জলচর মৎস্য হতে স্তন্যপায়ী মানুষ; বিবর্তনবাদের মহা নাটকীয়তার পরিণতি
1957 furosemide prednisone drug interactions
বার পঠিতআজকের একবিংশ শতাব্দীতে এসে জীব বিবর্তনের প্রমাণ সম্পর্কে পেশাদার বিজ্ঞানী- গবেষকদের কেউই একে অস্বীকার করতে পারবেন না। জীব জগতে প্রাণী ও উদ্ভিদের বিবর্তনগত উৎপত্তি এবং ক্রমবিকাশ নিয়ে বিজ্ঞানীরা যৌক্তিক অনুসিদ্ধান্তে এসেছেন যা অস্বীকারের কিছু নেই। বিবর্তনের প্রমাণ বস্তুত জীববিজ্ঞানের অন্যতম শক্তিশালী ও সর্বব্যাপী প্রমাণ এবং জীববিজ্ঞানের সকল শাখা থেকেই এই প্রমাণগুলো পাওয়া গেছে। ডারউইন এবং তার সমসাময়িক বিজ্ঞানীরা শারীরবিদ্যা, ভ্রূণবিদ্যা, জৈব ভূগোল ও প্রত্নজীববিজ্ঞান থেকে যথেষ্ট তথ্য পেয়েছিলেন। কিন্তু ডারউইনের সময় জীনের ধারণা আসেনি। জীন ধারণার অগ্রগতির পর জিনেটিক্স, বায়োকেমিক্যাল, অণুজীব বিজ্ঞান সহ বিভিন্ন অনুষদ থেকে বিবর্তনের শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিবর্তন বস্তুত অপ্রমাণের মত কিছুই নয় আর। বিবর্তন এর বর্তমান লক্ষ্য হচ্ছে নিজেকে সমৃদ্ধ করা।
সত্য হচ্ছে, বিবর্তন এখন আর অস্বীকারকারীদের সাথে বিতর্কের মত কোনো বিষয় নয় যা উনবিংশ শতাব্দীতে ছিলো। এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। বিবর্তন না হলে, আকাশ থেকে টুপ করে জীবপ্রজাতি পড়বে পৃথিবীতে, বিজ্ঞান এই কথা স্বীকার করে নেয়ার প্রশ্নই আসেনা। প্রথমেই যে প্রশ্ন তা হচ্ছে, নতুন প্রজাতি আসে কোত্থেকে? আকাশ থেকে বৃষ্টির মত পড়েনি নিশ্চয়। কিংবা মানুষের যৌন জননে নিশ্চয় গরু ছাগল আসেনি, মুরগীর ডিম ফেটে নিশ্চয় রাতারাতি কুমিরের বাচ্চা আসেনি। তাহলে এলো কিভাবে? বিজ্ঞান সেটা সমাধান করেছে বিবর্তনের মত অসাধারণ থিওরী দিয়ে। বিবর্তন হয়েছে কোটি বছরের সময়কালীন, ধীরে ধীরে, জীনের মিউটেশান এবং ন্যাচারাল সিলেকশানের ইফেক্ট হিসেবে। বরং, বিবর্তন ধীরে ধীরে হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে। যেমন বিজ্ঞানীরা বর্তমানে ধারণা করছেন, মেক্সিকোর টিওসিন্ট (Teosinte) নামক এক ধরনের বন্য উদ্ভিদ থেকে ধান (Oryza Setiva) এর উৎপত্তি। এবং এর পক্ষে জোরালো প্রমাণ জোগাড় হচ্ছে।
মৃত জীবের স্বল্প সংখ্যক সদস্যই পাললিক শিলা বা চুনাপাথরের খনিতে ফসিল হিসেবে সংরক্ষিত হয়। সাধারণত কোনো জীব মারা গেলে উপরের স্তরের খাদক জীবটিকে খেয়ে নেয়। এরপর বিয়োজক ব্যাকটেরিয়া জীবের বাকি অংশ নষ্ট করে ফেলে। এরপরও দুর্লভভাবে জীবের কিছু অংশ যেমন দাঁত হাড় খোলস ইত্যাদি কোনো না কোনো ভাবে আবহাওয়ার প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়ে পাললিক শিলায় ফসিল হিসেবে সঞ্চিত হয়। এইসব ফসিল এতই দূর্লভ যে খুব সামান্য পরিমাণ উদ্ধার করা গেছে। এবং তারও সামান্য পরিমাণ গবেষনার কাজে লেগেছে। ফসিলের আলামত গবেষনা করে বিজ্ঞানীরা জীবটির বাহ্যিক অঙ্গসংস্থানিক গঠন সম্পর্কেও কাছাকাছি ধারণায় পৌঁছাতে পারেন। উদাহরণ দেয়া যাকঃ online pharmacy in perth australia
আর্কিওপটেরিক্স এবং টিকটালিক এই দুটি বিশ্বের সর্বাধিক আলোচিত ফসিল। অন্যদিকে ঘোড়ার বিবর্তনের কথা উল্লেখ করা যায়। আজকের দিনে যে প্রাণীকে আমরা ঘোড়া হিসেবে চিনি তার উদ্ভব হয়েছে হাইরাকোথেরিয়াম নামক কুকুর আকৃতির প্রাণী থেকে। এই প্রাণীর প্রত্যেক পায়ে কয়েকটি ক্ষুর ছিলো এবং লতাপাতা, ছোট ছোট চারা, গাছের প্রশাখা এবং নরম কান্ডযুক্ত গুল্মের পাতা খাওয়ার উপযোগী দাঁত ছিলো। একুস (Equus) নামক ক্ষুরবিশিষ্ট তৃণভোজী প্রাণী গুলো ঘোড়া থেকে প্রায় ৫০ মিলিয়ন বছর আগে বাস করতো। হাইরাকোথেরিয়াম থেকে একুস পর্যন্ত ঘোড়ার পূর্বপুরুষদের বিভিন্ন ফসিলের নমুনা বিজ্ঞানীরা বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধার করে এর বিবর্তনীয় ইতিহাস জানতে পারেন।

হাইকোরেথিয়াম থেকে একুস, একুস ঘোড়ার ৫০ মিলিয়ন বছর আগের প্রজাতি metformin rash side effect
জীবজগতে অন্যতম আলোচিত বিষয় হচ্ছে “মিসিং লিঙ্ক”। যেটাকে ট্রানজিশনাল বা মধ্যবর্তী প্রাণী বলে অভিহিত করা হয়। আর্কিওপটেরিক্স এবং টিকটালিক ছিলো মধ্যবর্তী ফসিল। এর মাঝে আর্কিওপটেরিক্সে একই সাথে ডাইনোসর ও পাখির বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। টিকটালিকের মাঝে মাছ এবং উভচর (এলিগেটর, কুমির) এর বৈশিষ্ট্য যৌথভাবে দেখা যায়। আর্কিওপটেরিক্সের প্রথম ফসিলটি আবিষ্কৃত হয় ১৮৬১ সালে। সর্বশেষ ফসিলটি দুই বছর খানেক আগেই আবিষ্কৃত হয়। টিকটালিক আবিষ্কৃত হয় ২০০৬ সালে। কানাডার মেরু অঞ্চলে অবস্থিত নুনাভুট এলাকার ইলেসমেয়ার দ্বীপের প্রায় ৩৮ কোটি বছর পুরাতন পাললিক শিলা থেকে টিকটালিক আবিষ্কৃত হয়। এই সময়কালেই পৃথিবীতে উভচর জীবের সৃষ্টি হয়। আফ্রিকা, ইউরোপ, এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিগত একশো বছরে শত শত হোমিনিড (মানুষ বর্গ) ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছে।
জীববিবর্তন সম্পর্কিত প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় ভ্রূণবিজ্ঞান থেকে। ভ্রূণবিজ্ঞানে ডিম্বকের ভিতর ভ্রূণের প্রাথমিক পর্যায় থেকে তা ভূমিষ্ট হবার আগ পর্যন্ত প্রাণীর বিকাশ নিয়ে অনুসন্ধান করা হয়। বিজ্ঞানীরা মাছ, সরীসৃপ, পাখি এবং মানুষের ভ্রূণগত বিকাশের প্রক্রিয়ায় অসাধারণ মিল দেখতে পান। যেমন, আমরা জানি মাছের ফুলকাছিদ্র রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা, মাছের মত মানুষের ভ্রূণেও ফুলকাছিদ্র থাকে! সকল কর্ডাটা পর্বের প্রাণীর মাঝেই এই ফুলকাছিদ্র দেখা যায়। এই ফুলকা দিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ না করলেও তাদের আদিম পূর্বপুরুষরা যে মাছ ছিলো তার শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া যায়।
ডারউইন গ্যালাপাগোস দ্বীপে একই পূর্বপুরুষ থেকে উৎপন্ন ১৪ প্রজাতির ফিঞ্চ পাখি পর্যবেক্ষণ করেন। প্রতিটি প্রজাতির খাদ্যাভাসের সাথে তাদের ঠোঁটের গঠনও বিবর্তিত হয়েছে নাটকীয় ভাবে। বিগত ৪৫ লক্ষ বছর ধরে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এগুলো গঠিত হয়েছে। প্রায় ৩০ লক্ষ বছর আগে ফিঞ্চের একটি প্রজাতি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ থেকে এসে এই দ্বীপে বসবাস শুরু করে। ডারউইন আবার দেখেন গ্যালাপাগোসে দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপে একাধিক ধরণের কচ্ছপ ও ফিঞ্চ পাখি আছে যারা দক্ষিণ আমেরিকার কচ্ছপ ও ফিঞ্চদের তুলনায় আলাদা। এই দ্বীপপুঞ্জের আয়তন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের পাঁচ ভাগেরও কম। এছাড়াও হাওয়াই দ্বীপে কচ্ছপের প্রায় এক হাজার প্রজাতি রয়েছে যাদের পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায়না! অন্যদিকে এই দ্বীপপুঞ্জে স্থানীয় স্তন্যপায়ী নেই। দুনিয়ার অন্যান্য অংশের কীটপতঙ্গের বেশিরভাগেরই অস্তিত্ব নেই সেখানে। হাওয়াই ও গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের এই ব্যাখ্যা দেয়া যায় বিবর্তনের মাধ্যমেই। কারণ, খুব কম সংখ্যক প্রাণীই সেখানে গিয়ে বাসস্থান তৈরী করতে পেরেছে। এবং সেখানে লতাপাতা-গুল্ম ও ফলের বীজ খেয়ে জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় বিবর্তন ঘটেছে তাদের।

