“বন্ধ দরজা”
302
বার পঠিত can levitra and viagra be taken together(১)
দুপুর বারোটা। ঠিক মধ্যদুপুর। অদ্ভুত কোন কারণে তখন আকাশটা আয়নার মত হয়ে যায়। আর সে আয়নায় প্রতিফলিত হয় সূর্যের যত ক্রোধ। কাঠফাটা রোদ বলে একটা কথা প্রচলিত আছে,যে রোদে কিনা কাঠ ফাটে। কিন্তু আজকের রোদটাকে বলা যায় লোহাগলা রোদ। এ রোদে লোহা গলবে। তাছাড়া গ্রীষ্মকালের মধ্যদুপুরের আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। চারপাশে যেমন বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে,মরিচীকার জন্ম দেয়। তেমনি ভাবনাগুলো ও উল্টে পাল্টে যেতে থাকে। একটা আসে,আরেকটা সরে যায়। নতুন একটা আসেলে, আগেরটা সরে যায়। আর সগুলোর স্থায়ীত্ব ও খুব কম। কেমন যেন অস্থির তাড়াহুড়ার মধ্যে থাকে। তার মত।পীচঢালা রাস্তায় পা ফেলা যাচ্ছেনা,তবু সে ছুটছে। খালি পায়ে। গত কয়েকদিন ধরেইই এভাবে ছুটাছুটি চলছে তার। অতিরিক্ত রোদ এবং পরিচিত মানুষজন থেকে নিজেকে বাঁচাতে আপাদমস্তক কালো চাদরে ঢাকা। ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে গেছে তবু। তবে বোধহয় শেষ রক্ষা হলো না। “আরে ভাই আপনি!” সে ঘাড় ফিরিয়ে দেখে,মধ্যবয়স্ক এক লোক দাঁড়িয়ে আছে হাসিমুখে। “আমাকে চিনতে পারেননি,ভাই? ঐযে একবার একতোড়া ফুল কিনেছিলেন আমার কাছ থেকে। তারপর একটা হোটেলের ঠিকানা দিলেন! ভুলে গেছেন?” সে শূণ্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। accutane prices
হাতের সস্তা যাচ্ছেতাই কাগজে মোড়ানো প্যাকেটটা আরো শক্ত করে বুকে চেপে ধরল। আনমনে বিড়বিড় করলো, “আমাকে যেতে হবে।” তারপর অনেকটা ঘোরের মাঝেই লোকটাকে পেরিয়ে গেলো দ্রুতপায়ে।
(২)
ড. ফিহার অফিস। তার সেক্রেটারী ফোনে বকবক করেই যাচ্ছে। চশমা পড়া অতীব রুপবতী এক তরুণী। রুপবতীদের চেহারায় একটা কাঠিন্য থাকে। এ মেয়ের তা নেই। এমনকি চশমার ব্যবহার ও তার চেহারায় কাঠিন্য আনতে পারেনি। মেয়েটার ডেস্কের বীপরিতে একটা চেয়ারে সে বসে আছে। কাগজের প্যাকেট এবং হাত দুটো কোলের উপর রাখা। চোখে মুখে স্বভাব বিরুদ্ধ অস্থিরতা। শেষে আর থাকতে না পেরে এগিয়ে গেলো। রুপবতী সেক্রেটারী তখন কলম দিয়ে একটা ছোট নোটপ্যাডে বিভিন্ন ঢং এ “রাহানুমা” লিখছে,আর কথা বলছে! “রাহানুমা!!” মেয়েটা চমকে হাত থেকে সেলফোন ছেড়ে দিল। “তোমার ডাকনাম রাহা,তাইনা?” “আপনি… আমার নাম জানলেন কী করে?” “শুধু নাম না,আরো অনেক কিছুই জানি। তোমার চাকরি জয়েনিং এ মাসেই। গতমাসে তোমার বিয়ে ভেংগে গেছে। তুমি নিজেই ভেংগেছ। তারা অন্যায় দাবি করেছিল।”
বিস্ময় ভাব কাটিয়ে রাহার চোখমুখ কঠিন হয়ে উঠছে। সে আবার বলতে লাগল, “তুমি বড় মেয়ে। তোমার বিয়ে ভেংগে যাওয়ার পর থেকে তোমার বাবা শয্যাশায়ী। তোমার ছোট দুই ভাইবোন..
