উপহার
546
বার পঠিত-হ্যালো সুপ্তি?
-হুম, রাফি না?
-হ্যাঁ, আমি রাফি। শুনেছ…
-আরে বল কেমন আছো?
-ধুর বাদ দাও কেমন আছো! তোমাকে শুধু একটা খবর জানাতে ফোন করেছি। জয় এর এক্সিডেন্ট হয়েছে। ও আর বেঁচে নেই।
-‘কি বলছো! আমি জানি, এটা তোমার বন্ধুর চাল। আমাকে ঠকাচ্ছো তাই না?’ সুপ্তির গলাটা কেঁপে উঠল।
-আমার এখন তোমার কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মুড নেই। ওকে শেষবার দেখার ইচ্ছে হলে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে আসতে পারো।
টুট… টুট…
যান্ত্রিক শব্দ হয়ে ফোনটি কেটে গেল।
সুপ্তি সাথে সাথে ছুটল ঢাকা মেডিকেলের দিকে। ট্রেনে কাটা পড়া একটা রোগী আজ আসলেই এসেছে। কিন্তু, সেটাকে একটু আগে তার আত্মীয় স্বজনরা ময়না তদন্ত ছাড়াই নিয়ে গেছে।
দু’হাতে মুখ ঢেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল সুপ্তি।
একদিন আগে… রাত বারোটা।
- হ্যলো।
- হ্যাপি বার্থডে সুপ্তি…
- অহ! থ্যঙ্কস জয়। তুমি কথা রাখলে। তাহলে আমাকে তুমিই প্রথম উইশ করলে!
- হুম রাখলাম। আজ আরেকটা কথা রাখবো।
- কি?
- তোমায় বলেছিলাম না আমার সবচেয়ে মূল্যবান উপহার তোমায় দেব?
- আমার কোন উপহার লাগবে না।
- তুমি না চাইলেও দিব তোমাকে। তুমি চাইতে আমি তোমার থেকে যেন দূরে চলে যাই।
- হুম এখনও চাই…
- আমি কি বলতাম মনে আছে? আমি বলতাম তাহলে মরতে হবে…
- আহ কি যে শুরু করেছো।
- হ্যাঁ আমাদের প্রত্যেকের মূল্যবান একটি উপহার আছে। সেটা স্রষ্টার দেয়া। আমি তোমাকে সেই উপহার আজ দেব।
- কি সেই মূল্যবান উপহার।
- আমাদের জীবন।
- হইছে!!! ফোন রাখলাম…
- ভাল থেকো।
সুপ্তি ফোন কেটে দিলো।
তারপর সুপ্তির বিয়ের পাঁচ বছর পার হয়ে গেছে। এ সবই আমি জানি। সব সময়ই ওর খবর নিয়েছি। শুনেছিলাম বিয়ের পর ওরা চিটাগাং শিফট করেছে। ভয়ে ছিলাম, কবে যেন ওর সাথে দেখা হয়ে যায়! যখন ও ঢাকা থাকতো তখন প্রায়ই ও খবর নিতাম। কিন্তু চিটাগাং শিফট হবার পর আর বেশি কিছু জানতে পারি নি ওর সম্পর্কে। বছর তিন এক আগে শুনেছিলাম সুপ্তি’র একটি মেয়ে হয়েছে। মেয়েটি নিশ্চয় সুপ্তির মতই সুন্দর হয়েছে। ওর মতই বোচা নাকের হয়েছে। এমন অনেক কিছুই ভাবতাম। খুব দেখতে ইচ্ছে করতো। কিন্তু কখনও যোগাযোগ করি নি। কারণ ওকে আমি মুক্তি দিয়েছিলাম।
২০০৮ সালের ঘটনা আমি আজ লালখান বাজারে জিইসি মোড় হয়ে আসছিলাম। এক ছোট্ট মেয়েকে হঠাৎ দেখতে পেলাম একটি বেলুন বিক্রেতার পিছু পিছু হাঁটছে, বেলুন বিক্রেতা রাস্তা পার হচ্ছে, বাচ্চা মেয়েটিও অনুসরণ করছে তাকে। হঠাৎ কি মনে করে বাচ্চা টার হাত ধরলাম, টেনে ফুটপাতের কাছাকাছি নিয়ে আসলাম। ঠিক তখন থেকেই পেছন থেকে একটি মেয়ে কণ্ঠ – ‘ধন্যবাদ ভাই, আমি এই খানে দাঁড়িয়ে মোবাইল বের করতে করতে ও চলে আসলো, কি যে বিপদ হত আপনি না থাকলে।’
আমি পেছনে তাকাতেই দেখি সুপ্তি। বিস্ময় কিংবা ভয়ে সুপ্তির মুখের রঙ কেমন যেন পালটে গেল।
=তুমি বেঁচে আছো!
