গণহত্যা’৭১:কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া কিছু ইতিহাস (পর্ব-০৬)
777
বার পঠিতএর আগের ৫ টি পর্বতে বিভিন্ন বধ্যভূমিতে সংঘটিত গণহত্যার ইতিহাস গুলো তুলে ধরেছিলাম। তবে এবারের পর্বটি একটু অন্যভাবে সাজাতে চেষ্টা করেছি।একাত্তরে মূলত পুরো বাংলাদেশই পরিণত হয়েছিলো একটি বধ্যভূমিতে। আমার মনেহয় এই দেশটার এমন কোন জায়গা খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে শহীদের রক্ত মাংসের অস্তিত্ব নেই। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত মাংসের প্রলেপেই গঠিত এই দেশের মাটি।এই দেশটার প্রত্যেকটি ধূলিকণা একেক ফোঁটা রক্তের বিনময়ে অর্জিত। এই দেশের মানচিত্রটা গড়া ৩০ লাখ শহীদ, ৬ লাখ বীর মাতা আর লাখো মুক্তিযোদ্ধার সর্বোচ্চ ত্যাগ, মহিমা আর ভালোবাসায়, এই দেশের পতাকার লাল বর্ণ প্রতিনিধিত্ব করে এক সাগর রক্তের আর সবুজ, সেতো এই দেশেরই রূপের মহিমা জানান দেয়।আজকের এই পর্বে ১৯৭১ সালে সমগ্র বাংলাদেশের চলা গণহত্যার কিছুটা বিবরণ দেবার চেষ্টা করবো, যদিও তা অসম্ভব। thuoc viagra cho nam
মাইলাই-লিডিস গণহত্যা বনাম ৭১ বাংলাদেশ গনহত্যাঃ
পাকিস্তানিরা ৭১ এ এতোটাই নির্মম গণহত্যা আমাদের উপর চালিয়েছিল যেটা গোটা বিশ্ববাসীকে হতবাক করে দিয়েছিলো। বিশ্বের যেকোনো গণহত্যাকেই হার মানিয়েছিল একাত্তরে এ দেশে সংঘটিত গণহত্যা। মাইলাই গণহত্যা সংগঠিত হয়েছিলো ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়।মার্কিন সৈন্যরা চীন সাগরের উপকূলে ছোট্ট গ্রাম মাইলাই এ কয়েক ঘণ্টায় ৩৪৭ জন মানুষকে হত্যা করে। আর চেক প্রজাতন্ত্রের লিডিস গ্রামে এক বেলায় ১৭৩ জনকে হত্যা করে জার্মান সৈন্যরা ১৯৪২ সালের ১০ জুনে। আরও কয়েকশ নারী ও ১০০ শিশুকে তখন পাঠানো হয়েছিলো কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে।যাঁদের পরবর্তীতে হত্যা করা হয়। তবে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে প্রথম তিন মাসেই মাইলাই ও লিডিসের মতো “কয়েকশো” গণহত্যা সংঘটিত হয়। আই রিপিট “কয়েকশো গণহত্যা” !!