ফিঞ্চ পাখির ঠোঁট এবং এরপরি ডারউইনীয় বিপ্লব!
প্রশ্ন আসতে পারে, ফসিল দেখে বিজ্ঞানীরা কিভাবে জীবের বাহ্যিক এবং জীনগত পূর্বপুরুষ নিয়ে ধারণা করেন। জেনে রাখা উচিত, ডিএনএ এবং প্রোটিন এই সুযোগটা করে দেয়। এদের প্রত্যেক ক্রমান্বয়িক উপাদানে ঐ জীবের বিবর্তনীয় তথ্য সংরক্ষিত থাকে। অনেকটা বর্ণমালার বর্ণের ক্রম থেকে একটি অর্থবাচক শব্দ তৈরীর মত। এই দুই অণুর মধ্যেকার উপাদান গুলোর অনুক্রমকে পরস্পরের সাথে তুলনা করে কতগুলো এককে ভিন্নতা আছে তা বের করা হয়। কারণ, প্রতিবার এক একক করে পরিবর্তনের ফলে বিবর্তন ঘটে থাকে। এককের ভিন্নতার সংখ্যা দিয়ে এদের অভিন্ন পূর্বপুরুষ নির্ধারণ করা হয়। এটা সম্ভব হয়েছে আণবিক জীববিজ্ঞানের দ্বারা। তবুও এত্ত প্রাচীন ফসিলের ডিএনএ এবং প্রোটিন উদ্ধার করা ও সেগুলোর অনুক্রম বের করা একটি দুঃসাধ্য এবং দুর্লভ কাজ। এর মাঝে মিসরীয় মমি, ম্যামথ এবং নিয়ানডার্থালের আণবিক বিশ্লেষণ সফল ভাবে করা সম্ভব হয়েছে। বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা যায় বিশ্বজনীন প্রাণ বৃক্ষ বা Polygenetic Tree of Life এর কথা। এটি জীবজগতের একটি চার্ট। এখানে জীবজগৎকে তিনটি প্রধান শ্রেণী- ব্যাকটেরিয়া, আর্কিয়া, ইউক্যারিয়ায় বিভক্ত করা হয়।
এবার জীবের ক্রমবিকাশ বা বিবর্তনের ধারা গুলোর হালকা বর্ণনা দেয়া যাক। যে পৃথিবীর বয়স প্রায় চারশো ষাট কোটি বছর, জীবনের বিকাশ যেখানে দেখা গেল তিনশো পঞ্চাশ কোটি বছর আগে, সেই প্রেক্ষিতে গত সত্তর কোটি বছরকে আধুনিক যুগ বলা যেতে পারে। জীবাণু জগৎ থেকে প্রাণীজগৎ পর্যন্ত জীনভিত্তিক পরম্পরার জীবজগতের শ্রেণীবিভাগ করেছিলেন আমেরিকান জীবাণুবিজ্ঞানী কার্ল ইয়ুস। শ্রেণীবিভাগটি সম্পূর্ণ রূপে আজকের পৃথিবীর জীবিট প্রজাতির গবেষণায় পাওয়া গেছে। আদি পরিবেশে আর্কিব্যাকটেরিয়ার উদ্ভব সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মনে কোনোরূপ সন্দেহের অবকাশ নেই। আর্কি ব্যাকটেরিয়া থেকে তিনটি প্রজাতির উদ্ভব ঘটে। উত্তপ্ত অঞ্চলে থার্মোফাইলস, মিথেনসমৃদ্ধ পরিবেশে মিথোনোজেন, এবং লবণযুক্ত এলাকায় হ্যালোফাইলসের উদ্ভব হয় বিবর্তনিক ধারায়। এই তিনটির সবগুলোর সমন্বয় হচ্ছে প্রোক্যারিয়টস এবং ইউক্যারিওটস। জীবের শ্রেণীবিভাগে উদ্ভিদ রাজ্য এবং প্রাণীরাজ্য এই দুটি রাজ্য বা কিংডমের কথা অনেকেই জানেন। এরপরে আরো কত রাজ্য হতে পারে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মাঝে বিতর্কের অবসান এখনো ঘটেনি। জীনবিদ্যার প্রভাবে সবাই প্রোক্যারিওট, ইউক্যারিওট শ্রেণীবিভাগ মেনে নিয়েছেন। এরই ভিত্তিতে পাঁচটি রাজ্যের কথা কল্পনা করা হয়েছে।
১) মনেরা রাজ্য (Monera)-প্রোক্যারিয়ট
২) প্রোটিস্টা (Protista)
৩) ছত্রাক
৪) উদ্ভিদ,
৫) প্রাণী।
এদের মাঝে প্রথম রাজ্যটি প্রোক্যারিয়ট এবং দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম রাজ্য হচ্ছে ইউক্যারিয়ট। ভাইরাস আলাদা রাজ্য কিনা তা নিয়ে এখনো মতবিরোধ আছে। একটি ফ্লোচার্ট লক্ষ করা যাক প্রাণের বিকাশ নিয়ে।
এটি হচ্ছে আর্কি ব্যাকটেরিয়া হতে ক্রমান্বয়ে উদ্ভিদ ও প্রাণী সৃষ্টির ফ্লোচার্ট। লায়েল-ডারউইন আমনে সাতান্ন কোটি বছর অতীতের কেমব্রিয়ান যুগকে প্যালেজোয়িক মহাযুগের ভিত্তি বলে মনে করা হত। তার আগে ছিলো অ্যাজোয়িক বা অজীবীয় মহাযুগ। বাস্তবে তিনশো পঞ্চাশ কোটি বছর পূর্বেও আমরা প্রাণের বিকাশ হতে দেখেছি। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে তখন থেকে দুশো কোটি বছর পূর্বে প্রাণের বিকাশ যেন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলো। সেই সায়ানো ব্যাকটেরিয়া, সেই ক্ষুদ্র গোলাকার জীবাণু তিনশো দশ কোটি বছর অতীতের দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভালের ফিগ ট্রি (Fig Tree) ভূতাত্ত্বিক স্তরে, দুশো কোটি বছর অতীতের কানাডার অরেন্টিও গান ফ্লিন্ট স্তরে ও অন্যান্য স্তরে দেখা গেছে।

আর্কিব্যাকটেরিয়া
প্রথম পরিবেশ বদল হতে দেখা গেল আনুমানিক একশো চল্লিশ কোটি বছর অতীতে সেলফ রেপ্লিকেশান সামর্থ্য নিয়ে ইউক্যারিয়েট জীবের উদ্ভব দেখা গেল। পৃথিবী সৃষ্টির তিনশো বিশ কোটি বছর পর এই প্রথম দেখা গেল সরল হতে জটিলতর জীবনের সৃষ্টির সম্ভাবনা। যৌনভিত্তিক প্রজননের সূত্রে ইউক্যারিয়েটের উদ্ভবের কথা। ইউক্যারিয়ট সৃষ্টির পর যৌনতার মাধ্যমে মেন্ডেলীয় পৃথগীকরণ ও ভাগাভাগির নিয়ম, কোষ ডিএনএ-র পরিব্যক্তি এবং ধীরে ধীরে পরিবেশ বদলে যাওয়ার প্রভাবে ডারউইনীয় নিয়মের ধাক্কায় প্রথম প্রাণীর চিহ্ন পাওয়া গেল সত্তর কোটি বছর অতীতে। আধুনিক পর্বের আরম্ভ হল তখন। বর্তমানে বিশলক্ষ হতে দুই কোটি মতন প্রজাতি আছে বলে মনে করা হয়। এ ছাড়া আছে তিনশো পঞ্চাশ কোটি বছরের জীবাশ্ম ও নমুনাহীন হারিয়ে যাওয়া অজানা কত কোটি প্রজাতি যাদের নামও আমাদের অজানা। এই অবস্থায় মানুষের উদ্ভবের ধারা বিবরণী শুনতে হলেও অনেক কিছু কাটছাট করতে হবে। সত্তর কোটি বছরের এই কাহিনী কিছুটা শোনা যাক।
এডিয়াকারাঃ সত্তর থেকে পঁয়ষট্টি কোটি বছরের পুরোনো একগুচ্ছ জীবাশ্মের চিহ্ন, রেখাচিত্র বা ট্রেস ফসিলস পাওয়া গেল দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাডিলেড শহরের উত্তরে এডিয়াকারার পাহাড়ে। খোদ জীবাশ্মটির দেখা নেই, কিন্তু আঙুলের টিপছাপের মত শরীরের ছাপ রেখে গেছে সমুদ্রের তীরের অগভীর জলের পলিতে। ছাপগুলো কালে কালে কঠিন বেলে পাথরে জমাট বেঁধে সংরক্ষিত হয়েছে। ছাপগুলো আদি প্রাণীর মেটাজোয়া শরীরের ছাপ। কোন প্রানীর ছাপ তা জানার আগে প্রাণীরাজ্যের শ্রেণীবিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচয় জেনে নেয়া যাক।
এডিয়াকারার যুগেই ক্রমবিকাশের ধারায় দুটি পর্বের প্রাথমিক উদ্ভব হতে দেখা গেছে। দুটিই অমেরুদন্ডী। এডিয়াকারা পরবর্তী কেমব্রিয়ানের সময়ে উৎপত্তি হল মেরুদন্ডী প্রাণী, সেই সময়কার অমেরুদন্ডী প্রানীর কোনও এক শাখা থেকে। কেমব্রিয়ান যুগেই আরও নয়টি অমেরুদন্ডী পর্বের উৎপত্তি হয়েছিলো। কেমব্রিয়ান পরবর্তী যুগে আরো পনেরটি পর্বের উদ্ভব হয় তারা সবাই অমেরুদন্ডী। আমাদের লক্ষ কেবলই মেরুদন্ডী প্রাণীর উদ্ভবে সীমাবদ্ধ। সুতরাং কেমব্রিয়ান পরবর্তী পনেরোটি পর্ব বাদ দিলে বাকি নয়টি অমেরুদন্ডী প্রাণীর ও একমাত্র মেরুদন্ডী পর্বের উৎস পরিচিতি নীচের তালিকায় দেয়া হল। তালিকার প্রথম দুইটি নাম এডিয়াকারা যুগের। বাকিগুলো ক্যামব্রিয়ান যুগের।
১) নিডারিয়াঃ পূর্বে নাম ছিলো সিলেন্টেরেট।সিলে (Coele) শব্দের অর্থ গুহা। যার একটি মাত্র ভেতরে যাওয়া এবং বাহিরে বেরিয়ে আসার পথ আছে। Entero শব্দের অর্থ অন্ত্র। যেমন জেলীমাছ, প্রবালকীট। সিলেনটেরেটই একমাত্র প্রাণী যাদের শুঁড় (হেমাটোসাইটস) এর বিষের প্রয়োগে অন্য প্রাণী শিকার করে। এদের প্রজাতির সংখ্যা নয় হাজার।
২) পোগোনোফোরাঃ Pogo শব্দের অর্থ দাড়ি বা লম্বা চুল বিশেষ। মুখহীন পায়ুহীন লম্বাটে এক শুঁড় পোকা। গভীর সমুদ্রের তলায় জৈবিক পুষ্টিযুক্ত নরম পলিতে ক্ষুদ্র নালিকায় বসবাস করে। সহজীবী ব্যাকটেরিয়া আছে। প্রজাতি সংখ্যা একশো পঞ্চাশ।
৩) ইন্ট্রোভার্টাঃ কাঁটাওয়ালা একশুঁড় বিশিষ্ট প্রাণী। শুঁড়টি রিট্রাক্টএবল। অর্থাৎ শরীরের ভিতরে ঢুকে যেতে পারে। শিকারি অথবা পরভুক। প্রজাতি সংখ্যা নয়শো। today show womens viagra
৪) পরিফেরাঃ পরি হল Porus এর সংক্ষিপ্ত শব্দ। যার অর্থ হচ্ছে ছিদ্র। যেমনঃ স্পঞ্জ। এদের প্রজাতিসংখ্যা নয় হাজার।
৫) অ্যানিলিডাঃ Annel,Annular শব্দের অর্থ হচ্ছে আংটা। লম্বাটে এই প্রাণী একসার আংটির মালার মত। যেমন, জোঁক, কেঁচো, কৃমি ইত্যাদি। প্রজাতিসংখ্যা পনেরো হাজার।
৬) মোলাস্কাঃ সারা দেহ শক্ত খোলকে আবৃত। ঝিনুক, শামুক, কড়ি ইত্যাদি। প্রজাতিসংখ্যা পঞ্চাশ হাজার।
৭) আর্থ্রোপোডাঃ Artho শব্দের অর্থ হচ্ছে সন্ধিযুক্ত। Poda মানে পা বা পদ। দুয়ে মিলে সন্ধিপদ। যেমন মাকড়সা, চিংড়ি, আরশোলা। অধিকাংশই শিকারী। প্রজাতি সংখ্যা প্রায় দশ লক্ষ।
৮) ব্রাকিওপোডাঃ ল্যাটিন শব্দ Brachium অর্থ হাত। Poda মানে পা। বাংলায় বলা যায় বাহুপদধারী। হাতের মত দুইটি প্রত্যঙ্গ থাকে এদের। প্রজাতিসংখ্যা তিনশো চল্লিশ।
৯) একাইনোডার্মাটাঃ Echino মানে শজারুর কাঁটা। Derma মানে চামড়া। যেমনঃ তারামাছ। প্রজাতিসংখ্যা সাত হাজার।
১০) হেমিকর্ডাটাঃ পোকার মত। স্নায়ুতন্ত্র আছে। প্রজাতিসংখ্যা আশি।
১১) কর্ডাটাঃ Cord শব্দের অর্থ তন্ত্রী। কর্ডাটারই উপপর্ব বা Sub-Phylum মেরুদন্ডী প্রাণীর শাখা। প্রজাতিসংখ্যা পঞ্চাশ হাজার।
কেমব্রিয়ান ও এডিয়াকারা যুগের এগারোটি পর্বে প্রাণীর বর্ণনায় দেখা যাচ্ছে, একমাত্র সিলেনটেরেটের বিষ প্রয়োগের ক্ষমতা আছে। একমাত্র কর্ডাটার একটি তন্ত্রী বা শিরদাঁড়া আছে। প্রত্যেকটি পর্বে কোনো না কোনো বিশেষ চরিত্র সেই পর্বটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
আমরা এবার এডিয়াকারার কাহিনীতে ফিরে যাই। এডিয়াকারার স্তরটি কেমব্রিয়ান স্তরের পাঁচশো মিটার নিচে। প্রধানত সিলেনটেরেট এবং পোগোনোফোরার জেলি মাছ, পোকা, ইত্যাদি জীবাশ্মের ছাপ দেখা যায়। Sea Pens বা সামুদ্রিক কলম নামক প্রাণীটির শরীরের ছাপ অনেকটা পাখির পালকের তৈরী কলমের মত দেখায়।