-হ্যাঁ।
=রাফি বলল তুমি মারা গিয়েছো।
-হ্যাঁ! আমি তোমার কাছে মৃত ছিলাম।
=তাহলে সবই ছিল মিথ্যে!তুমি কেন এমন করলে!
-তুমি মুক্তি চেয়েছিলে আমার কাছ থেকে, আমি এও জানতাম তোমার কাছে আমি হলাম সেই গলার কাটা যেটা গেলাও যায় না আবার বের করাও যায় না। তাই…
আমি কথা শেষ করতে পারি নি। আমাকে থামিয়ে ও বলল
=তাহলে হাসপাতালে সেই গিয়ে যখন খবর নিলাম একজনের মৃত্যুর খবর পেলাম সে? তোমার ডেথ সার্টিফিকেট?
আমি হেসে উঠলাম, হাসিটা থামিয়ে ওকে উত্তর দিলাম-
-এটা বাংলাদেশ। এখানে ২০০ টাকায় কারো বার্থ সার্টিফিকেট যেমন বানানো যায় তেমনই ডেথ সার্টিফিকেট। আর যে ব্যক্তির মৃত্যুর কথা বলছো সে সম্পর্কে কিছু জানি না। রাফি যখন খবর পেল তুমি হাসপাতালে গিয়েছো, ও দেরি না করে হাসপাতালে পৌঁছায়। ততক্ষণে তুমি জেনেছো একজনের মৃত্যু হয়েছে ট্রেন এক্সিডেন্টে আর তার লাশ নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
=তুমি এমনি চলে আসতে পারতে। এ নাটক কেন করলে?
-আমি চলে আসলে তুমি আমাকে ছাড়তে পারতে না আমিও পারতাম না। যাতে আমাকে ভুলে যাও সে জন্যের এ নাটক।
=তুমি পেরেছিলে, একজন মানুষ মারা গেলে কিছু দিন তার কথা অনেক মনে পরে, সে শত্রু হোক আর মিত্রই… এর পর সবাই তাকে ভুলে যায়।
-যাক ভাল একটা পাপ থেকে আমি মুক্তি পেলাম, আমি ধরেই নিয়েছিলাম আমার জন্য তোমার মৃত্যু হয়েছে। তুমি সুইসাইড করেছো…
=সুইসাইড!!! তোমাকে আমি সব সময়েই বলতাম সবচেয়ে বড় উপহার হল জীবন, যেটা স্রষ্টা আমাদের দেয়। আমি সেই জীবনকে শেষ করে দেব! আর একটা জীবনে শুধু নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির অধিকার থাকে না। একজন ব্যক্তির জীবনে অনেক গুলো মানুষের সংশ্লিষ্টতা। তাদের অনেকের কাছেই সেই ব্যক্তির জীবনের গুরুত্ব অনেক। তাই একজনের জন্য বাকি মানুষের কেন ক্ষতি করব আমি! তাই আমার যে মৃত্যু হয়েছিল সেটা তোমার কাছে।
কিছু সময়ের জন্য যেন এই মহাবিশ্বের সব কিছু থেমে গিয়েছিল। শুধু দুটি প্রাণী, আমি আর ও ছিলাম সচল। আমাদের দুজনের সেই জগৎ থেকে বের করে আনলো সুপ্তি’র ফুটফুটে মেয়েটি। মায়ের মত ওর নাক বোচা হয় নি। সুপ্তির মেয়ে কান্না করে দিল বেলুনের জন্য। বেলুন বিক্রেতা রাস্তা পেরিয়ে ওপারে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমি সুপ্তিকে বললাম ‘দাড়াও ওকে একটা বেলুন কিনে দেই’। ও কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল হয়তো না করতে চাচ্ছিল। বেলুন নিয়ে এসে ওর ছোট্ট মেয়েটিকে দিলাম। হাঁটু গেরে বসে ওর মেয়ের গালে হাত বুলিয়ে আদর করে দিয়ে চলে আসলাম। আসার আগে সুপ্তি’কে বললাম ‘ভাল থেকো’। ও আমাকে কিছু বলে নি, তাকিয়েছিল। আমি চলে আসার পরও তাকিয়েছিল কিনা জানি না…
একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে জয় আবার বলতে শুরু করলো-
ওর জীবন থেকে চলে না আসলে আমার মত বাউণ্ডুলে স্বভাবের ছেলের জন্য ওর জীবন টা নষ্ট হয়ে যেত। আর আমি যদি আত্মহত্যা করতাম তবে অন্য মানুষ গুলোর সাথে কি বেঈমানি করা হত না? আমার মা, আমার বাবা, আমার বোন… আমার বন্ধুগুলো – সবার সাথে। মানুষকে দেয়া স্রষ্টার সবচেয়ে বড় উপহার হচ্ছে তার জীবন। কিন্তু, সেই জীবনটার ওপরে তার একার অধিকার থাকে না। সত্যি কথা বলতে কি, অধিকারই থাকে না। আমরা কখনও নিজের জন্য বাঁচি না। আমরা বাঁচি অপরের জন্য। যখন সেই বোধটাই আমাদের মাঝে থাকে না, তখনই আমরা সেই উপহারকে হেলায় তুচ্ছ করে ফিরিয়ে দিই। kamagra pastillas
এখন বল, আমি তোমাকে এত সময় নিয়ে আমার জীবনের গল্পটি বললাম, এরপর কি বলবে তুমি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলে এটা ভালবাসার জন্য? তুমি কি ওর সুখ দেখতে চাও না তাই পালিয়ে যেতে চেয়েছিলে? তাহলে আমি বলব, তুমি স্বার্থপর। তুমি ওকে ভালবাস নি। ভালবাসলে তুমি ওর সুখে সুখি হতে। আর তুমি ভালবাসা বোঝ না। কারণ তোমার পাশের এই যে এত মানুষ তারাও তোমাকে ভালবাসে। তুমি একটি মেয়ের জন্যে সৃষ্টিকর্তার দেয়া সবচেয়ে মূল্যবান উপহারটি নষ্ট করতে চাইছিলে? তুমি আবার বলছো সুইসাইড এর কথা। এখনও যদি তুমি বল তুমি সুইসাইড করবে তবে আমি বলব তোমার বেঁচে থাকার অধিকার নেই। তুমি মরে যাও।
হাসপাতালের বিছানায় মাথা নিচু করে বসে আছে শুভ। জয় শুভ কে নিজের জীবনের কথা গুলো বলছিল।
শুভ জয়’এর দিকে তাকিয়ে বলল- ‘ভাইয়া সামনে তো ঈদ প্ল্যান কি? গ্রামে গেলে আমাকে নিয়ে যাবেন কিন্তু! আর… আর কি যেন বলব ভুলে গেলাম ধুর’। জয় এতক্ষন পর হাসলো
- সুইসাইডের ভুত মাথা থেকে নেমেছে তাহলে, আর সুইসাইডের কথা বলবে?