নিউজ উইকের সাংবাদিক টনি ক্লিফটন এ ব্যাপারে বলেন-
“পূর্ব পাকিস্তানে শ’খানেক ‘মাইলাই ও লিডিস’ আছে- এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ নেই।আমার মনেহয় এ রকম স্থানের সংখ্যা আরো বাড়বে”।
সাংবাদিক ও লেখক রবার্ট পেইন এর মন্তব্যঃ
পাকিস্তানিরা বাঙালিদের উপরে ঠিক কতোটা প্রতিহিংসায় বশীভূত হয়ে এই দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল তার কিছু নমুনা পাওয়া যায় মার্কিন সাংবাদিক ও লেখক রবার্ট পেইন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাঁর “ম্যাসাকার” বইয়ে। তিনি লিখেছেন-
“ পাকিস্তানি জেনারেলদের এক সভায় আওয়ামীলীগ ও এর সমর্থকদের দমন করার সিধান্ত নেয়া হয়। ঐ সভায় ইয়াহিয়া খান নির্দেশ দেন- Kill three million of them and the rest will eat out of our hands”
পেইন আরও লিখেন-
“পূর্ব পাকিস্তানেযে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে তার নির্দেশ ইয়াহিয়ার কাছ থেকে এলেও এর ধারক বাহক ছিল জেনারেল টিক্কা খান।২৫ মার্চ রাতে ঢাকা ছেড়ে পশ্চিম পাকিস্তান চলে যাওয়ার সময় ইয়াহিয়া খানের মন্তব্য ছিল বিদ্রোহী মানুষগুলোকে শেষ করে ফেলো। অতন্ত্য বিশ্বস্ততার সাথে টিক্কা খান পরের ৬ টি মাস ধরে এ আদেশটি পালন করে গিয়েছে”।
৭১ এর গনহত্যা এবং কিছু প্রতিবেদনের চুম্বকাংশঃ
এ সম্পর্কিত আরও কিছু প্রতিবেদনের চুম্বকাংশ তুলে ধরছি-
১২ এপ্রিল ১৯৭১ এ টাইম ম্যাগাজিনের “পাকিস্তানঃপশ্চিমের প্রতি রাউন্ড-১” শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়-
“ সন্দেহ নেই যে এখানকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে গণহত্যা শব্দটিই প্রযোজ্য”
আরেকজন পশ্চিমা কর্মকর্তা সেই একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করে-
“এটা যথার্থই রক্তস্নান।সৈন্যরা চরম নির্দয়” buy kamagra oral jelly paypal uk
‘নিউজ উইক’ সাময়িকী ২৬ এপ্রিল ১৯৭১ এ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘পাকিস্তানঃ শকুন আর পাগলা কুকুরের ভাগাড়’ শিরোনামে। এতে বলা হয়-
“শক্তিশালী ঘাঁটিগুলো থেকে বেরিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় এক ডজনেরও বেশী এলাকায় হামলা চালায় পাঞ্জাবী সৈন্যরা। এ হামলাগুলোর সময় ব্যাপাক নৃশংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। খবর পাওয়া গেছে, বন্দরনগরী চট্টগ্রামে পাকিস্তানি সৈন্যরা বাঙালি বন্দিদের ট্রাকের ওপর দাঁড় করিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিতে বাধ্য করে। এই শ্লোগান শুনে আড়াল থেকে অন্য বাঙালিরা বেরিয়ে এলেই মেশিনগানের গুলিতে ধরাশায়ী করা হয় তাঁদের”।
‘নিউজ উইকে’ ২৮ জুন ১৯৭১ সংখ্যায় বলা হয়-
“ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর রক্তের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী”।
‘সানডে টাইমস’ পত্রিকায় ১৩ জুন ১৯৭১ লেখা হয়-
“বর্তমানেও গণহত্যা চলছে, আর তা সুপরিকল্পিতভাবে চালাচ্ছে পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনী।পূর্ব বাংলার সাড়ে ৭ কোটি জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশই হিন্দুই কেবল এ সংঘবদ্ধ নির্যাতনের শিকার নয়, বরং হাজার হাজার বাঙালি মুসলমানও নির্যাতিত”।
অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের “দ্য রেইপ অফ বাংলাদেশ” শিরোনামের প্রতিবেদনের উল্লেখযোগ্য কিছু লাইন সংযুক্ত করলাম এখানে-
There is no doubt whatsoever about the targets of the genocide. They were: (1) The Bengali militarymen of the East Bengal Regiment, the East Pakistan Rifles, police and para-military Ansars and Mujahids. (2) The Hindus — “We are only killing the men; the women and children go free. We are soldiers not cowards to kill them …” I was to hear in Comilla [site of a major military base] [Comments R.J. Rummel: “One would think that murdering an unarmed man was a heroic act” (Death By Government, p. 323)] (3) The Awami Leaguers — all office bearers and volunteers down to the lowest link in the chain of command. (4) The students — college and university boys and some of the more militant girls. (5) Bengali intellectuals such as professors and teachers whenever damned by the army as “militant.” (Anthony Mascarenhas, The Rape of Bangla Desh [Delhi: Vikas Publications, 1972(?)], pp. 116-17.)
