একুশের ঢাকা বাঙালীর তীর্থস্থান
628
বার পঠিতপ্রথমে একটা প্রাসঙ্গিক সংজ্ঞা দেই; ‘ইংরেজ’ বা, ‘English’ বলতে আমরা কি বুঝি?
‘ইংরেজ’ বা, English- রা হল একটি জাতি এবং জাতিগত গোষ্ঠী যাদের নেটিভ ভাষা ইংরেজী আর বসবাস করে ইংল্যান্ড। ‘ইংরেজ’-দের প্রাচীন পরিচয় মধ্যযুগীয় হলেও ,তারও আগে ইংরেজরা Anglecynn হিসাবে পরিচিত ছিল। অর্থাৎ, ইংরেজ বলতে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ইংরেজি ভাষা-ভাষীর মানুষদের বুঝায়! অথচ বিশ্বে আজ অনেক দেশ আছে যেখানে ইংরেজি ভাষা-ভাষীর মানুষের আধিক্য। কিন্তু, তাদের আমরা ইংরেজ বলি না। যেমন নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও অনেক রাষ্ট্র!
এই ভাষা আন্দোলনের মাসে এই বিতর্ক আরও প্রাসঙ্গিক। কলকাতার মানুষের কথা হচ্ছে একুশের ঢাকা হচ্ছে বঙ্গালীর তীর্থস্থান। আমাদের এই আত্মপরিচয় জ্ঞাপক প্রধান করে আমাদের পহেলা বৈশাখ আর একুশের বইমেলাসহ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানমালা। আমাদের মত এমন গর্বের বিষয় এই দুনিয়ায় আর কোন ভাষাভাষীরই নাই। তাইতো আজ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে স্বীকৃত। সারা দুনিয়া জানে মানে শ্রদ্ধা করে আমাদের এই বিরল অর্জন এবং ত্যাগকে। এই জন্যেই বাঙ্গালী আত্মপরিচয় দিতে যাদের শঙ্কা তাদের জন্য করুণা হয়, কি দুর্ভাগা তারা।
গুগলে জানতে চাইলে এইটাই আসবে “The English are a nation and ethnic group native to England, who speak the English language. The English identity is of early mediaeval origin, when they were known in Old English as the Angelcynn. England is one of the countries of the United Kingdom and English people in England are British citizens.”
অনুরূপে ‘বাঙালি’ একটি জাতি এবং জাতিগত গোষ্ঠী যাদের Native ভাষা বাংলা, আর বসবাস বাংলাদেশে অর্থাৎ ‘বাঙালি’ বলতে কলকাতার বাংলা ভাষাভাষীদের সাথে গুলিয়ে ফেলার কিছু নাই। সংজ্ঞা খুবই পরিষ্কার আর নির্দিষ্ট।
এইবার আসি আমাদের দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর প্রাসঙ্গিকতার বিচারে। বিভিন্ন টকশো বা ঘরোয়া রাজনৈতিক আড্ডায় একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল ‘বাঙালি’ বললে তো বাংলাদেশের পাহাড়িদের বঞ্চিত বা, নিগৃহীত করা হয়”; এই যুক্তিতে যারা উদ্বেলিত তাদের জন্যে বলছি ঠাণ্ডা মাথায় একটু যাচাই করুন নিন্মের ব্যাখ্যাগুলো। তাদের যুক্তি অনেকটা মা থেকে মাসীর বেশী দরদের মত। এই মতের পক্ষের লোকেরাই রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করে দেশের ১২% অমুসলিম জনগনকে দ্বিতীয় শ্রেণীর জনগণ করল। তারাই আবার দেখবেন আমরা বাঙ্গালী বলতে চায় না তারা বলবে বাংলাদেশী কারণ তাতে করে নাকি আদিবাসী এবং উপজাতিদের অধিকার নিশ্চিত হয়। এইদলের লোকেরা এতোটাই অবিবেচক যে ১২ -১৫% এর অধিকার খর্ব করে অন্যদিকে ১% বা তারও কম জনগোষ্ঠীর অধিকার নিয়ে কথা বলে। যদিও সেই জনগোষ্ঠী বাঙ্গালী উৎসব পালা পার্বণ সবই পালন করে অর্থাৎ তারা ভাষাগত পার্থক্য নিয়েও একই নৃতাত্ত্বিক পরিচয় বহন করে। এই অবিবেচকরা জনগণের অধিকারের জন্যে আসলে এইসব করে নি। তাদের ভোটের হিসেবের যোগ বিয়োগই এইসব সিদ্ধান্তের মালিক।
বাঙালি একসাথে নেটিভ বাংলা ভাষাভাষীদের ও বুজাচ্ছে সাথেসাথে বাংলাদেশে বসবাসকারীদের ও বুজাচ্ছে। সংজ্ঞাটি আবার পড়ুনঃ “‘বাঙালি’ একটি জাতি এবং জাতিগত গোষ্ঠী যাদের Native ভাষা বাংলা, আর বসবাস বাংলাদেশে”। এই নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীকে বাঙালি বলার কারণঃ
