অপয়া (শুভ্র-শৈল্পী|||)
759
বার পঠিতক্লাসে ঢুকতেই মেয়েটার দিকে দৃষ্টি গেল আমার। কেমন বিষণ্ণ ভঙ্গীতে জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। যেন পৃথিবীর সমস্ত কর্মকান্ডে তার আগ্রহ শেষ। এখন শুধু হারিয়ে যাওয়ার অপেক্ষা!
আর তাতে বাধ সেধে বসে আছে এই বিরাট জানালা!
মেয়েটা বরাবরই চুপচাপ। নিজের মত একলা থাকা লোকেদের দলে। নির্ঝঞ্ঝাট। ঝামেলামুক্ত। কারো সাতে কিংবা পাঁচে নেই। ঝগড়া কিংবা আড্ডায় নেই। এমনকি তার উপস্থিতি পর্যন্ত অনেকের কাছে অজানা ছিল বহুদিন।
আমি তাকে আগে কখনোই লক্ষ্য করিনি। দরকার হয়নি আসলে। এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি,যাতে তার প্রতি কয়েকজোড়া চোখের দৃষ্টি পড়ে! আর সেই দৃষ্টি আটকে থাকে কিছুটা সময়! কিন্তু সেদিন ভিন্ন ঘটনা ঘটেছিল। এম্নিতে মেয়েটা ক্লাসে নিয়মিত। ক্লাস শুরু হওয়ার বেশ আগে হাজির হয়ে যায়। যাতে আলাদা মনযোগ না পড়ে,তার প্রতি। কিন্তু সেদিন…..
রাজন স্যার ক্লাস নিচ্ছিলেন। লেকচারের বিষয়বস্তু অত্যন্ত জটিল। দুর্বোধ্য। এবং কেউই কিছু বুঝতে পারছিলনা বলে,স্যার ভয়ানক রেগে ছিলেন। ঠিক সেই সময়,মেয়েটা কোত্থেকে যেন এসে হাজির হলো। রাজন স্যারের দিকে তাকিয়ে ঝড়ো কাকের মত কাঁপতে কাঁপতে বলল,
“স্যার আসব?”
ক্লাসের সবাই তীব্র উৎকন্ঠার সাথে অপেক্ষা করতে লাগল। ভাবল,এই বুঝি রাজন স্যার যাকে আড়ালে অবডালে “রাবণ স্যার ” বলে ডাকা হয়… তিনি প্রচন্ড ক্রোধে ফেটে পড়বেন! ক্লাসের বাইরে দাঁড়ানো মেয়েটার মনেও হয়ত একই ভাবনার উদয় হল। কারণ তাকে আগের চেয়েও বেশী ভীত লাগছিল। সে দেয়াল আঁকড়ে ধরে দাঁড়াল। চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল, এই বুঝি কেঁদে ফেলবে! আমার মায়া হল ভীষণ।
“ইয়াং লেডী, তোমার ধারণা আছে তুমি দশ মিনিট লেইট?”
“স্যার আমি……আমি ব্লাড ডোনেট করতে গিয়েছিলাম। একটা আর্জেন্ট কলে। আর ব্লাড ডোনেটের পর আমি অনেক উইক হয়ে যাই। তাই আসতে লেইট হয়েছে।”
সবাই একযোগে তার হাতের দিকে তাকালাম। বাম হাতের কনুইয়ের কাছে একটা চকচকে রিবন এইড। রাবণ স্যার অবাক চোখে দেখলেন তাকে। স্যারের দৃষ্টি অনেকটা কোমল এখন।
“কী নাম তোমার,মা?”
“শৈল্পী….রুবাইয়াৎ শৈল্পী। ”
সেদিন থেকে সবাই মোটামুটি লক্ষ্য করত শৈল্পীকে। রাবণ স্যারের মত একজন কাউকে নরম স্বরে “মা” বলে ডেকেছেন। ব্যাপারটা আর যাই হোক,চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু শৈল্পী নিজের মতই থাকে। একা,চুপচাপ, পেছনের সীটে জানালার পাশে। খেয়ালী কোন শিল্পীর ভাস্কর্য মনে করে ভুল হত বারবার! মনে হত,মেয়েটা চাপা কোন কষ্ট নীরবে বয়ে বেড়াচ্ছে। যে কষ্ট কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে ওকে।
একদিন একটু দেরী করে ক্লাসে আসায়,ওর পাশে বসার সুযোগ হল আমার। আমি সামনের সীটে আয়েশ করে বসার মত ছেলে। নিতান্ত বাধ্য না হলে,পেছনে বসিনা। স্যার আসতে দেরী করছিলেন দেখে,ওর সাথে আলাপ জমাতে চেষ্টা করলাম।
“হাই। আমি শুভ্র। ”
মেয়েটা মৃদু হাসল। বড়বড় চোখজোড়ায় অসম্ভব মায়া ধরে রেখেছে সে।
“হাই শুভ্র।”
“তুমি?”