গণহত্যার প্রমাণস্বরূপ কিছু গোপন মার্কিন টেলিগ্রাম বার্তাঃ
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতম সহযোগী ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের বিপক্ষে যুদ্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে প্রচুর অস্ত্রের জোগান দিয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার ঢাকাস্থ কনসাল জেনারেল আর্চার ঢাকা থেকে পাকিস্তানি সৈন্যদের ভয়াবহ গণহত্যার বিবরণ দিয়ে টেলিগ্রাম পাঠায় ওয়াশিংটনের মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে। সেখানকার একটি টেলিগ্রামের শিরোনাম ছিল “Selective Genocide” অর্থাৎ “বেছে বেছে গণহত্যা” । সেই টেলিগ্রামের কিছু লাইনের বঙ্গানুবাদ ছিল এরকম-
০১.“ঢাকায় পাক সেনারা যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে আমরা তার নীরব ও আতংকগ্রস্ত সাক্ষী। এ বিষয়ে তথ্য প্রমান ক্রমেই বাড়ছে যে, মার্শাল ল’ কর্তৃপক্ষের কাছে আওয়ামীলীগের সমর্থকদের একটি তালিকা আছে আর সেই তালিকা ধরে ধরে তাঁদের বাড়ি থেকে ডেকে এনে গুলি করে সুচারুভাবে হত্যা করা হয়েছে”। all possible side effects of prednisone
০২.“খতমের জন্য যাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তি ছাড়া আছেন ছাত্রনেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা”।
০৩.“এছাড়া পাক সেনাদের মদদে অবাঙালি মুসলিমরা নিয়ম করে দরিদ্র লোকজনের বাড়িঘর আক্রমণ করেছে এবং খুন করেছে বাঙালি ও হিন্দুদের”।
আরেকটি মার্কিন গোপন টেলিগ্রামে দেখা যায় যে একাত্তরের ২৯ শে মার্চ ঢাকা থেকে মার্কিন কনসাল জেনারেল আর্চার কে ব্লাড ওয়াশিংটন পররাষ্ট্র দপ্তরে যে টেলিগ্রাম বার্তা পাঠিয়েছিলো তাতে উল্লেখ আছে-
“মনেহচ্ছে হিন্দুরাই সামরিক অভিযানের বিশেষ লক্ষ্য, যদিও হিন্দু অধ্যুষিত নয় এমন এলাকাও ছারখার করে দিচ্ছে”।
এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যনীয় যে একাত্তরে পাকিস্তানিরা কিন্তু গোটা বাঙালিদেরকেই হিন্দু হিসেবেই গণ্য করেছিলো। আর মুক্তিযোদ্ধাদের ওরা বলে থাকতো ‘ভারতীয় চর’।
আমরা আবারো মার্কিন গোপন টেলিগ্রাম বার্তায় চলে যাই- আমারিকান যাজকদের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্লাডের ঐ টেলিগ্রামে বলা হয়-
“পুরান ঢাকায় কিছু ব্যারিকেড ছাড়া, বাঙালিদের দিক থেকে কোন উস্কানি না থাকা সত্ত্বেও অগ্নিসংযোগ ও গুলি বর্ষণ করে মানুষ হত্যা করছে সৈন্যরা। ওদের কৌশলটা ছিল এরকম- প্রথমে বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়া। প্রাণ বাঁচাতে বাড়ির বাসিন্দারা বাইরে এলে তাঁদের গুলি করে মারা”।
২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ১১ সদস্যের একটি পরিবারের সকলকে গুলি করে মারাও তথ্য রয়েছে নিচের টেলিগ্রামটিতে।
বাঙালি বুদ্ধিজীবী ও হিন্দু সম্প্রদায় যে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর নির্মূল অভিযানের বিশেষ লক্ষ্য ছিল তার প্রমান পাওয়া যায় ঐ সময়ের আরেকটি গোপন মার্কিন বার্তায়।২৬ শে মার্চ সম্পর্কে ঢাকা থেকে মার্কিন কনসাল জেনারেল আর্চার ব্লাডের ওয়াশিংটনে পাঠানো একটি টেলিগ্রাম বার্তার শিরোনামই ছিল- “বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্তাকান্ড”। ৭১ এর ৩০ মার্চ পাঠানো ঐ বার্তায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল গুঁড়িয়ে দেয়া ও ছাত্রদের গুলি করে মারার বিবরণের পাশাপাশিও শিক্ষকদের হত্যার তথ্যও রয়েছে। ঐ টেলিগ্রামে বলা হয়-
