হারিয়ে যাওয়া এক বীর যোদ্ধা
876
বার পঠিত৬ ডিসেম্বর ২০১৪ পটুয়াখালীর একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রথম জানতে পারি ওনার সম্পর্কে।৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় পটুয়াখালি,সেই ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ডিসি কোর্টে উনি উড়িয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।আলতাফ হায়দার সেই হারিয়ে যাওয়া নায়ক উনি উরিয়েছিলেন পটুয়াখালীতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।৩ বার স্ট্রোক করে বর্তমানে পক্ষাঘাতে ভুগছেন।সাথে সাথে বিষয়টা অবগত করি আমার বাবাকে,তিনি খবরের সত্যতা স্বীকার করেন এবং জানান আলতাফ হায়দার সম্পর্কে বর্তমানে তারা কেউ অবগত নন।আলতাফ হায়দারের ব্যাপারটি জানান হয় প্রশাসন ও পৌর মেয়রকে তারাও ব্যাবস্থা গ্রহণে আশ্বাস দেন।তাদের সেই সাহায্য নিয়ে ২১ ডিসেম্বর আমি সহ ৪ জন রওনা দেই পটুয়াখালী থেকে মির্জাগঞ্জের উদ্দেশ্য।মির্জাগঞ্জের দেউলিতে থাকেন এই বীর যোদ্ধা। viagra in india medical stores
অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য,ওনার বীরত্ব সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য আমাকে কেউ প্রদান করতে পারছিলেন না।শুধু এটুকুও জেনেছিলাম যুদ্ধে বীরত্ব সুচক ভুমিকার জন্য ৯ নম্বর সেক্টর এর সেক্টর কমান্ডার এম এ জ্বলিল ওনাকে “হায়দার” উপাধি প্রদান করেন clomid over the counter
২১ ডিসেম্বর ওনার বাড়ি পৌছাই,পক্ষাঘাতের কারনে এখন আর নড়াচড়ার শক্তি নেই।বিছানা থেকে ওনার এক আত্মীয়ের সহযগিতায় উঠে,বিছানাতে বসেই কথা বলেছিলেন আমার সাথে।অবাক করা তথ্য দিলেন তিনি আমাকে, ১৯৬৩ সালে তিনি ভর্তি হন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে।ছিলেন পাকিস্তান আর্মার কোরের ট্যাংক রেজিমেন্টের “রেজিমেন্ট পার্মানেন্ট ইন্সট্রাক্টর” ১৯৬৫ সালে অংশগ্রহন করেন পাক ভারত যুদ্ধে।পাক ভারত যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য পেয়েছিলেন পদক।ওনার কথা শুনে মনে হয়েছিল সেই বিখ্যাত শব্দটি “জন্মগত যোদ্ধা” জানতাম পাক ভারত যুদ্ধে বাঙ্গালিরা সাহসিকতার সাথে লড়াই করেছিলেন।সুতরাং খেতাব প্রাপ্ত এক বাঙালী যোদ্ধার সাহসিকতার ভুমিকা শোনার লোভটি আর সামলাতে পারলাম না।কারন পাইক্কারা অপবাদ দিত আমরা নাকি ভিতু জাতি।সুতরাং পাইক্কাদের ভুল প্রমান করার আরেকটি সুযোগ সামনে এসে গেল।তাই পাক ভারত যুদ্ধে ওনার ভুমিকা কি ছিল সেটা জানতে প্রশ্ন করার লোভটা সামলাতে পারলাম না।
১৯৬৫ পাক ভারত যুদ্ধ : পাক ভারত যুদ্ধের সময় উনি ছিলেন শিয়ালকোট সেক্টরের ৩১ ক্যাবেলারি রেজিম্যান্টে।যুদ্ধে চলাকালীন সময়ে একদিন ওপি অর্থাৎ ইনফর্মার এসে খবর দিল,ভারতের ট্যাংক রেজিম্যান্টের ২০০ ট্যাংক শিয়ালকোট সীমান্ত অতিক্রম করে প্রায় ৫০ মাইল পাকিস্তান সীমান্তে ঢুকে গিয়েছে।৩১ ক্যাবলারি রেজিম্যান্ট কমান্ডার মেজর আনোয়ার ওয়াজি ছিলেন সদ্য প্রোমোশন পাওয়া অফিসার,ঘাবড়ে গেলেন তিনি।এরপর তিনি সুবেদার মেজর জাফর উল্লাহ খান কে ডাকলেন।২য় বিশ্বযুদ্ধের পোড়খাওয়া সৈনিক ছিলেন এই সুবেদার মেজর।রেজিম্যান্ট কমান্ডারকে অভয় দিলেন,বললেন স্যার আমরা ম্যানুয়ারিং পদ্ধতিতে যুদ্ধ করব স্যার।ম্যানুয়ারিং পদ্ধতিটি হল অগ্রসরমান শত্রুকে ঘিরে ফেলে আক্রমন করা।তাৎক্ষনিক ম্যাপ একে ব্যাটেলপ্ল্যান তৈরি করলেন এই দুজন।ভারতীয় ট্যাংক রেজিম্যান্ট তখন মাত্র ১০ মাইল দুরে।প্রতিপক্ষের ২০০ ট্যাংকের বিপরীতে পাকিস্তানী এই রেজিম্যান্টের ছিল মাত্র ৬০ টি ট্যাংক।ইতিমধ্যেই ভারতীয় ট্যাংক রেজিম্যান্ট শিয়ালকোটের এলাড় স্টেশন দখল করে নিয়েছে।বিপরীতে পাকিস্তানী ট্যাংক রেজিমেন্টের সেনারা দখল করলেন রেল লাইনটি।উভয়পক্ষই টার্ক ডাউন পদ্ধতি অনুসারে টি ডি ২০ দিয়ে গর্ত খুড়ে বেশ কিছু ট্যাংক আন্ডারগ্রাউন্ড করল,কেবল মাত্র ভারি কামান উপরে তুলে রাখা হল।পাকিস্তানিদের ২৫ টি ট্যাংক,আন্ডারগ্রাউন্ড করা ট্যাংকের সামনে ছিল । এই ট্যাংক দিয়েই আটকাতে হবে ভারতীয় ট্যাংক রেজিম্যান্টের ২০০ ট্যাংক এর অগ্রযাত্রা!!!!!বাকি ট্যাংক দুই পাশ দিয়ে অগ্রসর হয়ে বর্ডার এরিয়াতে চলে যাবে,অর্থাৎ ঘিরে ফেলে আক্রমন করা হবে ভারতীয় ট্যাংক রেজিম্যান্টকে।দুই পক্ষ এবার মুখোমুখি।ওয়্যারলেস থেকে বার্তা আসল,সম্মুখে অবস্থান্ নেয়া ট্যাংক গুলো ফায়ার করবে সরাসরি ভারতীয় ট্যাংকের দিকে।আর পিছন থেকে অর্থাৎ বর্ডার এরিয়া থেকে ব্লাংক ফায়ার দিবে বাকিরা,এই অংশেই ছিলেন আলতাফ হায়দার।তাদের ফায়ার দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল কোনক্রমে যদি শত্রুপক্ষের ট্যাংক পাকিস্তানীদের এই ২০-২৫ টি ট্যাংক ধ্বংস করে এগিয়ে যায় তখন ঐ অগ্রযাত্রাকে তারা যাতে আটকাতে পারেন।শুরু হল দুই পক্ষের তুমুল যুদ্ধ,মার খেতে শুরু করল ভারতীয় ট্যাংক রেজিম্যান্ট।ফলে ভারতীয় রেজিম্যান্টের নেতৃত্ব দানকারী কমান্ডার এর যুদ্ধের প্ল্যান পুরোই ভন্ডুল হল।নির্দেশ দিলেন রিভার্স করে ভারতে ফিরে যেতে,টার্ক ডাউন এ থাকা ভারতীয় ট্যাংকগুলো বের হল।বর্ডার এর কাছাকাছি আসতেই পরে গেল আলতাফ হায়দারের ম্যানুয়ারিং এর মধ্যে। ব্যাস একবারে টার্গেট করে একের পর এক ট্যাংক ধ্বংস করতে থাকলেন আলতাফ হায়দার রা।নিজের হাতেই ধ্বংস করলেন ১০-১৫ টি ট্যাংক।একে একে ১৫০ ট্যাংক এ আগুন ধরে গেল।বাকি গুলো ধ্বংস হয়েছিল শুরুতেই।এভাবেই শিয়ালকাটির ঐ যুদ্ধে সাহসি ভুমিকা রাখেন আলতাফ হায়দার।জিতে নেন বীরত্বসুচক পদক।
১৯৭১ সাল, স্বাধীনতা যুদ্ধ : ৭০ সালের বন্যার সময় বাংলাদেশে আসেন আলতাফ হায়দার সহ পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে কর্মরত ঐ এলাকার ১০-১২ জন বাঙালি সৈনিক,৭ মার্চের শেখ মুজিবের ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধের।প্রশিক্ষন দিতে থাকেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করতে ইচ্ছুক জনগণকে।গড়ে তোলেন এই অঞ্চলের সবচাইতে বৃহত্তম মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষন ক্যাম্প।বরগুনা জেলার বামনা থানায় কাজিরহাট ক্যাম্প, মির্জাগঞ্জ থানার বৃহত্তম দেউলি ক্যাম্প,এবং বাউফল থানার অন্তর্গত বগা ক্যাম্প, এই ৩ টি ক্যাম্পের কমান্ডার ছিলেন তিনি।বরগুনা,বামনা,বেতাগি,মির্জাগঞ্জ,মঠবাড়িয়া,পটুয়াখালী,বাউফল এই ৭ টি থানা তিনি তার বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রনে রাখেন।তার বাহিনীতে যোদ্ধা সংখ্যা ছিল,বগা ক্যাম্পে ২০০ জন,কাজিরহাট ক্যাম্পে ছিলেন ১৫০ জন এবং মির্জাগঞ্জের দেউলি ক্যাম্পে ছিল ৩০০ জন।মোট ৬৫০ জন।যুদ্ধচলাকালিন সময়ে ৯ নম্বর সেক্টরে উনি সর্বপ্রথম বামনা থানা দখল করেন।উদ্দেশ্য ছিলেন ওনার তৎকালীন হেডকোয়াটার বুখাবুনিয়া তে যেখানে যেতে হলে বিশখালি নদী পার হয়ে বামনা থানার সামনে দিয়ে যেতে হয়।তাই এই থানাটি দখলের প্রয়োজন ছিল।উনি ওনার যোদ্ধাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করালেন,থানার ওসি যদি এলাকায় রাজাকার ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীদের আশার খবর মুক্তিযোদ্ধাদের না দেয় তাহলে আলতাফ হায়দার থানা দখল করবেন।ওসি জানালেন তিনি হানাদার ও রাজাকার বাহিনী আসার খবর জানাবেন।সরল মনে ওসির কথা বিশ্বাস করলেন আলতাফ হায়দার,ওসি যেহেতু বাঙালি সেহেতু তাকে তো বিশ্বাস করাই যায়।৭১ এ যুদ্ধচলাকালিন সময়ে দেউলি বাজারে অবস্থান করছিলেন আলতাফ হায়দার,উদ্দেশ্য ছিল কাঠালিয়া থানা দখল করা।যেই মোতাবেক ৬০ থেকে ৭০ জন যোদ্ধা উনি বাছাই করছেন।দেউলি বাজার বসে উনি দেখতে পেলেন দূরে বদনিখালি বাজারে আগুন দিয়েছে পাক হানাদার বাহিনী।রক্ত গরম হয়ে গেল আলতাফ হায়দারের,কাঠালিয়া থানা দখলের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে উনি ওনার সহযোদ্ধাদের নিয়ে অগ্রসর হলেন বদনি খালি বাজারে,সেখানে অবস্থানরত পাক হানাদার বাহিনীকে মোকাবেলা করতে।বদনিখালি বাজার থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ দূরে থাকতে দলের একজন মুক্তিযোদ্ধার রাইফেল অসাবধানতা বশত পরে গিয়ে একটা ফায়ার হয়।যেহেতু ওনার অবস্থান থেকে পাকিস্তানিদের অবস্থান খুব কাছে ছিল,তাই উনি ওনার বাহিনীকে হল্ড করতে বললেন,কেননা উনি বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানী বাহিনী তাদের অবস্থান জেনে ফেলেছে। সুতরাং ওনার কোন ভুল এ হয়ত ওনার বাহিনীর সবাই মারা পরতে পারে।উনি ওনার এই অবস্থান থেকেই দেখলেন পাকিস্তানিরা লঞ্চে উঠছে,একটা গুলির আওয়াজেই ভয়ে পালাচ্ছে।আবারো ডাবল মার্চ করে সহযোদ্ধাদের অগ্রসর হবার নির্দেশ দিলেন আলতাফ হায়দার।কিন্তু বদনিখালি বাজারে পৌছাতে পৌছাতে হানাদারদের লঞ্চ চলে গেছে ফায়ারিং রেঞ্জের বাইরে।এক সাথে ফায়ার ওপেন করেও কাজ হচ্ছিল না।আলতাফ হায়দার তখন ওনার বাহিনী থেকে অগ্রসর হয়ে একটি রাইসমিলের স্তম্ভের উপরে উঠে গুলি করলেন।ওনার গুলিতে আহত হল এক পাকসেনা।উনি শুধু জানতে পেরেছিলেন বেতাগি হাঁসপাতালে পাঠানো হয়েছিল,তারপর আর কিছু উনি জানতে পারেন নাই।বদনিখালি বাজারের অবস্থা আর ঐ বিশ্বাসঘাতক বাঙালি পুলিশ ওসির কথা ভাবতেই ক্রোধে ফেটে পরতে লাগলেন উনি।আলতাফ হায়দার বললেন এর প্রোতিশোধ আমি নেবই,তোমরা কি রাজি আছ আমার সাথে যেতে????সহযদ্ধারা জবাব দিল হ ওস্তাদ আমরাও আপনার সাথে যাব।কিন্তু বিকেল হয়ে গেছে,রাত কোথায় কাটাবেন এই ব্যাপারে আলোচনা করলেন সহযদ্ধাদের সাথে কাজিরহাট এলাকার কাজিবাড়ির বেশ কিছু লোক ছিল ওনার বাহিনীতে, ওনারা বললেন আজকে রাত আমরা কাজিরহাটেই কাটাই।উনি রাজি হলে তখন সৃষ্টি হয় কাজিরহাট ক্যাম্প।সেদিন ছিল সোমবার।ঐদিন রাত ও পরের দিন মঙ্গলবার কাজির হাটক্যাম্পে অবস্থান করে বুধবার রাতে ওনারা রওনা দিলেন বামনা থানা দখলের উদ্দেশ্যে।রাত ৩ টায় আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল ওনাদের।বিশখালি নদী অতিক্রম করে বামনা বাজারের উত্তর দিক দিয়ে ওনারা বাজারে ঢুকলেন।এরপর সেখানে সবাই একত্রিত হয়ে রণকৌশল অনুযায়ী অগ্রসর হতে থাকলেন থানার দিকে।থানার পিছনে বেশকিছু সমতল জায়গা তার পিছনে একটি জঙ্গলে অবস্থান নিলেন আলতাফ হায়দার ও ওনার বাহিনি।সেখান থেকেই দেখলেন দুই তলা থানার উপরে তারা চারদিক থেকে বালির বস্তা ফেলে আরেকটি তলার মত তৈরি করেছে,সেখানে রাইফেল নিয়ে পজিশনে আছে পুলিশ ও পাকিস্তানী মিলিটারি।থানার চারপাশেই ওদের বাংকার আছে,উত্তর ও পশ্চিম দিকে শুপারির গাছ থেকে চ্যাড়া তৈরি করে, সরু করে কেটে মাটিতে পুতে রেখেছে ফলে সেগুল অতিক্রম করে সামনে অগ্রসর হবার উপায় নাই।ইতিমধ্যেই মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়ে এক যোগে ফায়ার ওপেন করে পাকিস্তানী বাহিনি।পাল্টা জবাব আসতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকেও।দুই পক্ষের তুমুল লড়াই চলছে।পাকিস্তানিদের সারেন্ডার করানো তো দূরে থাক ,ওদের বৃষ্টির মত গুলির জবাব দিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গুলি প্রায় শেষের পথে।থানা দখলের মত ভারি কোন অস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ছিল না।ভারি অস্ত্র বলতে যেটা ছিল তা শুধু এনারগা গ্রেনেড,এস এল আর এর মাথায় বসিয়ে ফায়ার করা হত এই গ্রেনেড।আলতাফ হায়দারের পাশে থাকা ইউনুস শরীফ এনারগা গ্রেনেড ফায়ার করলেন কিন্তু লাভ বলতে তাতে কেবল থানার এক পাশের দেয়াল ধসে পরল।কিন্তু পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কোন ক্ষতি হল না।এর মধ্যে নতুন একটি আশংকা তৈরি হতে থাকল আলতাফ হায়দারের মনে,যদি এই আক্রমণের খবর পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কাছে পউছায়,তাহলে ওরা তো এই এলাকায় এসে বোম্বিং করবে।সেখেত্রে তার দলের বিরাট ক্ষতি হবে।তাই সিদ্ধান্ত নিলেন তার নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও ওনার বাহিনীকে রক্ষাকে করতে হবে ,সেটি হবে আজকের মত ওনার বিজয়।কান্নাকাটি করে সহযোদ্ধাদের কাছ থেকে বিদায় নিলেন সাথে নিলেন দুটি হ্যান্ড গ্রেনেড।থানার পূর্ব পাশ থেকে একটি সরু খাল বয়ে চলে গেছে।সহযোদ্ধাদের নির্দেশ দিলেন কাভার ফায়ার করতে।উনি ঐ খাল থেকে থানার কাছে পৌঁছালেন।রান্নাঘর ও আরেকটি ঘরের মাঝখান থেকে থানায় ঢুকবেন এমন সময় দেখলে অস্ত্র হাতে টহল রত একটি পাকিস্তানী সৈনিক।সাক্ষাতকারের এই জায়গায় এসে উনি বললেন ওনার দৈহিক শক্তির কথা।দুই হাতের তিন আঙ্গুলে করে ২ কাঠি করে মোট ৪ কাঠি ধান উনি রাখতে পারতেন।ট্রাকের বাম্পার যার ওজন ১১০ কেজি সেটি দিয়ে উনি সকালে ব্যায়াম করতেন।গাভির ৩ সের দুধ একাই খেয়ে ফেলতে পারতেন।১৫-২০ টা ডিম হজমে করা কোন ঘটনা ছিল না।এলাকার অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও ওনার নানা শারীরিক সক্ষমতার কথা বললেন।যাই হোক দেখামাত্রই ওনার ভাষায় দুই চার কদম যাওয়ার পরই দেহি একটা সেপাই আয় আর যায়, আমার সামনে পরল মারলামএক বক্সিং, মাইরা ওরে ফালাইয়া দেলাম,হেরপর ওর অস্ত্র সাথে নিলাম। ওমা ৫-১০ কদম আগাইয়া দেহি আরেকটা সেপাই, মারলাম হেডারএও এক বক্সিং।হেইডাও পইরা গেল,এরপর অইটার অস্ত্রও কাধে লইলাম।সামনে আগামু তখন দেখি একটা কদুর ঝাহা আর তার সামনে খোলা মাঠ তার দক্ষিনে একটা টিনশেড ঘর,হেই টিনশেড ঘরের দৌড় তক্তার সামনে বিছানা বেডিং গোল কইরা হেইটা সামনে ৫০ টার মত রাজাকার রাইফেল লাইখা লাইন পজিশন লইয়া আছে।সব রাইফেল থানার ভবনের দিকে তাক করা,এহন ওরা যদি গুলি করে তাইলে আমার অবস্থা ছাতু হইয়া যায় না??????আমি তহন একটু সামনে আগাইছি বাম দিকে চউখ পরছে পরেই দেহি ঐ অবস্থা,আমি ৬৫ এর যুদ্ধ করছি না??কিছু অভিজ্ঞতা তো আছেই আর আমি আছেলাম ইন্সট্রাক্টর তো আমাগো একটা কথা আছিল শত্রুপক্ষের মধ্যে যত ত্রাস তৈরি করতে পারবা অত কামেয়াব হবা।তয় আমি করলাম কি গ্রেনেড টা বাইর কইরা ওগো ইশারায় কইলাম হালারা যদি আমার দিকে কিছু করো হাইলে কইলাম এককালে ধুলিসাত হইয়া যাবা।এইয়া দেইখা রাজাকার ৫০ টা মনে হয় এক্কারে মুদ্দার হওয়া পইরা রইছে এইরহম রইল।এইফাকে আমি করলাম কি কাল বিলাম্ব না কইরা এই তো আমার সুযোগ যায়,গেছি থানার বারন্দার সামনে যাইয়া দেহি কি বালির বস্তা দিয়া ওয়াল এর সামনে এক মানুষের বেশি উচু বাংকার করছে সেইখান থেইকা ফায়ার করতাছে,আর কাভারিং ফায়ারের কারনে ওরা আর নিচে খেয়াল করতে পারে নাই।আমি করলাম কি ক্রল কইরা বাংকারের সামনে গেলাম এহন একটু ফাক খোজতে থাক্লাম,কায়দা মত ফাক পাইয়া একটা গ্রেনেড ছাড়লাম,ছাড়ার পর এক্টার গ্যালে খুলি উইররা আর বাকি গুলার হাত পাও ভাইঙ্গা ঐখানে পইরা রইল আহত গুলানের মধ্যে কান্নার রোল পইরা গেল,সুস্থ গুলান ভিতরে ঢুইকা সিঁড়ির দিকে যাইতেছিল,আমি করলাম কি বস্তায় উপরে ভর দিয়া বারান্দায় পরলাম।এরপর সিঁড়ির দিকে গ্রেনেড ছাড়লাম আল্লার রহমতে সেইখানেও কয়েকটা পইরা গেল।এরপর আমি মনে মনে কইলাম এহন তো আর এইহানে খারাইয়া থাওন যায় না।চতুরদিক দিয়া গুলি হইতাছে ঘোপেঘাপে কোনহান দিয়া একটা লাগলে তো আমি সেশ।এই এরপর আমি আবার যেইহান দিয়া ঢুকছি অইহান দিয়া বাইর হইয়া সিগ্নাল ফায়ার দেলাম,লগে লগে আমার সাথের লোকজন জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনি দিয়া সামনে অগ্রসর হইল।আর আমরা থানা দখলে নেলাম ঐ দিন প্রায় ১৫০ পাকিস্তানী সেনা,পুলিশ,রাজাকারকে আত্মসমর্পন করিয়েছিল আলতাফ হায়দারে বাহিনী,বিশ্বাসঘাতক ওসি কে গুলি করে হত্যা করেছিলেন আলতাফ হায়দার।
। walgreens pharmacy technician application online
একের পর এক যুদ্ধে জয়লাভ করলেও জিবনযুদ্ধে প্রায় হারতে বসেছেন এই বীরযোদ্ধা।৭৫ এ পট পরিবর্তনের জিয়াউর রহমান মেজর সেকান্দারকে পাঠিয়েছিলেন ওনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে,মেজর সেকান্দার ওনাকে না মেরে ওনার রাইফেল টি নিয়ে গিয়েছিলেন ।সে শোক উনি আজও ভুলতে পারেন নাই।অনার বড় ছেলের মৃত্যুর থেকেও উনি বেশি আঘাত পেয়েছিলেন এই অস্ত্র কেড়ে নেওয়াতে।সময় স্বল্পতার কারনে ওনার মুখ থেকে বীরত্বের সেই কাহিনী গুলো পুরোপুরি শুনতে পারি নাই।কথা দিচ্ছি এরপর কেবল লিখিত নয় ভিডিও আকারে প্রকাশ করব আলতাফ হায়দারের সেই বীরত্ব গাথা কাহিনী।উনার বর্তমান দুরবস্থার কথা শুনে পটুয়াখালী পৌর মেয়র নগদ ১০০০০ টাকা ও শীত বস্ত্র প্রদান করেছিলেন।ওনার বাড়িতে বিদ্যুৎ না থাকায় মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন থেকে সোলার প্যানেল বসিয়ে দেয়া হয়েছে।জেলা প্রশাসন ওনাকে বাড়ি নির্মানের জন্য ৬ লক্ষ টাকা প্রদান করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।চিকিৎসার জন্য ঢাকা গেলে সেখানেও নগদ অর্থ সহায়তা করবে জেলা প্রশাসন।
কৃতজ্ঞতা: গ্রিন পটুয়াখালীর তামান্না ফেরদৌস, ওনার ঐ পোস্ট ছাড়া আমি আলতাফ হায়দার সম্পর্কে জানতে পারতাম না।
মেয়র পটুয়াখালী পৌরসভা
জেলা প্রশাসন পটুয়াখালী ও উপজেলা প্রশাসন মির্জাগঞ্জ
কমরেড মোতালেব মোল্লা,সাধারন সম্পাদক সিপিবি পটুয়াখালী জেলা ও দেলোয়ার হোসেন দিলিপ, সম্পাদক জাসদ পটুয়াখালি।এই দুজনের উদ্যগেই মুলত নড়েচরে বসে প্রশাসন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হালিম সাহেব।মির্জাগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ওয়াজেদ সাহেব ও ঐ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধার।
সর্বসেশঃ ইংরেজিতে দুটি শব্দ আছে fighter & warrior.I think Altaf Haydar is a great warrior.
ব্লগে এটি ছিল আমার প্রথম লেখা যে কোন সমালোচনা সানন্দে গ্রহনযোগ্য
মায়াবী তেজস্বিনী বলছেনঃ synthroid drug interactions calcium
অসাধারণ। এই বীর যোদ্ধা সম্পর্কে আরো জানার অপেক্ষায় রইলাম।
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
আমি আপ্রান চেস্টা করব যত দ্রুত সম্ভব ওনার বাকি কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরতে।
অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ার জন্য
Prabir Deb বলছেনঃ
Salar porley cuke jol cole ase, manush gula koto sahosi cilo ar amra koto vitur dal… Salute Boss
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
না ভাই,অই লোক গুলার রক্ত আমাদের ধম্নিতে।সময় হইলে আমরাও গর্জে উঠব ইনশাল্লাহ।
জয়তি বলছেনঃ
কি বলবো বুঝতে পারছি না দাদা …
কিন্তু তার কথা গুলো যে তুমি আমাদের জানিয়েছো এজন্য তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ।
এরকম আর ও অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন যাদের কথা আমারা অনেকেই জানি না ।।
ভিডিও টির জন্য অপেক্ষায় রইলাম ।। আর হ্যাঁ তোমার কাছ থেকে এমন আর ও অনেক কাহিনী শোনার জন্য অপেক্ষায় রইলাম । can you tan after accutane
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
সহমত জয়তির সাথে… এরকম আরও অসাধারন বীরত্বের গল্প শোনার অপেক্ষায় রইলাম
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
side effects of quitting prednisone cold turkeyইনশাল্লাহ,এই মাসেই ওনার বাকি কাহিনী প্রকাশ করতে পারব
চিরকুট টিম বলছেনঃ nolvadex and clomid prices
আপনার এই লেখাটি চিরকুট ম্যাগাজিনে গেলে আপনার কি কোন আপত্তি থাকবে ? acquistare viagra in internet
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত,আমার রিপ্লাই দিতে দেরি করার জন্য।আপনাদের ম্যাগাজিন আমার লেখা গেলে আমার কোন আপত্তি থাকবে না