এ টি এম আজহারদের নির্লিপ্ততার উৎস ও ধর্মীয় কট্টরপন্থার দুষ্টচক্র
342
বার পঠিতজামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের ফাসির রায় হয়েছে । ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বৃহত্তর রংপুরে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট চালিয়েছে এই ঘৃণ্য নরপশু। আজ ৪৩ বছর পর সেই অপরাধের প্রাপ্য শাস্তিটাই পেয়েছে সে । টিভির পর্দায় দেখলাম মুফতি আজহারও তার পূর্বসূরি নিজামী ,সাঈদী , মুজাহিদের মত বেশ স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই পুলিশ ভ্যান থেকে নেমে হেটে আসছে। বেশ সাবলীল , চোখে মুখে অপরাধ বোধের সামান্য ছায়াটুকুও নেই , নেই কোন গ্লানিও । শুধু অনাগত বিভীষিকাময় মৃত্যুর কথা চিন্তা করে সামান্য একটু বিমর্ষতা। আমি অবাক হয়ে ভাবি একজন মানুষের মানসিক ও আদর্শিক দৃঢতা ঠিক কি পরিমান শক্তিশালী থাকলে তার পক্ষে এরকম নির্লিপ্ত থাকা সম্ভব ?অনেক ভয়ানক অপরাধী আদালতে দাঁড়িয়ে অপরাধ স্বীকার করে ,কেউ আদালতের জেরায় টিকতে না পেরে আবার কেউ অপরাধ বোধের তীব্র অনুশোচনায় দগ্ধ হয়ে। অনেক অপরাধী আবার অপরাধ বোধে আক্রান্ত হয়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় আত্বহত্যা করে বসে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধ বিচারের আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে বিচার রত অবস্থায় জার্মান নাৎসি বাহিনীর বেশ কয়েক জন কর্মকর্তা আত্বহত্যা করেছিল। কিন্ত ৭১ এ যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত গোলাম আজম, নিজামী , সাঈদীদের মধ্যে অপরাধ বোধের সামান্য ছায়াটুকুও দেখিনি কখনো. অপরাধ বোধ তো দুরের কথা যুদ্ধকালীন সময়ে তারা যে অপরাধ করেছে এটি স্বীকার করতেই তাদের ঘোরতর আপত্তি। তাদের এই ইষ্পাত কঠিন মানসিক দৃঢতার উৎস কি? এটা কি শুধুই আদর্শের প্রতি অবিচল আস্থা নাকি অন্য কিছু? তাদের এই আদর্শিক বিশ্বাসের শিকড় ঠিক কতটা গভীরে ?যুদ্ধাপরাধের প্রুতিটি রায়ের পর তাই বারবারই এই প্রশ্ন গুলো সামনে চলে আসে।
আজ আমরা জানি যে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধকে জামায়াতে ইসলামী , মুসলিম লীগ সহ বেশ কিছু দল ধর্মযুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। তাদের কাছে এই যুদ্ধ ছিল এদেশে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য হিন্দুদের বিরুদ্ধে পবিত্র যুদ্ধ । যেহেতু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম ও বেশ কিছু ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল , পাকিস্তান ছিল এই উপমহাদেশের অনেক মুসলমানের কাছে পরম আরাধ্য একটা রাষ্ট্র। মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ভেবেছিল একমাত্র ইসলামই পারে এই ভারত বর্ষে নানা জাতি , নানা গোত্র , নানা মতে বিভক্ত মুসলমানদের একত্রিত ও শক্তিশালী রাখতে। তাইতো পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের মুল ভিত্তিই ছিল ইসলাম। অনেকেই ভেবেছিল তাদের স্বপ্নের এই পাকিস্তানই উপমহাদেশে ইসলামের ঝাণ্ডাকে সগৌরবে উঁচিয়ে ধরবে।এই পাকিস্তানই তাদের জীবনের আজন্ম দারিদ্রকে দূর করে একটি পরিপূর্ন সুখী ইসলামী জীবন যাপনের নিশ্চয়তা দিবে । তাইতো পাকিস্তানের উপর আঘাতকে তারা দেখেছে ইসলামের উপর আঘাত হিসেবে। সেই সময়ের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের অখন্ডতা চাওয়া কোন অস্বাভাবিক ব্যাপার ছিল না,অস্বাভাবিক ছিল না কিছু মানুষের রাজনৈতিক ভাবে পাকিস্তানের পক্ষে থাকাও কিন্ত অস্বাভাবিক ব্যাপারটি ছিল এদেশে ইসলাম রক্ষার নামে চলা হত্যা ,ধর্ষণ , লুটতরাজ এবং এগুলোকে অপরাধ হিসেবে মনে না করাকে । ৭১ এ রাজাকার, আল বদররা এগুলোকে ব্যাখ্যা করেছে তাদের ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে। তাদের ধারনা ছিল হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ ভারতের আগ্রাসন প্রতিহত করতে এই উপমহাদেশে পাকিস্তানের একত্রিত থাকা জরুরী। তাইতো পাকিস্তান