সামুদ্রিক কলম (Sea pens) এর ফসিল
ইংল্যান্ড, ইউক্রেন, নামিবিয়া, নিউফান্ডল্যান্ড, পূর্ব যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্ডিয়ান বিন্ধ্য পর্বতের স্তরে ঐ সময়ের জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সেই সময়কার প্রাণী গুলো সারা পৃথিবীতে বিস্তৃত হয়েছিলো কিংবা বিস্তৃত হওয়ার মত পরিবেশ পেয়েছিলো এটা অন্তত নিশ্চিত। এডিয়াকারার প্রাণীগুলো প্রধানত চ্যাপ্টা। এক থেকে ছয় মিলিমিটার পুরু। দৈর্ঘ্য প্রস্থে এক মিলিমিটারের মত। এই আকারের প্রাণীর পক্ষে ত্বকের মাধ্যমে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন ব্যাপন ক্রিয়ায় গ্রহণ করা সম্ভব। যদি বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ আজকের মত হয়। যদি প্রাণীটির রক্ত সংবহন অথবা অনুরূপ কোনো ব্যবস্থার মাধ্যমে অক্সিজেন চলাচলের উদ্ভব হয়ে থাকে এবং অক্সিজেনের পরিমাণ বর্তমানের পরিমাণের দশ শতাংশও হয়, তাহলেও প্রাণীটি বেঁচে থাকবে। অতএব, এই অনুসিদ্ধান্তে আসা যায়, ঐ সময়ের অক্সিজেনের পরিমাণ ছিলো অন্তত বর্তমান পরিমাণের দুই থেকে দশ শতাংশ।
মেরুদন্ডী প্রাণীর ধারায় মানুষের উদ্ভবঃ গত সত্তর কোটি বছরে মোট পঁচিশটির মত পর্বের মধ্যে সব প্রাণিপ্রজাতিকে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। তার মধ্যে মেরুদন্ডী প্রাণীই বাদ। অথচ, সাধারণভাবে মেরুদন্ডী ও অমেরুদন্ডী এ দুইটি প্রধান বিভাগে প্রাণিজগতের পরিচয় শুনে থাকি। বাস্তবে মেরুদন্ডীর উৎপত্তি এক অমেরুদন্ডী পর্ব- কর্ডাটা পর্ব থেকে উদ্ভব হয়েছিলো।
আমরা জানি, প্রোটিন অণুর অ্যামিনো এসিড এক পাক বিশিষ্ট (Single Helix) ডিএনএ দুই প্যাঁচ বিশিষ্ট Double Helix. নটোকর্ড একটি তারের মত নমনীয় অথচ শক্ত তিনপ্যাঁচ বিশিষ্ট কোষতন্তু বা Triple Helix. এতকাল এক প্যাঁচ বিশিষ্ট প্রোটিন ও দুই প্যাঁচ বিশিষ্ট ডিএনএ এর রাজত্ব ছিলো। আনুমানিক সত্তর কোটি বছর আগে তিন প্যাঁচের নটোকর্ডের রাজত্ব শুরু হল। ঊনবিংশ শতাব্দীর ভ্রূণবিদ্যা ও শারীরস্থান বিদ্যার গবেষনায় মাছ থেকে মানুষ, যে কোনও মেরুদন্ডী ভ্রূণের প্রথম অবস্থায় শক্ত হাড়ের মেরুদন্ডের বদলে একটি বিশেষ নরম তন্ত্রী দেখা গেল। নামকরণ করা হল নটোকর্ড। Noto শব্দের অর্থ আদি বা পূর্ব। এডুয়ার্ড ভ্যান বেনেডেন যিনি মায়োসিস কোষ বিভাজন আবিষ্কার করেন তিনিই প্রথম নটোকর্ডের কথা বললেন। নটোকর্ডের সামনের দিকে সব পরিপাক বিষয়ক প্রত্যঙ্গ যেমন প্লিহা, যকৃত, অন্ত্র ইত্যাদি ও পেছন দিকে কেন্দ্রীয় স্নায়ু ব্যবস্থা যার উপরভাগটি মস্তিষ্কে পরিণত হয়েছে। ভ্রূণের বয়স বাড়ার সাথে মেরুদন্ডের অস্থি ও অস্থিসন্ধিগুলো নটোকর্ড ও স্নায়ুব্যবস্থা ঘিরে তৈরী হতে থাকে। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই নটোকর্ড অদৃশ্য হয়ে যায়, এবং মানুষ ও এপ (Ape) এর ক্ষেত্রে লেজটি শরীরের ভেতর ঢাকা পড়ে যায়।
নটোকর্ড কর্ডাটা পর্বেরই বিশেষত্ব। এর সূত্রেই কর্ডাটা পর্বের নামকরণ করা হয়। এদের সাধারণ লক্ষণ হল ভ্রূণে সবসময় নটোকর্ড, অন্ননালীর উপরের দিকে এক জোড়া ফাঁক (মাছের ক্ষেত্রে যাকে কানকো বলে), নটোকর্ডের পেছনে থাকবে স্নায়ুতন্ত্রী, লম্বাটে শরীর, মুখ ও ইন্দ্রিয়যন্ত্রগুলো মাথার দিকে এবং পায়ুনালি পিছনের দিকে লেজের নিচে থাকবে। আনুমানিক পঞ্চাশ কোটি বছর আগে কেমব্রিয়ান যুগে তিনটি উপপর্বের উদ্ভব ঘটে। যথাঃ ১) সেফালোকর্ডাটা, ২) টিউনিকাটা, ৩) ভার্টেবরাটা বা মেরুদন্ডী প্রাণী। অবশ্য, পঞ্চাশ কোটি বছর পূর্বের মেরুদন্ডীর ক্রমবিকাশের ইতিহাস ভালো করে জানা নেই, কারণ জীবাশ্মের বড়ই অভাব। এডিয়াকারার প্রাণীর নরম তুলতুলে দেহের সংরক্ষণ প্রায় অসম্ভব। ফলে বালির ছাপে শরীরের ভেতরের প্রত্যঙ্গের পরিচয় পাওয়া যাবেনা। how to treat doxycycline sun rash
সেফালোকর্ডাটা ও টিউনিকাটা সাধারণত মাত্র দুই থেকে তিন ইঞ্চি লম্বা হয়। এদের বসবাস প্রধাণত সমুদ্রের তলদেশে। এদের বিবর্তনের ধারা অত্যন্ত সীমিত। প্রকৃতি এদের নির্বাচন করেনি, সম্ভবত এদের বাসস্থানের সীমাবদ্ধতা ও শারিরীক দূর্বলতার কারণে। কিন্তু মনে করা হয় যে, সেফালোকর্ডাটার কোনো এক আদি সত্তা থেকেই বিশাল ও বিচিত্র মেরুদন্ডী প্রাণীর বিকাশ হয়েছে। বর্তমানের সেফালোকর্ডাটার নটোকর্ড সম্পূর্ণ দেহ বরাবর এবং মাথাটি মাছের মাথার মত বড়সড়, যদিও মস্তিষ্কের লক্ষণ সামান্য। টিউনিকেটের লার্ভার লেজের অংশে নটোকর্ড দেখা যায়। কিন্তু একদিনেই যখন এই লার্ভা প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তখন লেজ শুকিয়ে নটোকর্ড অবলুপ্ত হয়ে যায়। এই ধারায় তাই মেরুদন্ডীর বিকাশের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। গবেষকরা অন্যান্য অমেরুদন্ডী যেমন হেমিকর্ডাটা, একিনো ডার্মাটা ইত্যাদি যাদের কর্ডাটার মত দ্বিপার্শ্বিক প্রতিসাম্যতা দেখা যায়, অর্থাৎ ডান পাশটি বাম পাশের মত অনুরূপ তাদের সঙ্গে মেরুদন্ডী প্রাণীর মিল ও অমিলের গবেষণা করছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাধারণভাবে কর্ডাটার কোনো এক অজানা সত্তাকেই মেরুদন্ডীর উৎস বলে সবাই মেনে নিয়েছেন। আর তার কারণ হল- নটোকর্ড!
এখনও পর্যন্ত যা বোঝা গেছে সেখান থেকে মনে করা হয় যে, মাছই হল মেরুদন্ডী প্রাণীর পূর্বপুরুষ। মাছের আটটি প্রধান শ্রেণী আছে। এদের উৎপত্তিকাল সম্পর্কিত ডাটা একটি ছকে দেয়া যেতে পারে। সেফালোকর্ডাটার শাখায় মাছের প্রশাখা গুলো হলঃ
শ্রেণী(Class) | উৎপত্তিকাল |
১) অ্যাগনাথা acne doxycycline dosage | অর্ডোভিসিয়ান |
২) অ্যাকানথোডি prednisone 60 mg daily | অর্ডোভিসিয়ান (বিলুপ্ত) |
৩) প্লাকোডার্মি | ডেভোনিয়ান (বিলুপ্ত) |
৪) সেলাচি | ডেভোনিয়ান |
৫) সারকপটেরিজি | ডেভোনিয়ান |
৬) কন্ড্রেষ্ট্রেই | ডেভোনিয়ান |
৭) হলোস্টেই | পারমিয়ান |
৮) টেলিওস্টেই | ট্রায়াসিক clobetasol cream online pharmacy |
অর্ডোভিসিয়ান যুগ ৫০.৫-৪৩.৮ কোটি বছর ধরে বিস্তৃত। ডেভোনিয়ানের বিস্তৃতি ৪০.৫-৩৬.৮ কোটি বছর। পারমিয়ান ২৮.৬-২৪.৫ কোটি বছর এবং ট্রায়াসিক কাল ২৪.৫-২০.৮ কোটি বছর পর্যন্ত বিস্তৃত।
প্রাচীনতম মাছ হল অ্যাগনাথা শ্রেণীর চোয়ালহীন মাছ। gnathus শব্দের অর্থ হচ্ছে চোয়াল। অ্যাগনাথা ছাড়া অন্যসব মেরুদন্ডীর চোয়াল আছে। অ্যাগনাথার কঙ্কালের বদলে নটোকর্ড আছে। অ্যাগনাথার অধিকাংশ প্রজাতি অর্ডোভিসিয়ান থেকে পারমিয়ান যুগের। প্রায় সবাই বিলুপ্ত কিন্তু জীবাশ্মের সাক্ষর আছে। এবং এদের আঁশ বা শল্কের বর্ম ছিলো যা সম্ভবত অমেরুদন্ডী প্রাণীর আক্রমন থেকে বাঁচার জন্য অভিযোজিত হয়েছিলো। এদের মাত্র দুইটি প্রজাতি হ্যাগ ও ল্যামপ্রি এখনো টিকে আছে। অনেক গবেষক মনে করেন যে, মাছের উদ্ভব নদীর জল অর্থাৎ মিঠা পানিতে হয়েছিলো। আজকের ল্যামপ্রি ও সমুদ্রের তীরবর্তী এলাকার মাছ। তা ছাড়া নদীর জলের স্রোতের কারণেই মাছের লম্বাটে গড়নে গতিময়তার লক্ষণ দেখা যায়। অবশ্য এর বিপক্ষেও যথেষ্ট যুক্তি আছে। অনেক গবেষকই নদীর জলে মাছের উৎপত্তিটা মেনে নেননি। বিতর্কের মিমাংসা এখনো হয়নি।
মাছেদেরও “রক্তচাপ” হয়। তখন তাদের “অক্সিজেন সিলিন্ডার” এর দরকার পড়ে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, রক্তচাপের মোকাবিলা করতে গিয়েই স্থলভাগ দখল করে নিলো মেরুদন্ডী প্রাণীরা। জলাশয় সমূহের পরিবেশ এবং দ্রবীভূত অক্সিজেনের তারতাম্যের কারণে মাছেদের রক্তচাপ হয় যখন অক্সিজেনে ঘাটতি দেখা যায়। পচা জলের অক্সিজেনহীনতা অনেক মাছকে জলের উপরের অংশেই বসবাস করতে বাধ্য করে। অনেকেই পুকুরে বিলে দেখে থাকেন যে, মাছ জলের উপর মুখ বাড়িয়ে খাবি খাচ্ছে। কানকোর পথে জল টেনে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন জোগাড় করে সাধারণ মাছ। রক্ত চলাচলের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন শিরা উপশিরায় অক্সিজেন সরবরাহ করে। তারপরই অক্সিজেনহীন ও কার্বনডাই অক্সাইড যুক্ত রক্ত হৃৎপিন্ডের চাপে সেই কানকোর কাছে আসো ও কার্বন ডাই অক্সাইড বর্জিত হয়। এই পরিক্রমণ চক্রাকারে আবর্তিত হয়। স্তন্যপায়ী ও পাখির ক্ষেত্রে একেবারের বদলে দুইবার সমান্তরাল আবর্তন হয়। প্রথমে নিঃশ্বাস, পরে প্রশ্বাস। ফুসফুসের মাধ্যমে যে মাছ নিঃশ্বাস নিতে চেস্টা করে তাদের কথা শোনা যাক।

