পিঁপড়াবিদ্যা- পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে…
736
বার পঠিতগল্পের শুরুটা খুব সাদামাটা। একটা মধ্যবিত্ত পরিবার। কর্মজীবন শেষে বাবা অবসরে চলে যাওয়া বাবার স্থলাভিষিক্ত হবার জন্য, সংসারের হাল ধরবার জন্য পুত্রের একের পর এক জুতোক্ষয়, কিন্তু চাকরি নামের সোনার হরিন রয়ে যায় অধরাই। নাহ, একটু ভুল বলা হল। যে চাকরির সুযোগ সে পাচ্ছে, তার শিক্ষাগত যোগ্যতা তাকে সে চাকরি করতে দিচ্ছে না। এদিকে বোনের পড়ালেখা বন্ধ হবার উপক্রম প্রায়।
এরইমাঝে সুখকল্পনা গুলো খুব বেরসিকের মত হানা দেয় বারবার। একটা ভালো চাকরি, শহুরে স্মার্ট একটা মেয়ের সঙ্গ, দামী একটা গাড়িতে চড়ে লং ড্রাইভ- মিঠুর নিজেকে বড়ই স্বার্থপর মনে হয়। কল্পনার নাগাল সে পায় না, কল্পনাগুলো যেন এক একটা রসগোল্লা, আর সে মাথা ঠুকে মরা একটা নিরীহ পিঁপড়া।
তখনই তার সামনে এল মাল্টি লেভেল মার্কেটিং(এমএলএম) ব্যবসায়ের চটকদার অফার। আর তার সিচুয়েশানে থাকা বেশিরভাগ হতাশাগ্রস্ত শিক্ষিত বেকার যা করত, সেও তাই করল। ডান হাত-বাম হাতের লোভনীয় বৃত্তে আগুনে ঝাঁপ দেওয়া পতঙ্গের মত জড়িয়ে গেল সে, হঠাৎ করেই আসতে থাকা কাঁচা টাকা তাকে বদলে দিল নিজের অজান্তেই। বদলে যাওয়া মিঠুর জীবনে সবচেয়ে বড় মোড়টা এল তখনই। কম দামে চোরাই মোবাইল কিনতে গিয়ে পাকে চক্রে তার হাতে এসে পড়ল চিত্রনায়িকা রিমার মোবাইল, বয়ফ্রেন্ডের সাথে গোপন অভিসারের ভিডিও ফুটেজসমেত। ভিডিও বাজারে ছেড়ে দেওয়ার আশংকায় অস্থির হয়ে গেল রিমা। মোবাইল ট্রেস করে ফোন দিল মিঠুকে। মজার ব্যাপারটা হচ্ছে, মিঠু কিন্তু রিমার ফোন পাওয়া মাত্র রাজি হয়ে গেল তাকে ভিডিওসমেত তার ফোন ফেরত দিতে। এখানেই শেষ হতে পারত সবকিছু। কিন্তু শেষ হল না। আফটার অল মিঠু তো রক্তে-মাংসে গড়া একজন মানুষই বটে… ovulate twice on clomid
একটা ভিডিওকে ঘিরে লোভ আর মোহের ভয়ংকর এক বৃত্তে আটকে যায় মিঠু। খুব সহজ সরল সাধারন একজন মানুষ হিসেবেই জীবনটা পার করে দেবার কথা ছিল মিঠুর, এমএলএমের রঙিন কল্পনার ফানুস আর একটা ভিডিও তাকে পাল্টে দেয় হঠাৎ পাখা গজানো একটা ছোট্ট পাখাওয়ালা পিঁপড়ায়, যে পাখার জন্মই ডেকে আনে পিঁপড়ের মৃত্যু…
মোস্তফা সরোয়ার ফারুকির কাহিনী, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় “পিঁপড়াবিদ্যা” মুক্তি পায় ২০১৪ সালের ২৪শে অক্টোবর। মিঠু চরিত্রে নবাগত নূর ইমরান, রিমা চরিত্রে কলকাতার শিনা চৌহান ছিলেন লিড কাস্টে, মুকিত জাকারিয়া, মোহিনী মৌ সহ অভিনয় করেছেন আরও অনেকে। শক্তিশালী প্লট, গল্প বলার ধরনে বৈচিত্র্যতা, অভিনব সিনেমাটোগ্রাফী, বলিষ্ঠ অভিনয় এই চলচ্চিত্রের প্রধান বিজ্ঞাপন। আমাদের পরিচিত সমাজের প্রাত্যাহিক সুখ-দুঃখ, কামনা-বাসনার অবদমিত আকাঙ্ক্ষা খুব সহজ করে তুলে এনেছেন পরিচালক, পরিচিত কিছু ব্যাপারকে ভিন্নভাবে ফুটিয়ে তুলে দিতে চেয়েছেন খুব প্রয়োজনীয় কিছু মেসেজ।
ব্যাপারটাকে চলচ্চিত্রের ভাষায় বলা হয় ভিজুয়াল ইমেজারি। ইমেজারি জিনিসটা একটা স্টাইলিক ডিভাইস, যা সচরাচর লেখকেরা ব্যবহার করেন লেখার বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য। সিনেমার ক্ষেত্রে পরিচালকেরা কোন ভিন্নধর্মী বস্তু বা ঘটনার মাধ্যমে তার বক্তব্য পরিস্কারভাবে তুলে ধরতে ভিজুয়াল ইমেজারি ব্যবহার করে। ফারুকি চলচ্চিত্রের অন্তত ছয়-সাত জায়গায় এরকম ভিজুয়াল ইমেজারির মাধ্যমে খুব চমকপ্রদ ভঙ্গিমায় তুলে ধরেছেন তার বক্তব্য, চেনা দৃশ্যে, কিন্তু অচেনা রুপে…
