মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণকারী পরজীবীদের গল্প
1187
বার পঠিতন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের “Mind Suckers” নামক প্রবন্ধে কার্ল জীমার কিছু পরজীবীর আক্রমণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। দেখা গেছে এ ধরণের পরজীবীর আক্রমণের ফলে পোষকের নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি বিলুপ্ত হয়ে যায়। তারা তখন পরজীবীর নির্দেশনা মোতাবেক চালিত হয়। প্রকৃতির অদ্ভুত আর মজার এই ঘটনার বেশ কিছু উদাহরণ নীচে দেওয়া হলো।
১। আমরা জানি, র্যাবিস ভাইরাসের আক্রমণে জলাতঙ্ক রোগ হয়। প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করা না হলে এক পর্যায়ে এই ভাইরাস রোগীর মস্তিষ্ক দখল করে ফেলে এবং পানির প্রতি রোগীর আতঙ্ক তৈরি করে। এ সময় কিছু পান করতে গেলে বা পান করার কথা চিন্তা করলেই শুরু হতে পারে গলা আর স্বরযন্ত্রের পেশীতে ব্যথাময় খিঁচুনি।
যেন কামড়ের মাধ্যমে আক্রান্তরা ভাইরাসটিকে আরও ছড়িয়ে দিতে পারে এজন্য আক্রান্তের লালাগ্রন্থিতে ভাইরাসটি বংশবৃদ্ধি করে। ফলে রোগী অতিরিক্ত লালা উৎপাদন শুরু করে। যদি আক্রান্তরা পানির সাহায্যে বা পানি ছাড়াই লালা গিলে ফেলতে সক্ষম হয়, তাহলে এই ভাইরাসের সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে। এজন্যেই ভাইরাসটি আক্রান্ত পশু বা মানুষকে পানির প্রতি আতঙ্কিত হতে বাধ্য করে।
২। ম্যালেরিয়ার জীবাণু হিসেবে পরিচিত Plasmodium পরজীবীটির প্রাথমিক পোষক হল মশা এবং মানবদেহ হল এর জীবনচক্র সম্পন্ন করার জন্য পরবর্তী পোষক। মশার বেঁচে থাকার জন্য রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু মানুষের রক্ত খেতে গেলে চড়, থাপ্পরের মাধ্যমে মশার মারা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এরকম হলে পরজীবীটি মানবদেহে প্রবেশ করতে পারবে না। তাই মশার দেহে যখন এটি বর্ধনরত অবস্থায় থাকে, তখন এটি মশার কার্যকলাপের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। মশাকে বাধ্য করে স্বাভাবিকের চেয়ে কম সংখ্যক মানুষ খুঁজতে এবং রক্ত খাওয়ার মতো সুযোগ না পেলে বারবার চেষ্টা না করে দ্রুত উড়ে যেতে।
কিন্তু পরিপক্ক হওয়ার পর এই পরজীবীই মশার আচরণকে উল্টোদিকে পরিচালিত করে। তখন মশা রক্ত খাওয়ার জন্য তৃষ্ণার্ত এবং জেদি হয়ে উঠে এবং প্রতি রাতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী সংখ্যক মানুষ খোঁজা শুরু করে। রক্ত খেয়ে পেট ভর্তি থাকলেও বারবার কামড়াতে থাকে। এর ফলে যদি মানুষের হাতে মশার মৃত্যুও ঘটে, কোন সমস্যা নেই। কারণ ততক্ষণে পরজীবী মানুষের দেহে প্রবেশ করে ফেলেছে।
৩। নেমাটোমর্ফ হেয়ারওয়ার্মের (Spinochordodes tellinii) লার্ভা বেড়ে উঠে ঘাসফড়িঙ আর ঝিঁঝিঁ পোকার দেহে। লার্ভা থেকে বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়ার পর এই কীট ঘাসফড়িঙকে পানিতে লাফিয়ে পড়তে বাধ্য করে। ঘাসফড়িঙ পানিতে ডুবে গেলে পরজীবীটি পোষকদেহ হতে বেরিয়ে আসে এবং পানিতেই বসবাস আর বংশবৃদ্ধি শুরু করে। dosage of zoloft for severe depression
