কটুক্তিকারী শিক্ষকের ফাঁসি চাই! (১)
153
বার পঠিতনারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ‘ধর্ম নিয়ে কটূক্তির’ অভিযোগে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান লাঞ্ছিতের পর বরখাস্ত করায় প্রগতিশীল সমাজ অনেক প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। কিছুদিন আগেই ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে বাগেরহাটের দুই শিক্ষককে জেলে পাঠানোর হয়েছে। এরপরেই ঘটলো এই ঘটনা। এতে প্রায় সকলের মত আমিও সেলিম ওসমানের শাস্তি চাইলেও আমরা আসল ঘটনাটাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষ যে কতটা ধর্মান্ধ হয়ে উঠছে সে চিত্রটা এই ঘটনার মাধ্যমে খুবই ভয়ংকরভাবে ফুটে উঠেছে। clomid over the counter
“ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মাওলানা বোরহানউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের মিটিং চলার মাঝখানে হঠাৎ বাইরে শোরগোল শোনা গেল। তখন আমরা বাইরে বের হয়ে দেখি, অনেক লোক জড়ো হয়ে গেছে। এর মধ্যে লোকজন স্কুলের বারান্দায় উঠে বলতে থাকল,হেডমাস্টারের অপসারণ চাই।
এর মধ্যেই মসজিদের মাইক থেকে হেডমাস্টার (শ্যামল কান্তি ভক্ত) ধর্ম সম্বন্ধে আর আল্লাহ সম্পর্কে কটূক্তি করছেন—এমন কথা প্রচার করা হয়।মাওলানা বোরহানউদ্দিন বলেন, ‘এ বিষয়টা কিন্তু আমাদের জানা ছিল না। এর মধ্যে মাইকের কথা শুনে চতুর্দিক থেকে লোক আসা শুরু করল। এ অবস্থা দেখে আমরা স্কুলরুমে দরজা আটকাইয়া বসে থাকলাম।
পরে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি থানায় এবং বিভিন্ন জায়গায় ফোন করে এলাকার চেয়ারম্যান, থানা নির্বাহী কর্মকর্তা (টিএনও), উপজেলা চেয়ারম্যান আর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ডেকে আনেন। কিন্তু কেউ কাউকে থামাতে পারছিল না। শেষে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে হেডমাস্টার স্যারকে এলাকাবাসী মারধর করে’, বলেন মাওলানা বোরহানউদ্দিন। missed several doses of synthroid
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির এ শিক্ষক প্রতিনিধি আরো বলেন, ‘দাঙ্গা পুলিশ আসার পরও ঘটনা শান্ত হওয়ার লক্ষণ না দেখা যাওয়ায় শেষে এমপি সাহেবকে (সেলিম ওসমান) ফোন দেওয়া হইছে। এমপি সাহেব আসার পর জনগণের একটাই দাবি, হয় হেডমাস্টারের লাশ যাবে অথবা তাঁর ফাঁসি চাই। আমরা কারো কথাই শুনি না।’
গ্রাম পঞ্চায়েত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শামসুল হক শামসু বলেন, ‘মাইকে ঘোষণা পাইলাম আপনারা যে যেখানে আছেন আসেন। আমাদের মুসলমানের ধর্মের ব্যাপারে আঘাত হেনেছে স্কুলের হেডমাস্টার।’
পঞ্চায়েত কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আরো বলেন, ‘আমি এখানে এসে দেখি,হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে গেছে। সবার একই কথা, স্কুলের হেডমাস্টারের ফাঁসি চাই। তাঁকে বের করে দেন।”১
শিক্ষকের ফাঁসির দাবি করা মানুষগুলো কিন্তু কোন উগ্রপন্থি দলের সদস্য না, কোন জঙ্গি সংগঠনের কর্মীও না। এরা সবাই অতি সাধারন খেটেখাওয়া মানুষ। কেউ হয়ত অনার্স-মাস্টার্স পাশ অফিসার, কেউ হয়ত স্কুলের গন্ডিও পার না করা দিনমজুর। কিন্তু এদের সবার ওইদিন একটাই দাবি ছিল, ধর্ম নিয়ে খারাপ কথা বলা, সে অভিযোগের প্রমান থাকুক বা না থাকুক, লোকটার ফাঁসি চাই। একই ধরনের দাবি থাকে হেফাজতে ইসলামের যে কোন সমাবেশে। সমাবেশের উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন তারা সবসময় নাস্তিকদের ফাঁসি চেয়ে স্লোগান দেবে। ওলামালীগের কাছ থেকেও একই ধরনের দাবি শোনা যায়।