১) বাংলা বছর, বাংলা উৎসব, পালাপার্বণ, বিয়ের রীতি, জামা-কাপর পরা, সম্পূর্ণ জীবনধারার মিলেই। আর পাহাড়ি বিভিন্ন ভাষাভাষীদের মাঝে বাঙালি উৎসবগুলো আরও তীব্র, আর তাই বাঙালি বললে শুধু বাংলা ভাষাভাষীদের না এই বাংলায় সব ভাষার বাঙালি সংস্কৃতির অধিবাসীদের বুজাচ্ছে।
২) যারা এই প্রশ্নটি তুলেন তাদের বড় অংশই একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শে পক্ষপাতদুষ্ট! তাদের জন্যে বলি তাহলে বাংলাদেশ নামটাও পরিবর্তন করতে হয় জনাব! কারণ পাহাড়িরা তো চাইবে চাকমাদেশ, মারমাদেশ, মুরংদেশ! তাই না? তাই উত্তরাধিকারে রাজনৈতিক আদর্শ স্থির করার আগে একটু ভাবুন। নিজের নৃতাত্ত্বিক পরিচয় নিয়ে শঙ্কার অর্থ নিজেকে না চেনা। sito sicuro per comprare cialis generico
৩) যারা যদি ৮৫% (যখন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করা হয়) মানুষকে তুষ্ট করতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করে ১৫% কে ২য় শ্রেণীর নাগরিক করে দেয়; তাদের মুখে ১% এর কম পাহাড়ি-উপজাতিদের সন্তুষ্ট করতে জাতীয়তা বাঙালি থেকে বাংলাদেশী করা কথাটা কতটা মানায়? সবিনয়ে জবাব দিয়ে যাবেন যারা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় সংগ্রামের মুল উদ্দেশ্য ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের কথা ভুলে ‘রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম’ আর জাতীয়তা ‘বাংলাদেশী’ বিশ্বাস করে তারাই আসলে নিজের আত্মপরিচয়ের সঙ্কটে আছেন, সাধারণ বাঙ্গালীরা না।
এর সাথে আরেকটি প্রাসঙ্গিক বিতর্কের অবতারণা হয় তাহল আমি আগে মুসলিম না আগে বাঙালি? আমার উত্তর আমি বাঙালি! এইখানে কোন সন্দেহ বা দুবার চিন্তারও অবকাশ নেই কেননা-
১) আমি যেমন জন্মগত ভাবে মানুষ ঠিক তেমনি জন্মগত ভাবেই আমার নৃতাত্ত্বিক আর জাতিগত পরিচয় বাঙ্গালীত্ব পেয়ে যায়। আর শৈশব থেকে কৈশোরে পারিবারিক ধর্মীয় রীতি বা বিশ্বাস থেকে আমার ধর্মীয় পরিচয়টা লাভ করি। তাই সে যেকোন ধর্মের হতে পারে এমন কি আমার প্রাপ্ত বয়সে গিয়ে আমি আমার ধর্মীয় বিশ্বাস অনেক যৌক্তিক কারণেই পরিবর্তন করতে পারি। এমন অনেক উদাহরণ দেয়া যায়।
২) আমি বাঙালি মুসলমান, আমি বাঙালি হিন্দু, আমি বাঙালি ক্রিস্টিয়ান, আমি বাঙালি বৌদ্ধ যা আমরা ৭১ থেকেই বলে আসছি। এইখান থেকে বাঙালি পরিচয়টা এই বাংলার সবার তাই বুঝা যায় অর্থাৎ আমাদের Common Identity বাঙালি। এর পর যার যার ধর্ম তারতার।
৩) আমি কোন অবস্থাতেই আমার নৃতাত্ত্বিক পরিচয় পরিবর্তন করতে পারব না। কিন্তু স্যামসন এইচ চৌধুরী মুসলিম থেকে ক্রিস্টিয়ান হয়েছেন বা অনেকে অমুসলিম থেকে মুসলিম হয়েছেন আবার কেউ ধর্মহীনও হয়েছেন! কিন্তু কেউ বাঙ্গালী থেকে ইংলিশ হতে পারেন নি। রুসনারা আলী ২য় প্রজন্মে গিয়েও বাঙ্গালী পরিচয় হারাবেন না বা বদলাতে পারবেন না যেমনঃ টি ভি এস নাইপল কে বলে ‘Indo-Trinidadian’ তার পূর্ব পুরুষের পরিচয়ে!
৪) আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন DNA টেস্ট করে নৃতাত্ত্বিক বা জাতিগত পরিচয় বের করা যায় কিন্তু ধর্মীয় পরিচয় না। এই বাংলার মানুষ কত বছর আগে কোন ভূখণ্ড থেকে এইখানে নিবাস গড়ছে তাও বের করা যায়। তবে ধর্মীয় বা আদর্শিক পরিচয় বের করা যায় না! কেননা কোন অবস্থাতেই আমার নৃতাত্ত্বিক বা জাতিগত পরিচয় পরিবর্তন করার সুযোগ নেই কিন্তু ধর্মীয় পরিচয় বা বিশ্বাস অথবা সংস্কৃতি পরিবর্তন করা সম্ভব।
অর্থাৎ আমার স্থায়ী ঠিকানাটাই প্রথমে আসবে তাহল আমি ‘বাঙালি’।
এর পরও যদি বাংলাদেশে কোন মানুষ তার পরিচয় নিয়ে এমন হীনমন্যতায় ভোগে অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেশে বিভাজনের সৃষ্টি করে তবে তাদের মত স্বজাতি বিদ্বেষীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হোক শুধু ব্লগ থেকে নয় দেশ থেকেও।।
“তুমি কে? আমি কে?
