আজ কাল পরশুর গল্প
214
বার পঠিতআমি একটা বিদেশী দূতাবাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। সেখানে আমারও আগে আরও অনেক মানুষ দুচোখে স্বপ্ন নিয়ে সারি ধরে দাঁড়িয়ে ছিল। কারও চোখে জীবিকা অর্জনের স্বপ্ন, কারও চোখে নতুন সৌন্দর্য দেখার স্বপ্ন। আমার কোন স্বপ্ন নেই। কারণ আমি কোথাও যাচ্ছি না। আমি এসেছি আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে। সে বিদেশে যাবে, ভিসা পাওয়ার অপেক্ষা কেবল। সে আমাকে গাধা বলে ডাকে। আমার কর্মকাণ্ডের সাথে নাকি গাধার আচরণগত মিল আছে। আমিও বাধ্য ছেলের মত সকালবেলায় ৪০ টাকার রাস্তা ২০০ টাকা খরচ করিয়ে তাকে এখানে নিয়ে এসে গাধামোর আরেকটা উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি।
ভাইয়া আমার এই কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে আমাকে স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে। আমি তাতে মোটেও অপমানিত হইনি এমন ভাব দেখিয়ে তার কাছে ফেরত যাওয়ার ভাড়া চাইলাম। ভাইয়া বিরক্তমুখে আমাকে একটা ১০০ টাকার নোট দিলেন। অপমানের জ্বালার থেকে অর্থপ্রাপ্তির আনন্দ যে বেশী তা উপলব্ধি করতে পেরে নিজেকে কেমন গর্বিত মনে হতে লাগল। get viagra now
এত সকালে বাসায় যেতে ইচ্ছা করছে না, অন্য কোথাও যেতে হবে। ভার্সিটি খুব দূরে নয় এখান থেকে। তবে যেতে হবে রিকশায়। এখন বাসে যেতে হলে দরজা ধরে ঝুলে যেতে হবে। আমি গাধা হতে পারি, তবে বাদুড় নই।আমার বয়েসী ছেলেদের দেখি, তারা এই ঝুলে যাওয়া টা খুব পছন্দ করে। বাসের ভেতর যতই ফাঁকা থাকুক না কেন তারা ঝুলেই যাবে। সেই সময় তাদের আচরণে বাসের হেল্পার টাইপ একটা ভাব এসে পড়ে। কোন কোন অতি উৎসাহী আবার চেঁচিয়ে ওঠে, “এই প্লাস্টিক, বাঁয়ে চাপা”। আমার মনে হয় কোন বাবা যদি তার ছেলেকে এরকমভাবে হেল্পারি প্র্যাকটিস করতে দেখতেন, নিশ্চিত ছেলেকে প্লাস্টিকের মতই বাঁয়ে চাপিয়ে একটা চড় দিতেন।
যেই এলাকায় আমি এখন অবস্থান করছি সেটা অবশ্যই বড়লোকদের এলাকা। এটা বুঝতে পারলাম রিকশাচালকদের ভাড়া চাওয়ার অস্বাভাবিক হার দেখে। আমি যেখানে আছি সেখান থেকে আমার ভার্সিটির ভাড়া যে ৫০ টাকা হবে না এ ব্যাপারে আমি ঠিক ততটাই নিশ্চিত যতটা নিশ্চিত কাদের মোল্লা একজন যুদ্ধাপরাধী এই ব্যাপারে। কিন্তু আমার সকল নিশ্চয়তা কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রিকশাওয়ালারা সেই আঙুলের ফাঁকে সিগারেট গুঁজে টানতে লাগলেন।
কোন কোন রিকশাওয়ালা আবার সবজায়গায় যেতে রাজি আছে কিন্তু আমার ভার্সিটিতে যেতেই তাদের যত আপত্তি। কি ব্যাপার? আমার ভার্সিটির সহপাঠীরা কি ভাড়া দেয়না নাকি? জীবনে এই প্রথমবারের মত প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ি বলে একটু অসহায় বোধ করলাম। আমার ভার্সিটির কিছু ছাত্রদের আচরণ দেখলে আমার মনে হয় তাদের ভার্সিটির বিল্ডিং যত বড়, তারা ঠিক ততটাই নিজেদের ছোট ভাবে। আমার তেমন খারাপ লাগে না। মন খারাপের কি আছে? বৃত্ত ভরাটের মাধ্যমে জানা-অজানার খেলায় জিততে পারিনি বলে কুলীন সমাজে জায়গা হয়নি। ব্যস, অল্প কথায় শেষ। আমার সাবেক প্রেমিকার কথা মনে পড়ে গেল। সে পাবলিকের ছাত্রী, আমার সাথে প্রেম করতে গেলে তার সম্মান থাকবে না। তাই প্রেম নামক খেলায় আমাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হল। ক্রিকেট খেলা থেকে শচীনের অবসরে সারা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীরা কেঁদে বুক ভাসালেও আমার জীবনের খেলা থেকে অবসরের ঘটনায় কেউ কাঁদেনি। আমিও কি কেঁদেছিলাম?
তবে দুঃখের পরে সুখ আসে। আমিও রিকশা পেয়ে গেলাম। রিকশাচালক খুবই পাতলা একটা শার্ট পরে আছে। আমি একটু অবাক হলাম। যে বাতাস তাতে জ্যাকেট গায়ে থাকার পরেও আমার একটু শীত শীত লাগছিল। সেখানে উনি শার্ট পরে রিকশা চালাচ্ছেন কিভাবে? একবার ভাবলাম জিজ্ঞাসা করি। পরে ভাবলাম না করাটাই ভাল হবে। নিজের গায়ে শীতের কাপড় থাকলেই যে শীতবস্ত্রহীন একজন মানুষকে বিব্রত করতে হবে তার কোন মানে নেই। আমি কাউকেই বিব্রত করতে চাইনা।
এটা গল্প হলেও পারত। রিকশাচালকের কিছু করুণ কথা, অসহায়ত্ব ফুটিয়ে তুলতে পারতাম। তাহলে আপনারা চার-পাঁচ পাতা পড়তেন। লুকিয়ে বাঁচিয়েও রাখতেন। কিন্তু এই গল্প থাকবে না। কেউ লুকিয়ে বাঁচিয়েও রাখবেন না। সবাই থাকুক সবার মত, যেমন আমি থাকি আমার নিজের জগতে। যে জগতে একটা সুন্দর শুরু আছে, সুন্দর শেষ নেই। যেদিন সুন্দর একটা শেষ হবে সেদিন লুকিয়েও রাখব না, বাঁচিয়েও রাখব না, উড়িয়ে দেব। কোথায় তা জানি না।
funny viagra stories
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
আগেই পড়েছি। অনেক ভাল হয়েছে ভাই। অনেক কিছু ফুটিয়ে তুলেছেন। আর স্টার্টিং তো সেই হইছে……