শেখ মুজিবঃ অন্য আলোয় দেখা। (পর্ব ০১)
497
বার পঠিতশেখ মুজিব, একটা ইতিহাসের পাণ্ডুলিপি যার পুরোটা অনাবিষ্কৃত, ছেঁড়া খোঁড়া যেটুকু ইতিহাসের পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে সেটা অপ্রতুল এবং সমগ্র শেখ মুজিবের স্বরূপ নির্দেশ করে না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানেই শেখ মুজিবের ইতিহাস যা পরবর্তীতে পক্ষপাতিত্ব দোষে দুষ্ট এবং নিশ্চিতভাবেই বিকৃত। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অবশ্যম্ভাবী ভাবে শেখ মুজিবের পতন এই ইতিহাস বিকৃতিকে করেছে অগ্রসরমান এবং যার ফলশ্রুতিতে আজ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী স্বয়ং শেখ মুজিব একটি বিতর্কিত রাষ্ট্রনায়কের নাম।
কেন এমন হল?
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী ঘরানার নেতা কর্মী এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশের প্রবল স্বেচ্ছাচারিতা এবং লোলুপতার বলি হয় আওয়ামী সরকার। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যে নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে রক্তের চালান এবং জোগান দিয়েছিল, তারা এবং তাদের দোসররাই মুক্তিযুদ্ধ পরবতি সময়ে সে চালানের শতভাগ লভ্যাংশ সহ সুদে আসলে উসুল করতে উদ্ধত হয়। সরকারী কর্মযজ্ঞে অনৈতিক অংশগ্রহন ব্যাপক লুটপাট আর স্বজনপ্রীতির কারনে আওয়ামীলীগ এবং মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করে তুলতে থাকে। ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দেওয়ার কারনে এমনিতেই ইসলামপন্থী দলগুলো আওয়ামীলীগের প্রবল শত্রুতে পরিগণিত হয় আবার অন্যদিকে চিনপন্থি কমিউনিস্ট দলগুলোর কিয়দংশ মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে কুটচালে লিপ্ত হয়। এই কারনে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে কিছু কমিউনিস্ট দল এবং ইসলামপন্থীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক মাত্রায় এসে দাঁড়ায়, এদের দেশ বিরোধী চক্রান্তের সাথে সাধারন শ্রেণীর আওয়ামী বিদ্বেষ চূড়ান্ত রুপ ধারন করে এবং ফলশ্রুতিতে আওয়ামী শাসন ব্যবস্থা এবং জনপ্রিয়তা হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে।
আওয়ামী স্বেচ্চাচারিতার সাথে যুক্ত হয় চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ। যুদ্ধপীড়িত দেশে খাদ্য পণ্যের মারাত্মক সঙ্কট, আওয়ামী নেতা কর্মীদের ব্যবসা কুক্ষিগতকরণের মাধ্যমে কৃত্তিম সঙ্কট সৃষ্টি, ত্রাণের দ্রব্যসামগ্রী লুটপাটের সাথে দুর্ভিক্ষ যুক্ত হয়ে আওয়ামী শাসন ব্যবস্থার লেজেগোবরে অবস্থা সৃষ্টি হয়।১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ খাদ্য সংকট আরো বাড়িয়ে দেয় এবং অর্থনীতির প্রধান উত্স কৃষিকে ধ্বংশ করে ফেলে। এ কারনে কৃষি নির্ভর জনসাধারণের মধ্যে সরকার বিরোধী মনোভাব প্রকট হতে শুরু করে। যুদ্ধ পরবর্তী দেশ গঠনে সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দুষ্প্রাপ্যতা এবং মূল্যের অসামঞ্জস্যতা, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যর্থতার কারণে মুজিবকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। আন্তর্জাতিক মদদপুষ্ট বিরোধীপক্ষ এবং দেশের স্বঘোষিত সরকারবিরোধীরা মাথা চাঁড়া দিতে শুরু করলে শেখ মুজিব ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণের প্রচেষ্টা চালান।
