবে অনুভব করা হয়নি!
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম… zithromax tri pak
তারিক লিংকন বলছেনঃ today show womens viagra
অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছি আমরা… zithromax azithromycin 250 mg
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ prednisolone side effects long term
অসামান্য একটা পোস্ট আপু !! অনেক নতুন কিছুই জানলাম, দেখালাম যা আগে জানা ছিল নাহ্ কিংবা দেখাও ছিল নাহ্।ধন্যবাদ দিয়ে আপনাকে ছোট করবো না। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম …
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
ছবি কথা বলে……
আপু পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।
মায়াবী তেজস্বিনী বলছেনঃ
অসাধারন আপু! এই ছবিগুলা তো আগে অনেক দেখসি, কিন্তু এখন যেন নতুন করে দেখতেসি, চিনতেসি। অনেক কিছু এতকাল অজানাই ছিল… prednisone 60 mg daily
পরের পর্বের অপেক্ষায়…
অপার্থিব বলছেনঃ
অসাধারন পোস্ট। পাইপের মধ্যে থাকা অদ্ভুত অভিব্যক্তি নিয়ে তাকিয়ে থাকা বৃদ্ধের ছবিটা এক কথায় অসাধারন। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। accutane cost in canada
বি এম বেনজীর আহম্মেদ বলছেনঃ
অসাধারন একটা কাজ করছিস তুই… ধন্যবাদ সাথে ধইন্না ভর্তা
নীহারিকা বলছেনঃ
দারুন ! এগিয়ে যান !