ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস এবং কিছু আক্ষেপের গল্প
612
বার পঠিতইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস দেখছিলাম। জার্মান নাৎসি বাহিনীর নৃশংসতম বর্বরতার শিকার হওয়া কিছু মানুষের গল্প। তাদের যন্ত্রণার গল্প, উঠে দাড়াবার গল্প, প্রতিরোধের গল্প, প্রতিশোধের গল্প…
২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সের ইহুদী নিধন চলছে। একটা ইহুদী পরিবার ফ্রেঞ্চ প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিল প্রান বাঁচাবার জন্য। কিন্তু জার্মান এসএস বাহিনীর কর্নেল হ্যান্স লিন্ডার শকুনে দৃষ্টি তাদের ঠিকই খুঁজে বের করে, নির্বিচার গণহত্যা থেকে বেঁচে যায় কেবল তাদের কিশোরী মেয়েটা, পালিয়ে যায় অকল্পনীয় যন্ত্রণা বুকে নিয়ে…
এদিকে জার্মান গেস্টাপো বাহিনীর অমানুষিক অত্যাচারের শিকার হওয়া ছয়জন ইহুদিকে নিয়ে এক আমেরিকান লেফট্যানেন্ট গড়ে তোলে একটা ছোট্ট দল। যে দলটার প্রধান এবং একমাত্র লক্ষ্য হল নাৎসি হত্যা, নৃশংস ও ভয়ংকরতম উপায়ে। আই ফর আই। অভাবনীয় সব অভিযান চালাতে থাকে এই দলটা, নৃশংসতার এরকম ভয়ংকর জবাবে জার্মান নাৎসিরা প্রচণ্ড ভয় পায়, অসম্ভব আতংকে ছড়ানো দলটার নাম হয়ে যায় ইনগ্লোরিয়াস বাস্টার্ডস। অকল্পনীয় শিক্ষা দেয় এই বাস্টার্ডসরা জার্মানদের, যার সাথে বিচিত্রভাবে মিলে যায় চার বছর আগে জার্মান বর্বরতার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া সুজানা নামে এক তরুণীর অচিন্তনীয় প্রতিশোধ, বাবা হারানোর প্রতিশোধ, মা হারানোর প্রতিশোধ, ভাই হারানোর প্রতিশোধ, জিউইশ রিভেঞ্জ…
১৯৭১ সাল। কুমিল্লার পায়েলগাছা গ্রাম। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর একটা শক্তিশালী দল রওনা হয়েছে দক্ষিনের নারায়নপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে। সাথে আছে রাজাকার বাহিনী আর শান্তি কমিটির সদস্য। নারায়নপুরের মানুষেরা হিন্দুস্তানি দুষ্কৃতিকারীদের সাহায্য করছে, নিজেদের ছেলেদের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাইছে,ওদের কোন ক্ষমা নাই। শ্যামল মায়াময় গ্রামটায় হঠাৎ কালো অন্ধকার নেমে আসলো, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর পশুগুলো গ্রামের প্রতিটা বাড়িতে আগুন ধরায়ে দিল, মুক্তিযোদ্ধাদের যারা আশ্রয় দিয়েছিল, যত্ন করে খাইয়েছিল, যেতে দেবে না এই ভয়ে যাদের ছেলেরা বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে গিয়েছিল যুদ্ধে, তাদের প্রত্যেককে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে আর ব্রাশফায়ার করে মারা হল, মেরে ফেলার আগে মা এবং বোনদের উপর হায়েনার লোলুপতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল একদল পশু… চারিদিকে কেবল আর্তচিৎকার আর আহাজারি…