দেশ পুনর্গঠন, দলীয় নেতাকর্মীদের অবাধ স্বেচ্ছাচার প্রতিরোধ, বিরোধীপক্ষ দমন, রাষ্ট্রীয় কৃচ্ছতাসাধন এবং আওয়ামী শাসন স্থায়ীকরণ ইত্যাদি সুদরপ্রসারী রাজনৈতিক অভিপ্সা থেকে শেখ মুজিব একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের স্বপ্ন দেখেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারি করে তাঁর রাজনৈতিক সমর্থকদের অনুমোদনের মাধ্যমে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা শেখ মুজিবুর রহমান সংসদে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী উত্থাপন করেন। এই সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে প্রচলিত সংসদীয় শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে বাকশাল ব্যবস্থা চালু করা হয়। বাকশালের কারনে মৌলিক কিছু নাগরিক অধিকার রহিত হয়ে যায় তবে এই নীতির ফলে রাজনৈতিক অবস্থা কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং দুর্নীতি,কালোবাজারী এবং অবৈধ মজুদদারি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যায়।
বাকশালি শাসন ব্যবস্থা একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক সমস্যা। দূরদর্শী রাজনৈতিক প্রজ্ঞা অদূরদর্শী দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত লাভালাভের অস্ত্র হয়ে উঠলে বাকশাল বিতর্কিত হয়ে ওঠে এবং সাথে সাথেই বাকশালের প্রবর্তক শেখ মুজিবের ঘাড়ে এর সম্পূর্ণ দায় চেপে বসে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশবিশেষ হিসেবে যে বাকশালের শুরু, কয়েকদিন যেতে না যেতেই অর্থনীতি এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় এর নেতিবাচক প্রভাব প্রকট আকারে পড়তে থাকে ফলে পুরো সরকার ব্যবস্থা’ই সারা বিশ্বে প্রশ্নের সম্মুখিন হতে থাকে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যখন বাকশাল গঠন করেন তখন সারা সারা বিশ্বে সমাজতন্ত্রের প্রভাব পূর্ণমাত্রায় বহাল ছিল। সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন বলিষ্ঠ সমর্থন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে বড় মাপের ভূমিকা রাখে। তাছাড়া ষাটের দশকের পর আওয়ামী লীগের মেনিফেস্টোর সঙ্গে সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচি সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া তখনকার গলাকাটা হঠকারী রাজনীতি সামাল দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি হিসেবে শোষিতের গণতন্ত্র কায়েম করার লক্ষ্যে বাকশাল গঠন করেছিলেন। ষাটের দশকের পর আওয়ামী লীগের মেনিফেস্টোর সঙ্গে সমাজতান্ত্রিক কর্মসূচি সংযুক্ত করা হয়। একাত্তর পরবর্তী সময়ে তিনি নিজেকে প্রত্যন্ত জনসাধারণ, কৃষক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে বিবেচিত করে রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। বাকশাল দলটি বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করে। সরকারি বাহিনীর সাথে সমর্থকদের নিয়ে গঠিত জাতীয় রক্ষী বাহিনীর সহায়তায় মুজিব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করেন এবং সারাদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন। বঙ্গ বন্ধু মনে করেছিলেন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা জরুরী, বিশেষ করে অবাধ রাজনীতির সুযোগে যেন দেশে হানাহানির ঘটনা না ঘটে, সরকার যেন নিবিষ্টচিত্তে দেশের উন্নয়নে মননিবেশ করতে পারে ইত্যাদি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বাকশাল গঠন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু বাকশাল কায়েমই করতে পারেননি। বাকশাল গঠন করার পর পূর্ণ উদ্যমে তিনি কাজে হাত দেওয়ার পরপরই তাঁকে হত্যা করা হয়। বাকশালের কারনে শেখ মুজিবের অনেক সমালোচনা কিন্তু যে গাছ ফল দানের পূর্বেই কেটে ফেলা হয়েছে, সে গাছের ফল মিঠে না তেঁতো হতো সেটা মনগড়াভাবে আগেই বলা যৌক্তিক নয়।
আমরা এই ভুলটাই করি!