মাছের শ্বসন প্রক্রিয়া (Respiratory System)
চল্লিশ কোটি বছর আগে ডোভেনিয়ানের সময় মাছের জগতে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায়। সম্ভবত সমুদ্রের তলায় যে বর্জ্যপদার্থ জমছিলো সেগুলোর অক্সি জেনাইসড হওয়া এবং স্থলভাগে মরুভূমির গরম আবহাওয়ার আধিক্যের কারণে পৃথিবীময় প্রায় সব দেশেই অক্সিডাইসড লাল বেলে পাথর জমার ফলে আকাশে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। লাল পাথরের সৃষ্টি সেই সময়ে জলে মরচে ধরার কাহিনীটা মনে করিয়ে দেয়। ডেভোনিয়ানের বাতাসের জলে অক্সিজেন কমে যাওয়ার প্রভাব পানিতেও দেখা গেল। এ ধরনের ছোটোখাটো ঘটনা ট্রায়াসিক যুগেও ঘটেছিলো। pharmacy technician flashcards online
মাছের কানকোর মধ্যেকার পাতলা ছিলকার সমষ্টি খোলা বাতাসে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির চাপে চুপসে অকেজো। একারণেই মাছ সোজাসুজি ডাঙায় উঠে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারেনা। বেশ কয়েক রকমের মাছ সেই সময়ে অক্সিজেনের ঘাটতি মোকাবেলায় মিউটেশান এবং যোগ্যতার প্রভাবে শরীরের গঠন বদলের চেস্টা করেছে। কোনো প্রজাতি পেটের মধ্যে অন্য এক প্রজাতি অন্ত্রের কোনো অংশে বাতাসের আধার তৈরীর চেস্টা করেছে। কোথাও বা গলা বা মুখে বাতাসের থলে বানিয়ে নিয়েছে। একটি সাধারণ অভিযোজন বা Adaptation এর ফলে বেশিরভাগ মাছ পিঠের দিকে গলার পেছনে একটা থলে তৈরী করলো যাকে পটকা বা Swim Bladder বলে। জীবাশ্মপ্রমাণ বলছে গোড়াতে পটকার সৃষ্টি হয়েছিলো অক্সিজেন সঞ্চয়ের জন্য। কোনো এক প্রজাতির ক্ষেত্রে এই পটকাই সত্যকার ফুসফুসে অভিযোজিত হয়।
দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাছের প্রজাতি অক্সিজেন সমস্যার সমাধান করতে নানান ধরনের অভিযোজন করেছিলো। কিন্তু একটি মাত্র অভিযোজন বা পথ শেষ পর্যন্ত মাছ থেকে উভচর, উভচর থেকে সরীসৃপ, সরীসৃপ থেকে স্তন্যপায়ী ও পাখিতে এসে শেষ হল। বিবর্তনের কোনো এক শাখায় অভিযোজনের একটি সীমিত সম্ভাবনা আছে সেই সীমিত সম্ভাবনার প্রশাখায় অন্য নতুন সম্ভাবনা পাওয়া যেতে পারে কিন্তু পেছন ফিরে অন্য শাখার সম্ভাবনা পাওয়া যাবেনা। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার তিনটু মাছের প্রজাতিতে কানকো থাকা সত্ত্বেও তারা ফুসফুসের অভিযোজন করেছে। এই ফুসফুস মাছদের Lung Fish বলা হয়। এগুলোর কোনো একটি প্রজাতিও যদি কানকো ত্যাগ করতে পারতো তাহলে কয়েকটি বিভিন্ন ধারায় স্থলবাসী প্রাণীর উদ্ভব হতেও পারতো। Dipnoi এবং Rhipidistia নামক দুইটি গোত্র এবং এদের স্বগোত্র সিলাকান্থ বর্গই সারকপটেরজী শ্রেণীর অন্তর্গত। মানে মাংসল পাখনা যুক্ত মাছ। ডেভোনিয়ান যুগের সিলাকান্থ বহুদিন ধরে বিলুপ্ত মনে করা হত। হঠাৎ ১৯৩৮ সালে আফ্রিকার পূবদিকের মহাসাগরে এর আবিষ্কার প্রচন্ড সাড়া ফেলেছিলো। আক থেকে একশো ষাট-আশি বছর আগে লাং ফিশ বা ফুসফুস মাছের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিলো। তখন বিজ্ঞানীমহলে আলোড়ন পড়ে গেল, এগুলো মাছ না উভচর?! মাছ কি নিঃশ্বাস নিতে পারে? এই অদ্ভুত ধাঁধা বা প্যারাডক্সের কারণেই প্রথমে মাছটির নাম দেয়া হল Paradoxa! বর্গটির নাম দেয়া হল Dipnoi. Di+Pnoe থেকে এসেছে এই নাম। গ্রীক শব্দে Di মানে দুই। Pnoe (নয়)শব্দটি এসেছে Pneuma (নিউমা) থেকে। যার অর্থ শ্বসন। Dipnoi মানে দ্বিশ্বসন। অর্থাৎ কানকো ও ফুসফুস।