“ফ্যাকাল্টি মেম্বারসহ হাজারের মতো লোককে হত্যা করা হয়েছে। আমরা নিশ্চিত খবর পেয়েছি একজন ফ্যাকাল্টি মেম্বারকে হত্যা করা হয়েছে তাঁর নিজ বাসায়”।
এর আগের দিন অর্থাৎ ২৯ মার্চ পাঠানো টেলিগ্রাম বার্তায় আর্চার ব্লাড সামরিক অভিযানে ঢাবির দুজন ডীনসহ ছয়জন শিক্ষককে হত্যার কথা প্রকাশ করে।উক্ত বার্তায় নিহতদের মধ্যে ড. জি সি দেবের নাম উল্লেখ করা হয়। viagra en uk
can levitra and viagra be taken together
বুদ্ধিজীবিদের উপর নির্যাতন এবং আক্রমণের বেশকিছু তথ্য পাওয়া যায় আরেকটি মার্কিন গোপন দলিলে।১৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৭১ এ ‘পূর্ব পাকিস্তানি বুদ্ধিজীবিদের ধরপাকড়’ শিরোনামে ওয়াশিংটনের পররাষ্ট্র দপ্তরে একটি গোপন টেলিগ্রাম বার্তা পাঠায় ইসলামাবাদে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ফারল্যান্ড। বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের উপর দমন পীড়নের কয়েকটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয় সেই টেলিগ্রামে।বছরখানেক আগে সেই দলিলের উপর থেকে গোপনীয়তা তুলে নেয়া হয়েছে।দলিলটি সংরক্ষিত আছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভে। সেই টেলিগ্রামের কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরছি- acne doxycycline dosage
“ আগের চেয়ে কিছুটা কম হলেও বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের উপর দমন নিপীড়ন চলছেই;যা শুরু হয়েছিলো মার্চ মাসে। তবে এখন দমন নিপীড়ন অনেকটা বেছে বেছে”।
ফারল্যান্ডের ঐ টেলিগ্রাম বার্তায় বলা হয়, নামকরা পূর্ব পাকিস্তানি আইনজীবী ও লেখক কামরুদ্দীন আহমেদকে ৬ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আরও অনেক শিক্ষক ও ছাত্রনেতাকেও গ্রেপ্তার করার তথ্য পাওয়া যায় সেখানে, যেখানে তাঁদের কারো পরিচয় প্রকাশ করা হয় নি।
গণহত্যা সম্পর্কে মার্কিন সাংবাদিক সিডনি শ্যনবার্গের ভাষ্যঃ
মার্কিন সাংবাদিক সিডনি শ্যানবার্গের জবানিতেও একাত্তরে বাংলাদেশের গণহত্যার বিবরণ পাওয়া যায়। তখন তিনি ছিলেন ‘নিউইয়র্ক টাইম্স’ এর দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধি।তাঁর “ডেটলাইন বাংলাদেশঃ১৯৭১” থেকে আমরা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আটক সংবাদিকদের অবস্থা এবং ২৫ মার্চ রাত্রের অবস্থা সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানতে পাই। “ডেটলাইন বাংলাদেশঃ১৯৭১” কিছু অংশ এখানে সন্নিবেশিত করলাম-
উল্লেখিত বইটির ২০ পৃষ্ঠায় তিনি ২৬ মার্চ দিনের পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। সেটিও এখানে সংযুক্ত করা হল-
irbesartan hydrochlorothiazide 150 mg
মুক্তিযুদ্ধের উপরে নানান সংবাদ প্রকাশের কারণে ঐ সময়ে সিডনি শ্যানবার্গকে পূর্ব পাকিস্তান থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে একটি প্রামাণ্যচিত্রে তিনি বলেছিলেন-