মেয়েটা আবার হাসল। ছোটদের দুষ্টুমি দেখে বড়রা যে প্রশ্রয়ের হাসি হাসে,ঠিক সে হাসি।
“শৈল্পী। ”
“শৈল্পী ….. তা শৈল্পী, তুমি রোজ এত বোঝা নিয়ে ক্যাম্পাসে আসো কেন?”
শৈল্পী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। তাকে বিভ্রান্ত লাগছে কিছুটা।
“যেমন?”
“এইযে এত বিষণ্ণতা, মন খারাপ নিয়ে আসো। কোন মানে হয় এর? এখন হাসিখুশী থাকার……”
“শুভ্র….. স্যার এসেছেন ক্লাসে।”
কথাটা বলেই সে সামনে তাকাল। কিছুটা সরেও বসল আমার কাছ থেকে। এড়িয়ে যাওয়ার স্পষ্ট ইঙ্গিত। ব্যাপারটা ইগোতে লাগল। ফলে,বাকী সময়টুকু আর কথা হলো না আমাদের! আমি চেষ্টা করলামনা। আর ও তো নির্লিপ্ত!
এরপর থেকে ওকে এড়িয়ে যেতে লাগলাম। কিন্তু কোন এক অজানা আকর্ষণে শ্যামরঙ্গা মেয়েটার কাছে ফিরে আসতাম আবার। নিজের অজান্তেই অনুসরণ করতাম ওকে। ক্যান্টিন, লাইব্রেরী, ক্লাস এমনকি ওর বাসায় ফেরার পথেও।
শৈল্পী টের পেত সব। তবে রাগতনা। খুব হতাশ চোখে তাকিয়ে দেখত আমাকে। নীরব ভাষায় যেন বলত,”এমন করোনা!”
আমি ওর বড়বড় চোখের বিষণ্ণতায় ডুবে যেতাম। অসহায় লাগত নিজেকে। টের পেলাম,কোন সংজ্ঞায়িত কারণ ছাড়াই দুম করে ওর প্রেমে পড়ে গেছি! কিছু না ভেবে,না জেনেই!
একদিনের ঘটনা। আমি খুব অস্থির হয়ে শৈল্পীকে খুঁজছিলাম। আজ যাই ঘটুক,বলে ফেলব সব। অনুভূতিদের একটা নাম দরকার। স্বীকৃতি দরকার। পারছিলামনা আর লুকোচুরি খেলতে!
অথচ ওকে খুঁজে পাচ্ছিলামনা কোথাও। লাইব্রেরী, ক্লাস,ক্যান্টিন, ক্যাম্পাসের কোথাও না। কেউ বলতে পারছিলনা ও কোথায়!
অবশেষে হতাশ মনে বাসার পথ ধরলাম। আনমনে হাঁটছি। হঠাৎ দেখি রাস্তার অপজিটে একটা রিকশা থেকে নামছে ও। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। তারপর ওর নাম ধরে চেঁচিয়ে ডাকলাম। নিজের অজান্তেই ছুটছি। দ্রুত পৌছাতে চাইছি ওর কাছে। অদ্ভুত একটা অনুভূতি হল আমার। মনে হল,এক্ষুণি ওর কাছে না পৌছাতে পারলে দমবন্ধ হয়ে মারা যাব। শৈল্পীকে দেখলাম আতংকিত চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। চীৎকারের ভঙ্গীতে হা হয়ে যাচ্ছে মুখ। তারপর একটা ভয়ানক ধাক্কা। আমি ছিটকে পড়লাম ওর পায়ের কাছে। ব্যাথায় সব অন্ধকার হয়ে আসছিল। রক্তের নোনতা সাধ টের পেলাম মুখে। জ্ঞান হারানোর পূর্বমুহূর্তে শুনতে পেলাম,শৈল্পী আমার নাম ধরে চেঁচিয়ে কাঁদছে। সীমাহীন হাহাকার সে কান্নায়। আমি অদ্ভুত এক শূণ্যতা নিয়ে চোখ বুজলাম। অবচেতন মনের কোথাও এক তৃপ্তিবোধ। মেয়েটা আমার জন্য অন্তত কাঁদছে তো!
