অবশেষে অমানুষ
392
বার পঠিতমেয়েটার লাশ নিয়ে কোনদিকে যাবো কিছু বুঝতে পারছিনা। প্রচন্ড রাগ লাগছে নিজের উপর। বোকামি করে মেয়েটাকে মেরে ফেলাটা একটা শুয়োরের মত কাজ হয়েছে। “আমি একটা বুনো শুয়োর” চিৎকার করে কথাটা ছড়িয়ে দিলাম পুরো জঙ্গল এলাকায়। জঙ্গলে আমার অনেক বিশ্বস্ত প্রাণীর বাস। আশা করছি ওরা শুনবে কথাটা। যদিও নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে আমার মাঝে কোনো সন্দেহ নেই। আমার দৃঢ় বিশ্বাস কষে একটা চড় মারলেই মেয়েটা জীবন্ত হয়ে যাবে। কিন্তু মারবো না। হারামজাদি মরুক। কিন্তু যেহেতু আমি এখন শুয়োর হয়ে গেছি তাই এই মুহুর্তে কি করা উচিত আমার? কিছুক্ষণ আগেও মেয়েটা আমার বন্ধু ছিল। বন্ধু ছিলো বলেই শত্রুতা করে তাকে মেরে ফেলেছি। শত্রুর সাথে শত্রুতা মানায় না, মানায় ঘৃণা আর প্রতিশোধ। শত্রুতা করতে হয় বন্ধুর সাথে। শত্রুতা করে এখন কি করা যায়? মেয়েটাকে চড় মারবো? কিন্তু চড় মারলে তো মেয়েটা বেঁচে যাবে। ওকে বাঁচতে দেয়া যাবেনা। রাগে নিজের ডান হাতে জোরে একটা কামড় বসালাম। চারিদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসছে। যা করার দ্রুত করতে হবে। একটা সময় ছিলো যখন মেয়েটাকে বলেছিলাম সে পূর্ণিমার চাঁদের মত সুন্দর। ডাঁহা মিথ্যা কথা মেয়েটা বিশ্বাস করে ফেলেছিলো। এখন ইচ্ছা করছে, ইচ্ছা করছে ওর মাথায়……… উফফফ। প্রচন্ড বিরক্তিতে ঘামতে শুরু করেছি।
মেয়েটাকে টানতে টানতে বনের মাঝ দিয়ে জায়গা করে নিয়ে যেতে লাগলাম। পথিমধ্যেই এক শিয়ালের সাথে দেখা। মেয়েটার বাম পায়ে একটা কামড় বসাতে চেয়েছিলো। রাগে আমি অন্ধ হয়ে গেলাম। দৌড়ে গিয়ে শিয়ালটার গলায় ছুরি চালিয়ে দিলাম। কত্ত বড় সাহস এই জানোয়ারের। আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই আমি মেয়েটাকে মেরে ফেলেছি বেশ করেছি, ও কামড় বসাবে কোন সাহসে? অনুভব করলাম প্রচন্ড ক্ষিদে পাচ্ছিলো। শিয়ালের একটা মাংসল উরু কেটে নিয়ে বনের মাঝ দিয়ে হেঁটে চললাম। সাথে মৃত মেয়েটাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছি। দূর্বল লাগছে নিজেকে। বিশ্বাস করুন, প্রচন্ড দূর্বল লাগছে। কিন্তু এখনো অনেক পথ বাকি।
একবার কি হয়েছিলো জানেন? কয়েক বন্ধু মিলে আমাকে লাঞ্চিত করার চেষ্টা করেছিলো। আমাকে প্রচন্ড বাজে একটা কথা বলেছিলো। আমি নাকি…… আমি নাকি…… রাগে আমি অন্ধ হয়ে যাচ্ছিলাম। হাতের জ্বলন্ত সিগারেটটা ওর চোখে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। রাস্তার পাশ থেকে একটা গাছের কচি ডাল নিয়ে ওকে অন্ধভাবে মেরেছিলাম। ওর সারা শরীর রক্তাক্ত হয়ে গেল। ওর