- কি! সুইসাইড! সৃষ্টিকর্তার দেয়া আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান উপহারটি আমি নষ্ট করবো?
দুজনেই এবার হেসে উঠলো…
সফিক এহসান বলছেনঃ
কোন একটা স্ট্যাটাসে জয় বলেছিল- “সব লেখকই কেন প্রেমের গল্পে বিরহ বিচ্ছেদ টাইপ এন্ডিং দেয়?”
প্রশ্নটা এখন উল্টো জয়-কেই করা হল…
যাহোক, ভাল টপিক। সবচেয়ে ভাল লেগেছে যে জায়গাটা- “আমরা কখনও নিজের জন্য বাঁচি না। আমরা বাঁচি অপরের জন্য।”
ক্যারি অন ব্রো…
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
কি করব বলুন এখনও তাদের পথ ধরে হাটছি। নিজের স্টাইল তৈরী হয় নি। তয় ধন্যবাদ আপনি প্রেম টা বাদ দিয়ে আমার যে মূল উদ্দেশ্য সেটা ধরেছেন।
টপিক ভাল বুঝলাম লেখা কেমন??
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ buy kamagra oral jelly paypal uk
লেখনীতে উন্নতির সুযোগ আছে। তবে, থিমটা এক কথায় দারুণ। এন্ডিংয়ের দিকে এসে দু’বার মাথা চুলকিয়েছিলাম, কী লিখল পোলাডা!
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
রাজু রণরাজ বলছেনঃ
“আমরা কখনও নিজের জন্য বাঁচি না। আমরা বাঁচি অপরের জন্য।”
গল্প ভালো লাগলো পাগলা। ♣♣♣♣
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
রাজু দা আপনে খারাপ। আপনার গল্প কবিতা পাই না কেন??? ভাবি কি লেখালেখির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেছে??
আমার অখাদ্য লেখা পড়বার কারণে ধন্যবাদ।
হুমায়ুন রনি। বলছেনঃ zithromax azithromycin 250 mg
ছোট, বয়স আন্তাজ গল্পের গাঁথুনী বেশ ভাল হয়েছে। ছেলের ভবিষৎ উজ্জল…
সোমেশ্বরী বলছেনঃ
আমার খাছে অসাধারণ লেগেছে গল্পের বাঁকগুলো।
ধন্যবাদ আপনাকে জয় ভাই।
খুব সুব্দর একটা থিম নিয়ে লিখেছেন, প্লটটাও দারুণ ছিলো।
ভালো লেগেছে।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
পড়ার জন্য ধন্যবাদ……
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
doctus viagraধন্যবাদ দিতে পারলাম না রনি ভাই। প্রথমত আপনার কাছ থেকে সমালোচনা আশা করেছিলাম। দ্বীতিয়ত আমি লেখার সময় এবং আমার লেখা মূল্যয়ন করার সময় বয়স বিবেচনায় আনাটা পছন্দ করি না।
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ
দারুণ প্লট। গল্পে উন্নতি লক্ষনীয়। আর এন্ডিংটা ভালো লেগেছে। যদিও আমার দর্শন অন্যরকম। “সৃষ্টিকর্তার দেয়া আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান উপহারটি কি আমি বহন করার যোগ্য? আমি কেন নষ্ট করবো না?”
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
অযগ্য তখনই হবেন যখন আপনি সেটাকে হেয় করবেন।
আপনাকে It’s a wonderful life মুভি টি দেখবার অনুরোধ রইলো।
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ clomid over the counter
গল্পটা আরেকটু মনযোগ দিয়ে পড়ার প্রয়োজন ছিল। আপনার জীবনটা আপনাকে উপহার দেয়া হয়নি। আপনার চারপাশের মানুষগুলোকে উপহার দেয়া হয়েছে।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
অনেক ভালো লিখছেন ভাই। বড্ড দেরী হয়ে গেলো পড়তে…