ছেমা
412
বার পঠিতআরবীতে ছেমা বলে বাংলা ভাষায় গান, তাহার অবস্থা কিছু শোন মুসলমান।
গান বাজনার আদবের কথা শোন বেরাদর, লাখে লাখে লোকে করে তাহার কদর।
কেন কদর করে লোকে দেখনা ভাবিয়া, সকলেই পছন্দ করে ভাবিয়া চিন্তিয়া।
যে জানে না কিছু সেও গান গায়, দুই এক পদ গাইলে তবে মনে শান্তি পায়।
বোবা লোক দেখলে ভাইরে আন্দাজ করিবায়, মাত কথা জানে না ভাই সেও কুন কুনায়।
অবোধ শিশু যারা মায়ের দুধ খায়, কেউ যদি কারণবশত ঐ শিশুরে কান্দায়।
ঘুমাওরে ঘুমাওরে বলে যদি গান গায়, শিশুর গায়ে থাপ্পড় দিয়া হাতে তাল বাজায়।
গানে আর তালে শিশু ঘুমাইয়া যায়।
নদী যদি শুকাই যায় নৌকা ঠেকে তাতে, হৈ হৈ গান করে নৌকা নামাইতে।
গাছ যদি হাঢ়ে তুলে চিরিবার দায়, হেইয়া হেইয়া করি তারা সবে গান গায়।
আরব দেশে উট যখন মানুষে চালায়,উটের চালক যদি জলদি যেতে চায়;
রসের গান গেয়ে তার উটরে শোনায়, গান শুনি উট তার জোরে পাও চালায়।
আল্লাহর আশিক যারা তারা গান গায়, দোঁতারা-সেঁতারা আর মন্দিরা বাজায়।
লাউ দিয়া গান করে এশকের জ্বালায়, গান-বাজনা করলে তার মনে শান্তি পায়।
এশকের জোশে গান করে আল্লাহর কৃপায়, জিকির-আজকারে থাকে উদাসিনী প্রায়।
হালেতে বেহাল হয় আশেকের শরীর, খোদার এশকে ফানা হয় এশকের তাছির।
রুহেতে জজব ঘটলে লম্ফ জম্ফ করে, হা-হু করিয়া শব্দে এশকের চিৎকার মারে।
বেহুস হইয়া কেহ জমিনেতে ঘিরে, কেহবা বসিয়া তাহার মুর্শিদ জ্ঞান করে।
কান্নাকাটি করে আর মুর্শিদের গুণ গায়, আছাড় পিছাড় খায় তার মাসুকের জ্বালায়।
বর্জক ধ্যান করে তার মাশুকের আশায়, নব রঙ্গের বাজনা বাজে ছয় লতিফায়।
গান-বাজনার বিষয়ে আমি কি দিব বর্ণনা, তরিকতের মুর্শিদান সব গান-বাজনায় ফানা।
আহলুল্লাহ যত জনা সব আছেন গান-বাজনায়, গান-বাজনাতেই এশকের গোলা সবে জানিবায়।
আয়সা বিবি সঙ্গে লইয়া নবী মোস্তফায়, গান শোনাইছেন তিনি হাদিস দেখিবায়।
নবীজীর কাজ সুন্নত বলি সাধারণে জানে,কাফির হইবা কিনা বুঝি দেখ মনে। renal scan mag3 with lasix
নবীজী শুনিলা গান আর বিবি আয়শায়, নবীজীর কওয়া-শুনা খেয়াল করিবায়।
‘ফেকাহ’ কিতাবে লিখা সবে জানিবায়, গান-বাজনা শুনেছেন ইমাম আবু হানিফায়।
আবুল হক মহক্বীক সাহেব ‘সদারিজুন্নুনবুওতে’, গান-বাজনা জায়েজ আছে লিখিয়াছেন এই মতে।
গান-বাজনা যেই লোকে শুনতে নাহি চায়, জাহিল বলি গণ্য করো ‘ছইন’ কিতাবে পাওয়া যায়।
‘ছহিহ বুখারী’ ‘ছহিহ মুসলিম’ ‘নেছারী’ ও ‘আবু দাউদ’, ‘ইবনে মাজা’ ‘তিরমিজী’ ও ‘হক্বুছ ছেমা’তেও জায়েজ।
‘মালাবুদ মিনহু’ ও ‘এহইয়াউল উলুম’, ‘তপছীর আহমদী’ আর ‘আইনুল ঈলম’।
‘আওয়ারিক্বুল মারুপ’ আর ‘কসফুল কেনা’, ‘ফাওয়াইদুল ফাওয়াদ’ এ আছে পড়ে দেখনা।
‘জখিরাতুল উকবা’ ও ‘তুপকাতুল আখইয়ার’, ‘সামছুল আরেফিনে’ আছে শোন সমাচার।
‘ফতওয়া আজিজী’ আর ‘একছিরুল হেদায়াত’, ‘মিশকাত শরীফ’ আরো ‘কিমিয়ায়ে সাদআত’।
‘তালিবুল ঈবলিশ’ আর ‘আনওয়ারে আহমদী’, ‘জানে নুর’ আর বাকী সব কই যদি।
বহু কিতাব রইয়া গেল না লিখিলাম ভাই, গান-বাজনা জায়েজ আছে কোন সন্দেহ নাই। cialis new c 100
وما خلقنا السماء وا لارض وما بينهما باطلا
এই আয়াত আল-কোরআনের পড়ি দেখিবায়, আয়াতের অর্থের দিকে খিয়াল করিবায়।
কোরানেতে আল্লাহ তা’লা ফরমাইছেন কালাম, জমিন আশমানে যত দিয়াছেন ছুবহান।
আকাশ আর পাতালে যত পয়দা করছেন শাই, বেদরকারে কোন জিনিস সৃষ্টি করেন নাই।
আয়াত মতে গান-বাজনাও দেখা যায় দরকারী, বিনা কামের চিজ নাই এই জগত জুড়ি।
اكم تر وا ان الله سخر لكم في السموات وما في الارض واسبخ أليكم نعمه ظلهرة وباطذة
এই আয়াতে লিখা আছে পড়ে দেখিবায়, বাতিনের নিয়ামতের কথা ফরমাইছেন আল্লায়।
আল্লাহ বলেন দেখো তোমরা আশমান ও জমিনে, যা কিছু পয়দা করছি সব তোমাদেরই কারণে।
যত নিয়ামত দিছি আমি জাহির কি বাতিনে, সব লাগাইয়াছি দেখো তোমাদের কামে।
আয়াতের মানে যদি হাতে লওয়া যায়, গান-বাজনা কি নিয়ামত বুঝে দেখিবায়।
গান-বাজনায় আগ বাড়ায় আল্লাহ পাকের পথ, আল্লাহর আশিকে পায় ফয়েজ আর রহমত। capital coast resort and spa hotel cipro
ঈদের দিন গান করা হইছে কিতাবেতে পাই, পুত্রের আক্বিকায় করতে কোন দোষ নাই।
যে কোন খুশির দিন গান করা যায়, বিয়ে ওয়ালিমা কিংবা পুত্রের খৎনায়।
সন্তানের জন্মের দিন করিয়াছেন গান, আরো যেদিন হিফজ করছেন আল্লাহর কোরান।
অন্য জায়গা থেকে যদি কেউ আসে আর, সেই দিন গান করছেন কিতাবে প্রচার।
গান-বাজনা জায়েজ লিখছেন হাক্বানি উলামায়, গান-বাজনা ঠিক নয় বলে নিমমোল্লায়।
এত দলিল থাকা সত্ত্বে নাজায়েজ কেমনে হয়, কোরান আর হাদিস সবে কর পরিচয়।
নিমমোল্লা জিদ করে আক্বেল তার কম, জিদের কথা উপরেতে করিয়াছি বর্ণন।
আল্লাহর দিদার যাদের কপালেতে নাই, গান-বাজনা জায়েজ আছে কেমনে কইবো ভাই?
সত্যিকার আলীমে গান মানা করে নাই, নিমমোল্লার কথা তুমি না শুনিও ভাই।
ছহিহ মাদ্রাসায় পড়ি আলীম না হইলে, জায়েজ-নাজায়েজ তারা বুঝিবো কি ফলে।
গান-বাজনা জায়েজ আছে হাদীসে প্রমাণ, জায়েজ নয় বলে যে সে হয় নাদান।
গান-বাজনা জায়েজ আছে আমারও মতামতে, প্রকাশ করিলাম তাই সকলে জানিতে।
গ্রন্থ : মুরাদুল আশিকিন ।
লেখক : শাহ সৈয়দ ইছহাকুর রহমান চিশতী ।
[লেখক সম্পর্কে আমার দাদা । আমার জন্মের প্রায় তিন বছর আগে তিনি পরলোক গমন করেছেন। উনার লিখা গ্রন্থ থেকে অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে গান বিষয়ক অংশটি এখানে হুবহু তুলে ধরলাম।]
শঙ্খনীল কারাগার বলছেনঃ
এসজিএস শাহিন বলছেনঃ
পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। আসলে আমার দাদার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তেমন ছিল না। তিনি মাদ্রাসায় লেখাপড়া করেছেন। জীবনের শেষ বয়সে এসে এক পীর সাহেবের নিকট মুরীদ হোন এবং সুফিবাদে জড়িয়ে পড়েন। তিনি মাদ্রাসায় লিখাপড়া করলেও মোল্লাতন্ত্রের ঘোরবিরুধী ছিলেন। তিন গান খুব ভালবাসতেন। তিনি নিজে অসংখ্য গান লিখেছেন, নিজে সূর করেছেন এবং গেয়েছেনও। আমার দাদার আরকটা গৌরবঔজ্জল ইতিহাস আছে, তিনি ৭০ এর নির্বাচনে আমাদের এলাকার একমাত্র শেখ সাবের কর্মী-সমর্থক ও প্রচারক ছিলেন। তিনিই একমাত্র ব্যাক্তি যিনি অত্র এলাকায় লীগের একমাত্র সমর্থক ছিলেন এবং দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নেননি তবে লুকিয়ে আমার বাপ-চাচাদের মাধ্যমে বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে খাবার সরবরাহ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের এলাকার প্রায় ৯৯ভাগ মানুষই ধর্মান্ধ ছিল এবং পাকিপন্থি ছিল। আক্ষেপের বিষয়, এই সংখ্যাটা এখনো প্রায় তেমনি আছে!
