মিডিয়া…! কী শেখাচ্ছে আমাদের?
492
বার পঠিতCN (কার্টুন নেটওয়ার্ক) চ্যানেলে একটা প্রোগ্রাম হয় “জাস্ট ফান” টাইপের… সেখানে কিছু মানুষ বিভিন্ন করম আজগুবি কাজ কারবার করে জন সাধারণকে ভড়কে দেয়। দূর থেকে গোপন ক্যামেরায় সেগুলো ধারন করা হয় এবং সেটা দেখিয়ে মজা করা করা হয়। এই ধরনের প্রোগ্রাম যে আমি বিদেশী চ্যানেলেই প্রথম দেখি তা নয়। বাংলা চ্যানেলেই বোধহয় প্রথম আমি এগুলো দেখেছিলাম…
অনেক আগে “একুশে টিভি” (তখন সরকারী ছিল)-তে দেবাশীষ রায়ের উপস্থাপনায় “পথের প্যাঁচালী” নামের একটা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান হতো। সেই প্রোগ্রামের একটা অংশ ছিল “প্যাঁচালী মদন”! জনসাধারনকে নিয়ে পাবলিক প্লেসে একটা ইভেন্ট হতো। সেখানে একজন মানুষকে বোকা বানানো হতো… চূড়ান্ত বোকা বানানো লোকটিকে বিভিন্ন গিফটের সাথে “প্যাঁচালী মদন” উপাধি দেয়া হতো। আমরা টিভিতে সেই দৃশ্য দেখে মজা পেতাম… হাসতাম। নিছকই নিরিহ টাইপ বিনোদন ছিল সেটা।
কিন্তু ইদানিং দেখছি দেশী চ্যানেলগুলোর প্রায় প্রতিটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানেই এই জিনিসটা খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাতে দোষের কিছু দেখি না। আমাদের জীবনে বিনোদনের খুব অভাব… বিনোদনের তাই দরকার আছে। ভাল ভাবেই আছে!
কিন্তু সেটার মাত্রাটা আসলে কতটুকুর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে সেটা বিবেচনা করা জরুরী। সেদিন একটা প্রোগ্রামে দেখলাম একজন (প্রোগ্রামের আর্টিস্ট) জোর করে এক পথচারীকে তার নিজের মোবাইল ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বলছে- ভাই একটু হেল্প করেন… এটা কোন জায়গা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না… এই এলাকায় আমি নতুন বা চিনি না (এই টাইপের কিছু)… একটু কথা বলুন প্লীজ…!
পথচারী একরকম বাধ্য হয়ে মোবাইলটা ধরছে… ঠিক তক্ষুণি মোবাইল ওয়ালা দৌড়ে পালাচ্ছে এবং পেছন থেকে আরেকদল এসে প্রমান করার চেষ্টা করছে- ঐ পথচারী ফোনটা চুরি করেছে! কারণ মোবাইলটা তখন তাঁর হাতে…!
অবশ্য কিছুটা বিপাকে ফেলার পর তাকে জানানোও হচ্ছে যে এটা জাস্ট ফান ছিল। একটা ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে…
একবার ভাবুন, বিষয়টা হয়তো বিনোদনের। কিন্তু সমাজের প্রতিটা মানুষ কি এটা বিনোদন হিসেবে নেবে? অনেকেই এই ফর্মুলা এ্যাপ্লাই করবে বিভিন্ন ক্রাইম করার জন্য! তখন কী হবে ব্যাপারটা? মানুষের ওপর থেকে আমাদের বিশ্বাস উঠে যাবে আরো। হয়তো গ্রাম থেকে আসা সত্যি সত্যি বিপদে পরা একজন নিরিহ মানুষকে আর কেউ সাহায্য করতে চাইবে না কেউ!
আরো ভয়াবহ একটা প্রোগ্রামের কথা বলি। সেটাতে দেখা যাবে ৪/৫ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে হাতে একটা লজেন্সের বয়াম হাতে নিয়ে শহরের ব্যস্ততম রাস্তার পাশে অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে আছে। কোন একজন পথচারীকে দেখে ডেকে বলছে- আংকেল, আমাকে একটু রাস্তাটা পার করে দেবেন? আমার খুব ভয় করছে! রাস্তার ওপাশেই আমার বাসা…
খুব স্বাভাবিক ভাবেই একজন ভদ্রলোক দয়া পরবেশ হয়ে বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার করে দিল। ঠিক তখনই বিপত্তি! রাস্তার ওপাশেই দুই তিনজন লোক ওঁত পেতে দাঁড়িয়ে ছিল… তারা বাচ্চা মেয়েটাকে দেখেই দৌড়ে গিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে বলবে- আম্মু, কোথায় ছিলে তুমি? তোমাকে হারিয়ে আমরা কোথায় কোথায় খুঁজতেছি!
বাচ্চা মেয়েটা তখন ঐ পথচারী ভদ্রলোককে দেখিয়ে দিয়ে বলে- এই আংকেল আমাকে চকলেট কিনে দেবে বলে নিয়ে গিয়েছিল! এইযে, চকলেটও কিনে দিয়েছে…!