আজ প্রায় একসপ্তাহ হতে চলল,আমি হাসপাতালে। এর মাঝে শৈল্পী একবারও দেখতে এলোনা। ও এত নিষ্ঠুর হতে পারে,আমার কল্পনায় ও ছিলনা! চোখ বন্ধ করে ঐদিনের ঘটনাটা ভাবলাম। আমি ওকে কাঁদতে দেখেছিলাম। দেখেছিলাম ধীরে ধীরে স্থির হতে চলা আমাকে আঁকড়ে ধরে,ও চেঁচিয়ে কাঁদছে। আর কিছু মনে নেই আমার। আম্মুর কাছে অনেকভাবে জানতে চাইলাম,বড়বড় চোখের বিষণ্ণা কোন মেয়ে আমাকে দেখতে এসেছিল কিনা! আম্মুর প্রতিবারই না বলেছেন। কখনও শব্দ করে,কখনও বা শুধু মাথা নেড়ে। ইশারায়।
যুক্তি এবং আবেগের মাঝামাঝি বন্দী ও নিরুপায় মনে হল নিজেকে। সিদ্ধান্ত নিলাম,কাল ক্যাম্পাসে যাব। ওকে মুখোমুখি কিছু প্রশ্ন করার আছে। আমার জানা দরকার,ও এমন কেন? কী সমস্যা ওর? কেন ও হাসিখুশী,স্বাভাবিক হতে পারেনা?
গলা খাঁকারির শব্দে ভাবনায় ছেদ পড়ল আমার। তাকিয়ে দেখি,তানিয়া আপু দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি এখানকার ডাক্তার। এবং আমার কাজিন। আমাকে তাকাতে দেখে হাসিমুখে বললেন,
“বাসায় ফিরছিস আজ?”
আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালাম। হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই বললাম,
“আমাকে হাসপাতালে এনেছিল যে,সে আর আসেনি?”
“কে,শৈল্পী?”
“তুমি চেনো ওকে!!! কীভাবে?”
“রিল্যাক্স, ঐদিন পরিচয় হয়েছিল। ওই তো তোকে এক ব্যাগ ব্লাড ডোনেট করেছে!”
আমি উদ্বিগ্ন স্বরে জানতে চাইলাম,
“তারপর? একা বাড়ি ফিরল? ও ব্লাড ডোনেটের পর অনেক উইক হয়ে যায়। তুমি একা ছাড়লে কেন?”
“জেদি মেয়েতো। আমার কেবিনে বসে কিছু একটা লিখল বেশ সময় নিয়ে। আমি ভাবলাম,ডিউটি শেষে ফেরার পথে ওকে ড্রপ করব। কিন্তু তার আগেই সে চলে গেল। অবশ্য তোর জন্য একটা চিঠি রেখে গেছে। বলেছে,তোর ডিসচার্জের দিন তোকে দিতে।”
তানিয়া আপু তার এপ্রনের পকেট থেকে একটা সাদা খাম বের করে,আমার হাতে ধরিয়ে দিলেন।
“লুকা,এটা। ফুপি দেখলে,নিয়ে নিতে পারে!”
“মানে?”
“ফুপি ওকে তোর কাছে ভিড়তে দেয়নি। এমনকি ডোনার পাওয়া যাচ্ছে না দেখেও ওকে ব্লাড ডোনেট করতে দিচ্ছিল না। মেয়েটা তোর সামনে পড়বেনা আর,এমন কথা দেয়ার পর…….. বাদ দে। কাজ আছে আমার। যাইরে!”
