একজন মানজারুল ইসলাম রানা এবং ইতিহাস বদলে দেওয়া এক দ্রোহের গল্প…
555
বার পঠিত১৯৮৪ সালের ৪ জানুয়ারি খুলনায় জন্মগ্রহন করা মানজারুল ইসলাম রানার বাঙলাদেশ দলে টেস্ট অভিষেক ঘটে ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তার আগে ঘটে ওয়ানডে অভিষেক। ৭ নভেম্বর ২০০৩ মোহাম্মদ রফিকের ইনজুরির কারনে তিনি সুযোগ পান জাতীয় দলে। বাংলাদেশের একমাত্র বোলার হিসেবে জীবনের প্রথম ওভারের ৩য় বলে ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভনকে স্রেফ বোকা বানিয়ে যখন তিনি আউট করেন, তখন তার বয়স মাত্র ১৯ বছর। সেই থেকে শুরু। ধীরে ধীরে একজন পারফেক্ট অলরাউনডার হয়ে উঠতে থাকেন মানজার। তৎকালীন বাংলাদেশ দলে রফিককে সাপোর্ট দেবার মত একজন কার্যকরী বাঁহাতি স্পিনার এবং একই সাথে লেটঅর্ডারে প্রয়োজনের সময় দ্রুত রান তোলার দক্ষতা থাকায় কোচ ডেভ হোয়াটমোরের ভরসার জায়গায় পরিনত হন তিনি। সেটা এক বীরত্বে পরিনত হয় ২০০৫ সালের জিম্বাবুয়ের সাথে। বাংলাদেশ সফরে এসে জিম্বাবুয়ে প্রথম দুটো ওয়ানডে জিতে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছিল ২-০ ব্যবধানে। রানা ৩য় ওয়ানডেতে ৩৪ রানে ৪টি এবং ৪র্থ ওয়ানডেতে ৩৬ রানে ৪তি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন এবং বাংলাদেশকে সিরিজে টিকিয়ে রাখেন। কিন্তু ২০০৬ সালে পরপর দু-তিনটি ম্যাচ একটু ব্যাডপ্যাচ যাওয়ায় রানা দল থেকে বাদ পড়েন। কিন্তু যেহেতু তিনি একজন টাইগার, তাই ঠিক টাইগারের মতই পারফরম করতে থাকেন জাতীয় লিগে এবং প্রথম শ্রেণী ক্রিকেটে। ইংল্যান্ডে এ দলের হয়ে ব্যাটেবলে অসাধারন পারফরমেন্স, জিম্বাবুয়ের সাথে ঘরের মাঠে এ দলের ক্যাপ্টেন হয়ে চমৎকার পারফরমেন্স এবং ২০০৬-২০০৭ য়ে খুলনা বিভাগীয় দলের হয়ে প্রায় ১০টা ফার্স্টক্লাস ম্যাচে প্রায় ৪০ গড়ে প্রায় পৌনে ছয়শ রান এবং ১৮ গড়ে ৩৪টি উইকেট নিয়ে সবমিলিয়ে কড়া নাড়ছিলেন জাতীয় দলের দরজায়। কিন্তু নির্বাচকরা শেষপর্যন্ত তাকে ২০০৭ বিশ্বকাপের দলে রাখলেন না। আর বিধাতাও উদ্ভট খেলায় বড় অদ্ভুতভাবে নির্ধারণ করলেন তার নিয়তি, বাংলাদেশের নিয়তি… ventolin evohaler online
প্রচণ্ড জ্বরে সারাদিন প্রায় অচেতন হয়ে থাকা ছেলেটা তখন মাত্র বহু কসরত করে মাথাটা সামান্য তুলে বালিশে হেলান দিয়ে বসেছে মাত্র। আগামীপরশু তার এসএসসি পরীক্ষা, তাও আবার গনিত। বহু সাধ্যসাধনা করে তার মা শেষ পর্যন্ত তাকে মুখে তুলে কিছু খাইয়ে দিচ্ছেন। হঠাৎ করেই টিভির খবরের দিকে তাকিয়ে সে হঠাৎ করেই শক্ত হয়ে গেল। নির্বাক, নিস্পলক হয়ে তাকিয়ে রইল স্ক্রিনের দিকে। তার মা তার দৃষ্টি অনুসরন করে টিভির খবরের দিকে তাকিয়ে বোকা হয়ে গেলেন। খবরটা আসলে বোকা হবার মতই ছিল। এবং বড়ই অবিশ্বাসযোগ্য… শাদা ঝকঝকে দাঁতের অসম্ভব সুন্দর এক চিলতে হাসি মুখে ঝুলিয়ে রাখা শ্যামলা বর্ণের সেই মানজারুল ইসলাম রানা নাকি আর নেই…