মাথায় একের পর এক ঘুষি চালালাম। কিন্তু পরমুহুর্তেই সেই অপমানকারী বন্ধু আমার গায়ে একটা ঝাঁকি দিলো। সেই সাথে আরেকটা বাজে কথা বললো। বুঝতে পারলাম, আমার এসব কল্পনা কোনোদিন সত্য হবেনা। আমি পারবোনা। ও আমাকে অপমান করে বিষিয়ে ফেললেও ওকে টোকাও মারতে পারবোনা আমি। মাথা নিচু করে অপমান হজম করলাম। বাসায় ফিরে নিজের দামী শার্ট কুচি কুচি করে কেটেছিলাম। ইচ্ছা করছিলো এই দুনিয়া ভেঙে গুঁড়ো করে ফেলি। কেন আমি ওকে মারলাম না। কেন সব অপমান হজম করলাম। কেন ওকে পিষে ফেলিনি আমি। ইচ্ছা করছিলো, ঐ বন্ধুরূপী শুয়োরটাকে ছুরি দিয়ে হাজার খন্ড করে ফেলি। তখনই কলিং বেলের শব্দ এলো। দরজা খুলে দেখি সে দাঁড়িয়ে আছে। আমার বন্ধু। হাহাহাহা। বন্ধু? কি জানি। সে আমাকে সম্বোধন করে বললো, “আজকের ঘটনার জন্য দুঃখিত।” আমি বললাম, “ছেড়ে দাও। ওটা আমার প্রাপ্য ছিলো।” বলেই নিজের মুখ চেপে ধরলাম। এ কি বলেছি আমি! অপমান আমার প্রাপ্য ছিলো! নিজেকেই নিজে এতটা নিচে নামালাম শুয়োরটার সামনে! আমার তো শুয়োরটাকে জুতো মারা উচিত। এই জুতো নিচ্ছি। ওয়েট। এখনই ছুঁড়ে মারবো ওর গালে। আমাকে চিনেনা ও। দুঃখ দেখানো হচ্ছে? জানোয়ার কোথাকার! দরজার পাশেই জুতো রাখা ছিলো। প্রবল ঘৃণা নিয়ে জুতো তুলে নিলাম। আজ জুতো পেটা করবো শুয়োরটাকে। জুতোটা হাতে নিয়েই বললাম, চল বন্ধু, চা খেয়ে আসি বাইরে থেকে। সে খুব হাসিমুখে প্রস্তাবে রাজি হল। আমি কান্নায় ফেটে পড়লাম ভিতরে ভিতরে। নিজেকে অভিশাপ দিলাম। আমি একটা ভীতু, একটা নিকৃষ্ট অণুজীব। হাজারটা গালি দিলাম নিজেকে। নিজের জীভ কামড়ে ধরলাম রাগে আর ঘৃণায়। রক্ত বেরিয়ে এলো। বন্ধু বললো, “সেকি! রক্ত বেরুচ্ছে কেন!” আমি বললাম, “আরেহ, অসাবধানে জীভে কামড় পড়েছে। এসো, চা খাই।”
মেয়েটার লাশ বহন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। শিয়ালের মাংসল উরু থেকে কিছুটা মাংস খেয়ে তৃপ্ত হওয়া যায়। কিন্তু আমি শিয়াল খাবো কেন? আমি মানুষ। আমি শ্রেষ্ঠ। আমি কিনা শিয়ালের মাংস খাবো? খাওয়ার এতই অভাব পড়েছে আমার? এসব ছাইপাশ খেতে হবে কেন? কই? আমাকে অপমান করা বেয়াদব ছেলে গুলো তো কখনো এসব অখাদ্য খায়নি। আমি খাবো কেন? ছিহ। ছুঁড়ে ফেলে দিলাম সেটা। প্যান্টের পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা বের করলাম। আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ধূম্রকাঠিটা ভিজে গেছে। মেয়েটার রক্তে। উফফ। কি ঝামেলা। সব সিগারেটই ভিজে চুপসে গেছে। প্রচন্ড রাগে চোখ লাল হয়ে এলো। কটমট করে তাকালাম মেয়েটার দিকে। ইচ্ছে করছে…… ঘুষি মেরে ওর মাথা ফাটাই। কিন্তু সেটা করলাম