কথাটুকু বলেই তানিয়া আপু বেরিয়ে গেলেন। আমি হতভম্বের মত উনার গমন পথের দিকে তাকিয়ে রইলাম।
প্রিয় শুভ্র,
যেহেতু চিঠিটা তুমি পড়ছো,আশা করছি এই মূহুর্তে তুমি সুস্থ। আমার উপর রাগ রেখোনা। তুমি যেটা করছো,করতে চাইছো সেটা ভুল। আমার জীবনে আসলে কেউ নিরাপদে থাকেনা। ভাল থাকেনা। কেন,জানো? আমি একটা অপয়া! সেই জন্ম থেকেই।
আমার জন্মের পরপরই আম্মুনি চলে গেলেন। নরমাল ডেলিভারি। আমরা দুজনই সুস্থ। তবু আম্মুনি হারিয়ে গেলেন। কোন অসুখ নেই,ইনফেকশান নেই। কিছুনা। তবু! posologie prednisolone 20mg zentiva
খালামণি কোলে তুলে নিলেন আমাকে। তার বিয়ের প্রস্তাব আসা বন্ধ হয়ে গেল। অবশেষে অনেকটা বাধ্য হয়েই নানাভাই আব্বুর সাথে বিয়ে দিলেন খালামণিকে। খালামণি হয়ে গেলেন,আমার আর রাহাপ্পুর ছোটাম্মু।
আমার বয়স যখন দশ,তখন একদিন আমার স্কুল টিফিন নিতে ভুলে গিয়েছিলাম। ছোটাম্মুর মনে পড়তেই,আমাকে তা এগিয়ে দিতে ছুটলেন তিনি।
তাড়াহুড়ায় সিঁড়ি থেকে পড়ে মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা পেলেন তিনি। পরবর্তী এক সপ্তাহর মাঝে আমি আকাশে নতুন একটা তারা খুঁজে পেলাম।
আমরা আগে চট্টগ্রামে থাকতাম। ছোটাম্মু মারা যাওয়ার পর,আব্বু আমাকে আর রাহাপ্পুকে নিয়ে চলে এলেন ঢাকায়। এখানে স্থায়ী হলেন। কারণ,ওখানে সবাই আমাকে দুর্ভাগা, অপয়া এসব বলে ডাকত। আব্বু সহ্য করতে পারেননি।
আমি পরিস্থিতি সবটুকু না বুঝলেও,অনেকটা বুঝে ফেললাম। উপলব্ধি করলাম,আমার একা থাকা উচিৎ। আব্বুকেও এড়িয়ে চলতে লাগলাম অনেকটা। পাছে,আমার দুর্ভাগ্য উনাকেও বিপদে ফেলে! শুধু রাহাপ্পুকে এড়াতে পারতামনা। বোনটা আমার পাশে ছায়া হয়ে ছিল। সারাজীবনই হয়ত থাকত! যদিনা..
একদিন স্কুল থেকে ফিরে,রাহাপ্পু ঘর অন্ধকার করে শুয়ে ছিল। তার নাকী প্রচন্ড মাথাব্যথা। রাতের দিকে ব্যাথা আরো বাড়ল। আব্বু ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন তাকে। তারপর কত টেস্ট। শুনলাম,রাহাপ্পুর বড় একটা অসুখ হয়েছে। ডাক্তাররা বলল,লাস্ট স্টেজ। কিছু করা যাবেনা। আব্বু উদ্ভ্রান্তের মত তবু অনেক ছোটাছুটি করলেন। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। কিছুই করতে পারলামনা। বারবার মনে হল,এসবের জন্য আমি দায়ী। আমি একটা দুর্ভাগা। রাহাপ্পুর হাত ধরে চুপচাপ বসে থাকতাম সারাদিন। ও আমার সামনে শেষ হচ্ছিল। খুব দ্রুত। কত প্রার্থনা করলাম লুকিয়ে!
“আল্লাহ্, তুমি আমার বোনটাকে নিওনা। তুমি আমাকে মেরে ফেলো। ওকে রেখে যাও।”
একদিন রাহাপ্পু আমাকে ডেকে বলল,
“শোন মুনি,আজ স্বপ্নে আম্মুনিকে দেখলাম। তুই জানিস,তোকে কেন এত ভালবাসি? তুই পুরোপুরি আম্মুনির কার্বনকপি রে!
নিজেকে কখনো একা ভাববিনা। আমি কিন্তু তারা হয়ে দেখব। ফাঁকি দেয়ার কথা ভুলেও ভাবিসনা! আমি শুকতারা হব তো। জানিস,শুকতারা দিনের বেলাতেও থাকে? আল্লাহ্কে বলব,আমাকে শুকতারা বানাও। আমি আমার মুনিটাকে দেখি!”