বাঙালি… বাঙালি…” acquistare viagra online consigli
মায়াবী তেজস্বিনী বলছেনঃ hcg nolvadex pct cycle
এর পরও যদি বাংলাদেশে কোন মানুষ তার পরিচয় নিয়ে এমন হীনমন্যতায় ভোগে অথবা উদ্দেশ্যমূলকভাবে দেশে বিভাজনের সৃষ্টি করে তবে তাদের মত স্বজাতি বিদ্বেষীদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হোক শুধু ব্লগ থেকে নয় দেশ থেকেও।
পুরাপুরি একমত।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
female viagra tablets onlineধন্যবাদ!!
“তুমি কে? আমি কে?
বাঙালি… বাঙালি…”
অন্তিম গোধুলী বলছেনঃ
কিছু মানুষ এখন ও সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে নিজের পরিচয় দেয় , সেই পরিচয়টা আমি সবচেয়ে বেশী ঘৃণা করি । আমি বাঙালি আর এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়
তারিক লিংকন বলছেনঃ
আমি বাঙালি আর এটাই আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় — (Y)
লাল সবুজের ফেরিওয়ালা বলছেনঃ
তুমি কে? আমি কে? বাঙালি বাঙালি ।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
এইটাই আমার পরিচয়… আমার নৃতাত্ত্বিক এবং জাতিগত পরিচয়!
মায়াবী তেজস্বিনী বলছেনঃ
সেটাই। কিছু মানুষ যখন ধর্ম আর জাতীয়তাকে পাশাপাশি দাঁড়া করায় ইমোশনাল কথা শুরু করে, তখন তাদের মুখের উপর – আমি প্রথমে বাঙালি, তারপর মুসলমান বলে দিতে যা মজা লাগে না… চেহারাগুলা তখন দেখার মত হয়। নিজের দেশে বাঙালি বাদ দিয়ে এরা সৌদি আরব, আফগানিস্তানে গিয়া আত্মীয় খুঁজে ক্যান এটাই বুঝিনা আমি।
অন্তিম গোধুলী বলছেনঃ
গতকাল ফেইসবূকে দেখলাম , ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একটি পেইজ ধামাকা অফার দিয়েছে , পাকিস্তানি ড্রেসের উপর ৪০ শতাংশ ছাড় , দেখার পর শুধু মনে হচ্ছিল যে কে এই ধরনের পেইজ চালায় যাদের বিন্দুমাত্র কৃতজ্ঞতা নেই , এত হীন ।
অনেক মেয়ে কে দেখেছি হিজাব পরে পাকিস্তানি মডেল হতে আর পাকিস্তানি মডেল হওয়ায় খুশিতে আবেগ আপ্লুত হতে । কথা বলতে গিয়েছি আর শুনতে হয়েছে পাকিস্তানি দের সাথে এখন আমাদের কোন যূদ্ধ নেই তাহলে কেন সামান্য ড্রেস নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা ।
আমার মাথা ব্যাথা কারন আমি আমার পরিচয় ভুলি নি , আমার মাথা ব্যাথা কারন আমি আমার ইতিহাস জানি । আমার শুদ্ধত্ম পরিচয় আমি বাঙলি ।
তারিক লিংকন বলছেনঃ aborto cytotec 9 semanas
ধন্যবাদ পড়বার জন্যে! সত্য সবাই উপলব্ধি না করলেও সত্য সত্যই…
মস্তিষ্ক প্রক্ষালক দার্শনিক বলছেনঃ
আমার confusion এখনও যায়নি যে, কেন নৃতাত্বিক জাতিগোষ্ঠী ‘বাঙালি’ বলে পরিচিত হবে।
তারা বাংলাদেশী, কিন্তু তাদের জাতীয়তা তো ভিন্ন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রসঙ্গ আনি। অস্ট্রেলিয়ার সরকার কয়েক বছর আগে তাদের আদিবাসীদের প্রতি এতদিনের সকল অবিচার এর জন্য ক্ষমা চেয়ে তাদেরকে অস্ট্রেলীয় জাতীয়তাবাদ এর একটি বিশেষ অংশ হিসেবে বিশেষ মর্যাদা এবং অন্যান্য অস্ট্রেলীয়র মত সকল প্রকার সমান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে পৃথিবীতে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই বলে কিন্তু তাদের সবাইকে অস্ট্রেলীয় জাতীয়তায় convert করা হয় নাই।
প্রসঙ্গত, আমি বাংলাদেশী জাতীয়বাদে বিশ্বাসী না, বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী।