আকাশের নীলে খুঁজে ফিরি স্বপ্নগুলি!
396
বার পঠিতআমার অকারন মন খারাপ রোগটা আরও তীব্র আকার ধারন করে সেদিন, বছরের শেষ বৃষ্টির দিন থেকে। কেমন যেন একটা গুমোট ভাব নিয়ে দিনটা শুরু হয়েছিলো। সেদিন এক ধরনের চাঁপা অস্থরিতা নিয়ে সারাটা বিকেল বারান্দায় হাটাহাটি করে পার করেছি।
আমাদের বারান্দায় সন্ধ্যায় আলো জ্বালানো হয়না। এমনিতেই বাসার সবাই অন্ধকারে থাকতেই পছন্দ করে। দিনের বেলাতে ভারী পর্দা দিয়ে বারান্দা ঘেরা থাকে। আমরা বাড়ির মেয়েরা উচ্চ স্বরে কথা বলতে পারিনা। খুব বেশি শব্দ করে হাসতে পারিনা। আমার বড় ভাই রাগ করে। আমার আব্বা রাগ করেন। যদিও আমার আব্বা নিজেও খুব বেশি জোর গলায় কথা বলেনা।
সেদিন সন্ধ্যায় বুয়া এসে বারান্দার কোনায় ছোট কাঠের টেবিলটায় একটা মোম জ্বালিয়ে দিয়ে যায়। আমি একা চেয়ারটায় বসে আছি। আমার দৃষ্টি বারবার ভারী পর্দায় আটকে যাচ্ছে। খুব ইচ্ছে হচ্ছে উঠে গিয়ে পর্দাটা হাত দিয়ে সরিয়ে রাতের আকাশটা একটু দেখি। কিন্তু উঠতে ইচ্ছে করছে না। কেউ যেন কানে কানে ফিসফিস করে বারবার বলে যাচ্ছে ‘সাবধান তুমি পর্দার বাইরে যেওনা, কেউ দেখে ফেললে গুনাহ হবে’। আমি বুঝিনা, আমাকে কেউ দেখলে আমার কেন গুনাহ হবে, একজন মানুষ একজনকে দেখতেই পারে! আর যদি কেউ মন্দ চিন্তা নিয়ে তাকায় তবে সেটা তার দোষ! গুনাহ হলে তার হবে?
কি থেকে কি ভাবছি! মাঝে মাঝে আমার যে কি হয়! দিন দিন আমার মনটা এভাবেই বড় বেশি অবাধ্য হয়ে উঠছিলো। কি সব বাজে চিন্তা কেবল মাথায় ভর করে, বাজে বাজে সব প্রশ্নে অস্থির হয়ে উঠি। মাঝে মাঝে আমি আমার বন্দীত্বটা এভাবেই টের পেতাম। অথচ এটাই নাকি একমাত্র মুক্তির পথ।
একদিন ভাইয়া কে বলেছিলাম, ‘আচ্ছা ভাইয়া তাহলে আর নারীরা যারা সবাই সাধারন পোশাকে বের হয়, তারা কি ভুল’? সেদিন ভাইয়া আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। চোখ পাকিয়ে তাকাতেই মনে পরে গিয়েছিলো ‘মেয়েদের বেশি প্রশ্ন করতে নেই, আমাদের কাজ হচ্ছে লক্ষী হয়ে ঘরে বসে থাকা। বিয়ের পর স্বামীর সেবা করা। যে যত বেশি লক্ষী এবং পর্দাশীল তার স্বামী ততো বেশি সুখী এবং সংসারে শান্তি বজায় থাকে বেশি’।
আচ্ছা আমি কি আকাশটা কখনো মন ভরে দেখতে পাবো? গত দুইদিন হলো একটা বাজে চিন্তা আমার মাথায় মাঝে মাঝেই ভর করে। কোন এক গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমি ছাঁদে যাবো। ছাঁদের রেলিং এ হেলান দিয়ে আকাশ দেখবো। আমার পাশে আরও একজন থাকবে। সে আমার হাত ধরবে। সে তাঁরাদের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেবে। ওই তাঁরাগুলির নিশ্চই কোন না কোন নাম আছে?