ছেলেটা বড় অবাক হয়। অবাক হয় বিধাতার অতি উদ্ভট খেলা দেখে। খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে বিসিবি চ্যালেঞ্জ কাব কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ম্যাচে প্রথমে দুটো উইকেট নিয়ে এবং পরে ৬৩ রান করে নিজের দল তরুন বয়রা সংঘের জয়ে মূল অবদান রেখেছিলেন মানজার। খেলা শেষে দুটি মোটরসাইকেলে দুপুরের খাবার খেতে বেরিয়েছিলেন চার ক্রিকেটার। একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মানজারুল রানা এবং তার বন্ধু ক্রিকেটার সাজ্জাদুল হাসান সেতু। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন সেতু। মানজারুল বসেছিলেন পেছনে। আরেকটি মোটরসাইকেলে ছিলেন নাহিদুল হক শাওন ও মোহাম্মদ সেলিম। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চুকনগর বাজারের আব্বাসের হোটেলে যাওয়ার পথে কার্তিকডাঙ্গা এলাকার বালিয়াখালী ব্রিজের কাছে মোড় ঘোরার সময় হঠাৎ করেই মানজারুলদের মোটরসাইকেলের একটি চাকা ফেটে যায়। এতে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ব্রিজের একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। খুলনা-যশোর সড়কের ওপর ছিটকে পড়ে মোটরসাইকেলটি। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মিনিবাস ও একটি অ্যাম্বুলেন্স মানজারুল এবং সেতুকে চাপা দিয়ে চলে যায়। বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় টাইগার মানজার থেতলে যাওয়া মাথা নিয়ে পড়ে থাকেন মহাসড়কের মাঝে। প্রানটা বেরিয়ে গেছে বহু আগেই… ছেলেটা শুধু খবরগুলো শোনে আর শিশুর মত হুহু করে কাঁদতে থাকে। এ কেমন বিচার স্রস্টার?? এ কেমন নিয়তি!!
অসম্ভব ভয়াবহ এক দুঃস্বপ্ন দেখে ঘুমে ভেঙ্গে যায় ছেলেটার। দিনটা ১৭ই মার্চ ২০০৭… গত দুদিন ধরে জ্বর একটুও কমেনি। ওঠানামা করেছে ১০৪-১০৫য়ের মধ্যে। কিন্তু তবুও তার মনের কোনে একটা ছোট্ট আশা, যদি কোনভাবে গতকাল শোনা খবরটাও একটু আগে দেখা দুঃস্বপ্নের মত অবাস্তব হয়… দরজায় কড়ার শব্দে সম্বিত ফেরে ছেলেটার। পত্রিকা দিয়ে যায় হকার। পত্রিকাটা হাতে দৌড়ে যায় সে মায়ের কাছে। মা ই বলুক, আসলে সবই দুঃস্বপ্ন ছিল। কিন্তু তার আশার শেষ রশ্মিটা দপ করে নিভে যায় যখন তার মা তাকে বুকে টেনে নিয়ে বলেন, যে চলে যাবার, তাকে তোঁ চলে যেতেই হবেরে পাগল, আমি বা তুই তাকে ঠেকিয়ে রাখব কিভাবে? কথাগুলো শুনে তার ভেতরটা স্রেফ ফাঁকা হয়ে যায়… কান্নার শেষ ক্ষমতাটুকুও হারিয়ে ফেলে ছেলেটা। ছেলেটার কাছ থেকে অনেক অনেক দূরে ওয়েস্টইন্দিজে থাকা আরেকজন ব্যক্তিও খবরটা পেয়ে ঠিক একইভাবে কান্নার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। মানজারের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু কৌশিকের বুকটাও ফাঁকা হয়ে যায় খবরটা পেয়ে। এক অকল্পনীয় যন্ত্রণার স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে যায় পুরো বাংলাদেশ দলকে… সে যন্ত্রনার কোন সীমাপরিসীমা নেই… কোনকালে ছিল না…