মাত্র দুই দশক আগেও কিন্তু দেশের এ অবস্থা ছিল না। হুমায়ুন আজাদের উপর ঘটা জঙ্গি হামলার মত দুই একটা ঘটনা ছাড়া নাস্তিক/ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে এরকম সঙ্ঘবদ্ধ ঘৃণা কখনোই দেখা যায় নি। পত্রিকায় ওলামালীগের বিবৃতি পড়ে আমার মা মাঝেমাঝেই আফসোস করেন দেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে। তারা পূজার সময়ে হিন্দুপাড়ায় গিয়ে পূজা দেখতেন, হিন্দু বন্ধুদের মত মূর্তি দর্শন করতেন, প্রসাদ খেতেন; ঈদের সময় তার সেই বন্ধুরা তাদের বাসায় এসে সেমাই পায়েস খেতো, পোলাও মুরগি খেতো। আবার ক্রিসমাসের সময় যে দুই একজন খ্রিস্টান বন্ধু ছিল তাদের সাথে চার্চেও যেতো। কেউ তাদের কিছু বলতো না, সবার বাবা মা অতিরিক্ত আদর দিয়ে আপ্যায়ন করতো। এটা প্রায় ৩৫-৪০ বছর আগের কথা। আমার নিজেরো মনে আছে পূজার সময় আমার খালার বাসার পাশের বাসা থেকে আসা প্রসাদ সবাই মিলে খাওয়ার কথা, দল বেঁধে পূজা দেখতে যাওয়া। কেউ কখনো আমাদের মানা করে নি এসব করতে। আর এখন পাঠ্যবই থেকে হিন্দুদের লেখা গল্প-কবিতা বাতিল করার দাবি করা হয়।
দিন দিন ধর্ম নিয়ে এই বারাবাড়িটা আরো বাড়ছে। ওয়াজ মাহফিলে হিন্দু ধর্ম নিয়ে অকথ্য গালাগালি তো অনেক আগে থেকেই আছে। তার উপর হেফাজতে ইসলামের উত্থান দেশের একদম সাধারন মানুষকে ধর্ম নিয়ে অতিরিক্ত সেনসিটিভ করে দিয়েছে। এর কারন হিসেবে আমি একদম প্রথমেই রাখবো মাদ্রাসা শিক্ষাকে। দেশে যত মাদ্রাসা আছে ততটা ব্যাঙ্গের ছাতাও নেই। এমনকি সরকারও জানে না দেশে একজ্যাক্টলি কতটা মাদ্রাসা রয়েছে। ২০১২ সালের এপ্রিলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কওমি মাদ্রাসার নেতৃবৃন্দের বৈঠক শুরুর আগে শেখ হাসিনাকে কওমি মাদ্রাসার অবস্থানপত্র হস্তান্তর করা হয়। অবস্থানপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত জেলাভিত্তিক তালিকায় ৬৩ জেলায় মাদ্রাসার সংখ্যা দেখানো হয়েছে ২৪ হাজার ৯৩১টি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তরিত অবস্থানপত্রের ভূমিকায় মোট সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৯০৬টি।২
হাটহাজারী থানা এলাকার ১৩ মাদ্রাসায় ছাত্রসংখ্যা ১২ হাজার, ফটিকছড়ির ৯ মাদ্রাসায় ৮ হাজার ৯৬০ ও পটিয়ার ৯টিতে ৮ হাজার ৪১৪ জন। সাতকানিয়ার ১৯ মাদ্রাসায় ৫ হাজার ৫৯৬ জন হলেও সন্দ্বীপের ৮ মাদ্রাসায় ৫ হাজার ৩৯৩ ও রাউজানের ১৫টিতে ৫ হাজার ৫২ জন এবং বাঁশখালীর ১২ মাদ্রাসায় ৪ হাজার ৩৩৪ জন ছাত্র।২ irbesartan hydrochlorothiazide 150 mg
প্রথমত, এই মাদ্রাসা ছাত্রদের মোট সংখ্যা ২০০৮ সালে ছিল ৯৮ লাখ ২৭ হাজার ৭৪২ জন। তাদের মধ্যে গ্রামের মাদ্রাসায় পড়েন ৮৫ শতাংশ। শহরে মাত্র ১৫ শতাংশ। তাদের মধ্যে আলিয়া মাদ্রাসায় পড়েন প্রায় ৪৬ লাখ, আর কওমি মাদ্রাসায় প্রায় ৫৩ লাখ।৩
এগুলা যদি সত্যি ধরে নেই তবে এটা ভয়ংকর কিছু সংখ্যা। দেশের লাখ লাখ বাচ্চাদের মধ্যে এই মাদ্রাসাগুলো ধর্মান্ধতা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ধর্মান্ধতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবে চালু থাকছে ধর্মান্ধতার দুষ্ট চক্র।
আমাকে কোপ মারা আগে পড়ে নিন কেন আমি বলছি মাদ্রাসাগুলো ধর্মান্ধতা শেখায়। আমার বাসার ঠিক সামনে একটা ছোট মাদ্রাসা আছে। আমি তাদের সিলেবাস দেখেছি। এই বাচ্চাগুলো কোরআন, আমপারা, ভুলে ভরা হাদিস বই ছাড়া তেমন কিছুই পড়ে না।
আমাদের দেশে বিভিন্ন স্তরে মাদ্রাসার পাঠ্য বিষয় মোটামুটি নিন্মরুপঃ-