“থামুন! যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছেন কেন আপনি? স্যারের সাথে দেখা করতে চেয়েছিলেন,ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।” তারপর সে ফোন তুলে নিয়ে,নীচু স্বরে কয়েকটা কথা বলে ফোন নামিয়ে রাখল। কঠিন মুখভঙ্গী নিয়ে বলল, “করিডোর ধরে এগিয়ে যান,হাতের বাঁ পাশের প্রথম রুম।”
(৩)
দরজা নক করতেই ভেতরে যাওয়ার অনুমতি এলো। ভেতরে মোটা গোঁফ,কাঁচাপাকা চুলের হাসিখুশি এক ভদ্রলোক। চশমার ওপাশের চোখজোড়া থেকে কৌতুহল এবং বুদ্ধিমত্তা ঠিকরে বেরুচ্ছে। “জ্বী বলুন,কী করতে পারি?” “স্যার, আপনি নাকি বন্ধ দরজার সমীকরণ আবিষ্কার করে ফেলেছেন। এমনকি তার সাহায্যে দরজাটার খোঁজ ও পেয়ে গেছেন।” ড. ফিহা সোজা হয়ে বসলেন। চোখে সন্দেহের দৃষ্টি। “আপনি এতকিছু জানলেন কী করে?” সে এগিয়ে এসে গায়ের চাদর সরিয়ে নিলো। হলুদ পান্জাবি দেখা যাচ্ছে এখন। ক্লান্ত গলায় বলল, “স্যার,আমি যে হিমু! আমার যে সব জানতে হয়!!!”
(৪)
ড. ফিহার রুম থেকে বেরিয়ে এলো হিমু। মুখে তার প্রসন্নতার ছাপ। রাহানুমার ডেস্কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখল,মেয়েটা কেমন যেন বিধ্বস্তের মত বসে আছে। হিমুকে দেখে চমকে গেলো,মনে হয় তার ভ্রান্তি কেটে গেছে। “চলি রাহানুমা। আমার ব্যবহারের জন্য দুঃখিত।”
“হিমু ভাই,আমার ডাকনাম সারাহ্ । রাহা ছোটবোনের দেয়া নাম। ও আহলাদ করে ডাকে,”রাহাপ্পু”। আপনি ঠিকই বলেছেন সব। কীভাবে বললেন?” হিমু হাসল। তার সেই বিখ্যাত বিভ্রান্তিকর হাসি। “শেক্সপিয়ার বলেছেন,”There are more things,in heaven and earth!” আর জগতের সব রহস্য ভাংতে নেই। কিছু রহস্য থাকুক না! ক্ষতি কী?আসি।” রাহা ফিসফিসিয়ে বলল, “আমি কি আপনার সাথে যেতে পারি,হিমু ভাই?”
(৫)
বিরাট মাঠ। মাঠের শেষপ্রান্তে একটা ছোট কাঠের ঘর। ঘরটার রং হলুদ নীলচে। দরজাটা ভেজানো ছিল। এক হাত দিয়ে কাগজের প্যাকেট টা ধরে,অন্য হাত দিয়ে দরজা ঠেলে ভতরে ঢুকল। ভেতরটা গাঢ় সবুজ। ঘরের ঠিক মাঝখানে অদ্ভুত দর্শন এক দরজা। কালো রং এর। তাতে বিচিত্র সব নকশা আঁকা। হায়ারোগ্লিফিক হতে পারে। পেছন থেকে রাহা ডেকে বলল, “হিমু ভাই, যে সমীকরণ দেয়া হয়েছে তা দরজার মধ্যেও খোদাই করা আছে। আপনি নির্দষ্ট সময়ের মাঝে সমীকরণের অংশগুলো খুঁজে নিয়ে আলতোভাবে ছুঁয়ে দেবেন শুধু।”
রাহা মোবাইল দেখছে। সময় রাত ১২টা হতেই,তারিখ বদলে গেলো। ১৯শে জুলাই। বাংলাদেশের সাহিত্য ইতিহাসের কালো দিন। শোক-কষ্টের দিন। তরুন-তরুনীর স্বপ্ন,আশা ভঙ্গের দিন। আজ যে এক মহামানবের মৃত্যু দিবস!!!
হিমু কাঁপাকাঁপা হাতে সমীকরণের অংশগুলো স্পর্শ করতে লাগল। হঠাত হালকা শীষের মত শব্দ তুলে খুলে গেল দরজাটা। জীবন-মৃত্যুর সীমানার দরজা। প্রিয় মানুষদেরকে লুকিয়ে রাখা দরজা। রহস্যাবৃত পরজগতের দরজা। হিমু দরজার ফাঁকের কাছে মুখ নিয়ে বলল, “স্যার. . . স্যার. . . ও স্যার।” তার গলা ভেঙ্গে আসছে। তাহলে কী তার কান্না পাচ্ছে? সে আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছে? তাতো হতে পারেনা! স্যার কী ভাববেন? হতাশ হবেন না? বলবেন না, “তোমাকে তো আমি তা শিখাইনি!” হিমু নিজেকে সামলে নিল। “স্যার… শুনতে পাচ্ছেন?” “কে,হিমু? ভাল আছো?”