একেবারে নবাগত হিসেবে এককথায় অসাধারন ছিলেন নূর ইমরান। মিঠু চরিত্রটা প্রথাগত সর্বগুনে পারদর্শী অসাধারন কোন নায়ক নয়, সে আমাদের চিরচেনা মধ্যবিত্তের সংসারে বড় হওয়া একটা সাধারন ছেলে, পাওয়া না পাওয়ার অক্ষম আফসোসে পুড়তে পুড়তে হঠাৎ করেই সে হয়তো তলিয়ে যেতে থাকে লোভ আর মোহের চোরাবালিতে। হয়তো টের পায়, তারপরও নিজেকে আটকাতে পারে না। এরকম একটা চরিত্রে এক্সপ্রেশন, টাইমিং আর ডায়ালগ ডেলিভারিতে অনবদ্য ছিলেন ইমরান।
রিমা চরিত্রে অনেকেরই মতামত, শিনা বেস্ট কাস্ট ছিলেন। এখানে আমার মনে হয়েছে,শিনা হয়তো বেস্ট কাস্ট ছিলেন না, কিন্তু চেষ্টার কোন ত্রুটি তিনি করেননি। একজন অভিনেত্রী চরিত্রে মাঝে মাঝেই অভিনয় দিয়ে দর্শককে চমকে দিয়েছেন, কিন্তু তারপরও ডায়ালগ থ্রোইয়িংয়ের সময় এক্সপ্রেশনে কিছুটা ঘাটতি ছিল। তারপরও তিনি পাশ মার্ক পেয়ে উৎরে যাচ্ছেন। বাকিদের অভিনয়ও ছিল চোখে পড়বার মত, সবাই তাদের বেস্ট ইফোরটটাই দিয়েছেন অভিনয়ে।
ফারুকির আগের মুভিগুলোর চেয়ে এটায় স্ক্রিপ্ট, মেকিং আর প্লটে প্রচুর উন্নতির ছাপ ছিল, যার ফলাফল দেখা গেছে দর্শকদের হলমুখী হবার স্রোতে। হিউমার ছিল,পাঞ্চ ছিল, দর্শককে চমকে দেবার ব্যবস্থা ছিল, সর্বোপরি দর্শককে যে ম্যাসেজ দিতে চেয়েছিলেন, সহজ ভাষায় সেটা দিতে পেরেছেন বলেই দর্শকেরা মুভিটা এঞ্জয় করেছে, পজিটিভ রেসপন্স দেখিয়েছে। পোষ্টারে একটা ডায়লগ ছিলো পিঁপড়াবিদ্যা মজায় মজায় ঠাসা, এবং সম্ভবত বেদনারও… মুভিটি শেষ হওয়া মাত্র দর্শক অবাক হয়ে উপলব্ধি করেছে এতক্ষণ যেটাকে হিউমার মনে হচ্ছিল, সেটা আসলে অক্ষম আফসোসে ভরা বেদনা ছাড়া আর কিছুই নয়… অ্যাট দ্যা এন্ড অফ দ্যা ডে, এটাই তো ধ্রুব সত্য, তাই না?
বিঃদ্রঃ- মুভিটা যারা এখনও দেখেননি, অনুগ্রহ করে দেখে আসুন। মুভিটা ভালো বলবেন নাকি খারাপ বলবেন, অসাধারন বলবেন নাকি জঘন্য বলবেন সেটা কাইন্ডলি নিজে দেখে তারপর বিচার করুন। আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি আবার ঘুরে দাঁড়াবে তখনই, যখন আমরা কোন মুভি সম্পর্কে জাজ করব মুভিটা হলে গিয়ে দেখে, মানুষের অভিজ্ঞতা শুনে না। হ্যাপি মুভি ওয়াচিং …
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
চমৎকার রিভিউ … মুভিটা দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে রিভিউটা পড়ে। বরাবরের মতোই অসাধারণ আপনার লেখনী… acquistare viagra in internet
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
দেখে ফেলুন যত দ্রুত সম্ভব… :-bd পড়বার জন্য ধন্যবাদ…
দুরন্ত জয় বলছেনঃ can levitra and viagra be taken together
achat viagra cialis franceদেখার সুযোগ ছিল অর্থ সংকটে দেখা হইল না
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
>:P
তারিক লিংকন বলছেনঃ
metformin tabletরিভিউটা পড়ে মুভিটি দেখতে ইচ্ছা করতেছে! কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে খালি এই কথাই বলছি কিন্তু মুভি আর দেখা হয়ে উঠছে না!!
ধন্যবাদ আপনার চমৎকার রিভিউর জন্যে