নকলের ভিড়ে…
342
বার পঠিত kamagra pastillasআধুনিক পৃথিবীতে আসল থেকে নকল জিনিসের পরিমানই বেশি। খাবার,পোশাক,যন্ত্রপাতি তো ছিলই, যেই জিনিসটা বর্তমান সময়ে বেশি দেখা যায় তা হলো চেহারার নকল। প্রসাধনী, নানা ধরনের দেশি বিদেশি প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহার করে নিজেকে আলাদা রূপ দেয়াটা যেন প্রতিনিয়তই ঘটে। শুধু দেখাবার জন্যই না, প্রয়োজনের খাতিরেও বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার এর কোন বিকল্প নেই। টুথপেস্ট,শেভিং ক্রিম,শ্যাম্পু,কন্ডিশনার,ফেসওয়াস ইত্যাদিকে বিলাসিতা থেকে প্রয়োজন বলাই বোধহয় যুতসই হবে। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় এইসব প্রসাধনী ব্যবহারের আগে তার বিষয়ে একটু ভালোভাবে জেনে নিচ্ছেন কি? অনেক গরম, রাস্তা থেকে একটা পানির বোতল কিনে খাচ্ছেন। পানিটা কি বিশুদ্ধ? যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করছেন,সেসব কি আসল?
রাজধানীর নামিদামি শপিং মল থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার দোকান এবং গ্রাম ও মফস্বলের বাজারে প্রশাসনের সামনেই অবাধে বিক্রি হচ্ছে ক্ষতিকর সব নকল প্রসাধনী। আসলের মতো দেখতে প্রসাধনীগুলোর কোনোটির দাম আসলের সমান আবার কোনোটি আসলের চেয়ে অনেক কম। ক্রেতারা দাম কম ভেবে এগুলো কিনছেন কিন্তু এর ব্যবহার করে অজান্তে নিজেরই ক্ষতি করছেন। অনেকে আবার বিদেশী মনে করে আসল দামেই কিনছেন। নকল প্রসাধনী কিনে ধনী, মধ্যবিত্ত, গরিব সব শ্রেণির ক্রেতাই ঠকছেন।
নকল প্রসাধনীর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্যানটিন প্রোভি, থাইল্যান্ডের হেড অ্যান্ড শোল্ডার, ভারভের গার্নিয়ার শ্যাম্পুসহ নামিদামি কোম্পানির পণ্য।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর সবচেয়ে বড় নকল প্রসাধন পণ্য তৈরি ও বিক্রির কারখানা হচ্ছে চকবাজার। আর চকবাজারের চক মোগলটুলির খান মার্কেটে গড়ে উঠেছে নকল প্রসাধনী তৈরির বেশ কয়েকটি কারখানা। সেখানে মেরিল সাবানের ছাঁচে ফেলে তৈরি হয় নকল জনসন সাবান। ২০ টাকার মেরিল সাবানের ছাঁচে তৈরি নকল জনসন সাবান বিক্রি হয় ৮৫ টাকায়।
অনেকে আছেন চুল নিয়ে অনেকে বেশি সৌখিন। চুলের যত্নের জন্য এমন কিছু নেই করেননি। চুলপড়া রোধ করার জন্য অনেক নামীদামী শ্যাম্পু ব্যবহার করেছেন। চুল পড়া তো কমেইনি। উল্টো বেড়েছে। এর কারণ বলি। প্যান্টিন, হেড অ্যান্ড শোল্ডার, রিজয়েস, সানসিল্ক, গার্নিয়ার, ভ্যাসলিন ইত্যাদি নামিদামি ব্র্যান্ডের শ্যাম্পু তৈরি করা হয় এ কারখানাগুলোতে। শ্যাম্পুগুলো মূলত তৈরি করা হয় গার্মেন্টে ব্যবহৃত লিকুইড সাবানের সঙ্গে সুগন্ধি মিশিয়ে। প্যান্টিন পাইকারি ১০০ টাকা দরে কিনে দোকানদার নকল স্টিকার লাগিয়ে ক্রেতার কাছ থেকে ঠিকই ৩১০ টাকা আদায় করেন। গার্মেন্টস এর সাবান। তাহলে কি হল?