লাংফিশ
একটি পরীক্ষার মাধ্যমে ১৯৬৬-৬৮ সালে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারলেন যে, ফুসফুসের অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা থাকলেই হবেনা, সেই সঙ্গে হৃৎপিন্ডের সহযোগী শিরা উপশিরারও অভিযোজন প্রয়োজন মানে, Cardio-Vascular ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। ফুসফুস মাছের রক্তসংবহনে দেখা যায় সেখানে তিনটি প্রত্যেঙ্গের বদলে চারটি দেখাচ্ছে। স্তন্যপায়ীদের মত দুটি সমান্তরাল আবর্তের অভিযোজন হয়েছে। কিন্তু দুইটি গ্যাসের কমবেশি মিশ্র প্রবাহও দেখা যাচ্ছে। আজকের ফুসফুস মাছ ও পটকাওয়ালা মাছ এই “কানকো” ছাড়তে পারেনি। সম্ভবত মায়ার বসে। “মায়া” ত্যাগ না করলে “মানুষ” হওয়া যায়না। তারাও “মানুষ” হতে পারেনি। aborto por segunda vez con cytotec
উভচরের বিকাশঃ Dipnoi বর্গ জলেই থেকে গেল। কিন্তু উদ্ভূত Rhipidistia বর্গের কোনো এক প্রজাতি ডাঙায় উঠে এল আনুমানিক ৩৮-৩৯ কোটি বছর অতীতে। এই বর্গটি ২৩-২৮ কোটি বছর আগে পারমিয়ান যুগে বিলুপ্ত হল। এই বর্গের অস্টিওলেপিফর্মিস গণের কোনো এক প্রজাতি ডাঙায় অভিযান করেছিল। অস্টিওলেপিস ডেভোনিয়ানের শেষের দিকে ৩৫-৩৭ কোটি বছর অতীতে সম্ভবত বিলুপ্ত। অর্থাৎ তার আগেই উভচরের বিকাশ হয়। ঠিক কোন প্রজাতি ডাঙায় উঠে এসেছিলো তা চিহ্নিত করা অবশ্য অসম্ভব।

রিপিডিস্টিয়ার কোনো এক প্রজাতি ডাঙায় উঠে গেল
মাথার হাড়ের ও চোয়ালের গড়ন, দাঁতের ভিতর দিকে ভাঁজ করা এনামেল, জোড়ায় জোড়ায় মাংসল পাখনার সঙ্গে চতুষ্পদ প্রাণী হাত পায়ের এক ধরনের সাদৃশ্য এবং অবশ্যই ফুসলফুসের উদ্ভব ইত্যাদি গবেষনায়, সাধারণের মতৈক্যের সূত্রে ধরে নেয়া হয়েছে যে অস্টিওলেপিস গণের প্রকাতি স্থলবাসী মেরুদন্ডী উৎস প্রজাতি। জোড়া পাখনার হাড়ের গঠন দেখে মনে হয় এগুলি জলে ও ডাঙায় দুই জায়গায় চলাচল করতে পারে। উভচরের ক্ষেত্রে জলে ডিমের উৎপত্তির পর প্রথম পর্যায়ে ক্ষুদ্র মাছের মত লার্ভার জন্ম হয়, স্থলভাগের মেরুদন্ডী প্রাণীর মাঝে তা একমাত্র উভচরেরই দেখা যায়। ব্যক্তিজনি জাতিজনিকে অনুসরণ করে, এই নিয়মে উভচরের উৎস কোনো এক মাছেরই প্রজাতি।
প্রশ্ন হল অস্টিওলেপিস যখন ডাঙায় উঠে এল তখনও Dipnoi বর্গের কয়েকটি প্রজাতি কানকোর সাথে ফুসফুসের অভিযোজন করছিলো। তাহলে অস্টিওলেপিসের কি এমন চাপ ছিলো যে তাকে স্থলবাসী হতে হল?
পৃথিবী সৃষ্টির পর ৪০০-৪১০ কোটি বছর পর্যন্ত কেমব্রিয়ান যুগের শেষেও স্থলভাগ ছিলো অনুর্বর। জলভাগে অ্যালজি উদ্ভিদ ও জলজ প্রাণীর আধিক্য শুরু হয়েছে। তারপরই অর্ডোভিসিয়ান যুগে পরিবেশের এক বড় রকমের বদল হয়। দক্ষিণ গোলার্ধে বড় রকমের বরফে যুগের সূচনার কারণে সামুদ্রিক জলরেখা একশো থেকে একশো সত্তর মিটার নীচে নেমে যাওয়া ও উঠে আসার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পরবর্তী সিলুরিয়ানেও বরফ যুগের প্রভাব ছিলো। তবে জলের উঠা নামার পরিমাণ ছিলো ত্রিশ থেকে পঞ্চাশ মিটার। এর সঙ্গে ছিলো ভূতাত্ত্বিক আলোড়ন। জল যখন উঠে আসে তখন সমুদ্র তীরবর্তী স্থলভাগকে বহুদূর পর্যন্ত ভাসায়। জল আবার যখন নেমে যায় তখন সমুদ্রের জলের সাথে আসা জলজ প্রাণী ও জলজ উদ্ভিদ ছোট বর হৃদ, বিল কিংবা নদীর মোহনায় আঁটকে গেল। এই ব্যাপারটি লক্ষাধিক বছর ধরে চলতে থাকে। extended release metformin vs regular for pcos
এই অবস্থায় সমুদ্রের স্বাভাবিক জলরেখার নীচে পুরনো আবাসস্থল ভেঙে যাচ্ছে এবং সমুদ্র তীরবর্তী স্থলভাগে সম্ভাব্য নতুন পরিবেশে নতুন আবাসস্থলের উদ্ভব হচ্ছে। এই প্রথম সামুদ্রিক অ্যালজি স্থলভাগের জলভূমিতে উঠে এল। ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক নির্বাচন ও পরিব্যক্তির সূত্রে, প্রথম দিকে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার উচ্চতা বিশিষ্ট বীজাণুবাহী উদ্ভিদ সিলুরিয়ানে ও পরে গুল্মজাতীয় ১০-১২ সে.মি. উঁচু উদ্ভিদ ডেভোনিয়ান যুগে স্থলে আবাসন সৃষ্টি করলো। অনুর্বর স্থলভাগে সবুজায়নের প্রথম বিকাশ দেখা গেল।
অ্যালজি ও আদি উদ্ভিদের পেছনে উঠে এল সন্ধিপদ যাদের এক কোটি বা তারও বেশি প্রজাতি আছে বলে মনে করা হয়। বাস্তবে, আর কোনো প্রাণীকে এতটা উর্বর হতে দেখা যায়নি। আবাসস্থল রচনার সামান্য সম্ভাবনাও কোনো না কোনো সন্ধিপদ সেটা অধিকার করে নেবে। সমুদ্রের ৪০০০ মিটার গভীরে, এভারেস্টের চূড়ায়, এন্টার্টিকার বরফরাজ্যে, সাহারার মরুতে, এমনকি ভূগর্ভস্থ জলাধারেও আছে আর্থ্রোপোডার আবাসস্থল। ডাঙার জলে উদ্ভিদ ও সন্ধিপদের নতুন পরিবেশে আবাসনের সন্ধানে এসে পড়লো জলের মাছ। ডেভোনিয়ানের অক্সিজেন সমস্যা ও খরার প্রকোপে জলাশয়ের জল শুকিয়ে যাওয়ায় স্থলভাগের মাছদের উপর অক্সিজেনের চাপ ও সীমিত জলের কারণে জনসংখ্যার চাপ এই দুই চাপ তাদের অস্থির করে তুললো, অথচ, চোখের সামনেই দেখা যাচ্ছে সম্ভাবনাময় সবুজ জগৎ!

জল ছেড়ে ডাঙায় উঠে এলো টিকটালিক
অস্টিওলেপিস যেন বলছিলো, জলে বড় চাপ, চলো ডাঙায় উঠে যাই। কয়েক লক্ষ প্রজন্ম পরে এই ধারায় প্রথম উভচরের উৎপত্তি হওয়া কিছু বিচিত্র নয়। প্রথম উভচর তো বটেই, বাস্তবে সব উভচর এখনও জল থেকে দূরে থাকেনা, ডিম পাড়ার জন্য জলের কাছেই ফিরে আসে।

অস্টিওলেপিস ফসিল
সুইডিশ প্রাণী বিজ্ঞানী যারভিক দেখিয়েছেন, সারকপটেরিজি মাছের শ্রেণী যাবতীয় স্থলবাসী মেরুদন্ডী প্রানীর আদি উৎস। সারকপটেরিজি থেকে স্তন্যপায়ী এবং পাখিদের ক্রমবিকাশের একটি ছক প্রত্যক্ষ করা যায়, যা পরবর্তী টপিক গুলো ভালোভাবে বুঝতে আরো সুদূরপ্রসারী হবে।
স্থলভাগে বিজয় অভিযানের শুরু এবং সরীসৃপঃ অবশেষে স্থলবাসী মেরুদন্ডীর প্রথম প্রতিনিধি এক উভচর উঠে এল ডাঙা জমিতে, মোটামুটি ৩৭ কোটি বছর অতীতে। কিন্তু মূলত দুইটি শারিরীক প্রতিবন্ধকতার কারণে উভচর প্রাণী প্রথম থেকেই জলে বা জলের কাছাকাছি জীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছিলো। সরীসৃপের উদ্ভব হল, যেদিন প্রতিবন্ধকতা দুটি এড়ানো গেল। এবং তারপরই পৃথিবীর স্থলভাগের প্রায় সব জায়গায় শুরু হল মেরুদন্ডী প্রাণীর বিজয় অভিযান। ডেভোনিয়ানের ঠিক পরবর্তী কার্বনিফেরাস যুগের (৩৪.৫-২৮ কোটি বছর অতীতে) মধ্যভাগে।
প্রথম প্রতিবন্ধকতা উভচরের চামড়ায়। উভচরের কোনো শুকনো চামড়ার আবরণ নেই, এক হিসেবে শরীরটি নগ্ন; মাছের মত। কোনো আঁশ চুল বা আর কিছুই নেই যার ফলে জলের অনুপস্থিতিতে শুকনো গরম পরিবেশে তারা বাঁচতে পারেনা। বাধ্য হয়েই উভচর বেশির ভাগ সময় জলে বা জলীয় পরিবেশেই বসবাস করতো। সরীসৃপ একটা আবরণ তৈরী করে নিয়েছিলো। ফলে জলে ডাঙায় সে সর্বত্রগামী। শিং এবং নখের উপাদান হল এক ধরনের অদ্রাব্য প্রোটিন যার নাম কেরাটিন (Keratin). সরীসৃপের আঁশ কেরাটিনের তৈরী।
দ্বিতীয় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে ডিম পাড়ার ব্যাপারে। সাধারণত মাছের মতই উভচর প্রাণীরা জলে বা জলের কাছাকাছি কোথাও ডিম পাড়ে। ফলে উভচর জলে উঠলেও স্থলভাগ জয় করে নিতে পারেনি। এছাড়া উভচরের ডিমে কুসুমের পরিমাণ কম থাকে। পুষ্টির অভাবে তাই উভচরের ভ্রূণ থেকে সোজাসুজি চারপেয়ে উভচর জন্মায় না। তার বদলে জন্মায় প্রথমে মাছের মত দেখতে লার্ভা বা ব্যাঙাচি। বেশ কিছুদিন জলের পরিবেশে থেকে পুষ্টি জোগাড়ের পরই ব্যাঙাচির কানকো শুকিয়ে যায়, ফুসফুস বড় হয়, লেজ ছোটো হয়ে যায় এবং চারপায়ে ভর দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসে।
উভচরের এই সমস্যা বাস্তবায়িত হয়ে গেল মাত্র কয়েক কোটি বছরেই। সাড়ে চৌত্রিশ কোটি বছর অতীতে আদি সরীসৃপ- stem reptile. যার মূল বা শিকড় হল স্টেগোসেফালিয়া উভচর। এদের দৈহিক নগ্নতা আর নেই, কেরোটিনের তৈরী পোশাক পরে এরা চলাচল করে। এবার প্রধান অভিযোজনটি হল ডিমের ব্যাপারেই। উদ্ভব হল অ্যামনিয়নের ডিম (Amniotic Egg)।