আমি হাউমাউ করে কাঁদলাম,রাহাপ্পুকে জড়িয়ে ধরে। কিছুক্ষণ পর টের পেলাম,আমাকে ধরে থাকা ওর হাতটা নিশ্চল হয়ে পড়ে যাচ্ছে!
সময় যাচ্ছিল। নিঃসঙ্গ একটা জীবন বাঁচছিলাম আমি। ধীরে ধীরে স্কুল-কলেজের পাট চুকিয়ে, এডমিশন টেস্টের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই সময় আমার জীবনে কেউ একজন এলো। আবীর! আমাদের কোচিং এর একজন লেকচারার। সেখানেই পরিচয়। জানিনা কীভাবে,আমার জগৎ অনেকটা দখল করে নিল সে। অনেকটা। আমি বাঁচতে শিখলাম। অন্য আর পাঁচ দশটা স্বাভাবিক মেয়ের মত। চোখে তখন কত্তো স্বপ্ন! মনে হত,সৃষ্টিকর্তা আমার প্রতি সদয় হয়েছেন। অধিকার দিচ্ছেন স্বাভাবিক জীবনের।
কিন্তু মানুষ যা ভাবে,তা কি হয়…শুভ্র?
হয়না!
অন্তত আমার জন্য হয়নি! একদিন হুট করেই আবীরের বাসা থেকে বিয়ের প্রস্তাব এলো। ওর স্কলারশিপ হয়েছিল। তাই বাসার সবাই চাইছিলেন ও দেশের বাইরে যাওয়ার আগে আমাদের বিয়েটা হয়ে যাক। আমি তখন মাত্র ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আপত্তি করার কারণ দেখিনি।
অতএব বিয়ে হয়ে গেল আমাদের। কাজী অফিসে। আর সৃষ্টিকর্তা আমাকে আরেকবার মনে করিয়ে দিলেন,স্বাভাবিক জীবনযাপনের অধিকার নিয়ে পৃথিবীতে আসিনি আমি! আমি যোগ্যা নই স্বাভাবিক জীবন বাঁচার!
একরাতে প্রচন্ড দাঁতব্যাথা করছিল আমার। আবীরের সাথে ঠিকভাবে ফোনে কথা বলতে পারিনি। ও বুঝল আমি খুব অসুস্থ। আমাকে দেখতে অস্থির হয়ে বাসা থেকে বেরুলো সে। দুঃশ্চিন্তার ফেরে টেরই পায়নি,কখন যে তার প্রিয় বাইকটা সোজা ট্রাকের নিচে চলে গেছে। তাকে সহই।
আমি জানতে পারলাম পরদিন সকালে। ছুটে গেলাম। আবীরের পাশে বসে ছিলাম অনেকটা সময়। কান্না আসছিলনা আমার। আসলে শকটা সামলে উঠতে পারিনি তো! ওর সাথে কাটানো সময়গুলো মনের পর্দায় একের পর এক হাজিরা দিচ্ছিল। ধীরে ধীরে ওর মুখের উপর থেকে সাদা কাপড়টুকু সরাতে লাগলাম। এসময় কে যেন চেঁচিয়ে বলল,
“মেয়েটা নিশ্চয়ই অপয়া। নয়ত বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় এই অভিশাপ কেন আসবে আমাদের উপর?”
তারপর ওরা সবাই মিলে আমাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দিল। কতবার বললাম,শুধু একবার দেখব ওকে। শুধু একবার। কেউ শুনলনা। আবীরকে আমি শেষ দেখা দেখতে পারলামনা,শুভ্র!
তারপর তুমি! কেন এমন করলে,শুভ্র? তুমি জানো,আমার কতটা অসহায় লাগছিল। কীভাবে তোমাকে নিয়ে হাসপাতালে এলাম,বলতে পারবনা। তীব্র অপরাধবোধ আমার সমস্ত অনুভূতি অবশ করে দিচ্ছিল!