ক. এবতেদিয়া স্তরে রয়েছে কোরান আরবি(২ পত্র), আকাইদ ও ফিকাহ এবং বাংলা,ইংরেজি, গনিত, সমাজ, বিজ্ঞান, শরীরচর্চা ।
খ. দাখিল ও আলিম সাধারন স্তরে রয়েছে কোরান, হাদিস, ফিকাহ(২ পত্র), বাংলা,ইংরেজি, উর্দু/ফার্সি, ইসলামের ইতিহাস, বালাগত ও মনতেক। আলিম মুজাব্বিদ সাহির বিভাগে অতিরিক্ত বিষয় ও বাংলা ছাড়া সবই ইসলাম ধর্মীয় বিষয়। তবে আলিম বিজ্ঞান বিভাগে ১০ টির মধ্যে ৪ টি ধর্মীয় বিষয় ও বাকি ৬ টি বাংলা,ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা(২ পত্র) ও রসায়নশাস্র(২ পত্র)। will i gain or lose weight on zoloft
গ. ফাজিল স্তরে বাংলা ছাড়া সবই কোরান, হাদিস ও আরবি ভাষা ভিত্তিক ধর্মীয় বিষয়। ইংরেজি ও বাংলাসহ ধর্মনিরপেক্ষ বিসয়সমুহ ৯ টি বিকল্পের মধ্যে ১ টি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
ঘ. কামিল বা উচ্চস্তর ডিগ্রির জন্য বর্তমানে ৪ টি বিষয়ের ব্যবস্থা আছে-হাদিস,ফিকাহ, তাফসির ও আদব বা আরবি সাহিত্য।৩
মাদ্রাসার সিলেবাস সূরা মূখস্থ করা, সুন্দরভাবে সে সূরা পড়ে শোনানো, সালাম দেওয়া, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, তৎকালীন মক্কা ও মদীনার রাজনৈতিক শিক্ষা ছাড়া আর কোন শিক্ষাই দেয় না। বাস্তবজীবনে চলার মত কোন ট্রেনিং বা শিক্ষা কিছুই পায় না তারা। ওদের পাঠ্যবইগুলোয়ও ধর্মান্ধগোষ্ঠির ইচ্ছামত মডিফাই করা যায়। তাদের যে একজন শিক্ষক সে ইংলিশ তো দূরের কথা ঠিকমত বাংলাও পড়াতে পারে কিনা আমার তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এটা বলা যায় যে, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বর্তমান যুগের তুলনায় প্রায় অশিক্ষিত হিসেবেই বড় হয়। ঢাকা শহরের মধ্যের এক মাদ্রাসায় এই অবস্থা, তো প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের গুলো কি হালে থাকতে পারে তা কল্পনা করতেও ভয় হয়। অনেক শিক্ষার্থী মাদ্রাসা পাস করে সাধারন স্কুলে ক্লাস এইটে ভর্তি হয়ে আবার পড়াশোনা শুরু করে। বেশিরভাগই এই মাদ্রাসা থেকে পাওয়া শিক্ষা নিয়ে মসজিদে ইমাম, মুয়াজ্জিন, ওয়াজ মাহফিলের করে বেড়ানো পীর হুজুর হতে বাধ্য হয়। আর এটা তো প্রমানিত খবর যে জঙ্গি সংগঠনগুলো মাদ্রাসা ব্যবহার করে জঙ্গি তৈরির কারখানা হিসেবে। এমনকি শিবিরের একটা বড় অংশ আসে আলিয়া মাদ্রাসা থেকে।
তো কি মাদ্রাসাগুলো বন্ধ করে দেব? তাহলে তো এই হাজার হাজার এতিম বাচ্চাগুলো রাস্তায় না খেয়ে মরবে। ওয়েল, একজন এতিম বাচ্চার দায়িত্ব কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের না, এ দায়িত্ব দেশের সরকারের। কিন্তু সরকার সে দায়িত্ব না নিয়ে তা মাদ্রাসাগুলোর উপর চাপিয়ে দিয়েছে। লাখ লাখ বাচ্চা সাধারন পড়াশোনার খরচ বহন করতে না পেরে মাদ্রাসায় ভর্তি হচ্ছে- এটা কি একটা দেশের সরকারের জন্য লজ্জার বিষয় না?
(চলবে) metformin tablet
References-
১. http://pirganj24.com/bangladesh/2652
২. http://www.dainikshiksha.com/কওমি-শিক্ষক-শিক্ষার্থীর/3204
৩. http://www.istishon.com/?q=node/6826#sthash.UGK9Cbqe.dpbs
কোলাহল
Shihab @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা
হিমু @ স্নানঘর ও নিষিদ্ধ যৌনতা…
nogorkatha @ জহির রায়হান— হারিয়ে যাওয়া এক সূর্যসন্তান এবং কিছু পাকিস্তানি পারজের ম্যাৎকার…
হাছিব @ বাংলা কবিতায় ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?
Shopno Bilap @ গণহত্যা ১৯৭১: ভয়াবহতার চিত্র
Shopno Bilap @ গণহত্যা ১৯৭১: ভয়াবহতার চিত্র
Bengali Story @ গণহত্যা ১৯৭১: ভয়াবহতার চিত্র
কামাল @ স্নানঘর ও নিষিদ্ধ যৌনতা…