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় আম্মু খোঁজ নিতে আসেন ছেলেটার। কাল যে তার এসএসসি পরীক্ষা, তাও আবার গনিত। কিন্তু থার্মোমিটারে জ্বর কোনোভাবেই ১০০য়ের নিচে নামছে না। হঠাৎ করে ছেলেটার মনে হয়, আজকে তোঁ ১৭ই মার্চ, আজকে তোঁ বাংলাদেশের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। পলকের মাঝে রুমের চিত্র পাল্টে যায়। কোন এক অজানা শক্তিতে ছেলেটা উঠে বসে, টিভির প্লাগটা সকেটে ঢুকাতে যেয়ে তাড়াহুড়ায় শর্টসার্কিট করে ফেলার উপক্রম করে। আর তারপর বিছানায় এসে বসে জ্যামিতি বইটা খোলে, আর একটা কাঁথা চাদরের মত মুড়ি দিয়ে জুত করে বসে। এরমাঝে ছোটবোন হঠাৎ করেই রুমে ঢুকে স্রেফ স্পীকার হয়ে যায়। যে ছেলে জ্বরের চোটে তিনদিন মাথা তুলতে পারেনি বিছানা থেকে, সে আগামীকাল গনিত পরীক্ষা সামনে রেখে খেলা দেখতে বসলে আসলেই স্পীকার না হয়ে কোন উপায় নাই। বোনের মুখ থেকে চিৎকার হয়ে বেরিয়ে আসা <>আম্মু <> ডাকটা বহু সাধ্যসাধনা করে থামিয়ে এবং দুটো চকবার ঘুষ দেবার চুক্তিতে উপনীত হয়ে শেষতক ছেলেটা এ যাত্রায় রক্ষা পায়। শর্ত হল যখনই আম্মু এরুমে আসবে কিংবা আসার ভাব দেখা যাবে, তখনই হাত তুলে সংকেত দিতে হবে। যেন সাথে সাথে রিমোরট টিপে টিভি বন্ধ করে দেওয়া যায়। স্কোয়াড দেখে ছেলেটার ভেতরে একটা যন্ত্রণা ঝাঁপটা দিয়ে যায়। আজ যদি মানজার এই স্কোয়াডে থাকত… বিশ্বকাপে যেকোনো একটি বড় দলকে হারাবে বাংলাদেশ সেই স্বপ্ন আর দশজন মানুষের মতো মানজারেরও ছিল। বিশ্বকাপের আগে দেশ ছাড়ার সময় অধিনায়ক হাবিবুল বাশারকে বলেছিলেন, ‘সুমন ভাই, একটা ম্যাচে কিন্তু জিততেই হবে। ম্যাচের আগের রাতে টিমমিটিংয়ে মানজারের সেই শেষ ইচ্ছাটা ১১ জন টাইগারের হয়ে কৌশিকের গলা দিয়ে বজ্র হয়ে বেরোল। ১১ জন টাইগার বুকের ভেতর বারুদ জ্বেলে নামল মাঠে… সে বারুদের নাম, online pharmacy in perth australia
<>ধরে দিবানি <>
১০৪ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে খেলতে নামা কৌশিকের ২য় ওভারের প্রথম বলটা যখন ভিরেন্দর ষেভাগের ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্পগুলো স্রেফ ধ্বংস করে দিল, তখন হঠাৎ ছেলেটা অবাক হয়ে নিজেকে আবিস্কার করল খাট থেকে তিন ইঞ্চি উপরে, তার চিৎকারে ততক্ষনে ভয় পেয়ে তার ছোট বোন দৌড়ে চলে এসেছে তার ঘরে। সঙ্গে সঙ্গে সে বিপদটা বুঝল, অফ করে দিল টিভিটা এবং ঠিক তার পাঁচ সেকেন্ডের মাথায় হাজির হলেন তার মা। তিনি তোঁ যথারীতি প্রথমেই স্পীকার হলেন দরজার কাছে এলোমেলো ভঙ্গিতে কাঁথা পড়ে আছে দেখে এবং কিছুক্ষন পর রাষ্ট্রপতি হলেন যখন তিনি দেখলেন পুত্রধনের সামনে জ্যামিতি বই খোলা কিন্তু বইটা আছে উল্টো অবস্থায় এবং টিভির রিমোরটখানা বিছানার এক কোনায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। বহুকষ্টে মাকে বোঝানো গেল যে, ঘরে কোন সুনামি হয় নাই এবং ছেলেটা তেলাপোকা দেখে এভাবে চিৎকার দিয়েছে…