সরীসৃপের অ্যামনিয়টিক ডিম
কুসুম সমৃদ্ধ শক্ত খোলসে ঢাকা ডিমের অভিযোজন করে নিল ওরা। ভ্রূণের প্রথম অবস্থাতেই একটা পাতলা প্রায় স্বচ্ছ চাদরের আবরণে ভ্রূণটিকে সম্পূর্ণ ঢেকে ফেলার ব্যবস্থা করা হল। চাদরটিতে বলা হয় অ্যামনিয়ন। অনেকের মতে আদি সরীসৃপ ডাঙায় উঠার পর অ্যামনিয়ট ডিমের অভিযোজন করেনি। গোড়াতেই সরীসৃপ জলে বাস করতো। কিন্তু জলজ শত্রুর আক্রমণ থেকে ডিমগুলোকে বাঁচানোর জন্যে স্থলভাগে ডিম ছাড়ার জন্যই অ্যামনিয়নের অভিযোজন করেছিলো। আদি সরীসৃপ ও তখনকার উভচরের আকৃতিগত সাদৃশ্য আছে এবং দুইটি প্রজাতিই জলেই প্রধানত বসবাস করে। অথচ আদি সরীসৃপের ডিম স্থলভাগেই পাওয়া যায়। আজকালকার সরীসৃপ যেমন কুমির ও কচ্ছপ জলে বাস করে কিন্তু স্থলভাগেই ডিম ছাড়ে।
Stem Reptile বা আদি সরীসৃপ থেকে পাখি ও প্রথম দিককার স্তন্যপায়ী অ্যামনিয়নের অভিযোজনের ফলে জলে বাস করার প্রয়োজনীয়তা আর থাকলো না। স্থলভাগের সমৃদ্ধ পরিবেশে বিবর্তনের ছাড়পত্র পেয়ে গেল তারা!
এবং পাখি ও স্তন্যপায়ী প্রাণীঃ এডিয়াকারার পেলব প্রাণী থেকে আদি সরীসৃপ পর্যন্ত বিকাশের ধারাটা মোটামুটি বুঝা গেছে। আদি সরীসৃপের উদ্ভব হল কার্বনিফেরাস যুগের শুরুতেই। যুগটির প্রধান বৈশিষ্ট্য তার নামেই পাওয়া যাচ্ছে। এই যুগেই প্রথম কার্বন জমেছিলো উত্তর গোলার্ধের প্রায় সমস্ত দেশের কয়লাস্তরে। ডেভোনিয়ানের গুল্ম উদ্ভিদ কার্বনিফেরাসে বিশাল কনিফার ও অন্যায় চরিত্রের গাছের বিবর্তনের পর সৃষ্টি করল বিস্তৃত বনভূমি। যথাসময়ে কয়লাস্তর বদলে গেল। পরবর্তী পারমিয়ান যুগে দক্ষিণ গোলার্ধেও কয়লার স্তর দেখা গেল। ভারতবর্ষ তখন দক্ষিণ গোলার্ধের গন্ডওয়ানা মহাদেশের এক অঙ্গ। আমাদের এই অঞ্চলের কয়লাস্তর প্রধাণত পারমিয়ান যুগেরই। স্বভাবতই পরিবেশের বিপুল পরবির্তনে অভিযোজনের সুযোগ বেড়ে যাওয়ার ফলে কার্বনিফেরাস-পারমিয়ানের সময় সরীসৃপ শ্রেণী পাঁচটি উপশ্রেণীতে ভাগ হয়ে গেল। পরবর্তী মেসোজয়িক (Mesozoic) মহাযুগে অসংখ্য সরীসৃপ ও অন্যান্য প্রাণীর শাখা প্রশাখার বিকাশ ঘটে, এই পাঁচটি উপশ্রেণী হলঃ
১) অ্যানাপসিডা | নিম্মকার্বনিফেরাস থেকে বর্তমান viagra generico online italia |
২) সাইনাপসিডা | নিম্মকার্বনিফেরাস থেকে মধ্য জুরাসিক |
৩) আর্কোসরিয়া | উচ্চ পারমিয়ান থেকে বর্তমান |
৪) লেপিডোসরিয়া | উচ্চ পারমিয়ান থেকে বর্তমান |
৫) ইউরিয়াপসিডা | নিম্ম পারমিয়ান থেকে উচ্চ ক্রিটাসিয়াস zithromax tri pak |
আমাদের প্রধান লক্ষ্য হল সাইনাপসিডা। এটিকে স্তন্যপায়ীরূপ সরীসৃপও বলা হয়। এর থেকেই মানুষের উদ্ভব হয়েছে। অ্যানাপসিডার একটি শাখায় বাস্তবে প্রধান শাখায় চেলোনিয়া বর্গের কচ্ছপ উপবর্গের প্রাণী বর্তমানেও বেঁচে আছে। লেপিডোসরিয়ার দুটি প্রশাখায় সাপ ও গিরগিটি বর্তমানে দেখা যায়। আর্কোসরিয়ার চারটি প্রশাখার দুইটি হল ডাইনোসর বর্গ- সরিস্কিয়া ও অরনিথিস্কিয়া- মেসোজয়িক মহাযুগে প্রায় দেড়শো কোটি বছর পৃথিবী দাপিয়ে ডাইনোসর যুগের শুরু হয়। কিন্তু তারপরেই এক অবাক কান্ড। হঠাৎই সামান্য সময়েই ক্রিটাসিয়াসের শুরুতেই সাড়ে ছয় কোটি বছর অতীতে পৃথিবীর বুক থেকে একদম মুছে গিয়ে এক মস্ত বিষ্ময়ের সৃষ্টি করেছে! সরিস্কিয়ার আমিষাশী ও নিরামিষাশী দুই ধরনের প্রজাতি আছে। নিরামিষাশী ডাইনোসর আশিফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। অরনিথিস্কিয়া নিরামিষাশী, এরা ত্রিশ ফুট লম্বা।

সিনাপসিডস এর বৈজ্ঞানিক চিত্র
ডাইনো উড়ে গেল পাখি হয়েঃ অতিকায় ডাইনো একসময় বিলুপ্ত হল। ওরা অবশ্য একদিনেই অতিকায় হয়নি। সরোপড ডাইনোসরের থিকোডনসিয়া প্রশাখায় ছোটো ছোটো মুরগীসদৃশ দু’পেয়ে সরীসৃপ ট্রায়াসিক যুগে ভালোভাবেই প্রতিষ্টিত হয়েছিলো। তারা আক্রমণের হাত থেকে বাঁচার জন্যে আজকের বানরের মত গাছের উপরে বসবাস করতো। এদেরই ধারায় প্রথম পাখির মত বদলে যাওয়া সরীসৃপ- আর্কিওপটেরিক্সের জীবাশ্ম পাওয়া গেল জার্মানির ব্যাভেরিয়া অঞ্চলে। Archeo অর্থ পুরাতন এবং Ptery (টেরী) অর্থ পাখা। পুরো নাম আর্কিওপটেরিক্স লিথোগ্রাফিয়া (Archaeopteryx lithographia)। গ্রীক লিথো শব্দের অর্থ পাথর এবং গ্রাফ মানে অঙ্কন বা চিত্র। পাথরে খোদাই করা জীবাশ্ম পাওয়া গেছেই বলেই এই নামকরণ। সাধারণ কাকের মত প্রায় দেড়ফুট লম্বা, অবশ্য শরীরের আন্দাজে লেজের পাখা তুলনায় আরো বড়। ডানাজোড়াও বড়। এ পর্যন্ত মোট ছয়টি জীবাশ্ম বিভিন্ন সময়ে আবিষ্কৃত হয়েছে। লম্বা লেজ, কেশ পালকহীন লম্বাটে মাথা, বৃক্ষবাসী সরীসৃপ গণের বিশেষ এক প্রজাতি, অনেকটা যেন আজকের গিরগিটির মত গাছে চড়ে বেড়াতো। তাদের শরীরের সামান্য পরিবর্তনের সূত্রেই কঙ্কাল খুলির যে অভিযোজন সম্ভব হয়েছিলো তা আর্কিওপটেরিক্সের শরীরের অনুরূপ। বৃক্ষবাসী হওয়ার সময় বড় গলার ডাইনোসরের হাত থেকে বাঁচার জন্য অরথবা পাশের ডালের কীট শিকারের জন্যে তাদের পা ছড়িয়ে ঝাঁপ দেয়াটা অনেকটা উড়ে যাওয়ার ভঙিমার মত। ঝাঁপ দেয়ার সুবিধার জন্যই ন্যাচারাল সিলেকশানের নিয়মে পালক সৃষ্টি হল।

কেমন হতে পারে আর্কিওপটেরিক্স ; ফসিল অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক চিত্র
বস্তুত, আর্কিওপটেরিক্সের অবস্থান আজকের সরীসৃপ এবং পাখির মাঝামাঝি। ক্রিটিয়াসের শুরুতে লম্বাগলাওয়ালা ডাইনোসর যখন হঠাৎ হারিয়ে গেল তখন পাখিদের বিস্তার ঘটলো। শত্রুহীন পরিবেশে অসংখ্য পাখি প্রজাতির বিচরণ দেখা গেল। অনেকের মতেই ডাইনোসর লুপ্ত হয়নি, বরং পাখি প্রজাতিতেই বিলুপ্ত হয়েছে। হয়তো অন্যান্য ডাইনোসরের শাখা থেকে ভিন্ন ধরনের পাখির উদ্ভবও সম্ভব!
মানুষের উৎসঃ জীবাশ্মবিদরা দেখলেন আদি স্তন্যপায়ীর দুটি বর্গ প্রোটোথিরিয়া (আদি জন্তু) ও থিরিয়া (জন্তু) উচ্চ জুরাসিক যুগে প্রথম উদ্ভব হয়েছিলো। সরীসৃপের দাপটের কারণে প্রোটোথেরিয়া উপশ্রেণীর স্তন্যপায়ীরা বেশি ছড়াতে পারেনি। প্রায় সবই সেই আমলে বিলুপ্ত। কেবল রয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়ার প্লাটিপ্লাস ও কাঁটাওয়ালা একিড্না। থেরিয়া উপশ্রেণীর দুটি ধারায় ক্রিটাসিয়াসে ও বাকি সব ক্রিটাসিয়াসের পরবর্তী ডাইনোসরহীন যুগে উদ্ভব হয়েছে। যে দুটির প্রথম উদ্ভব হয় সে দুটি হল Mar-supial ও Placental স্তন্যপায়ী।

