আক্ষেপ…
962
বার পঠিতবিন্দু ছিল আজাদের বোন, সাফিয়া বেগম আর ইউনুস চৌধুরীর প্রথম সন্তান। হঠাৎ বসন্ত রোগে হঠাৎ মারা গেল সে, সাফিয়া বেগম তখন মেয়ের শোকে পাগলপ্রায়। ফলে ১৯৪৬ সালের ১১ই জুলাই আজাদ যখন তার কোলে এল, সাফিয়া বেগম যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলেন। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানো রাজপুত্র ছিল আজাদ, তার বাবার শান-শওকত ছিল দেখার মত। অবশ্য তাতে স্ত্রী সাফিয়া বেগমের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। amiloride hydrochlorothiazide effets secondaires
‘৪৭য়ের আগস্টে পাকিস্তান হবার পর ইউনুস চৌধুরী যখন ঢাকায় এসে ব্যবসা শুরু করলেন, তখন বাবার কাছ থেকে পাওয়া গয়না বিক্রি করে সে ব্যবসায়ের মূলধন যুগিয়েছিলেন সাফিয়া বেগম। দেখতে দেখতে বিজনেস ম্যাগনেট হয়ে উঠলেন তিনি, পরিনত হলেন পাকিস্তানের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তিতে। ইস্কাটনের বাড়িটার জৌলুশ ছিল রাজপ্রাসাদের মত, কেবল এক নজর দেখতেই প্রতিদিন ছুটে আসতেন অসংখ্য মানুষ। এই বাড়িটা, ফরাশগঞ্জের তিনতলা বাড়িটাসহ অসংখ্য জমিজমা সাফিয়া বেগমের নামে লিখে দিয়েছিলেন ইউনুস সাহেব,কিন্তু এই বিত্ত- বৈভব সব কিছু তুচ্ছ ছিল ছেলে আজাদের তুলনায়…
স্কুল থেকে ফিরে হোমওয়ার্ক করতে করতে ছোট্ট আজাদ যখন ডেস্কেই মাথা রেখে ঘুমিয়ে যেত, তখন খুব সাবধানে ছেলেকে হেলান দিয়ে বসাতেন মা, কুসুম গরম পানিতে পা দুটো ডুবিয়ে নিজ হাতে ডলে ডলে ধুয়ে দিতেন, তারপর তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে হাত-পাগুলো মুছিয়ে দিয়ে ঘুমন্ত ছেলেকে আবার শুইয়ে দিতেন আলগোছে। ছেলে তার সাত রাজার ধন, সম্ভব হলে যে বুকের খাঁচার ভেতর বসিয়ে রাখতেন ছেলেকে, তা বলাই বাহুল্য…
ইউনুস সাহেব যখন বিয়ে করে আরেকটা বউ নিয়ে এলেন, সাফিয়া বেগমের পৃথিবীটা হঠাৎ একবার দোল খেয়ে স্থির হয়ে গেল। কল্পনার বাইরে ছিল ব্যাপারটা, তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্তে ছেলের হাত ধরে এক বস্ত্রে বেরিয়ে এলেন ইস্কাটনের প্রাসাদ থেকে, উঠলেন ফরাশগঞ্জে নিজের বাড়িতে। পাথরকঠিন শপথ করেছেন- এ জীবনে আর চৌধুরীর মুখ দেখবেন না, সামনে আসতে দেবেন না তাকে। বিয়ের সময় বাপের দেওয়া গয়নাটুকু সম্বল করে শুরু হল আজাদের মায়ের সংগ্রাম। দাঁতে দাঁত চেপে কঠিন বাস্তবতার সাথে লড়াই করে আজাদকে ম্যাট্রিক-আইএসসি-বিএ পাশ করালেন। তখন ইউনুস চৌধুরী আজাদের মাকে ফেরাবার একটা শেষ চেষ্টা করে দেখলেন।