“আমি যা দেখেছিলাম সেটা ছিল স্পষ্টতই গণহত্যা। হত্যার লক্ষ্য ছিল বাঙালিরা,বিশেষভাবে হিন্দুরা। যেসব শহরে আমি গিয়েছিলাম সেখানে অনেক বাড়িঘরে চিহ্ন দেয়া ছিল যাতে সৈন্যরা সেসব বাড়িতে হামলা চালিয়ে লোকজনকে হত্যা করতে পারে। এসব বাড়ি ছিল মুক্তিযুদ্ধের সমর্থকদের অথবা হিন্দুদের।আমার দেখা প্রতিটি শহরের প্রতিটি গ্রাম ছিল বধ্যভূমি। এসব স্থানে কিছু মানুষকে জড়ো করে গুলি করা হতো অথবা সবাইকে এক আঘাতে হত্যা করা হতো। একটা কায়দা ছিল লোকজনকে দাঁড় করিয়ে মাথায় গুলি করা হতো, যাতে এক বুলেটে পাঁচ-ছয় জনকে হত্যা করা যায়। ব্যাপারটা ছিল এক রকমভাবে সংগঠিত”।
১৯৭১ সালের ১৪ই জুলাই নিউইয়র্ক টাইমসে ‘পশ্চিম পাকিস্তানিরা এখনো বাঙালিদের পদাবনত রাখতে চায়’ শিরোনামে সিডনি শ্যানবার্গ লিখেন-
“গণহত্যার সঙ্গে সঙ্গে বিষয় সম্পত্তির ব্যাপক ধ্বংসসাধনও করেছে সেনাবাহিনী”।
ট্যাঙ্কস ক্রাশ রিভল্ট ইন পাকিস্তান -সাইমন ড্রিং এর প্রতিবেদনঃ
২৫ ও ২৬ মার্চের ঢাকায় পাক বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞের চাক্ষুষ বর্ণনা প্রথম বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ‘ডেইলি টেলিগ্রাফ’ এর সাংবাদিক সাইমন ড্রিং।তিনিই সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ৩০ শে মার্চ “ট্যাঙ্কস ক্রাশ রিভল্ট ইন পাকিস্তান” শিরোনামের একটি প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাঙালিদের উপর পাকিস্তানিদের নির্যাতনের বিবরণ প্রকাশ করেন। এতে বলা হয়-
“আল্লাহ্ ও অখণ্ড পাকিস্তান রক্ষার নামে ঢাকা আজ ধ্বংস ও ভীতির নগরী। পাকিস্তানি সৈন্যদের ঠাণ্ডা মাথায় টানা ২৪ ঘণ্টা গোলাবর্ষণের পর ঐ নগরীর সাত হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। আর পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার আন্দোলনকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে। সামান্যতম অজুহাতে মানুষকে গুলি করে মারা হচ্ছে। নির্বিচারে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বাড়িঘর। ঠিক কতো নিরীহ মানুষ এ পর্যন্ত জীবন দিয়েছে তার সঠিক হিসেব বের করা কঠিন। যা পরিমাপ করা যায় তা হল সামরিক অভিযানের ভয়াবহতা”।
তিনি আরও বলেন-
“ছাত্রদের হত্যা করা হয়েছে বিছানায়, বাজারের কসাইদের মেরে ফেলা হয়েছে তাঁদের দোকানের পিছনে, নারী ও শিশু জীবন্ত দগ্ধ হয়েছে। একসঙ্গে জড়ো করে মারা হয়েছে হিন্দুদের। জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে বাড়িঘর দোকানপাট”।
একাত্তরের গণহত্যা সম্পর্কে কয়েকজন পাকিস্তানির মন্তব্যঃ
একাত্তরে গোটা বাংলাকে মৃত্যুপুরী বানিয়ে ফেলেছিল পাকিস্তানি ও তাঁদের দোসররা। মাত্র ৯ মাসে ওরা ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করে। নির্যাতনের শিকার হন প্রায় ৬ লাখ বাঙালি নারী।২য় বিশ্বযুদ্ধের পর এমন ভয়াবহ গণহত্যা পৃথিবীর কোথাও সংঘটিত হয় নি।তবে সময়ের হিসেবে ২য় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যাকেও হার মানায় একাত্তরে এ দেশের মানুষের উপরে চলা গণহত্যাকে। তখন প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২ হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয়।জাতিসংঘের এ তথ্য ও অভিমত সত্ত্বেও কতিপয় পাকিস্তানি দালাল, স্বাধীনতাবিরধী নব্য রাজাকার সংখ্যার মারপ্যাঁচসহ নানা কুযুক্তির আশ্রয়ে গণহত্যা,যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরধী অপরাধকে নিরন্তন আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।যেখানে খোদ পাকিস্তানের কিছু নাগরিকরাই বিভিন্ন সময়ে একাত্তরে ওদের সামরিক বাহিনীর নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরেছেন, অনেকক্ষেত্রে দিয়েছেন ধিক্কার।যদিও এক্ষেত্রে এরকম দৃষ্টান্ত খুবই বিরল। metformin synthesis wikipedia