মা চোখে রাজ্যের সন্দেহ নিয়ে তাকে মন দিয়ে সম্পাদ্য-উপপাদ্য গুলো পড়তে বললেন এবং রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। ছেলেটা মা বের হবার পলকের মধ্যে লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নামল এবং টিভিটা সুইচ টিপে অন করল(কেননা রিমোরটটা কোনউপায়ে টিভির উপর থেকে খাটের চিপায় গেল, তার কোন যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা ছেলেটা দিতে পারে নাই। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে ওইটা মা নিয়ে গেছেন।) টিভিটা খোলা মাত্র আরেকটা চিৎকার বেরিয়ে এসেছিল, কিন্তু ছেলেটা সময়মত ব্রেক কষে চিৎকারটা থামিয়ে ফেলল। কেননা টাইগার কৌশিকের অসাধারন আগুনঝরা বোলিংয়ে রবিন উথাপ্পাও ষেভাগের পথ ধরে ড্রেসিংরুমে ফিরে গেছেন… তারপরের ওভারে দা ওয়াল খ্যাত রাহুল দ্রাবিড়ের বিরুদ্ধে যখন কৌশিক এলবির জোরালো আবেদন তুলল, তখন বাংলাদেশ দলের শরীরী ভাষা দেখে মনে হচ্ছিল, ইতিহাসের সব সেরা ক্রিকেটাররা আসলেও আজ টাইগারদের থামানোর সাধ্য কারোর নেই। তার প্রমান পাওয়া গেল একটু পরেই। রাজ্জাকের একটা নিরীহদর্শন আরম বলে স্রেফ বোকা বনে শচিন এবং রফিকের একটা অনন্যসাধারণ ডেলিভারিতে দ্রাবিড় যখন প্যাভিলিয়নে ফিরলেন, তখন ভারত কাঁপছে চার উইকেটে ৭২ রানে… prednisone 10mg dose pack poison ivy
মজার ব্যাপারটা হল, সবকিছু ভুলে দুবারই ছেলেটার গলা দিয়ে চিৎকার বেরিয়ে এসেছিল। এবং দুবারই সে বাথরুমে গিয়ে চিৎকার করে এসেছে যেন কেউ শুনতে না পায়… তারকিছুক্ষন পরেই রাত্রের খাবারের সময় হল। আম্মু বরাবরের মতই পাশে বসে মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তার উসখুশানি আর যায় না। ভাবটা এমন যেন তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে, আর জ্বর অবস্থায় খাওয়াদাওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ এক অত্যাচার… :হয়রান: diflucan 150 infarmed
অবশেষে অত্যাচার শেষ হল, আম্মু ঘর থেকে বের হওয়া মাত্র টিভিটা ছাড়তেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছেলেটার মাথায় হাত চলে গেল। কেননা সৌরভ গাঙ্গুলি আর যুবরাজ সিং ততক্ষনে ৮০+ একটা পার্টনারশিপ দিয়ে ক্রিজে ঘাঁটি গেড়ে বসেছেন। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল তারা আপাতত পাল্লা দিয়ে চার আর ছয় মারছেন। সৌরভের একটা ছয় পড়েছিল জাস্ট বাউনডারি লাইনের ওপাশে, সেটা দেখে যুবরাজ টাইগার রফিকের বলকে পাঠালেন স্টেডিয়ামের দুইতলায়। কিন্তু টাইগার যে আহত হলে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠে। তার প্রমান পাওয়া গেল পরের ওভারেই। টাইগার রাজ্জাকের একটা স্কিড করে আসা ষ্ট্যাম্পের বল আগের ভঙ্গিতে স্ট্যান্ডে পাঁঠাতে গিয়ে যুবরাজ ধরা পড়লেন শর্ট ফাইন লেগে টাইগার বাশারের হাতে। ছেলেটা বহুকষ্টে চিৎকার আটকাল। কিন্তু তার পরের ওভারে যখন রফিকের সামান্য ঝুলিয়ে দেওয়া একটা বলে সৌরভ সামনে এগিয়ে মারতে গিয়ে রাজ্জাকের হাতে ধরা পড়লেন, তখন আর সে আনন্দ আটকাতে পারল না। ফলাফল আগের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবং এইবার আম্মুকে বোঝাবার মত আর কোন অজুহাত তার মাথায় এল না। মা তার অতি উদ্ভট পাগলামির সাথে পরিচিত ছিলেন, কিন্তু সে যে জ্বর গায়ে ম্যাট্রিক পরীক্ষা সামনে রেখে এভাবে খেলা দেখতে বসতে পারে, সেটা হয়তো তিনিও ভাবেন নি। টিভির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেললেন মা, টিভিটা অন্যরুমে নিয়ে যাবার জন্য কাজের ছেলেটাকে নির্দেশ দিলেন।। ছেলেটা প্রথমে কিছুক্ষন হতভম্ব হয়ে রইল, তারপর আছাড়িপিছাড়ি করে চিৎকার করতে করতে ঘরে ছোটখাট একটা ঝড় বইয়ে দিল। কিছুক্ষন পর জ্বরের ঘোরে মাথা ঘুরে পড়ে গেল। মা তাকে শুইয়ে দিলেন বিছানায়…
রাত তখন বারোটা। হঠাৎ করেই ছেলেটার ঘুম ভেঙ্গে গেল। মাথার উপর যেন একটা পাহাড় চাপিয়ে দিয়েছে কেউ, এমন ভার মাথাটা। খুব সাবধানে চোখটা খুলে বুঝতে পারল, আম্মু টিভিটা অন্যরুমে নিয়ে যাননি। আনন্দের চোটে লাফ দিয়ে উঠে দৌড়ে টিভির কাছে এসে সে জ্যাক খুঁজতে লাগলো। কিন্তু আফসোস, জ্যাকটা যে আম্মু লুকিয়ে রেখেছেন পাশের শোকেসের চিপায় আর সে লাইট জ্বালাতে পারছে না,কারন লাইট জ্বালালেই আম্মু টের পেয়ে যাবেন। প্রায় ২০ মিনিট অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে সে জ্যাকটা খুঁজে পেল, এবং একেবারে সাউন্দ অফ করে টিভিটা ছাড়ল। টিভিটা খুলে সে যা দেখতে পেল, তাতে সে আশাবাদী হবে নাকি হতাশায় ভুগবে , ঠিক বুঝতে পারল না। কেননা স্কোর তখন দেখাচ্ছে ৪.২ ওভারে ২৪ রান, এবং মাত্রই উদ্ভটভাবে আউট হয়েছেন শাহরিয়ার নাফিস। কিন্তু দুওভার পর যখন জহির খানের একটা রাইজিং ডেলিভারি ১৭ বছর বয়স্ক অভিষিক্ত তামিম ইকবাল খানের ঘাড়ে প্রচণ্ড আঘাত করে ক্যাচের মত স্লিপে ষেভাগের হাতে চলে গেল, তখন কমেন্টেটর রঞ্জিত ফারনাণ্ডোর “দ্যাট মাস্ট বি আউট” চিৎকার শুনে ছেলেটার মেজাজ চরম খারাপ হয়ে গেল। :মানেকি: ভারতের ঠিক কি ধরনের গেলমান হলে এভাবে ঘাড়ে লাগা একটা বল আউট আউট করে চিৎকার করে পারে একজন ধারাভাষ্যকার, সেটা সে ভেবে পেল না। অবশ্য সেটা ভাবার সময়ও নেই। কারন ১৭ বছর বয়সের সেই বাচ্চা ছেলেটা ঘাড়ে আঘাত পাওয়ার ঠিক পরের বলটা অসম্ভব চমৎকার টাইমিং এবং প্লেসমেন্তে