আবীরের আম্মা তোমার মামী হন,তাইনা? উনার সাথে দেখা হল এখানে। উনি তোমার মাকে বলছিলেন, তোমার এই অবস্থার জন্য আমি দায়ী! কিন্তু বিশ্বাস করো শুভ্র, আমি চাইনি আমার দুর্ভাগ্যের কদর্যতা তোমাকে স্পর্শ করুক। আমি চাইনি,তোমার সাথে খারাপ কিছু ঘটুক। চাইনি আমার জন্য আকাশে আরেকটা তারা বাড়ুক!
আমাকে খুঁজোনা। বাড়িটা বিক্রি করে দিয়েছি আরও আগে। এমন কোথাও চলে যাব যেখানে,আমার দুর্ভাগ্যের ফেরে আর কেউ হারাবেনা! কেউ নতুন করে স্মৃতিদের জাগাবেনা! আমি যে ওগুলো বইতে বইতে ক্লান্ত!
আমি একটা অপয়া,শুভ্র।
সবাই বলে।
এখন আমি নিজেও বলি।
ভুলে যেও।
ভেবো,তোমার আকাশের একটা মরে যাওয়া তারা আমি। দুর্ভাগ্যক্রমে,সেই তারার খসে পড়ে যাওয়া তুমি দেখে ফেলেছো! এখন দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যাও।
ইতি
এক অপয়া.. all possible side effects of prednisone
পরিশিষ্ট : ইদানীং ঢাকার রাস্তায় রাতেরবেলা এক উশকো খুশকো চুলো তরুণকে দেখা যায়। যে কিনা একমনে খসে পড়া তারা খোঁজে। তবে বেচারা জানেনা,ঠিক একই সময়ে একইভাবে দূরে কোথাও…….. বড়বড় চোখের বিষণ্ণা এক তরুণী আকাশ দেখে। ফিসফিসিয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করে,
“শুভ্র ভাল আছে,তাইনা?”
(সমাপ্ত)
শ্রাবনের রক্তজবা বলছেনঃ
এতো কষ্টের কেন !
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
জানিনা তো!
তারিক লিংকন বলছেনঃ
আমারও একই প্রশ্ন! বেশী স্যড হয়ে গেছে! তবে লিখেছেন দারুণ। আপনার গল্প লিখনি আসলেই অনবদ্য… অনেক দিন পর লিখলেন বোধহয়
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
হুঁ,অনেকদিন পরই লেখলাম।
ধরন বদলে গেছে নাকী?
তারিক লিংকন বলছেনঃ
না না ধরণ ঠিক আছে কিন্তু বেশী স্যাড হয়ে গেছে… viagra vs viagra plus
জন কার্টার বলছেনঃ
দারুণ! চমৎকার লিখেছেন…. acne doxycycline dosage
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
ধন্যবাদ,জন কার্টার।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
ধুর মন খারাপ হয়ে গেল!! আমিই অভাগা এমনেই মন খারাপ তার উপর এই লেখা।
আরও বেশি মন খারাপ করে দিলেন !!
আচ্ছা অপয়া এর পুং লিঙ্গ কি ?আ side effects of drinking alcohol on accutane
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
বলতে পারছিনা,দুরন্ত জয়!
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
আমি যদ্দুর জানি, এটা কমন জেন্ডার।
মিনহাজ শিবলী বলছেনঃ
গল্প ভাল লাগল। তবে কোন মানুষকে অপয়া বলতে নারাজ আমি। can levitra and viagra be taken together
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
পারভেজ এম রবিন বলছেনঃ
Fantastic as always.
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
থ্যাংকু ছোট
ইমতিয়াজ আজাদ বলছেনঃ
clomid over the counterঅসাধারণ লিখেছেন।
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
ধন্যবাদ।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
অহ! আচ্ছা দুরত্ব টা কত কিমি?
অপার্থিব বলছেনঃ
আপনার লেখনী অসাধারন কিন্ত গল্পটিকে আমার কাছে অতিমাত্রায় সিনেমাটিক বলে মনে হয়েছে।
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
ওহ
রবিন রেজোয়ান বলছেনঃ
অনেক ভালো লেগেছে।
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
ovulate twice on clomidধন্যবাদ।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
glyburide metformin 2.5 500mg tabsচমৎকার লেগেছে আপু…
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ synthroid drug interactions calcium
ধন্যবাদ।
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ
cialis new c 100চমৎকার। সিনেমাটিক হলেও আমার ভালো লেগেছে বরাবরের মতই। কিপিটাপ।
সুজানা আবেদীন সোনালী বলছেনঃ
ধন্যবাদ