বডি স্প্রে তো যুবক সমাজ পানির মত ব্যবহার করেন। পুরো বোতল খালি করে দেন একটুখানি সুগন্ধের জন্য। আসলে শরীরে কি লাগাচ্ছেন তা একটু জেনে নেই। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বডি স্প্রের খালি কনটেইনার সংগ্রহ করে তাতে স্পিরিট ও কাছাকাছি সুগন্ধি মিটফোর্ড থেকে কিনে সিরিঞ্জের মাধ্যমে ঢোকানো হয়। পরে তাতে লাইটারের গ্যাস ভরে রিফিল করা হয়।
সম্প্রতি চকবাজারে প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের ২০ হাজার পিস নকল কসমেটিক পণ্য র্যাবের অভিযানে জব্দ করে তা সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং স্টেশনে ধ্বংস করা হয়। র্যাবের তথ্যমতে, বাজারের ৪৫ ভাগ প্রসাধনী পণ্যের বিএসটিআইর সনদ নেই। আর ৭৫ ভাগের উৎপাদন প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা নেই।
এসব পণ্যের বিক্রেতারা জানান, ক্রেতাদের অনেকেই বেশি দাম শুনলে পণ্য কিনতে চান না। এ কারণে ক্রেতাদের কাছে নকল পণ্য বিক্রি করা হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর গুলিস্তান, চকবাজার, যাত্রাবাড়ী, নিউমার্কেট, মহাখালী, গুলশান, মিরপুরসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান ও ফুটপাতে বিক্রি হচ্ছে নকল প্রসাধনসামগ্রী। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে ফেরিওলারাও বিক্রি করছেন নকল প্রসাধনী।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শুধু রাজধানী ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় তিনশ’র বেশি নকল প্রসাধনসামগ্রী তৈরির কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা থেকে বিভিন্ন হাত ঘুরে নকল প্রসাধনী দেশের বড় বড় সুপার শপ, বিপণিবিতান ও মফস্বল এবং গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে।
জানা যায়, চীন থেকে বৈধ-অবৈধ পথে আসা ব্র্যান্ডের কৌটায় নকল প্রসাধনী ভরে বিক্রি করা হচ্ছে।চকের কয়েকজন প্রসাধনী ব্যবসায়ী জানান, ঢাকার গুলশান, বনানী, মহাখালী, মগবাজার ও মৌলভীবাজার এলাকায় ভেজাল প্রসাধনসামগ্রীর আমদানিকারকদের অফিস রয়েছে। সেখান থেকে তাদের কর্মকর্তারা মাল নিয়ে চকবাজারসহ নগরীর অন্যান্য ভেজাল পাইকারি বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। তবে তারা টাকা সংগ্রহ করতে আসেন মাল বিক্রির পর।
নগরীর পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রসাধনীতে ক্রিমের মধ্যে নিভিয়া, ডাভ, লাক্স, মাস্ক, অ্যাকুয়া মেরিল লোশন, ফেডআউট ক্রিম, ওলে ব্র্যান্ডের ক্রিম, গার্নিয়ার ও জার্জিনস লোশনের নকল তৈরি করা হচ্ছে। শ্যাম্পুর মধ্যে হেড অ্যান্ড শোলডার, ল’রিয়েল, রেভলন, পয়জন, প্যান্টিন ও বিদেশি সানসিল্ক নকল হচ্ছে। নকল হচ্ছে ডাভ, ইমপেরিয়াল ব্র্যান্ডের সাবানও। সুগন্ধির মধ্যে হুগো, ফেরারি, পয়জন, রয়েল, হ্যাভক, কোবরা, ম্যাক্সি, ডুইট, এক্স, এলপাসো, এডিডাস, প্লেবয়, ফরেভার, ওয়ান মেন শো নকল হচ্ছে। এর বাইরে বিখ্যাত কোম্পানির ফেইস ওয়াশ, ট্যালকম পাউডার, সুগন্ধি কেশ তেল, রং ফরসাকারী ক্রিম, কন্ডিশনার, সেভিং ক্রিম, ফোম ইত্যাদি প্রসাধনীও হুবহু নকল করা হচ্ছে।চকবাজার মোগলটুলী পাইকারি কসমেটিকসের আড়ত ঘুরে নকল প্রসাধনী তৈরির বেশ কয়েকটি গুদামের সন্ধান মেলে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন কিশোর জনসন ব্র্যান্ডের গোলাপি রঙের খালি বোতল সংগ্রহ করে তাতে নকল লোশন ভরে বোতলটিকে সিলগালা করছে। নকল অন্য ব্র্যান্ডগুলোর লোশনের মধ্যে ছিল ডাভ, নিভিয়া ও ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি বডি লোশন ইত্যাদি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক ব্যবসায়ী বলেন, তারা নিজস্ব কারখানায় নকল লোশন তৈরি করে পরে চকের গোডাউনে সেগুলো ভরে মাল ডেলিভারি দেন। তবে কীভাবে এ লোশন তৈরি হয় এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভেজাল প্রসাধনী তৈরির ব্যবসায়ীরা ভীত হয়ে পড়েন এবং দ্রুত গা-ঢাকা দেন। অন্যদিকে চকবাজারে ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ফেয়ারনেস ক্রিমটি প্যাকেট ও কৌটা হুবহু নকল করে বিক্রি হচ্ছে বহুদিন ধরে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অসাধু চক্র চীন থেকে অর্ডার দিয়ে আসলের মতো দেখতে কিন্তু নকল ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি ক্রিম বানিয়ে বাজারে বিক্রি করছে।