তিন ঘণ্টা পর। নারায়নপুর থেকে পায়েলগাছা ক্যাম্পে ফিরছে পাকিস্তানী সেনারা। হিন্দুস্তানি মালাউনগুলোকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে পেরে সবাই বেশ তৃপ্ত। হঠাৎ গর্জে উঠলো এসএমজি, ঠা ঠা ঠা… রাস্তার দুপাশ থেকে সাঁড়াশি অ্যামবুশ, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঝাঁজরা হয়ে গেল পশুগুলো। পজিশন নিয়ে ফায়ার ওপেন করতে করতে লাশের স্তুপ জমে গেল রাস্তাটার উপর, একপাল পশুর লাশ। ভয়ংকর যুদ্ধ আর অবিরাম গুলির শব্দে প্রকম্পিত এলাকা। একসময় ফুরিয়ে গেল গুলি। গুলি শেষ হয়ে যাবার আগ পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে অসামান্য বীরত্বে লড়ে গেল ১৩ জন গেরিলার একটা ছোট্ট বাহিনী। রাস্তার উপর পাকি পশুদের লাশের স্তুপটা আরও দীর্ঘ হতে থাকলো, এদিকে বীরের মত লড়তে লড়তে একে একে শহীদ হতে থাকলো গেরিলারা। পাঁচজন সেখানেই শহীদ হল, আর বাকি আটজন হল গুরুতর আহত। সৌভাগ্যবশত নিকটবর্তী দুই নম্বর সেক্টরের যোদ্ধারা গুলির শব্দে ছুটে এল, পাকিগুলো পালিয়ে গেল শেষপর্যন্ত। পেছনে রেখে গেল ১৪ জন পাকিস্তানী সেনা আর ৩০ জন রাজাকারের মৃতদেহ, গুরুতর আহত হয়ে পড়ে রইল আরও ১৬ জন সেনা আর ৩০ জন রাজাকার। এতটাই ভয় পেয়েছিল কাপুরুষগুলো যে,আহত-নিহতের তুলে নিয়ে যাবার সাহসটা পর্যন্ত পায়নি, প্রান বাঁচাতে ছুটে পালিয়েছিল। মাত্র ১৩জন বঙ্গশার্দূল নিজেদের জীবনকে তুচ্ছ করে দুই কোম্পানি পাকি সেনা আর রাজাকারগুলোর শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত গুলি চালিয়েছিল, দিয়েছিল উপযুক্ত শিক্ষা…
ওই ১৩ জনের আট জন ছিল নারায়নপুরের ছেলে, পাকিস্তানী সেনারা নারায়নপুরে হামলা করেছে- এই খবরটা তারা যখন পায়, তখন সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। মায়ের আর্তনাদ, বোনের আর্তচিৎকার আগুন জ্বালিয়ে দেয় ছেলেগুলোর বুকে, মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বাঘের গর্জনে অসমসাহসে ছোট্ট এ দলটা ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকি পশুগুলোর উপর… প্রতিশোধ নিয়েছিল ওরা, ভয়ংকর প্রতিশোধ…
২য় বিশ্বযুদ্ধের আট বছরে যত নৃশংসতা, বর্বরতা আর বীরত্বগাঁথা রচিত হয়েছে, মাত্র নয় মাসে তার চেয়ে বহুগুন বেশি নৃশংসতার শিকার হয়েছিলাম আমরা, ভয়ংকর সে সময়ে অসামান্য সব বীরত্বগাঁথাও রচিত হয়েছিল। আজ ৪৩ বছর পার হয়ে গেল, নারায়নপুর গ্রামের ১৩জন গেরিলার মত এমন হাজারো বীরত্বগাঁথা নিয়ে কোন চলচ্চিত্র তৈরি হল না। একজন হয়তো চলচ্চিত্র বানাতেন, ৭১রের উপর কালজয়ী সব মাস্টারপিস। সেই জহির রায়হানকে রাজাকার আর বিহারীরা মেরে ফেলল স্বাধীনতার পরেই। স্বাধীন দেশে পৃথিবীর অন্যতম প্রতিভাধর নির্মাতা স্বাধীনতাবিরোধী বিহারী পশুগুলোর হাতে নির্মমভাবে নিহত হলেন। আমাদের রেখে গেলেন চির আক্ষেপের মাঝে…
আজ স্বাধীন বাংলাদেশে রুবাইয়াৎ খানের মত নিকৃষ্ট প্রাণীরা মেহেরজানের মত বিকৃত রুচির অচিন্তনীয় মিথ্যাচারে ভরা জঘন্য চলচ্চিত্র তৈরি করে, কিন্তু ক্র্যাক প্লাটুনের তারছিঁড়া ক্র্যাক যোদ্ধাদের নিয়ে তৈরি হতে চাওয়া চলচ্চিত্র অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের ৭০ বছর পর আজো নাৎসি আর আমেরিকানদের নৃশংসতা নিয়ে মুভি হয়, আর আমাদের দেশে মাত্র ৪৩ বছর পরেই হাজারো রুবাইয়াৎ একাত্তরকে গণ্ডগোল হিসেবে দেখাবার জন্য উঠে পড়ে লাগে। নারায়নপুরের বীরযোদ্ধারা ইতিহাসের পাতায় কেবলই একটা ধুলোপড়া অধ্যায় হয়ে চাপা পড়ে থাকে, গৌরব আর বীরত্বগাঁথাগুলো মিথ হয়ে যায় একটু একটু করে… খুব নিঃশব্দে…