তৎকালীন পাকিস্তান আওয়ামীলীগ সভাপতি মালিক গোলাম জিলানী ইয়াহিয়াকে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন-
“ বিশ্বের সংবাদপত্র ও রেডিও নেটওয়ার্কগুলো আজ পূর্ব পাকিস্তানে আপনার সেনাবাহিনী তৎপরতার নিন্দায় সোচ্চার, ইতিহাসের আর কোন ঘটনায় কখনো তাঁদের এমন অভিন্ন ও মুখর হতে দেখা যায় নি। “গণহত্যা” শব্দটি অবাধে এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এবং তা বিরামহীন ভাবে চলছে। আপনার বিশাল প্রচারযন্ত্র দিয়ে আপনি দৃশ্যত এই প্রচারণা মোকাবেলা করতে আদৌ সক্ষম হন নি। আর আপনি রক্তপাতের যে ঝড় তুলেছেন তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি দেখতে পাবেন যে, এসব অভিযোগ থেকে বেরিয়ে আসা আপনার পক্ষে কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠেছে। প্রত্যেক পাকিস্তানির মুখের উপর সমগ্র বিশ্ব থু থু নিক্ষেপ করবে”।
এটা ছিল গোলাম জিলানীর যুদ্ধের শুরুর দিকের উপলব্ধি।আর বাংলাদেশ স্বাধীন হবার ২৫ বছর পাকিস্তানের আরেকজন নাগরিক শেহজাদ আমজাদ বলেন-
“ আমাদের সম্মিলিত আন্তরিকতার সঙ্গে বাংলাদেশীদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে- আমাদের তখনকার ব্যাখ্যাহীন নীরবতার জন্য যখন তাঁদের উপর সন্ত্রাস চলছিল, হত্যা করা হচ্ছিল তাঁদের, নৃশংসতভাবে মেয়েদের ধর্ষণ করা হচ্ছিল, গ্রামগুলোকে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছিল মাটির সঙ্গে, আমরা তখন চুপ করে ছিলাম”। zoloft birth defects 2013
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের কারণ খতিয়ে দেখার জন্য পাকিস্তানিরা গঠন করে হামুদুর রহমান কমিশন। উক্ত কমিশনের কাছে দেয়া জবানবন্দীতে কিছু পাকি সৈন্যরা বাংলাদেশের মানুষের উপর ওদের নৃশংস আচরণের অনেক তথ্য দিয়েছে। লে. কর্নেল নাঈম স্বীকার করে-
“সুপিং অপারেশনে আমরা বহু মানুষ মেরেছি”।
পাকিস্তানি ব্রিগেডিয়ার শাহ আব্দুল কাশিম বলে-
“সামরিক অভিযানের সময় সৈন্যরা ক্রোধ ও প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে কাজ করেছে”।
২৭-২৮ মার্চে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে লে.কর্নেল মনসুরুল হক তাঁর স্বীকারোক্তিটি দেন এভাবে-
“একটি মাত্র ব্যক্তির আঙুলের ইশারায় আমরা ১৭ জন বাঙালি অফিসারসহ ৯১৫ জনকে স্রেফ জবাই করে ফেলা হয়”।
নাম না জানা একজন পাকিস্তানি সৈন্য স্বীকার করে-
“…… we were told to kill the hindus and Kafirs (non-believer in God). One day in June, we cordoned a village and were ordered to kill the Kafirs in that area. We found all the village women reciting from the Holy Quran, and the men holding special congregational prayers seeking God’s mercy. But they were unlucky. Our commanding officer ordered us not to waste any time.”