এম.এ করতে আজাদকে কৌশলে করাচী পাঠিয়ে সাফিয়া বেগমকে নিঃসঙ্গ করে ফেললেন এই আশায়- অন্তত এখন যদি সে একটু ভাঙ্গে, একটু মচকায়, স্বামীর কাছে ফিরে আসে। সাফিয়া বেগম ভাঙ্গলেনও না, মচকালেনও না। ফলাফলটা ভালো হল না। ইউনুস চৌধুরীর গুন্ডারা ফরাশগঞ্জের বাড়িটা দখল করে নিল, আবারও এক বস্ত্রে বোনের পাঁচটা সন্তানকে নিয়ে সাফিয়া বেগম নেমে এলেন রাস্তায়। জুরাইনের খুপড়ি থেকে মালিবাগের চিপাগলি, মালিবাগ থেকে মগবাজার—ভাড়া বাসার জীর্ণ দশায় রুদ্রতার কশাঘাত কেবলই বাড়তে থাকে, শুধু আজাদের মা-ই থাকেন অবিচল, কাঁচা হীরের চেয়েও শক্ত…
“মা, এরপর থেকে জুয়েল-কাজীরা যে অপারেশনে যাবে, আমি সেটাতে যেতে চাই। এতো বড় জোয়ান ছেলে ঘরে বসে থাকে, আর দেশের মানুষ মার খায়, এইটা ক্যামন কথা? এইটা হবে না।”
কি জবাব দেবেন ছেলেকে? বলবেন যুদ্ধে যাও? এই ছেলে তার বহু সাধনার ফল। মেয়েটা তার কথা বলা শিখেছিল। কি সুন্দর আধো আধো বুলিতে ডাকতো, মা মা, দাদা দাদা। হুট করে বসন্ত রোগ কেড়ে নিল গেল ওকে, সাফিয়া বেগমের জগতটা হয়ে গেল শুন্য, অর্থহীন। তখন স্রস্টার অপার দয়ায় তার কোলে এল আজাদ। কি সুন্দর রাজপুত্রের মত চেহারা, আদেখলার মত কপালে কাজলের টিপ পড়িয়ে রেখেছেন সারাক্ষন, যেন কারোর চোখ না লাগে। সেই বুকের ধনের যদি কিছু হয়, যদি গুলি লাগে গায়ে, সাফিয়া বেগম আর ভাবতে পারেন না, অশ্রুর প্লাবনে ভেসে যায় তার ভাবনার ক্ষমতা… puedo quedar embarazada despues de un aborto con cytotec
–ঠিক আছে, তুই যুদ্ধে যেতে পারিস, আমার দোয়া রইল।
ভাবলেশহীন চোখে তাকিয়ে থাকে ছেলে মায়ের মুখের দিকে, বুঝতে চেষ্টা করে, মা কি সত্যিই বলছেন না রেগে গিয়ে অনুমতিটা দিচ্ছেন…
–মা, তুমি কি অন্তর থেকে পারমিশন দিচ্ছ, নাকি রেগে গিয়ে?
–আরে রাগ করব ক্যান? দেশটা স্বাধীন করতে হবে না?
আম্মা, দুইদিন ধরে কিছু ধইরা একটা দানা মুখে দেন নাই। এমনে চললে তো আপনে মারা যাইবেন। আজাদ দাদা ফিরা আসবই, কিন্তু আপনে মইরা গেলে আমাদের কি হইব?