রক্ষার লড়াই তাদের কাছে এদেশে ইসলাম রক্ষার লড়াই । এই লড়াইয়ে তারা নিজেদের সর্বস্ব ঊজাড় করে নেমেছে। প্রবল আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অন্য ধর্মাবলম্বী ও নিজ ধর্মাবলম্বী বিরুদ্ধবাদীদের বিপক্ষে। নিজেদের মাঝে তারা খুজে পেয়েছে মুহাম্মদ বিন ঘোরী ,বখতিয়ার খলজীদের মত মুসলিম বীরদের ছায়া। কোন অন্যায় ,হত্যা, নির্যাতনকেই আর তাদের কাছে অপরাধ বলে মনে হয়নি। যেমনটা এসব অপরাধ বলে মনে হয় না বর্তমানে ইরাক-সিরিয়ায় ইসলামিক ষ্টেটের হয়ে যুদ্ধরত আই এস যোদ্ধাদের কাছেও । কারন তারাও তাদের ভাষায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার তথা ইসলামিক আইন ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছে। যেহেতু ইসলামের স্বর্ণ যুগে ইসলাম প্রতিষ্ঠা ও ইসলাম রক্ষার নামে বহু যুদ্ধ হয়েছে। সেই সব যুদ্ধেও বহু প্রাণহানী হয়েছে, পরাজিতদের স্ত্রী কন্যারা মুসলমানদের হস্তগত হয়েছে । মুসলমানরা বিয়ে কিংবা দাসত্বের মাধ্যমে তাদের ভোগ করেছে। ৭১ এ রাজাকার, আল বদররাও ঠিক একই দৃষ্টি কোন থেকে এটিকে দেখেছে। ধর্মের প্রতি গভীর বিশ্বাসই তাদের মধ্যে এই ধারণাটুকু তৈরি করেছে যে ৭১ এ তারা যা করেছে তা আদৌ কোন অপরাধই নয়। কারন এগুলো অপরাধ হলে ইসলামের ইতিহাসের অনেক অগ্নিপুরুষও একই অপরাধে অপরাধী। যেহেতু এটি হওয়া সম্ভব নয় তাই তাদেরও ধারণা তারা কোন অপরাধ করেনি, তারা অনেকটাই নিষ্কলুষ। তাদের এই কৃতকর্মের পুরুষ্কার এই পার্থিব জীবনে পাক কিংবা না পাক শেষ বিচারে আল্লাহর দরবারে যে পাবে এই ব্যাপারে তারা অনেকটাই নিশ্চিত। তাইতো কাদের মোল্লা মৃত্যুর আগে স্ত্রীর উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে আত্ববিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারে “তোমাদের সঙ্গে আমার জান্নাতের বারান্দায় দেখা হবে।” মজার বিষয় হল যখন আল কায়েদা টুইন টাওয়ারে হামলা চালিয়ে নিরীহ মানুষ হত্যা করেছিল তখন আমাদের এই জামায়াতে ইসলামীই বিবৃতি দিয়ে আল কায়েদার এই ঘৃণ্য কর্ম কান্ডের নিন্দা জানিয়েছিল । সবাইকে ইসলামের সবক শিখিয়ে বলেছিল যে “ইহা সহিহ ইসলাম নহে”।সেই আল কায়েদাই আজ আই এসের নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে একই ভাষায় বিবৃতি দেয়। পকিস্তানী তালেবানদের বর্বর শিশু হত্যার নিন্দা জানায় আফগানিস্তানের তালেবানরা। অর্থাৎ যারাই ইসলামের নামে তথা ইসলাম প্রতিষ্ঠারনামে লড়াই করছে তাদের প্রায় সকলেই এক ধরনের স্ববিরোধীতায় আক্রান্ত। তাদের এই স্ববিরোধীতার উৎস লুকিয়ে রয়েছে ধর্ম ও ধর্মীয় গ্রন্থের বাণীগুলোতে। সম্ভবত একারনেই একই ধর্ম মেনে কেউ হয় নিরীহ সূফী দরবেশ আবার কেউ হয় ভয়ঙ্কর কোন টেররিষ্ট। সাধারণত দুই পক্ষই থাকে তাদের আদর্শের ব্যাপারে আপোষহীন।আদর্শিক এই আপোষহীনতা থেকেই জন্ম নেয় বিরোধ। এক পক্ষ মোনাফেক তথা চির শত্রু ভাবে অন্যদের। একই ধর্ম বিভাজিত করে একই ধর্মাবলম্বী মানুষদের । এভাবেই ধর্মীয় কট্টর পন্থী আদর্শ গুলো যুগের পর যুগ রক্তাত্ত করে যায় তিলে তিলে গড়ে ওঠা এই মানব সভ্যতাটিকে। জন্ম দেয় নিজামী ,সাঈদী, এ টি এম আজাহারের মত কিছু ব্যক্তি ও তাদের নৃশংস কার্যকলাপের। নৃশংসতার এই চিরকালীন ক্ষত সঙ্গী হয় কয়েকটি প্রজন্মের । এক চক্র যায় আরেক চক্র আসে,এভাবে চলতেই থাকে। ধর্মীয় কট্টরপন্থার এই দুষ্ট চক্রের আদৌ কি কোন শেষ আছে? doctorate of pharmacy online
achat viagra cialis france
দুরন্ত জয় বলছেনঃ kamagra pastillas
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ viagra in india medical stores
এই প্রশ্নের উত্তরটা কি আদৌ পাব? synthroid drug interactions calcium
অপার্থিব বলছেনঃ levitra 20mg nebenwirkungen
ভবিষ্যত প্রজন্মই পারে একমাত্র এই প্রশ্নের উত্তর দিতে। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় দেখছি না তবে ধর্মীয় কট্টর পন্থা ও তাদের উৎসগুলো সম্পর্কে আরো জানানো উচিত তাদের। will i gain or lose weight on zoloft