যেভাবে কাভার দিয়ে মারল, এতে জহির খান নিশ্চিতভাবেই বিস্মিত হয়েছিল। কিন্তু সে কি জানত, আজ এই নাম না জানা অখ্যাত ব্যাটসম্যানটা তাকে তার জীবনের অন্যতম সেরা বিস্ময় উপহার দিতে চলেছে!! পেসারদের স্বভাবসুলভ নিয়মে এরপরের বলটা জহির করল শর্ট, আশা যদি ব্যাটসম্যান বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দেয়। কিন্তু আহত বাঘের মত ফুঁসতে থাকা তামিম বেরিয়ে এলেন অভাবিত গর্জনে আর আছড়ে ফেললেন জহিরকে ঠিক সীমানার বাইরে… এরপরের ওভারে মুনাফ তামিমকে আবার বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখে বলটা দিলেন অফ ষ্ট্যাম্পের বহু বাইরে, কিন্তু দমলেন না তামিম, ঠিক সেই অবস্থানেই অফসাইডে ফিল্ডারের মাথার উপর দিয়ে বলকে পাঠালেন গ্যালারীতে। এতটাই অকল্পনীয় ছিল শটটা যে, ধারাভাষ্যকাররা পর্যন্ত স্রেফ বোবা হয়ে গেলেন ১০ সেকেন্ডের জন্য। ছেলেটা লাফ দিয়ে উঠলো এবং পাশে থাকা মশারীর দড়ি ছিঁড়ে গেল। কিন্তু সেদিকে তার আদৌ কোন খেয়াল নেই। মুনাফ সামনে এগিয়ে বোধহয় অকথ্যভাষায় কিছু গালি দিল এবং তামিম ঠিক বলটার মত করে মুনাফের সেই কথাগুলোকেও চোখে চোখ রেখে উড়িয়ে দিলেন। এরপরের ওভারে জহির বল করতে এসেই গালাগালি শুরু করল। তার জবাবটা সে পেল ওভারের ২য় বলে। টাইগার তামিম মিডঅফ দিয়ে যে থাপ্পড়টা কশালেন জহিরের গালে, সেটা জবাব দেবার জন্য কেউ এক পা নড়বার সময় পেল না। তারপরের বল রাউন্দ দ্যা উইকেটে এসে এবং একইভাবে আবারো থাপ্পড়… ধারাভাষ্যকাররা আবারো কথা হারিয়ে ফেলেলন। কিন্তু ওভারের পঞ্চম বলে যা হল, সেটা ব্যাখ্যা করবার মত ভাষা এ মহাজগতে আজো তৈরি হয়নি।, তৈরি হবার কোন সম্ভাবনাও নেই। বল ফেলার জায়গা হারিয়ে ফেলা জহির কিভাবে যেন এই বলটা গুড লেংথ এরিয়ায় ফেলল, কিন্তু তার ট্রিটমেন্ত যে এরকম হবে, সেটা তার সুদূরতম কল্পনাতেও ছিল না। জহির খানে বিস্ফোরিত দৃষ্টির সামনে ১৭ বছর বয়সী একটা ছেলে চার পা সামনে এগিয়ে বাঘের গর্জনে সেই গুড লেংথের বলটাকে উড়িয়ে নিয়ে ফেলল পোর্ট অফ স্পেনের কুইন্স পার্ক অভাল স্টেডিয়ামের দুই তলার শেষ কোনায়… হতবিহবল জহিরের মুখটা দেখে মনে হতে লাগলো, তার সবকিছু কিছুক্ষন আগে নদী ভাঙ্গনে ধ্বংস হয়ে গেছে। যে শট দেখে ওয়েস্টইন্ডিয়ান গ্রেট মাইকেল হোল্ডিং অভাবিত বিস্ময়ে বলে উঠলেন,
OHOOOO Look At That. It’s Looks Like A 17 years Old really Shows A Very Littile Respect to the Elder Statesman
অবিশ্বাস্য কণ্ঠে ওপাশে থাকা ধারাভাষ্যকার শুধু একটা কথাই বলতে পারলেন, Murder! …
