পরাভূতদের রাজ্যে
291
বার পঠিতজীবনটা সত্যি বেশ অদ্ভুত! আমি কি, আমি কি হতে চাই? প্রশ্নগুলো যখন একের পর এক কড়া নাড়তে থাকে মস্তিষ্কের দরজায়, আর আপনি কে এলো এই অবেলায় তা দেখার জন্য জানালা দিয়ে মুখ বারিয়ে আগুন্তুক চেনার চেষ্টা করেন, সেই অদ্ভুত সময়টাই আপনাকে পরাভুত করে তোলে দ্রুত।
কথাটি লিখবার ইচ্ছা ছিল পরাভুত করে তোলে ধীরে ধীরে, তার পর মনে হল ঠিক ধীরে ধীরে তো করেনা, তাহলে হয়তবা আমি এবং আমার মত সবাই অথবা সবাই এবং সবার মত আমি নিজেকে সময়ের হাতে তুলে না দিয়ে সবকিছু ঠিক গুছিয়ে নিতে পারতাম, ঠাট বজিয়ে বলতে পারতাম, আমি ভাঙ্গবও না মচকাব ও না। কিন্তু প্রত্যেকটা ঘটনা এত দ্রুত ঘটে যে , নিউরন সেলগুলোতে এতজোরে আঘাত করে যে সবকিছু বুঝে উঠে সিদ্ধান্ত নেবার জন্য প্রস্তুত হবার আগেই আপনি নিজ চোখে দেখেন আপনার আরশির প্রতিবিম্ব এত টুকরোয় ভেঙ্গে চুরমার হয়েছে যে, নিঃশ্বাস নেয়াটাকে পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দের অথবা সবচেয়ে কষ্টের বলে মনে হয়। নিজেই ভেবে আশ্চর্য হয়ে উঠেন যে, আমি এখনও বেঁচে আছি! বাহ! বেশ অদ্ভুত তো!
এক এক করে গড়ে তোলা, সযত্নে লালন করা আপনার মূল্যবোধগুলো যখন আপনাকে দেখে ফিক করে হেসে ফেলে এবং আপনি লজ্জায় মাথা তুলে একবার সেগুলোর দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারেন না, সেই সময়টাকে বলে পরাভূত সময়।আপনি নূতন করে বুঝতে শেখেন, আপনি অসহায়। একসময় মনে হবে নিজেকে আপনি বেশ ভুল চিনেছেন। তেজী, আত্মঅহংবোধসম্পন্ন, প্রত্যুৎপন্নমতি, ইস্পাতের মত শক্ত চিত্ত এবং মনুষ্যত্বপূর্ণ হৃদয়, দৃপ্ত যে মানুষটিকে ভাবতেন এই মানুষটি আপনি, তার সাথে, পাশের বাড়ির লাজুক, অল্পে ভেঙ্গে পড়ে ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করা মেয়েটির তেমন কোন পার্থক্য নেই, সেই সময়টি পরাভূত সময়।
আপনারা আমাকে যা ভাবছেন- আমি ঠিক তাই তা নয়, আবার নিজের মনে সংশয় নিয়ে যখন ভাবতে বসবেন, সত্যি কি আমি ঠিক তাই? আমিও কি দুঃখবিলাসী, ভঙ্গুর সম্প্রদায়ের একজন? এই সময় যখন আপনার সামনে এসে উপস্থিত হবে, ঠিক তখনি উত্তরটি জেনে নিবেন, আপনি পরাভূত। আর আমি? আমিও ঠিক আপনার মতই পরাভূত।
যখন আপনার সবচেয়ে কাছের বলে মেনে নেয়া মানুষটিকে আপনার আর বলবার মত কিছু থাকবেনা, ফুসফুসের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করে বললেও সে শুনবেনা, ঠিক এই সময়টাতে আপনার তাকে কতটা প্রয়োজন, অথবা তার খারাপ কিছু সময়ে তাকে দেবার মত ভালবাসা ছাড়া আর আপনার কিছু নেই, আর সেই ভালবাসাটা ঠিক সেই মানুষটির জন্য যথেষ্ট নয়, ঐ সময়ে পরাভূত না হয়ে কি হবেন আপনি? না, আপনাকে দোষ দিচ্ছিনা, ভীতু, কাপুরুষ, হেরে গেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি বলে গালমন্দ করে আপনার অবস্থাকে আর দুর্বলও করছিনা। আপনার মত আমিও জানি সব দোষ, সব ভুল আপনার নয়, আমার নয়। আপনার অবনত দৃষ্টি যখন কিছুটা সহায়ের জন্য আমার দিকে তাকায়, সেই দৃষ্টিটাকে আপনার মত আমিও বুঝি- আপনার দৃষ্টি আমাকে বলে- বিশ্বাস করুন, আমি কম চেষ্টা করিনি। আর আমি সেই দৃষ্টিটাকে বিশ্বাস করি। অতি দ্রুত মেনে নেই, দুর্বল এই মানুষটি আপনি অথবা আমি নই। আমরা নিজেদের যা ভাবতাম আমরা ঠিক তাই। আমাদের সময় এবং পরিস্থিতি দুর্বল, আমরা নই। আমার এবং আপনার জন্য স্রষ্টা সাজিয়েছেন এ বিশাল ব্রহ্মাণ্ড! আমারা কি করে দুর্বল, অসহায় হতে পারি? আমাদের শুধু প্রয়োজন ভুলটা শুধরে নেবার, যা আমার তা পাবার। যে মানুষটি অনেক কষ্টের মাঝেও আপনাকে- আমাকে ভালবাসতে ভুলে যায়নি, তাকে বুকে জরিয়ে ধরে রাখবার।আসুন, আমরা বেঁচে থাকি! প্রচণ্ড বেঁচে থাকি!!
মাশিয়াত খান বলছেনঃ
আমি ঠিক জানিনা এটাকে প্রবন্ধ বলা যায় কিনা। এটা আপনার আত্মোপলব্ধি মনে হয়েছে। আগের লেখার চেয়ে ভাল
অংকুর বলছেনঃ
দর্শন টাইপ হয়ে গেছে না?
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
acquistare viagra in internetআত্মোপলদ্ধি বলা যায়? কিংবা ব্যক্তিগত কথাসাহিত্য? যাই হোক, চিন্তা ধারা থেকে স্বতস্ফূর্ত ভাবে উঠে আসা কথাগুলো পড়তে খারাপ লাগল না। হয়তো, যারা এর সাথে নিজের জীবনের বা জীবনের অংশবিশেষের মিল খুঁজে পাবে, তাদের কাছে আরও অর্থবহ, আরও আত্মজ হয়ে উঠবে লেখাগুলো। কারণ, বেশিরভাগ মানুষের জীবনেই এই পরাভূত সময়টা কখনও না কখনও আসে। কখনও না কখনও এই বোধগুলোই তাড়িত করে কাউকে না কাউকে। কিংবা সবাইকে।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
“আসুন, আমরা বেঁচে থাকি! প্রচণ্ড বেঁচে থাকি!!”
প্রচণ্ড বেঁচে থাকার ধারণাটা অদ্ভুত সুন্দর। শেষটা কেমন জানি কাব্যিক। ব্যক্তিগত শোঁকগাঁথা কিংবা অন্য কিছু হতে পারে। সবাই কি ধাঁচের লিখা তা ধরতে ব্যস্ত কিন্তু আমার কাছে এই সাবলীলতায় সুন্দর লাগছে। ক্যাটাগরি ভাগ করা জরুরী না মনে হয়। আপনার লিখনিতে নিজেজ্বতা আছে… ভাল লাগলো!