কিন্তু আমি জানি, আমার জীবনে এমন রাত কোনদিন আসবে না। হয়তো যে আমার স্বামী হবে সেও আমার ভাইয়াদের মতোই কেউ হবে! তারা মধ্যরাতে আকাশ দেখে না। মধ্যরাত শুধুই স্ত্রী’কে বুকে চেপে রেখে ঘুমানোর রাত। ছিঃ! আমি এইসব কি ভাবছি! দিনদিন আমি যেন কেমন নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছি, কেবল পাপ(!) চিন্তা মাথায় ভর করে। private dermatologist london accutane
হঠাৎ আবার আনমনা হয়ে যাই। কিছু একটার জন্য অপেক্ষা। কিন্তু কি সেটা? বুঝে উঠতে পারিনা কিছু। শুধু পর্দার ফাঁক দিয়ে অল্প দূরের একটি বাসা হতে খুলা জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসা ক্ষীন আলোর দিকে চেয়ে থাকি। আমি যদি এই আলোটার মত হতে পারতাম তবে অতি ক্ষুদ্র ছিদ্র হলেও আমি ঠিক বেরিয়ে আসতে পারতাম মুক্ত আকাশের নিচে। একটি পরিপূর্ন নিঃশ্বাস! এক দমে ভরে ফেলবো ফুসফুস! আহ! কি সুখ! viagra in india medical stores
আচ্ছা আমি কি আমার এই জীবন নিয়ে অসুখী? তবে কেন এইসব বাজে চিন্তা করছি! আমি কি ভালো নেই, আমি কি বন্দী, তবে কেন এইসব ভাবি! এইসব ভাবাও যে পাপ!
প্রায় দুই বছর আগে কোন এক মাসের শেষ দিকে আমার যখন প্রথম পিরিয়ড শুরু হলো আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। আম্মা বলেছিলো আমি এখন আর ছোট মেয়ে নই। আমি বড় হয়ে গেছি। আমাকে বিয়ে দিতে হবে। আমার বিয়ে হলে আমি সন্তানের মা হতে পারবো। ঠিক আমার মায়ের মত মা। যে মা কোনদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশ দেখেনি। পাশেই বয়ে চলা নদীর ঢেউয়ের শব্দে যার মন উতলা হয়নি। বিকেল বেলা বাড়ির আঙিনায় হাটতে বের হয়নি।সন্ধ্যায় বারান্দায় চেয়ার ফেলে আমাদের নিয়ে গুনগুন করে গান গেয়ে আমাদের ঘুম পারিয়ে দেননি।
আম্মা আমাদের সারাজীবন আমাদের লালন পালন করেছেন বটে! কিন্তু আব্বার কাছে তার জীবনে কোন আবদার রাখতে শুনিনি। তবে আমার আম্মাকে একটা কাজ খুব আনন্দের সাথে করতে দেখতাম, সে অবসরে খুব আনন্দ নিয়ে আব্বার জন্য পানের খিলি বানাতো।এখন যতটুকু বুঝতে পারি তার বিনোদন বলতে ঐটুকুই ছিল।
মায়ের এমন জীবন যাপনে মাঝে মাঝে আমি নিজেই ক্লান্ত হয়ে যেতাম। অস্থির হয়ে উঠতাম খুব। আমাকেউ কি মার মত এমন লক্ষী হয়েই থাকতে হবে? লক্ষী মানেই কি এমন, এটাই কি একজন আদর্শ মায়ের কর্ম, আমার মা যা করে? আমি ভেবে পাইনা এটা কেমন জীবন!
হঠাৎ দমকা হাওয়া শুরু হয়। মোমের আলোটা নিভে যায়। আমার আগামীকাল বিয়ে! কিন্তু এই প্রথম বুঝতে পারলাম আমি এই বিয়ে করতে চাইনা। আমি এখনি বিয়ে করবো না। আমি আমার মায়ের মত লক্ষী হয়ে থাকতে পারবো না। যত পাপই হোক! আমি প্রয়োজনে একদিন বাঁচবো। তবু যেন একজন খুব পরিচিত মানুষের হাত ধরে অন্তত একটি রাত খুলা আকাশের নিচে তাঁরা দেখতে দেখতে পার করতে পারি। synthroid drug interactions calcium
আমি এসব কি ভাবছি! এও কি সম্ভব! আমার তো পরিচিত কেউ নেই! কেউ তো আমাকে চিনেনা। কে আমাকে নিয়ে যাবে! কে আমাকে মুক্তি দেবে?
খুব ঝড় উঠেছে। পর্দাগুলি উথাল পাথাল উড়ছে। বা দিকে তাকাতেই দেখি একটা টর্চ লাইটের আলো, সাইকেলের বেলের টুংটাং শব্দ! একি সামনের বাসার সেই ছেলেটি, যে প্রতিদিন বিকেল হলে দুতলার বারান্দায় গীটার হাতে ভাঙ্গা গলায় গান গায়?