যেভাবে তৈরি হচ্ছে নকল : সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নকল পারফিউমে সোডা-ফিটকিরিসহ নানা ধরনের সুগন্ধি মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। নকল শ্যাম্পুতে ব্যবহৃৃত হচ্ছে নিম্নমানের সাবানপানি ও সুগন্ধযুক্ত ডিশ ওয়াশ পাউডার। মোম নামক রং ও সুগন্ধযুক্ত বিশেষ কেমিক্যালে হাতেই তৈরি হয় নকল লিপস্টিক। এ ছাড়া পানিরঙের লিকুইড সোপের সঙ্গে কালো রং ও পরিমাণমতো সেন্ট মিশিয়ে সানসিল্ক ব্ল্যাক শ্যাম্পু তৈরি হয়। সাদা লিকুইড সোপ দিয়ে তৈরি হয় ক্লিয়ার শ্যাম্পু। স্পিরিট, নির্দিষ্ট সেন্ট ও গ্যাস মিশিয়ে তৈরি হয় বডি স্প্রে। এ ব্যাপারে অভিযানে জড়িত কয়েকজন ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, বাজারে ইউনিলিভার কোম্পানির ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলি’র আদলে ‘ফেজার অ্যান্ড লাভলি’, ‘ফুয়ার অ্যান্ড লাভলি’ ইত্যাদি নামে রং ফরসাকারী ক্রিম বিক্রি হচ্ছে। সাধারণত নকলের দায়ে মামলা এড়ানোর জন্যই একশ্রেণির ব্যবসায়ী এ ধরনের পণ্য বাজারজাত করেন। তবে এই ক্রিমগুলো বেশির ভাগই রাজধানী থেকে মফস্বল শহরগুলোতে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। এ ছাড়া অসাধু ব্যবসায়ীরা নামকরা কোম্পানির জিনিসগুলো হুবহু নকল করে তাতে ‘মেইড ইন জার্মানি’র জায়গায় ‘মেইড অ্যাস জার্মানি’র স্টিকার লাগিয়েও নকল প্রসাধনী তৈরি করছেন।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা জানান, অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে বিভিন্ন কোম্পানির প্রকৃত হলোগ্রাম পাওয়া যায়। হলোগ্রাম লাগানোর পর আর সন্দেহ থাকে না যে পণ্যটি নকল! র্যাবের মোবাইল কোর্ট সূত্রে জানা যায়, ভেজাল প্রসাধনীর মধ্যে চীনে তৈরি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল ত্বক ফরসাকারী ক্রিম, লোশন ও শ্যাম্পুর সংখ্যা বেশি। বিএসটিআইর এক কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ভেজাল প্রসাধনী তৈরিতে জড়িতদের লঘুদণ্ড দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার পর তারা পুনরায় একই কাজে ফিরে যান।

“তালাশ ” এর এক অভিজানে দেখা যায়, পাম ওয়েল এর সাথে একটু নারকেল তেল মিশিয়ে দিলে কারো আর বোঝার উপায় নেই সেটা নকল। অনেক জনকে এভাবে করে জিজ্ঞেস করার পর তারা বলেছেন এটা নারকেল তেল।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, নকল প্রসাধনী তৈরিতে মাত্রাতিরিক্ত এসিড, পানি, মোম, সুগন্ধি ও পারফিউম ব্যবহার করা হয়। এসব ত্বকের ভেতর ঢুকে লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। এতে ত্বকে মেছতা, ব্রণ, ফাঙ্গাশ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে এর ব্যবহারে সহজেই চর্মরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ভেজাল প্রসাধনসামগ্রীর প্রভাব সম্পর্কে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ড. আজিজুল হক বলেন, ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকের সাধারণ লাবণ্য নষ্ট হয়ে যায়। এর ব্যবহারে প্রাথমিকভাবে ব্যবহারকারীর কন্টাক্ট ডারমাটাইসিস হয়। এতে চামড়া লাল হয়ে যায়, যা পরবর্তী হসপড অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন তৈরি করে। ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারে স্কিন ক্যান্সার হওয়ারও আশঙ্কা থাকে। এর পাশাপাশি ত্বকে দানা, হাঁপানি, মাথাব্যথা ও চোখ জ্বালাপোড়াসহ অন্যান্য রোগের উপদ্রব হতে পারে।
এখন, এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি!
তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে স্মার্টফোন তো সবার কাছেই আছে। এই স্মার্টফোনে বারকোড স্ক্যানার নামিয়ে নিন। পন্য কেনার আগে বারকোডটি স্ক্যান করে নিন। পন্যটি উৎপাদনের তারিখ,এক্সপায়ার ডেট, এবং আদৌ পন্যটি রেকর্ডে আছে কিনা দেখে নিন।
যারা এসব প্রসাধনী ব্যবহার করছেন তারা দয়া করে এসব ব্যবহারের পরে ফেলে দিবেন না। ধ্বংস করে দেন। শ্যাম্পু,কন্ডিশনার, টুথপেস্ট এর টিউব কেটে ফেলুন। এতে দুইটা উপকার হবে,জিনিসগুলো বেশিদিন ব্যবহার করতে পারবেন,আর নকল রোধ পাবে।
সুস্থ স্বাভাবিক জীবন এর কামনা সবারই। আসুন সকলে মিলে নকল রোধ করি। levitra 20mg nebenwirkungen
সূত্রঃ http://www.bd-pratidin.com/editorial/2015/01/27/58995
নিকৃষ্ট মানুষ বলছেনঃ
achat viagra cialis franceআসল জিনিস কোথায় পাব তবে?