প্লাসেন্টাল স্তন্যপায়ী মানুষের অমরা (প্লাসেন্টা) তে বেড়ে ওঠা ফিটাস
উভচরের ডিমের পর সরীসৃপের ডিম পরবর্তী অ্যামনিয়টটি মাতৃগর্ভকেই ব্যবহার করে পূর্ণাঙ্গ শিশু হয়ে জন্মাতো। এই পর্যায়ের আছে দুইটি ধারা। অস্ট্রেলিয়া ও অতীতের দক্ষিণ আমেরিকার ক্যাঙারু, কোয়ালা জাতীয় প্রাণীগুলো অসম্পূর্ণ শরীরে জন্মায়, কিন্তু মায়ের বুক পেটের উপর একটি মুখ খোলা থলের মাঝে বাস করে এবং মাতৃদুগ্ধ পান করে পূর্ণাঙ্গদেহী হওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকে। অন্য ধারায় মাতৃ জঠরেই Placenta বা অমরা নামক পুষ্টিপূর্ণ একটা থলের মাঝেই ভ্রূণ ও গর্ভ একসঙ্গে সংস্থাপিত হয় এবং যথাসময়ে শিশুটির জন্ম হয়।
পৃথিবীর ক্ষীণতম প্ল্যাসেন্টাল স্তন্যপায়ী প্রাণী ভারত মহাসাগরের পূর্বপ্রান্তের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপগুলোতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা, মাত্র একশো গ্রাম ওজনের টারশিয়ার (Tarsier)। মাদাগাস্কার দ্বীপে কিছুটা বড় চেহারার দুই থেকে পাঁচ কেজি ওজনের স্তন্যপায়ী প্রাণী লেমুর বসবাস করে। চতুষ্পদী দুইটি গোষ্ঠীর বানরের মতো লম্বা লেজ ও অদ্ভুত গোল গোল চোখ। এরা হল Prosimian- বানরপূর্ব। এদেরই আদি পুরুষ ক্রিটাসিয়াসের শেষ ভাগে ডাইনোসরের পদানত হয়ে থাকতো।
দুইটি আলাদা যোগসূত্রহীন মহাদেশে মারসুপিয়াল ও ভারত মহাসাগরের দুই তীরে বানরপূর্ব টারসিয়ার ও লেমুর। একই ধরনের প্রাণীর এতটা বিচ্ছিন্ন বসতি আশ্চর্য লাগার কথা। তাই প্রশ্ন উঠে আসে, দেশগুলো কি কখনও এক সঙ্গে ছিলো? দেড়শো বছর আগের ভারতের ভূসমীক্ষা বিভাগের ভূতাত্ত্বিকেরা প্রথম গন্ড্ওয়ানা অতিমহাদেশ (Supercontinent) এর প্রস্তাব করেছিলেন। বিভিন্ন বিতর্কের শেষে বর্তমানে এই সুপারকন্টিনেন্ট থিওরী সব গবেষকরাই মেনে নিয়েছেন। জুরাসিক আমলে যখন প্রোটোথেরিয়া ও থিরিয়া স্তন্যপায়ী প্রাণীর বিকাশ ঘটে তখন দক্ষিণ গোলার্ধের সবকয়টি মহাদেশ ও সাবকন্টিনেন্ট একই সাথে গন্ডোওয়ানা অতিমহাদেশের অন্তর্গত ছিলো। ভারত ও আটলান্টিক মহাসাগরের অস্তিত্ব ছিলোনা। জুরাসিক আমল থেকে পৃথিবীর গভীর অঞ্চল থেকে আগ্নেয়গিরি বলয় উপরে উঠে আসার কারণে গন্ডওয়ানা ভেঙে টুকরো হয়ে যায় এবং মহাদেশগুলো ছড়াতে থাকে। সেই সঙ্গে প্রজাতি গুলোও ভাগ হয়ে ছড়িয়ে যায়। এই হচ্ছে কারণ।

লরেশিয়া এবং গন্ড্ওয়ানা অতিমহাদেশ prednisone side effects menopause
ডাইনোসরের প্রাধান্যের কারণে ট্রায়াসিক থেকে ক্রিটাসিয়াস এর শেষ পর্যন্ত একশো সত্তর কোটি বছরে মাত্র দুইটি বর্গ যথা, কীটভুক ও প্রাইমেটের উদ্ভব হয়েছিলো। তুলনায় ক্রিটাসিয়াসের পর দুই তিন কোটি বছরে গোটা ত্রিশেক নতুন বর্গের উদ্ভব হল, তার মধ্যে গোটা বিশেক এখনো বিদ্যমান।
প্রাইমেটের শাখায়, আজকের টারসিয়ার ও লেমুর তাদের আবাস পাকা করে নিলো ইওসিন (Eocene) যুগে এসে যা ছিলো ৬.৫-৩.৭ কোটি বছর অতীতে। Primus এর অর্থ প্রথম, মানুষ যে ধারায় বিবর্তিত হয়েছে, অতি অবশ্যই তা প্রথম স্থান অধিকারকারী। মানুষের শাখা সে কারণে প্রাইমেট শাখা। অলিগোসিন যুগে (৩.৭-২.৪ কোটি বছর অতীতে) প্রাচীন বানর ও প্রাচীনতম এইপ এর দেখা পাওয়া গেল। এগুলো হল Anthropoidea. যার অর্থ নরাকৃতি উপবর্গ। প্রথম মানুষ জাতীয় জীবের আদি নিদর্শন, শিবাপিথেকাস (Sivapithecus) ও রামাপিথেকাস (Ramapithecus) ইত্যাদির দেখা পাওয়া গেল মাইওসিন যুগে (২.৪-১.৮৪ কোটি বছর পূর্বে)। Pithecus শব্দের গ্রীক অর্থ হচ্ছে এইপ (Ape)।Ape শব্দের আদি ইন্দো ইউরোপিয়ান বুৎপত্তি সম্ভবত bhoi (ভয়) যার মানে ভয় পাওয়া বা ভীতিজনক। পাঞ্জাবের লবণ পাহাড়ে এদের প্রথম দেখা যায়, পরে ইউরোপ ও আফ্রিকায়। এরা সব হোমিনয়েডের আদিরূপ। একসময় রামাপিথেকাসদের আদি মানবের প্রথম প্রতিনিধি বলে মনে করা হত। বর্তমানে সব “পিথেকাস” ই বিলুপ্ত। মনে হয়, আধুনিক শিম্পাঞ্জি ও গরিলার উদ্ভব হয়েছে এদেরই কোনো এক শাখা থেকে আনুমানিক ষাট থেকে এক কোটি বছর অতীতে। লক্ষনীয় যে, অপেক্ষাকৃত ছোটোখাটো গিবন (আট/দশ কিলোগ্রাম) ও ওরাংওটাং (পঞ্চাশ/একশো কিলোগ্রাম) দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে সীমাবদ্ধ ও বড় মাপের গরিলা ও শিম্পাঞ্জির বাসস্থান মধ্য আফ্রিকায়। এগুলো কিন্তু মানুষের শাখায় আসেনি, সম্ভবত অন্য কোনো হোমিনয়েড থেকে বিকশিত হয়েছে।
হোমিনয়েডের বৃহৎ গোত্রের শাখায় হোমিনিড গোত্রে অস্ট্রেলোপিথেকাস (Australopithecus) গণ বা Genus এর উদ্ভব হয়, ষাট –সত্তর লক্ষ বছর অতীতে মাইওসিন যুগের শেষদিকে। Austral শব্দের অর্থ দক্ষিণ। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ গোলার্ধের দেশ বলে Austral থেকেই Australia (অস্ট্রেলিয়া) শব্দের উৎপত্তি। দক্ষিণী হোমিনিডের বিভিন্ন জীবাশ্ম শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই পাওয়া গেছে, অন্য কোনো দেশে নয়। মনে করা হয়, মানুষের বিকাশ আফ্রিকাতেই শুরু হয়, কারণ অস্ট্রেলোপিথেকাসের ধারাতেই যে জীবাশ্ম পাওয়া গেছে তা মানুষের প্রথম প্রজাতি। অবশ্য, আরো অনেক গবেষণার প্রয়োজন আছে।