ঐ ভদ্রলোকের অবস্থাটা একবার বুঝুন! বাচ্চা একটা মেয়ে এভাবে তাকে ট্র্যাপে ফেলবে কে চিন্তা করেছে? কিভাবে এখন সে প্রমান করবে যে সে নির্দোষ? ভাল একটা বিপাকে পরে যান তিনি! আর তা দেখে আমরা হই বিনোদিত…!
আপনি ভাবতে পারেন এই বিনোদনের কী সাইড ইফেক্ট পড়বে আমাদের সমাজে, আমাদের মনে? এটা নাহয় ফান ছিল কিন্তু সত্যিতো কোন দুষ্টু লোক এভাবে ফাঁদে ফেলতে পারে কাউকে! আর ফাঁদে না ফেলুক- একটা ফানি ইভেন্টের বলির পাঁঠা হতেই বা কে চাইবে?
ফলে আগামীতে যদি সত্যি সত্যি কোন ছোট বাচ্চা আমার কাছে এধরনের কোন সাহায্য চায় আমি তাকে সাহায্য করার আগে দ্বিধায় পরে যাব। হয়তো করবোই না কোন সাহায্য… হয়তো আশপাশের কোন পুলিশকে দেখিয়ে দিয়ে বলব- ওনাকে গিয়ে বল, আমি পারবো না! কিংবা জাস্ট ইগনর করব!
আমার বিবেক এতো নিচে যাবে যে একটা নিষ্পাপ শিশুকে সাহায্য করতে গিয়েও সন্দেহের বিষে আমি নীল হয়ে যাব! অথচ এই সন্দেহ আমার মনের ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে কিছু অসচেতন মিডিয়া…!
অতঃপর “একটা শিশু এক্সিডেন্ট করে পথের পাশে কাতরাতে কাতরাতে মারা যাওয়ার চাইনিজ ভিডিও”টা শেয়ার করে কোন একজন মানবতাবাদী ফেসবুকার প্রমান করতে চাইবে আমাদের মানবতাবোধ কত নিচে নেমে গেছে। আমরা কুকুরের চেয়েও অধম হয়ে গেছি… ইত্যাদি…! সেই ভিডিওটাতে হয়তো কেউ একজন আমাকেও ট্যাগ করবে… কিন্তু আমি কোনদিন তাকে বোঝাতে পারবো না যে সন্দেহের বিষ কিভাবে আমার বিবেকবোধ-মানবতা-মনুষত্বকে তিলে তিলে মেরে ফেলেছে…!
চারদিকে যখন কেবল অবিশ্বাসের কালো ছায়া তখন মানুষের প্রতি মানুষের বিশ্বাসকে আরো ভঙ্গুর করে দেবার আগে মিডিয়ার প্রতি আমার আকুল আবেদন- প্লীজ… একটা প্রোগ্রাম টিভিতে প্রচার করার আগে আরেকবার ভাবুন- আপনি আসলে কী শেখাতে যাচ্ছেন???
আমরা কি সত্যি মানুষের এই রূপটার সাথেই পরিচিত হতে চেয়েছিলাম? নাকি সংখ্যায় নগণ্য হলেও সমাজে এখনও কিছু মানুষের প্রতি মানুষের মহানুভবতার যে অসাধারন উদাহরণগুলো আছে সেগুলোও জন সম্মুখে প্রকাশ করে মানুষকে ভাল কাজে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারতো?
মিডিয়াগুলো আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে- এমনটাই প্রত্যাশা রইল…
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
মিডিয়া আর দায়িত্বশীলতা… :-@
হাসাইলেন ভাই… :-”
সফিক এহসান বলছেনঃ
8->
কী করুম ডন সাব? “আশা করা”টাই যে আমজনতার সম্বল…
তারিক লিংকন বলছেনঃ
মিডিয়াগুলো আরো দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে- এমনটাই প্রত্যাশা রইল…
m/ m/ m/ =D> =D> =D>
মাশিয়াত খান বলছেনঃ
আমি তো এরকম কিছু সম্পর্কে জানতামই না।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
বলেন কি মাশিয়াত ম্যাম… @-) #-o
সফিক এহসান বলছেনঃ
=((
এইটা একটা কথা কইলা হামেলা বেগম… থুক্কু, মাশিয়াত বেগম!!!
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
চিন্তায় ফালায় দিলেন। কি করব!!!!!
সফিক এহসান বলছেনঃ
achat viagra cialis franceআসো, মুড়ি খাই! 8-X 8-X 8-X
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
মুড়ি কই???
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ metformin synthesis wikipedia
আমাদের জন্ডিস রংয়ের মিডিয়ার কাছে দায়িত্বশীলতা আশা করাই বৃথা।
সফিক এহসান বলছেনঃ
জন্ডিস কী বলছেন ভ্রাতা… ওরা তো রিতিমত অরেঞ্জ কালারড!
অংকুর বলছেনঃ
খাটি কথা বলেছেন ভাইসাহেব :-bd :-bd :-bd :-bd :-bd :-bd :-bd =D> =D> =D> =D> =D> =D> =D> =D> =D>
সফিক এহসান বলছেনঃ all possible side effects of prednisone
%%- %%- %%-