ছোট বোনের পাঁচটা সন্তানের মুখের দিকে চেয়ে সাফিয়া বেগমের নিশ্চলতা ভাঙ্গে। আজাদের খালাতো বোন মহুয়া জোর করে তাকে ডাইনিংয়ে নিয়ে বসিয়ে রান্নাঘরে যায় তরকারী আনতে। দুদিনের অভুক্ত মায়ের সামনে ভাতের প্লেট, ধবধবে সাদা ভাত। ভাতগুলোর দিকে চেয়ে হঠাৎ মায়ের বুকের ভেতরটা দুমড়েমুচড়ে যায়, কানে ঝনঝন করে বাজতে থাকে টর্চার সেলের গরাদের ওপাশে থাকা আজাদের শেষ আকুতি…
“মা, ভাত খেতে ইচ্ছে করে। দুইদিন ভাত খাই না। কালকে ভাত দিয়েছিল, আমি ভাগে পাই নাই।”
ছেলে নিখোঁজ হয়ে যাবার পর দুইদিন পর এই প্রথম হু হু করে কেঁদে ওঠেন মা সাফিয়া বেগম, সাদা ভাতগুলো পড়ে থাকে ওভাবেই। আজাদের মায়ের আর ভাত খাওয়া হয় না…
১৪ বছর পর ১৯৮৫ সালের ৩০শে আগস্ট, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছেলের পথ চেয়ে প্রতীক্ষায় ছিলেন মা, তার প্রতীক্ষার পালা শেষ হয়নি। আজাদ ফেরেনি। নিখোঁজ হবার পর থেকে আজাদের মা আর ভাত খেতে পারেননি, ঘুমাতে পারেননি বিছানায়। শক্ত মেঝেতে পাটি বিছিয়ে, বালিশের বদলে পিড়ি অথবা ইট বিছিয়ে শুয়ে থাকতেন তিনি। আজাদকে যে ঠাণ্ডা মেঝেতে ফেলে অমানুষিকভাবে পিটিয়েছে ওরা, তার আজাদ যে ভাত খেতে চেয়েও এক লোকমা ভাত খেতে পায়নি…
আজাদের মা আজ ধুলো পড়া ইতিহাস মাত্র… আধুনিক প্রজন্মের আপডেটেড ছেলেমেয়েরা ধুলো ঘাটে না। ধুলো ঘাঁটা বড্ড আনহাইজেনিক কিনা… clomid over the counter
রিনি বলছেনঃ
কমেন্ট করা যাচ্ছে না।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
কেন?
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ renal scan mag3 with lasix
কমেন্ট তো করেই ফেললেন আপু!
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
জানা কাহিনী কিন্তু আপনার ভাষায় পড়ায় আরও একবার অসাধারন লাগল।আসলেই ভাই আপনার কি বোর্ডে জাদু আছে।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
নাহ ভাই, আমার কি বোর্ডে কোন জাদু নাই। ইনফ্যাক্ট আমি কেউ না। কিন্তু যাদের কথাগুলো তুলে আনার চেষ্টা করতেছি, দে আর সামথিং, সামথিং টু বি প্রাউড অফ…
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ
অনবদ্য লিখা! Written in the DON way…
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
পড়বার জন্য ধন্যবাদ স্যার
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
kamagra pastillasআক্ষেপ… আসলেই বড্ড আক্ষেপ হয় যখন শুনি এ যুগের আধুনিক(!) ছেলেমেয়েরা বলে – “ধুর, এসব বানানো ঘটনা। ১৪ বছর আবার কেউ ভাত ছাড়া অন্য কিছু খায়া থাকতে পারে নাকি !! এইসব অতিমাত্রায় বাড়াবাড়ি।”
ভুল হইছিল আজাদ, রুমি, বদি,জুয়েল,আলতাফ মাহমুদ-গোটা ৩০ লাখ শহীদের যে এইসব বেইমান বেজন্মাদের জন্য এত্ত ত্যাগ স্বীকার করা, খুব ভুল হয়েছিলো।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
আজাদ আর ওর মায়ের কথা লেখার পর ফেসবুকে ইনবক্সে অনেকেই বলছিল, এই ছাইপাঁশ লিখে সস্তা লাইক কামানির ধান্দা বাদ দেন… আজাদ আর তার মায়ের কথা, ক্র্যাক প্লাটুনের কপ্তহা নাকি সস্তা লাইক কামানোর ধান্দা… আজকাল আর অবাক হই না, কত জারজই তো ঘুরে বেড়ায় আশে পাশে… কি আর করা…
তারিক লিংকন বলছেনঃ
এই ছেলেটা কি সুন্দর করে যে আবেগ নিয়ে খেলে… আমি বারংবার মেরুদন্ডে শীতল স্রোতের অনুভুতি নিতে মহান ডনের লিখাগুলো পড়ি!! ধন্যবাদ আপনাকে… levitra 20mg nebenwirkungen
আজাদ আর তার মাকে বিনম্র শ্রদ্ধা…