অবশ্য এই পরজীবী পোষককে পানির উৎস খুঁজে বের করতে বাধ্য করে না বরং কাছাকাছি পানির উৎস পেলে কেবলমাত্র তখনই পোষককে দিয়ে এই কাজ করায়।
৪। Formica fusca নামক পিঁপড়া যখন খাদ্য হিসেবে শামুকের সিস্ট গ্রহণ করে, তখন সেই সিস্টে উপস্থিত ল্যান্সেট ফ্লুক (Lancet Fluke) নামক পরজীবী পিঁপড়ার অন্ত্রে প্রবেশ করে। কিছু পরজীবী স্নায়ুকোষে প্রবেশ করার মাধ্যমে পিঁপড়ার কার্যকলাপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। pcos clomid pregnancy
বিকেলবেলা যখন ঠাণ্ডা বাতাস বয়, তখন আক্রান্ত পিঁপড়া দলছুট হয়ে ঘাসের ডগায় উঠে। সেখানে তার ম্যান্ডিবল দিয়ে ঘাসের চূড়া আঁকড়ে ধরে সে ভোর পর্যন্ত বসে থাকে। এরপর আবার কলোনিতে তার স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে আসে। যদি দিনের বেলা পোষক পিঁপড়াটি সূর্যের তাপের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসে, তাহলে পরজীবীসহ সেটা মারা যাবে। তাই রাতের পর রাত এভাবে ঘাসের ডগায় পিঁপড়াটি অপেক্ষা করতে থাকে যতদিন না পর্যন্ত কোনো পশু ঐ ঘাস খায়। পিঁপড়াসহ ঘাস খেলে পরজীবীটি উক্ত পশুর দেহে বেড়ে উঠে এবং বংশবৃদ্ধি করে।
৫। Toxoplasma gondii নামক পরজীবীর প্রাথমিক পোষক হিসেবে কাজ করে ইঁদুর এবং ছুঁচো। এদের মস্তিষ্কে পরজীবীটি হাজার হাজার সিস্ট তৈরি করে। কিন্তু জীবনের পরবর্তী চক্র সম্পন্ন করার জন্য এর বিড়ালের অন্ত্রে প্রবেশ করা দরকার। বিড়াল যদি ইঁদুরকে ভক্ষণ করে, তাহলেই এই পরজীবী বিড়ালের অন্ত্রে প্রবেশ করে বংশবৃদ্ধিতে সক্ষম হবে।
তাই অদ্ভুত হলেও সত্যি যে, আক্রান্ত ইঁদুর বিড়ালের প্রতি তার স্বাভাবিক ভয় হারিয়ে ফেলে। কিছু ইঁদুর আবার এক ডিগ্রী সরেস হয়ে বিড়ালমূত্রের গন্ধের প্রতি ধাবিত হয় এবং বিড়ালের শিকারে পরিণত হয়। এভাবে পরজীবীটি ইঁদুরকে ব্যবহারের মাধ্যমে বিড়ালের অন্ত্রে প্রবেশ করে এবং তার জীবনের পরবর্তী ধাপ সম্পন্ন করে।
৬। ফিমেল Sacculina লার্ভা sheep crab নামক কাঁকড়ার দেহে প্রবেশের পর তার বক্ষদেশে ডিম পাড়ে। Sacculina-র প্রবেশের কারণে কাঁকড়ার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা, বর্ধন এবং আত্মরক্ষার জন্য claw পুনঃউৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ফিমেল Sacculina যখন পুরুষ কাঁকড়ার দেহে বসতি গাড়ে, তখন সেটি কাঁকড়ার হরমোনাল ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে। ফলে কাঁকড়ার প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, উদর স্ফীত হয়ে ফিমেল কাঁকড়ার মতো দৈহিক গড়ন দেখা দেয়। এমনকি সেটি ফিমেল কাঁকড়ার মতো আচরণও শুরু করে।
budesonide vs prednisone for cats