স্বাধীনতার পর এই গান-বাজনা এবং লীগপ্রীতি নিয়ে এলাকার সাথে চরম বিরোধ দেখা দেয়। আমাদেরকে সামাজিকভাবে বয়কট করে “একঘরে” করে দেয়া হয়(যা এখনো বলবৎ আছে)। ৫গ্রামের মোল্লারা মিলে আমার বাপ-দাদাসহ সবাইকে ৮দিন বন্দী করে রাখে। খাবার তো দুরের কথা পানিও দেয়া হয়নি। পুলিশ উদ্ধার করতে আসলে কাটমোল্লারা পুলিশসহ আটক করে। পরে শহর থেকে ১৮গাড়ী দাঙ্গা পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। এক সপ্তাহ পর এলাকায় বিচার বসে, পাঁচ গ্রামের সব লোক একদিকে আর আমার বাপ-চাচা ৫জনসহ আমার দাদা একদিকে। কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট ও শহর থেকে আসা প্রশাসনিক কিছু কর্মকর্তা এবং এক প্লাটুন পুলিশ সভায় তৃতীয় পক্ষ হিসেবে উপস্থিত থাকে। অনেক যুক্তিতর্কের পর আমার দাদা বিজয়ী হোন এবং ম্যাজিস্ট্রেট তৎক্ষণাতই একটা কাগজ সিল-ছাপ্পড় মেরে সবার দস্তখত নিয়ে আমার দাদার সবধরণের কর্মকান্ড ও মতবাদকে বৈধতা দিয়ে চলে যায়। গ্রামপক্ষ উল্লেখ করে, তারা আমার দাদার মতবাদকে সত্য স্বীকার করে তবে তারা এই মতবাদে বিশ্বাসী নয় এবং এতে সমর্থন করবে না। তবে তারা আমার দাদার কোন কাজে আজীবন কোন বাধা প্রদান করবে না। সেই থেকে আমরা একঘরে হিসেবে আছি এবং আমাদের ইচ্ছামত চলাফেরা করছি। গ্রামে থাকি, ব্যবসা বাণিজ্য বা সবধরণের সম্পর্কই একরকম আছে তবে সামাজিক কোন কর্মকান্ডে আমরা আজো জড়িত নই।
অনেক কিছুই বলার বাকী আবার অনেক কিছুই বলে ফেললাম। বিরক্ত হবেন না আশাকরি।
শঙ্খনীল কারাগার বলছেনঃ
এই কথাগুলো না বললে অনেক কিছুই অজানা থেক যেত। আপনারা বংশানুক্রমিক সংগ্রামী এবং নির্ভীক জেনে খুশি হলাম। আপনার ও আপনার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা। viagra en uk
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
স্যেলুট… সেলুট… সেলুট…
আর কিছু বলার নেই!!!!!!
ইউরিডাইস রিবর্ন বলছেনঃ
স্যেলুট… সেলুট… সেলুট…
আর কিছু বলার নেই!!
দুর্বার প্রলয় বলছেনঃ
লিখাটা শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এসজিএস শাহিন বলছেনঃ
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
রাজু রণরাজ বলছেনঃ zoloft birth defects 2013
অসাধারন লাগলো শাহিন ভাই। আমার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে। আপনার দাদার প্রতি শ্রদ্ধা, গানপাগল এই গানের পাখীকে পরম করুনাময় আল্লাহ্ তায়ালা যেনো বেহেস্ত নসীব করেন।
এসজিএস শাহিন বলছেনঃ
ধন্যবাদ আপনাকে।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
পড়লাম… শ্রদ্ধা…
উদ্ভ্রান্ত পথিক বলছেনঃ
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আর বিনীত শ্রদ্ধা আপনার দাদার স্মৃতির উদ্দেশ্যে…….
ভবিষ্যতে আরো কিছু শেয়ার করবেন…… কৃতার্থ থাকব……