হুমায়ুন আজাদ স্যারের একটি উক্তি আনছি এখানে-“পাকিস্তানিদের আমিঅবিশ্বাস করি, যখন তারাগোলাপনিয়ে আসে, তখনও” । হ্যাঁ, বিশ্বাস করি নাহ্ আমি ওদের, কিন্তু তারপরেও ভালো লাগছে দেখে যে ওরা নিজেদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে, থু থু নিক্ষেপ করার কথা বলেছে সেই সাথে ওদের কৃতকর্মের জন্য একজন হলেও অনুশোচনা করছে। আবার আক্ষেপও হচ্ছে এই ভেবে আমাদের দেশে এখনো পাকিস্তানের প্রতি দরদ দেখাবার মতো লোকের অভাব নেই।
পূর্বের পর্বগুলোর লিংকঃ-
১ম পর্বঃ http://sovyota.com/node/3335
২য় পর্বঃ- http://sovyota.com/node/3491
৩য় পর্বঃ http://sovyota.com/node/3862
৫ম পর্বঃ http://sovyota.com/?p=4611
তথ্যসূত্রঃ
০১. ১৯৭১: ভয়াভয় অভিজ্ঞতা- রশীদ হায়দার।
০২.যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা- আজাদুর রহমান চন্দন।
০৩.দ্য রেইপ অফ বাংলাদেশ-অ্যান্থনি মাসকারেনহাস
০৪. http://www.genocidebangladesh.org/
০৫. http://combatgenocide.org/?page_id=88 will i gain or lose weight on zoloft
তারিক লিংকন বলছেনঃ
metformin tabletঅসামান্য একটি কাজ করেছ ফাতেমা। এক কথায় অসাধারণ..
এই পর্বের কলেবর আগের সবক’টিকে ছাড়িয়ে গেছে। গনহত্যার এই অসামান্য দলিল বাংলা অনলাইনের একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সেল্যুট তোমাকে ফাতেমা…
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। এটা তো আমাদের দায়িত্ব যে আমাদের জন্মকথাগুলো সবার সামনে তুলে ধরা
অপার্থিব বলছেনঃ
গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডকুমেন্ট তুলে ধরেছেন। সব মিলিয়ে পোস্টটি অসাধারন হয়েছে।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
ধন্যবাদ।
রেজা সাহেব বলছেনঃ
ধন্যবাদ… গুরুত্বপূর্ন কিছু তথ্য পেলাম! accutane prices
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ wirkung viagra oder cialis
posologie prednisolone 20mg zentivaআপনাকেও ধন্যবাদ।
শঙ্খনীল কারাগার বলছেনঃ
ভালো লাগলো।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
ধন্যবাদ
ইকবাল মাহমুদ অনিক বলছেনঃ renal scan mag3 with lasix
অসাধারন সব তথ্য।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
কৃতজ্ঞতা রইলো
এইমলেস ভেনাম বলছেনঃ
অসাধারণ