এইতো! স্যার জবাব দিয়েছেন। সেই কন্ঠস্বর,বলার ভঙ্গী,কথার টান,সতেজতা,সব এক। “জ্বী স্যার। আপনিতো জানেন,হিমুদের ভাল থাকতে হয়! স্যার… আপনার জন্য কিছু জিনিস এনেছি।” “কী এনেছো,হিমু?” “কয়েকটা টুকিটাকি জিনিস। আপনার প্রিয় চশমা,কিছু বলপয়েন্ট,খাতা। আর… আর…” “আর কী হিমু?” “শেষের দিকে পরা আপনার প্রিয় টুপি…” “কই,দাও…” হিমু দরজার ফাঁক দিয়ে প্যাকেটটা বাড়িয়ে ধরে। টের পায় কেউ একজন তা টেনে নিচ্ছে। “স্যার…” “না থাকুক আজ।” “থাকবে? থাকুক তাহলে।থেকে যাওয়াই ভাল। সব জানতে নেই। আর হিমুরা তো রহস্য করতেই ভালবাসে।……….. হিমু?” “জ্বী স্যার?”
“তোমার উপহারে আমি খুব খুশী হয়েছি। আমার যে কী আনন্দ হচ্ছে! ড. ফিহাকে আমার শুভেচ্ছা দিও। তাকে বলো,তার জ্ঞান চর্চায় আমি মুগ্ধ।” “স্যার,রুপা আপনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে।” “তাকে ও আমার শুভেচ্ছা দিও।” “আমি কি কিছু বলতে পারি,হিমু ভাই?” হিমু সরে রাহা কে জায়গা করে দিলো। রাহা এগিয়ে এসেই অভিমানী কন্ঠে জেরা করা শুরু করল। “স্যার এভাবে কেন চলে গেলেন?না গেলেই কি চলছিল না?এভাবে আমাদের কাঁদিয়ে গিয়ে কি নিজে খুব ভাল আছেন?আর…” রাহা ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে,হিমুর না করা প্রশ্নটাই করে ফেলল। “দরজার ওপাশের মানুষগুলো কি আমাদের চেয়ে আপন?”
(৬)
দরজাটা বন্ধ হয়ে গেছে কিছুক্ষণ আগে। হিমু দরজা ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে আছে।তার কেন যেন মনে হচ্ছে,ওপাশের আবেগী মানুষটা কাঁদছে। কাঁদবেইতো! যার ভেতর এত মায়া,যে লাখ লাখ মানুষ কে কাঁদাতে পারে,সেতো কাঁদবেই।তার তো কাঁদারই কথা! “ভাল থাকুন স্যার….ভাল থাকুন ম্যাজিশিয়ান,সহজ-সরল আবেগী মহামানব!”
(৭)
তারা দুজন ঘরটা থেকে বেরিয়ে এলো। আকাশে ইয়া বড় চাঁদ। চারপাশ জোছনায় ভেসে যাচ্ছে। ফোঁপানোর শব্দে হিমু ফিরে তাকায়। রাহা কাঁদছে। তাকে জোছনামানবী মনে হচ্ছে চাঁদের আলোয়। হঠাত হিমুর রুপাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করল। আচ্ছা,রুপাও কি কাঁদছে … এখন? কান্না ব্যাপারটা সংক্রামক। স্রষ্টার সাথে সৃষ্টি কাঁদবে,এটাইতো স্বাভাবিক! কিন্তু হিমু কাঁদবেনা। তাকে কাঁদতে শেখানো হয়নি। তাই সে মন দিয়ে চাঁদ দেখতে লাগল। “আচ্ছা জোছনাটা কি আরো বেড়েছে? অসহ্য সুন্দর হয়ে যাচ্ছে কেন চারপাশ? আহারে….. মানুষটা জোছনা বড্ড ভালবাসতো!!!”
(সমাপ্ত)
চাতক বলছেনঃ
চমৎকার। কীভাবে পারেন আপনি? অসাধারণ লিখনি শক্তি আপনার। তবে কেন অন্যের চরিত্রে প্রান দেয়ার চেষ্টা করছেন নিজেই নতুন কিছু ভাবেন না কেন?
বেশ কিছুদিন পর আবারও আপনার গল্প পড়ে খুব ভাল লাগলো। বেশী বেশী গল্প চাই আপনার মত গল্পকারের কাছে।
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
চরিত্রটা হুমায়ুন আহমেদের বলেই চাতকদার মনোভাব এমন?
অনুস্বার বলছেনঃ
কালবৈশাখির সাথে সহমত…
বিষয়টা কি? :-”
অংকুর বলছেনঃ
হিমু বলতে কি আপনি হুমায়ূন আহমেদের তৈরি হিমুকে বুঝিয়েছেন? তাইতো মনে হচ্ছে। যদি তাই হয় তাহলে গল্পটা বাজে হয়েছে। হিমু আমার সবচেয়ে পছন্দের চরিত্র। তাকে নিয়ে এই গল্প মানায়না
:-X
শ্রাবনের রক্তজবা বলছেনঃ
আগের গল্প গুলো ভাল লেগেছিল বেশি।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
আমারও একই মত আপনার নিজের স্বকীয়তা অন্যের চরিত্রে চরিত্র হারিয়েছে বরং কিছু না! আপনার সাবলীল ধরণটাই বরং অনবদ্য। তবুও চমৎকার লিখনি শক্তি আপনার যার জন্যে থাম্বস আপ আপনার প্রাপ্যই… para que sirve el amoxil pediatrico