যেহেতু পরজীবীর আক্রমণের ফলে কাঁকড়া (মেল বা ফিমেল – উভয়েই) প্রজননের জন্য অনুর্বর হয়ে পরে, তাই যখন Sacculina ডিম পাড়ে, আক্রান্ত কাঁকড়া ঐসব ডিমকে নিজের ডিমের মতো করেই যত্ন নিতে থাকে।
৭। Leucochloridium paradoxum নামক পরজীবীর মধ্যবর্তী পোষক হিসেবে কাজ করে শামুক জাতীয় প্রাণী। ইউরোপ আর উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত Succinea নামক শামুকের চোখ আক্রমণ করে বসে এই পরজীবী। ফলে চোখগুলো হয়ে যায় সেসব শুঁয়োপোকার মতো যাদেরকে পাখিরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।
পাখির দেহে প্রবেশের পর পরজীবীটি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং ডিম পাড়ে পাখির মলাশয়ে। এই ডিম পরবর্তীতে মলের সাথে বেরিয়ে আসে এবং অন্য শামুকের খাদ্যে পরিণত হয়। এভাবে খুঁজে পায় নতুন হোস্ট।
৮। Killifish নামক এক ধরণের মাছ আছে যারা সাধারণত পানির উপরিভাগে আসে না। কারণ এতে করে শিকারি পাখির কবলে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু এই মাছগুলোই যখন ফ্লুক নামক কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়, তখন বেশীরভাগ সময় পানির উপরিভাগে অবস্থান করে। মাঝে মাঝে পল্টি খায় যেন তাদের রুপালী পেট আলোতে ঝিলিক মারে। ফলে সুস্থ কিল্লিফিশের তুলনায় আক্রান্ত কিল্লিফিশরা পাখির শিকারে পরিণত হয় বেশী। এর একটাই কারণ।
কী? viagra generico online italia
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। পাখির অন্ত্র হল ফ্লুকের পরিপক্ক হওয়া এবং বংশবৃদ্ধি করার জায়গা।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
doxycycline 200মজা পেলাম!!!
পিপড়া নিয়ে একটি পড়েছিলাম, পানিতে লাফ দেয়…
নির্ঝর রুথ বলছেনঃ
পিঁপড়াও মনে হয় নেমাটোমর্ফ হেয়ারওয়ার্ম দ্বারাই আক্রান্ত হয়। এরজন্য পানিতে লাফিয়ে পড়ে…
কিরন শেখর বলছেনঃ
জলাতঙ্ক ছাড়া বাকি পরজিবীদের সাথে একটা পার্থক্য আছে। সেটা হচ্ছে বাকি পরজিবীরা কাজটি করে বংশবৃদ্ধির জন্য। ডিসকভারিতে মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে প্রায়ই বিভিন্ন প্রতিবেদন দেখি কিন্তু প্রাণিকূলের ছোট ছোট বিভিন্নর উপর যে এমন প্রভাব ফেলতে পারে এটা জানা ছিল না।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
চমৎকার কিছু নতুন তথ্য জানলাম। কিন্তু আমরা বোধহয় সবচে ভয়ংকর আর নৃশংসতম মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রনকারী পরজীবীর কথা ভুলে গেছি। আমার কাছে ইশ্বরের ধারনার মত মস্তিষ্ক বিকৃতকারী আর কিছুই নেই। আর আরো ভয়ের বিষয় এইটা যে এতোটাই ধধংসাত্বক তা পোষক বুঝতেই পারে না।
মনে ভয় ভীতির সঞ্চার আর নিজের উপর আস্থা কমে যাওয়া কিংবা নতজানু গোচের মানুষ হয়েই আজীবন যাপন করে এই পরজীবীতে আক্রান্তরা…
মস্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
‘জানার কোন শেষ নাই
জানার চেষ্টা বৃথা তাই’
– হীরক রাজার দেশে
শশী প্রসাদ শীল বলছেনঃ
অনন্য,