না। আমি অসীম ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ। আমার একটি স্পর্শেই মেয়েটি বেঁচে যাবে। এ আমার তীব্র বিশ্বাস। এই বিশ্বাস ভাঙা যাবেনা। খুব সাবধানে মেয়েটাকে বেঁধে রাখা দড়িটা হ্যাঁচকা টান দিয়ে আবার চলতে শুরু করেছি। বনের মাঝে শুকনো পাতা গুলো বিমর্ষ শব্দ তৈরী করছে। আমি বিষিয়ে উঠছি। এই বনের শেষ কোথায়? cialis new c 100
সে অনেকদিন আগের কথা। নিজের অজান্তে এক মেয়েকে খুব পছন্দ করে ফেলেছিলাম। মেয়েটার উড়ো চুলে আমি ঘন মেঘমালা দেখতে পেতাম যেন এখনই আকাশ ভেঙে প্রচন্ড বর্ষা নেমে আসবে। প্রখর বর্ষায় আমি ওকে নিয়ে ভেজার স্বপ্ন দেখতাম। ও লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকবে। ইতিহাস ঘাঁটলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে সেদিন আকাশের সকল দাঁড়কাক ভিজে চুপসে যাবে আর আমাদের ঘিরে ধরবে, উদ্যম নৃত্য করবে। কিন্তু, কিন্তু আমি দাঁড়কাক খুঁজে পাইনি। মেয়েটার এলোমেলো ঘন কালো চুলে মেঘমালার বদলে দেখেছি আমার প্রতি ছুঁড়ে দেওয়া বিদ্বেষ আর অপমানের ঘন অন্ধকার। প্রত্যাখ্যানের প্রবল বর্ষণে আমি ছিন্নভিন্ন হয়ে গেলাম। নিজেকে বুঝালাম, আমি উপযুক্ত নই। কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যতা নেই আমার। আমি সুন্দর নই, ধনী নই। আমি রাস্তার পোকা মাকড়ের মত। নিজের প্রতি প্রচন্ড ঘৃণা জন্মালো। এই ঘৃণা নিয়ে বেঁচে থাকার প্রত্যাশায় নিজেকে ধ্বংস করলাম না। আমি ছুটে গেলাম প্রিয় সমুদ্র সৈকতে। কিন্তু প্রচন্ড বিশ্রী মনে হল আমার প্রিয় সৈকত। চিৎকার করে বললাম, “তোমাকে ভালোবাসি আমি। বিশ্বাস কর।” প্রতিধ্বনি এলোনা। আমি সৈকতের ঢেউয়ে ডাঙায় তুলে আনা কই মাছের মত তড়পাতে লাগলাম। ঢেউয়ের প্রবল ধাক্কায় পাথরের বুকে আছড়ে পড়ছিলাম। প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে কঠিন পাথরের গায়ে চুমু এঁকে দিচ্ছিলাম। পাথর গুলোকে মনে হচ্ছিলো সেই মেয়েটার প্রতিরূপ। দুজনেই কতই কঠিন আর নির্মম। সেই মুহুর্তে আমাকে অপমান করা সেই বন্ধুটা আমাকে এক পলক দেখে নিলো। দৌড়ে এলো আমার কাছে। তার চোখে আমি স্পষ্ট করুণা আর আমার প্রতি সহানুভূতি দেখলাম। আমাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলো। হাত বাড়িয়ে দিলো। রাগে আমি অন্ধ হয়ে গেলাম। আমি মানুষ। শ্রেষ্ঠ জীব। সেও আমার মতই মানুষ। সে কেন সহানুভূতি দেখাবে আমাকে? কেন সাহায্য করবে আমাকে? কোন সাহসে? কোন অধিকারে? আর যাকে আমি ঘৃণা করি কেন নিজের অজান্তেই তাকে বারবার বন্ধু বলে ভাবছি? কিসের দূর্বলতা আমার? আমি উঠে এলাম নিজের চেষ্টায়। ধারালো পাথরের কোণে লেগে হাত