অস্ট্রেলোপিথেকাস
মোটামুটি চারটি অস্ট্রাল (দক্ষিনী) হোমিনিড থেকে গোটা তিনেক মানুষ প্রজাতির (Homo) সন্ধান পাওয়া গেছে। হোমিনিড চারটি হচ্ছেঃ
Australopithecus afarensis | আনুমানিক ৬০-২৫ লক্ষ বছর অতীতে | ইথিওপিয়া ও কেনিয়ার মধ্যবর্তী Afar ত্রিকোণের ভূখন্ডে |
A. africanus | ৩৫-২৪ লক্ষ বছর অতীতে | দক্ষিণ আফ্রিকায় |
A. bosei | ২৬-১৮ লক্ষ বছর অতীতে metformin xr 500mg side effects | ইথিওপিয়া, কেনিয়া, টানজানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা |
A. robustus | ২০-১০ লক্ষ বছর অতীতে | কেনিয়া, টানজানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা |
উপরোক্ত গণের কোনো এক প্রজাতি থেকেই মানুষের উৎস। অর্থাৎHomo নামক গণের উৎস। নির্দিষ্ট হোমিনিডটির নাম এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রথমে হোমো হ্যাবিলিস (Homo habilis) পরে হোমো ইরেকটাস এবং সব শেষে হোমো স্যাপিয়েন্স অর্থাৎ আমরা। অর্থাৎ, আধুনিক মানুষ। হ্যাবিলিস হল প্রথম মানুষ প্রজাতি যারা একটু আধটু হাতের কাজ করতো। Habile শব্দের অর্থ হচ্ছে Handy, যার অর্থ হাতের কাজ করে যে। সোজা হয়ে দাঁড়াতে পেরেছিলো বলে পরের প্রজাতিটির নাম ইরেকটাস। আমরা বুদ্ধিমান মানব সম্প্রদায়। তাই, নাম রাখা হল Homo sapiens যার অর্থ বুদ্ধিমান মানুষ।
ফসিল থেকে হোমো ইরেকটাসের পুনঃসংস্থাপন, জার্মানিতে সংরক্ষিত
আমরা এখন পর্যন্ত অদ্বিতীয়। অন্য কোনো মানুষ প্রজাতি আর নেই। কোনো বৈচিত্র্যও নেই। অন্যান্য প্রাণীর একাধিক প্রজাতি প্রাণিজগতকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করেছে যা আমরা পারিনি। তবে, একসময়, মানুষের দুইটি প্রজাতি ইরেকটাস ও স্যাপিয়েন্স প্রায় দশলক্ষ বছর পাশাপাশি ছিলো। এরপর প্রকৃতি তাদের গ্রহণ করেনি, ইরেকটাস হারিয়ে গেছে বুদ্ধিমান মানুষের ভীড়ে। টিকে আছি কেবল আমরাই। budesonide vs prednisone for cats
বিবর্তনের ইতিহাসের গবেষনায় দেখা গেছে যে, একটি শাখায় যতটা বিকাশ হয়, শাখাটি থেকে প্রশাখা, উপশাখা ও তথ্য উপশাখার ধারা বেয়ে অভিযোজনের ফারাক অনেকটাই বেশি থাকে। একটি বিশেষ শাখায় যদি বিকাশের ধারা আবদ্ধ থাকে তখন একটি রেখাকার প্রবাহ দেখা যায়। যেমন আফারেনসিস থেকে হ্যাবিলিস থেকে ইরেকটাস থেকে স্যাপিয়েন্স। এটাই আমাদের রেখা চিত্র। এই ধারাকে বলা হয় anagenesis , ana শব্দের অর্থ- প্রতিটিতে। শাখা, প্রশাখা, উপশাখার ধারায় বিবর্তনকে বলা হয় Cladogenesis. গ্রীক Clado শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রশাখা। প্রাইমেটের এক শাখায় হোমিনিড, অন্য এক শাখায় পোঙ্গিড (Pongid) এর উদ্ভব হয়েছে। হোমিনিডের প্রশাখা, উপশাখার খবর আমরা পেয়ে গেছি। পোঙ্গিডের শাখায় গরিলা ও শিম্পাঞ্জির উদ্ভব হয়েছে। তাই প্রাইমেটের বিবর্তন হচ্ছে Cladogenesis.
প্রজাতি বিকাশের ধারায় আমরাই সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী। আর তা নির্ধারণ করা হয়েছে মস্তিষ্কের আয়তন নির্ণয়ের মাধ্যমে। prednisolone side effects long term
প্রজাতি brain injury and viagra | লক্ষ বছর | মাথার খুলির আয়তন (ঘন সে.মি.) |
A.africanus (দ.আফ্রিকা) | ৩৫-২৫ | ৪০০-৫০০ |
H.habilis (টানজানিয়া) | ২০-১৫ | ৬০০-৮০০ |
H.erectus (যবদ্বীপ) | ১০ | ৯০০-১১০০ |
H.erectus (চীনদেশ) synthroid drug interactions calcium | ৮ | ৯০০-১২০০ |
H.sapiens | আধুনিক যুগ | ১৪৫০ |

মস্তিষ্কের আয়তন candidiasis diflucan dosage
গড়পড়তা হিসেবে প্রতি লক্ষ বছরে যেন মগজের আয়তন ৩০ ঘন সে.মি. হারে বাড়ছে। অ্যানাজিনেসের তথ্য ডারউইনের সময় জানা ছিলোনা। ইংল্যাডের সমাজ ডারউইনকে বিরক্ত করতো, “কোথায় তোমার মিসিং লিংক? কোথায় তোমার জীবাশ্ম প্রমাণ, যা প্রমাণ করবে বানর বা উল্লুক মানুষের উৎস প্রজাতি?” তিনি বলতেন, “হারিয়ে যাওয়া প্রজাতির জীবাশ্মের নমুনা পাওয়া যাচ্ছেনা।” বাস্তবে, ইউরোপের জীবাশ্ম প্রমাণ তেমন পরিষ্কার নয়, যেমনটি শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল আফ্রিকা ও পূর্ব এশিয়াতে।
মানুষের বিকাশের পরম্পরাকে নিম্মের একটি ছকের সাহায্যে সংক্ষেপে দেখানো যায়। এখানে সংখ্যা গুলো দ্বারা কোটি বছর বুঝানো হয়েছে।
আপাতত, এই ছিলো মৎস্য থেকে মানুষের বিবর্তন বা ক্রমবিকাশের অসাধারণ একটি প্রাকৃতিক নাটকীয়তা। পরবর্তীতে অন্য কোনো একদিন কেবল মানুষের ক্রমবিকাশ নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে। সেখানে, মানুষের সাথে অন্যান্য প্রাণীর জীনগত পার্থক্য এবং ডিএনএ নিউক্লিউটাইড পরিবর্তনের পরিমাণ এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা যাবে। ততদিন ভালো থাকুন, কিংবা অন্তত বেঁচে থাকুন এই সময়ে।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
মাথার দুই একশ হাত উপর দিয়া গেল…
তারিক লিংকন বলছেনঃ
প্রথমেই আন্তরিকভাবে দুঃখিত মন্তব্য করতে বিলম্ব হওয়ার জন্যে। তবে যন্ত্রের যন্ত্রণার কথা না বললেই নয়। অনেক কষ্ট করে ইউসি ব্রাউজার দিয়ে ফোন থেকে সুদীর্ঘ একটা মন্তব্য করেছিলাম। আচানক ব্রাউজার ক্র্যাশ করাতে সকল পরিশ্রম বিফলে গেলো। যাহোক, আপনাকে অফুরন্ত ধন্যবাদ আর সেল্যুট রইলো অসাম্ন্য এই পোস্টটি করার জন্যে…
এইবার কাজের কথায় আশা যাক। ডারউইন কেবলই একজন প্রকৃতিবাদী বৈজ্ঞানিক ছিলেন না তিনি একধারে সময়ের সবচে প্রভাবশালী দার্শনিক এবং বিপ্লবীও বটে। ডারউইনিজম অধ্যায়ন এবং বিবর্তনবাদের পাঠ বাঙলায় প্রথম না হলেও খুব একটা বেশী হয় নি। মুক্তমনা ব্লগের মত মূলধারার ব্লগের কল্যাণে আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার জেনারেশন এইসব নিয়ে কিছুটা হলেও জানতে পারে পারছে। আর আপনার মত বোদ্ধা এবং সমাজদার প্রকৃতিবাদী পাঠক এবং লেখক আমাদের সমাজে খুবই দরকারও। সেই দিক বিবেচনায় আপনার পোস্টের মূল্যায়ন অসামান্য। এইবার আমার কিছুই পর্যবেক্ষনে আসি। আপনি সম্পূর্ণ বিবর্তনবাদকে এক পোস্টে ধারণ করতে গিয়ে কিছুটা ক্লান্তিকর করে তুলেছেন বলে আমার ধারণা। এইবার আমার কিছু পর্যবেক্ষণঃ
ক) এডিয়াকারান লাইফ ফর্মের সময়সীমা ৫৪ থেকে ৬৩ কোটি বছর পর্যন্ত বিস্তৃত! ( সূত্রঃ স্যার ডেভিড এটেনবরা, ফার্স্ট লাইফও, ডকুমেন্টারি!)
খ) ছারনিয়া (Charnia) হচ্ছে ৫৫-৫৮ কোটি বছর আগের ফসিলও, প্রাচীনতম ফসিলের নমুনা ( Evidence). একেই প্রাণের প্রথম নমুনা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে এডিয়াকারান ইয়োটা আর ডিকনসনিয়া ছিল চার্নউড ফরেস্ট ইংল্যান্ডের নমুনা সমূহ। এই ক্যাম্ব্রিয়ান এক্সপ্লোশানকে একটি সংক্ষিপ্ত বিবর্তনের ইতিহাস হিসেবে গণ্য করা হয়। আদিমতম প্রাণের বিবর্তনের অর্থবহ ইতিহাস।
গ) ওরিজিন অবলাইফ খোঁজতে গিয়ে তিনি (স্যার এটেনবরা) প্রাচীনতম ফসিল নমুনা সংগ্রহ এবং প্রাণের প্রথম মৌলিক নমুনা থেকে কীভাবে যৌগিক প্রাণের উদ্ভব হয়েছে সবই প্রমাণ সহ হাজির করেছেন। এটেনবরা’স জার্নি যাকে তার ফার্স্ট লাইফ ডকুমেন্টারির ভূমিকা ধরা হয় সেখান থেকে আসলে ডারউইনের বিগল যাত্রার আপডেটেট ফর্মে পাওয়া যায়। আপনার পোস্টটি ধাপে ধাপে একটু বিস্তারিত আগালে তাই পাঠকের বুঝতে সুবিধা হত।
কীভাবে মৌলিক এককোষী প্রান থেকে যৌগিক বহুকোষী প্রাণের উদ্ভব সেই বিষয়টি মূলত সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসীদের মূল সমস্যা। তাই এইটা নিয়ে কিছু আলোচনা অত্যাবশ্যক। তবে প্রাচীনতম নটোকর্ড থেকে আধুনিকতম মানব ভ্রূণ পাঠে কীভাবে বিবর্তনের ধারা আধুনিক বিজ্ঞান নিয়ে এসেছে সেই বিষয়টি আপনি চমৎকার ভাবে করেছেন। ১৩.৪ বিলিয়ন বছরের মহাবিশ্ব, ৪.৬ বিলিয়ন বছরের সৌরজগত আর প্রায় ৪৫০ কোটি বছরের এই ছোট্ট গ্রহটির প্রাণের ইতিহাস এক পোস্টে নিয়ে আশার এই অসামান্য চেষ্টার জন্যে আপনাকে আবারো ধন্যবাদও। আপনার মত সমাজদার এবং বোদ্ধা প্রকৃতিবাদী হালজমানার প্রজন্মেকে জীবনের রহস্য বোঝাতে সাহায্য করবে বারেবার এই আশাবাদ রইলো।
পরের অংশ নিয়ে আরেকবার মন্তব্য করব শিগ্রই!!
অপার্থিব বলছেনঃ
জীব বিজ্ঞান আমার কখনোই প্রিয় বিষয় ছিল না , উচ্চ মাধ্যমিকের পর থেকে আর কখনো খুলেও দেখিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিবর্তন বাদ নিয়ে আরো বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করছি। আপনার পোষ্টটি এক্ষেত্রে কিছুটা উপকৃত করেছে। আর স্কুল কলেজের পাঠ্যবইয়ে বিবর্তন বাদ পড়ানো এখন সময়ের দাবী, এটাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত সবার আগে।
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
অনেক তথ্য পেলাম ,ভালো লাগল
Sajib বলছেনঃ
আচ্ছা বিবর্তন কি ‘ব্যাকটেরিয়া থেকে মানুষ ‘ ব্যাখ্যা ও প্রমাণ করতে পারবে? vibramicina 100mg doxycycline
Bangla Kosh বলছেনঃ
amandine cytotecঅসাধারণ লিখনী ।
এমন লিখা আরো চাই লেখকের কাছে বাংলা কবিতা অনুরোধ ।