মজার ব্যাপারটা হল ছেলেটা তামিমের সেই শট দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে চিৎকার করতেও ভুলে গেছে। কিছুক্ষন পর সে সম্বিত ফিরে পেল এবন তৎক্ষণাৎ তার কানে এল, পাশের রুমে চটিজুতার আওয়াজ। সাথে সাথে টিভিটা বন্ধ করে সে শুয়ে পড়ল এবং তার কিছুক্ষন পরেই রুমে তার আম্মু প্রবেশ করলেন। এবং এতক্ষনে সে টের পেল, তার গায়ে জ্বরটা বিপুল উদ্যমে আবার ফিরে এসেছে। তারপর সারারাত জ্বরের সাথে সেই পুরনো যুদ্ধ চলল এবং ছেলেটা আধোঅচেতন অবস্থায় সারারাত বাংলাদেশের জন্য প্রার্থনা করতে থাকলো…
মিরপুর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২য় তলার ২০৪ নম্বর রুমের কোনার বেঞ্চে বসে আছে ছেলেটা। একটু আগে এসএসসি গনিত পরীক্ষার প্রশ্ন দেওয়া হয়েছে। অংকগুলো দেখে সে একই সাথে খুশি এবং বেজার। কারন সবই তার কমন পড়লেও জ্বরের কারনে গত দুইদিনে সে একটা অংকও ভালভাবে রিভাইজ দিতে পারেনি। কিন্তু বড়ই উদ্ভট হলেও সত্য, তার মাথায় তখন ১০০ মার্কের গনিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেয়েও বেশি কাজ করছে আরেকটা দুশ্চিন্তা, বাংলাদেশ কি শেষ পর্যন্ত জিততে পারল… গতকাল রাত্রে আর খেলা দেখা হয়নি এবং আজ সকালে সেই খবর জানার কোন সুযোগও হয়নি। দুই ঘণ্টা পার হয়ে যাবার সংকেত দেবার পরেও তার অবস্থার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হল না। বরং আরও খারাপ হল। চারপাশে সবাই অংক মেলাবার প্রানপন চেষ্টা করছে, কিন্তু তাকে দেখে তা বোঝার উপায় নেই। দুই ঘণ্টায় অবশ্য সে ৭০ মার্কের উত্তর করেছে( অংকগুলা করতে যে পরিমান কাটাকাটি করা হইছে, তার জন্য ছেলেটাকে নোবেল দেওয়া যাইতেই পারে), কিন্তু বাকি ৩০ মার্ক সে একদমই পারছে না। সবচেয়ে বড় কথা হল, সে বাংলাদেশের জয় নিয়ে এতটাই চিন্তিত যে সেই ২৫ মার্ক নিয়ে চিন্তা করার সময় তার হাতে নাই। শেষপর্যন্ত পিছনের জনেরটা দেখে আরও ৮ মার্কের এন্সার করল সে। তখনও সময় বাকি ৪৫ মিনিট। কিন্তু পরীক্ষার হলটা যেন ভয়াবহ রকমের অসহ্য হয়ে উঠেছিল ছেলেটার কাছে। ঠিক সেই সময় পাশের রুম থেকে একজন শিক্ষক এলেন এইরুমে। তিনি এসেই এই রুমে থাকা শিক্ষককে জড়িয়ে ধরে বলে উঠলেন, কালকে তোঁ ইন্ডিয়ারে ধইরা দিলাম ভাই prednisolone injection spc
কথাটা শুধু ছেলেটার কানে গেছে, সে সাথে সাথে ইয়েসসসসস বলে চিৎকার করে উঠলো এবং ঠিক সেই অবস্থায় দৌড়ায়ে যেয়ে হতভম্ব হয়ে থাকা দুইজন স্যারের পা ধরে সালাম করে খাতাটা তাদের হাতে দিয়ে খবরটা দেবার জন্য অশেষ ধন্যবাদ দিল। তারপর অকল্পনীয় আনন্দের অভাবিত উচ্ছ্বাসে বেরিয়ে এল এসএসসি পরীক্ষার হল থেকে, ছুটতে থাকলো অসীম উল্লাসে… মুখে শুধু একটাই আনন্দধ্বনি… জিতছিরে জিতছিরে…