ছিলে গেল আমার। তার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম। আমার রক্তচক্ষুর আগুনে সে পুড়ে গেল। বিভ্রান্ত হয়ে গেল সে। ভয়ে দুই পা পিছিয়ে গেল। আমি এগিয়ে গেলাম। আমার মুষ্ঠিবদ্ধ হাত দেখে সে প্রচন্ড ভয়ে সেঁটিয়ে গেল। সে দৌড়ে পালিয়ে গেল। আমি চোখ মুছে দূর্বলভাবে হাঁটতে লাগলাম। সৈকতের বালিতে আমার পায়ের ছাপ গুলো স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিলো। আমি আশান্বিত হলাম। নিজেই নিজের পায়ের ছাপ তৈরী করছি আমি! কাউকে অনুসরণ তো করছিনা! এই নষ্ট মানুষের সমাজে থাকবোনা আমি। জনপদ এড়িয়ে হাঁটা শুরু করলাম উদ্দেশ্যহীন ভাবে। মাথার উপর কয়েকটা ঈগল উড়ে গেল। বন্দুক থাকলে এখনই গুলি করে মারতাম। সূর্যাস্তের দৃশ্য থেকে শুরু করে সৈকতের ঝিনুক, সকল সুন্দর সকল ঐশ্বর্য আমার প্রচন্ড বিরক্তি লাগলো। সুন্দরের প্রতি ঘৃণায় আমার মুখে থুথু উঠে এলো। আমি সুন্দরের হাত থেকে বেঁচে ফিরতে চাইলাম। রাগে আগুন ধরে গেল শিরায় শিরায়। আমি সকল সুন্দরকে ঘৃণা করি। ঘৃণা করি আমি। আমি ঘৃণা করি। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে লাগলাম। আমার কানে ভেসে এলো প্রতিধ্বনি; ঘৃণা করি…… ঘৃণা করি………
ভাবছেন আমি একজন ব্যর্থ মানুষ? ভাবছেন আমি পৃথিবীর পতিত জীব? আমার এই সত্ত্বা আমার এই অস্তিত্ব সবই ব্যর্থতার ফসিল? কিন্তু ভুল ভাবছেন। আমি শুয়োর হতে পারি, আমি ঘৃণ্য কুকুর হতে পারি, আমি হিংস্র জানোয়ার হতে পারি। কিন্তু, অন্তত আমি মানুষ নই। আমি আপনাদের মত মানুষ নই। হাহাহাহা। করুণা করবেন না দয়া করে। কয়েকদিন আগে কি হয়েছিলো জানেন? এক ভিখারীর গালে চড় মেরেছিলাম। ভিখারী মৃত ছিলো। অবশ্যই মৃত ছিলো। সে ঈশ্বরের দোহাই দিয়ে পথে বসে ভিক্ষা কামনা করছিলো। তার ভিক্ষাগ্রহণ সমস্ত মানবজাতির শ্রেষ্ঠত্বকে নির্মম উপহাস করছিলো। এমন মৃত মানুষ আমি আর দেখিনি আগে। প্রচন্ড ক্রোধে আমি জ্বলে উঠলাম। এই সমাজ মৃতদের জন্য নয়। আমি এগিয়ে গেলাম ভিখারীর দিকে। তার হাত থেকে ছোঁ মেরে থালাটা কেড়ে নিলাম। সে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। তার এই অবাক হওয়াটা আমার মাথায় রক্ত তুলে দিল। আমি বুঝলাম, তার মাথায় থালা দিয়ে বাড়ি মারার শ্রেষ্ঠ সময়টা এসে গেছে। রাগ সামলে উঠলাম। পিচের রাস্তায় টিনের থালাটা আছাড় মারলাম। চারপাশে মানুষ এসে জড়ো হল। সবাই আমার পক্ষ নিলো। ভিখারীকে চোর বলে গালি দিচ্ছিল। কয়েকজন বলে উঠলো, “এই শালারা চুরি করতে বসে ভিক্ষার নামে।” সবাই ধরে নিয়েছে সে আসলেই চুরি করেছে। সবাই ওকে তুখোড় গালি দিতে লাগলো চোর বলে। ভিখারী আমার দিকে সাহায্যের আশায় চেয়ে ছিলো। অন্তত আমি যদি বলি যে সে চুরি করেনি, এই উন্মত্ত জনতার রোষের আগুনে তাকে জ্বলতে হবেনা। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম, “শালা তুই একটা চোর।” এই বলে উড়ে গিয়ে ওর গালে কষে একটা চড় বসিয়ে দিলাম। চারপাশে মানুষের চোখে মুখে পৈশাচিক আনন্দ দেখছিলাম। কিন্তু আমার ক্রুদ্ধ মূর্তি দেখে কেউই এই চোর ভিখারীকে বাড়তি শাস্তি দেয়ার প্রয়োজন মনে করলোনা। জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যার যার কাজে ফিরে গেল। চোরের প্রায় উপযুক্ত শাস্তিতে সবাই সন্তুষ্ট। আমি রাগে কাঁপতে কাঁপতে ফিরে এলাম। পিছনে তাকাই নি। তাকালে হয়তো দেখতে পেতাম ভিখারীটা ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারছেনা। তার চোখে আমি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ বিস্ময় দেখতাম। কিন্তু বিস্ময় দেখার পৈশাচিক লোভ সামলে আমি দৃঢ় পায়ে হেঁটে এলাম।
কয়েকদিন পরেই সেই রাস্তার মোড়ে গিয়ে আমি আমার এই অবাক ক্ষমতা আবিষ্কার করলাম। মৃত ভিখারীটি জীবিত হয়ে উঠেছে। কয়েকদিনের মাঝেই নিজের সমস্ত পুঁজি দিয়ে রাস্তার পাশে ছোট একটা জীর্ণ শীর্ণ চায়ের দোকান দিয়েছে। আমি আড়াল হতে সব দেখলাম। আমার একটা চড়ের অবিশ্বাস্য ক্ষমতায় আশ্চর্য হলাম। মৃত মানুষকে জীবিত করতে পারার এই ঐশ্বরিক ক্ষমতা লুকিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিলাম। সেই থেকে আজ অব্দি কাউকে চড় মারিনি।
ভাবছেন, মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমি ভিখারীকে চড় মেরেছি? আর সান্তনা খুঁজে মিথ্যা অহংকার করছি? আমি একটা মিথ্যাবাদী? ঠিকই ভাবছেন। ক্ষমতা আবিষ্কার এবং প্রয়োগের জন্যে গল্পের নায়ককে মিথ্যাবাদী হতে হয়। যেমন, শুরুতেই একটা মিথ্যা ফেঁদেছি আমি। আমি অবশ্যই কোনো মেয়ের লাশ বয়ে জঙ্গল পথে হাঁটছি না। কাউকে খুনও করিনি আমি। মানুষকে জীবিত করার অত্যাশ্চর্য শক্তি যার আছে সে কাউকে মেরে ফেলবে কেন? হ্যাঁ। আমি মিথ্যা বলেছি। বেশ করেছি বলেছি। আমি মিথ্যাবাদী। তো? কি করবেন আপনি? আচ্ছ বাদ দিন। কিছু মনে করবেন না। আমার মত মানুষের কথা এতটা আমলে নেয়ার কিছু নেই। আমি গুরুত্বহীন। বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। চলুন এক কাপ চা খাওয়া যাক।
শশী প্রসাদ শীল বলছেনঃ
ছুঁয়ে দিয়ে গেল একপাশলা মহাজাগতিক বৃষ্টি।
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
metformin gliclazide sitagliptinলেখার মধ্যে আসলেই ইদানীং কিছু গজাতে শুরু করেছে। টিপিক্যাল কমেডি ছেড়ে এদিকে মনোযোগ দিতে পারেন। নতুন কিছু করতে পারার কথা।