নষ্ট কথন বলছেনঃ
// বীরযোদ্ধারা ইতিহাসের পাতায় কেবলই একটা ধুলোপড়া অধ্যায় হয়ে চাপা পড়ে থাকে,
গৌরব আর বীরত্বগাঁথাগুলো মিথ হয়ে যায় একটু একটু করে… খুব নিঃশব্দে…//
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ cialis online pharmacy forum
৩ বছরে জহির রায়হানের কাছাকাছিও কাওরে পাইলাম না। আজ জহির রায়হান থাকলে স্বাধীনতার পরেই আমরা দেশদ্রোহী রাজাকারের চিনতে পারতাম, ওদের নিয়ে মুভি হত, জহির মুভি দিয়েই ওদের চিনিয়ে দিতেন। তারপর বীরদের নিয়ে বানাতেন একের পর এক মুভি, উঠে আসতো একের পর এক অসামান্য বীরত্বের ইতিহাস, সেলুলয়েডের ফিতায় যেগুলো পরিনত হত একেকটি মাস্টারপিসে। পৃথিবীর জানতো আমাদের বীরদের কথা, আমাদের বীরত্বের ইতিহাস…
বড্ড মিস করি মানুষটাকে, বড্ড মিস করি
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
মিশুক মুনির বেচে থাকলে হয়তো আরও কিছু পাওয়া যেত!!
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
মিশুক মনির আর তারেক মাসুদের মত অসাধারন জুয়েলগুলোকে হারিয়ে যে ভয়ংকর শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা হয়তো আর কখনই পূরণ হবে না। জহির রায়হানের পর এই মানুষগুলাই ছিল আমাদের আশা, আর তাদের আমরা রাস্তায় গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেললাম… কি বিচিত্র, কি অদ্ভুত…
তারিক লিংকন বলছেনঃ
এখনও সময় শেষ হয়ে যায় নি। ৪৩ বছরে হয় নি নতুন প্রজন্ম এই হাল ধরবে। আপনার মত লোকেরা এমন বীরত্বগাঁথার বস্তবিক ইতিহাস সংরক্ষণ করলে আমরাও একদিন সত্য উন্মোচন করতে পারব পশ্চিমাদের মত দুর্দান্ত সব চলচ্চিত্র তৈরি করতে। প্রজন্ম জেগে উঠেছে বলে…
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
নতুন প্রজন্মের উদাসিনতায় কষ্ট পাই খুব, তারপরও আশা হারাই না ভাই। হয়তো সত্যিই একদিন নতুন প্রজন্ম জানতে চাইবে সেই যন্ত্রণার কথা, আত্মত্যাগের কথা, বীরত্বের কথা, আক্ষেপের কথা… সেই দিনের অপেক্ষায় rx drugs online pharmacy
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
prednisone side effects in dogs long termআফসোস ছাড়া কিছুই করার নাই
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
হ্যাঁ, আফসোস ছাড়া আসলেও আর কিছু করার নাই…
নীহারিকা বলছেনঃ ventolin spray precio mexico
জয় বাংলা ampicillin susceptible enterococcus
মস্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
আমি একদিন এ নিয়ে মুভি বানাবো, দোয়া কইরেন
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
খালি দোয়া কইরাই ক্ষান্ত হব না মিয়া, একসাথে বানাব… viagra para mujeres costa rica
মস্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
হ্যা অবশ্যই।
(মন্তব্যটা সেদিনের পরিচয় হবার আগে লিখেছিলাম তো তাই!!)