এমন ঝড় বৃষ্টির রাতে বারান্দায় একা। অথচ কেউ ডাকছে না। হয়তো আগামিকাল বিয়ে বলে কেউ ডাকছেনা। একটা বিয়ে বাড়ি অথচ কোন উৎসব নেই। আমার বিয়ে নাকি হবে মসজিদে। সুন্নতি বিয়ে! সময় যত যাচ্ছে ঝড়ের সাথে সাথে মনের অস্থিরতাও বেড়ে চলেছে। যেন কারো জন্য অপেক্ষা। খুব পরিচিত কেউ ঝড়ে আটকা পরেছে। খুব শীঘ্রই ঝড় থেমে যাবে, খুব পরিচিত একটা বৃষ্টিভেজা মুখ এসে বারান্দায় দাড়িয়ে বলবে ‘ এসো ভিজি এই ঝরঝর মুখর বাদল দিনে…’!
উল্লেখ্য,এমন একজন আমার জীবনে সেদিন ঠিক সেই মুহুর্তেই আসেনি। আমাকে উদ্ধার করতে কোন রাজকুমার এসে হাজির হয়নি। তবে আমি নিজেই বেরিয়ে গিয়েছিলাম। এবং এমনি একজন পরিচিত জনের সাথে আমার সে রাতেই দেখা হয়েছিলো।
হ্যা তাকে আমি চিনতাম। গোপন স্বপ্নে আমি তাকে প্রতিদিন দেখতাম। সেদিন সারারাত আমরা বাইরে বৃষ্টিতে ভিজেছিলাম। ভোর রাতে বৃষ্টি শেষে এক পরিচ্ছন্ন নীল আকাশকে সঙ্গি করে হেটে চলেছিলাম দুজন জীবনের পথে। সেদিন বুঝতে পারি, আকাশের নীলে আমার হারিয়ে যাওয়া স্বপ্নগুলি লুকিয়ে ছিলো। ও হ্যা…যেখান থেকে গল্পের শুরু, ওটাই আমার জীবনের শেষ মন খারাপের সন্ধ্যা ছিল… zoloft birth defects 2013
সারারাত ঘুম হয়নি ফারজানার। ভোরটা খুব শান্ত স্নিগ্ধ! খুব চা খেতে ইচ্ছে করছে। আর মাত্র পাঁচ ঘন্টা পর কাবিন নিতে আসবে কাজী। মুখ দিয়ে তিনবার কবুল বলবে সে। এরপর দূর মসজিদে বসে থাকা একজন অপরিচিত মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়ে যাবে সে।
শেষ বারের মত বারান্দায় ডায়রি সহ চা নিয়ে বসলো। শেষ লাইনের পর দাড়ি দেওয়া হয়নি। আরও কিছু লিখতে ছেয়েছিল কি? মনে করতে পারছেনা। না থাক। আর কিছু লিখবে না সে। বাস্তবে না হোক, ডায়রিটার পাতাটা অন্তত সুখী হোক! তার জীবনে না হলেও এই ডায়রির পাতাটার অন্তত একটা সুখী সমাপ্তির প্রয়োজন আছে। যদি কেউ কোনদিন পড়ে তবে সে জানতে পারবে, শেষ পর্যন্ত সে তার স্বপ্নের কাছাকাছি যেতে পেরেছিলো। তার ব্যর্থতা ঢেকে যাবে কয়েকটি না বলা কথায়। ফলে কারো জীবনে তার ব্যর্থতা, হতাশার প্রভাব ফেলতে পারবেনা।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
লিখার স্টাইল বেশ চমৎকার। খুব সুন্দর করে সমাজের কিছু অসংগতি তুলে ধরেছেন। আপনার খণ্ডচিত্রের চিত্রকল্পগুলোও তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণের পরিচয় বহন করে। আমার ভাল লেগেছে…
চলুক তবে আপনার লিখা!!!
কৃষ্ণ গহ্বর বলছেনঃ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লিংকন ভাই।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
তারিক ভাইয়ার সাথে পুরোপুরি একমত। খুবই ভালো লিখেছেন। লিখতে থাকুন… আপনার আরও লেখা পড়বার অপেক্ষা আছি…
কৃষ্ণ গহ্বর বলছেনঃ cialis new c 100
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে…
তারিক লিংকন বলছেনঃ