আজ মানজারুল ইসলাম রানা বেঁচে থাকলে আমরা পেতাম আমাদের মিডলঅর্ডারে একজন নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান , একজন বিশ্বমানের বাহাতি বোলার এবং সাকিব আল হাসানের মত একজন চ্যাম্পিয়ন অলরাউনডার। বিধাতার লিখন বড়ই অদ্ভুত, উদ্ভট তার খেলা। কিন্তু মানজারকে হারানোর শোককে দাঁতে দাঁত চেপে এক পাথরকঠিন শক্তিতে পরিনত করে ১০৩ ডিগ্রি জ্বর নিয়ে কৌশিক বজ্রকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘ধরে দিবানি’ ,সেটা পৃথিবীর ইতিহাসে অতি বিরল এক ঘটনা। যেভাবে ১১ জন টাইগার আপনজন হারাবার সীমাহীন যন্ত্রণা চরম পেশাদারিত্বের পরিচয়ে মাটিচাপা দিয়েছিলেন, সেটা আজো ক্রিকেট ইতিহাসে হিরণ্ময় হয়ে রয়েছে। মানজারুল ইসলাম রানা অনাদিঅনন্তকাল বেঁচে থাকবেন টাইগার সমর্থকদের হৃদয়ে, আর ১৭ই মার্চ জ্বলজ্বলে এক অবিস্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে পৃথিবীর ইতিহাসে, যেদিন এক অভূতপূর্ব ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল টাইগারেরা। যে ইতিহাস বিস্ময়ের, গর্বের, প্রেরণার… doxycycline monohydrate mechanism of action
জার্সি নাম্বার ৯৬- টাইগার মানজার- :salute: :salute: :salute: …
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ
কি আর বলব ভাই,অই একই কাহিনী আমার বেলাতেও বাসায় টিভি দেখা বন্ধ।ছোট ভাই,আর অন্য জুনিয়াররা পাশের বাসায় টিভি দেখছে।একটা উইকেট পরেলেই আমি লাফ দিয়ে ঐ বাসাত যাচ্ছি আর আম্মুর তারা বাবা কাল অংক পরিক্ষা।এই ম্যাচটা না দেখতে পারার আফসুস থাকবে সারাজিবন।আর আবারো অসাধারন বর্ননায় অনেকটাই ম্যাচ দেখার মত স্বাদ পেলাম
জন কার্টার বলছেনঃ
জার্সি নাম্বার ৯৬- টাইগার মানজার!
:salute: :salute: :salute:
অপার্থিব বলছেনঃ
is viagra safe for diabeticsমান জারুল রানার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় আফসোসটি হল বাড়ির পাশের স্টেডিয়ামটিতে তার কখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয় নি । এই আফসোস টি নিয়ে তিনি হারিয়ে গেছেন …চিরতরে। তার
স্মৃতি বিশেষ করে ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২-০ তে পিছিয়ে পড়েও ওয়ানডে সিরিজ জেতানোর পিছনে তার অবদান এদেশের ক্রিকেট ভক্তদের মাঝে চিরকালই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। 2nd course of accutane side effects
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
levitra generico acquistoট্রু দ্যাট…
তারিক লিংকন বলছেনঃ silnejsie ako viagra
রানার প্রতি অফুরন্ত শ্রদ্ধা…
ডন ভাই আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদও!
মষ্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
ধরে দিবানি
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ prednisone side effects moon face
cialis 20 mg prix pharmacieবঙ্গশার্দুল বলছেনঃ
ভাই এটা পড়তে পড়তে আবেগপ্রবন হয়ে পরেছিলাম।কিভাবে যে চোখের কোন বেয়ে দু ফোটা জল বের হয়ে এসেছে খেয়াল করি নাই।চালিয়ে যান ভাই।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
exact mechanism of action of metformin