(কৃতজ্ঞতাঃ তথ্য উপাত্ত নানা ব্লগ এবং উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত এমনকি কোন কোন বাক্য বা বাক্যাংশ পাঠকের মন্তব্য থেকেও সরাসরি বা কিঞ্চিৎ সংযোজন বা পরিমার্জন করে সংযুক্ত করা হয়েছে।)
তারিক লিংকন বলছেনঃ
বাকশালের কারনে শেখ মুজিবের অনেক সমালোচনা কিন্তু যে গাছ ফল দানের পূর্বেই কেটে ফেলা হয়েছে, সে গাছের ফল মিঠে না তেঁতো হতো সেটা মনগড়াভাবে আগেই বলা যৌক্তিক নয়।
এইটাই আসল কথা! পরবর্তী পরবের অপেক্ষায় রইলাম! তবে ৭৪ এর দুর্ভিক্ষ যে সমাজতন্ত্র বা সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রবিরোধী একটি ষরযন্ত্রের ফসল সে বিষয়ে আরেকটু বিস্তারিত আসলে ভাল হত!! metformin synthesis wikipedia
একজন আইজুদ্দিন বলছেনঃ
পড়ার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ।
পরবর্তী পর্ব গুলোতে আরো বিস্তারিত লিখার প্রত্যয় রইল। kamagra pastillas
উদ্ভ্রান্ত পথিক বলছেনঃ
লেখাটা একেবারে শুধু শুধু লাগল….
অজানা কোন তথ্যই পেলাম না।
পেলাম অপপ্রচারের উন্নত সংস্করণ।
একজন আইজুদ্দিন বলছেনঃ
নতুন কোন তথ্য দিতে পারি নাই জেনে আশাহত হলাম।
নতুন করে তো আর ইতিহাস তৈরি করা সম্ভব নয়।
তবে লন্ডনে থাকলে অবশ্য একবার চেষ্টা করে দেখতাম।
“পেলাম অপপ্রচারের উন্নত সংস্করণ”
কি কি পেলেন সেটা জানালে বাধিত থাকতাম, বলবেন কি?
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
ভাইজানের চুলকানি কোন জায়গায়? এইখানে অপপ্রচার মনে হইল কি? বাকশাল বলতে আপনি সেই ছোটবেলা থেকে যা শুনে আসতেছেন, সেইগুলো সবই মারখোর পাকিস্তানী বংশউদ্ভূতদের প্রোপ্যাগান্ডা… পোস্টকর্তা জাস্ট সেই জিনিসটাই তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। সবে তো মাত্র প্রথম পর্ব, এখনই অপপ্রচার বানিয়ে দিলেন? শেষ পর্ব আসতে আসতে তোঁ বোধহয় পোস্টকর্তাকে বড় গনতন্ত্র মহান ইতিহাসবিদ তারেক জিয়া ওরফে খাম্বা তারেক বানায়ে দেবেন… :-?? :-” accutane prices
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ viagra en uk
আইজুদ্দিন ভাই, খুবই জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ শুরু করবার জন্য প্রথমেই আপনাকে অশেষ কৃতজ্ঞতা ও অভিবাদন। প্রথম পোস্টেই হিসেবে বেশ জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেছেন আপনি। পরবর্তী পোস্টগুলোর অপেক্ষায় রইলাম…
আর কাইন্ডলি পোস্ট শেষে তথ্যসূত্র বা কোট করবার সূত্রগুলো একটু কষ্ট করে দিয়ে দেবেন। উপরে একজন ইতিমধ্যেই আপনাকে অপপ্রচারকারী বানিয়ে দিয়েছে। যদি তথ্যসূত্রগুলো থাকতো, তবে সে এ কথা বলবার সুযোগ পেত না… আশা করি বুঝতে পারছেন ব্যাপারটা…
একজন আইজুদ্দিন বলছেনঃ
পড়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
এখন পর্যন্ত এ পোস্টে আমি এমন কোন তথ্য সন্নিবেশিত করি নি যা’র তথ্য সুত্ত্র দেওয়া দরকার ছিল। এখানে আমি আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করার চেষ্টা করেছি তবে পরবর্তী পর্ব গুলোতে অবশ্যই উদ্ধৃতি দিলে সেক্ষেত্রে সূত্র উল্লেখ করব।
আর বাকশাল নিয়ে অপপ্রচার এমন পর্যায়ে যে যদি কেউ সত্য সত্যই কোন সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে চায় তবে তার সম্পর্কেও পূর্বেই একটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়ে যায়,উদ্ভ্রান্ত পথিক এমনিতেই উদ্ভ্রান্ত আবার তার উপর মনে হচ্ছে, পথিক তুমি কি পথ হারাইয়াচো অবস্থা। তাকে দোষ দিয়ে কি বলুন, প্রায় চার দশকের জঞ্জাল এই এক পোষ্টেই ধুয়ে মুছে যাবে সে প্রত্যাশা করি না।
শেষ পর্যন্ত দেখা যাক। viagra in india medical stores
দুরন্ত জয় বলছেনঃ buy kamagra oral jelly paypal uk
পড়লাম!!