ঝাড়খন্ডের দিব্য, রিনকি আর আমার আমিত্ব !
556
বার পঠিতএ মাসের প্রথম দিকে নয়াদিললি থেকে রাজধানি এক্সপ্রেসে চাপলাম হাওড়া ফিরবো ঢাকার উদ্দেশ্যে। চমৎকার দ্রুতগামি ভারতিয় ট্রেন জার্নিতে মনটা ভরে গেল অল্পতেই। ট্রেন ভ্রমণে জানালার পাশে বসে বাইরের মানুষ আর প্রকৃতি দেখা আমার জীবনের অন্যতম উপভোগ্য আনন্দ। সন্ধ্যার প্রাক্কালে দ্রুতগামি ট্রেনটি হঠাৎ থেমে গেলো ঝাড়খন্ডের দু’ফসলি জমির মাঝে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাতে লাইনের পাশে ঘাস কাটায় ব্যস্ত বৃদ্ধা নারীর দিকে তাকালাম আমি। আমাকে উদ্দেশ্য করে কি একটা অবোধ্য কথার সূত্র ধরে হাতের ব্যাগটি নিয়ে নেমে গিয়ে তার পাশে দাঁড়ালাম আমি। হিন্দি ভাষিক পঞ্চাশোর্ধ এ নারী জানালেন মহিষের জন্য ঘাস কাটছে সে, একটু দূরেই দেখালো তার মহিষের “তাবেলা” আঙুল দিয়ে। হিন্দিতে কথা জমালাম তার সাথে। বললাম, তোমার বাড়িতে আজ রাতে থাকতে দেবে আমায়? হেসে বললেন, কেউ নেহি? তুমি থাকলে অবশ্যই থাকতে দেব। সিগন্যাল সবুজ হওয়াতে দ্রুতগামি রাজধানি চলতে শুরু করেছে, ঘাস কাটা রেখে “সুধা” নামের নারী আমায় তাগাদা দিলেন ট্রেনে উঠতে। আমি বললাম, না তোমার বাড়ি থাকবো আমি আ্জ রাতে। চোখ বড় করে বিস্মিত চোখে সুধা আমার দিকে তাকিয়ে রইলো। দ্রুতগামি রাজধানি এক্সপ্রেস ঝাড়খন্ডের এই গ্রামিণ রেলসড়কের পাশে আমায় রেখে হাওড়ার দিকে এগিয়ে গেল।
সন্ধ্যার অন্ধকারের মাঝে ঘাসের বোঝা মাথায় সুধার পিছু পিছু চললাম খানিক পথ। কিছুটা ঘাবরে গিয়েছে সুধা। সে জানালো পাশের “ব্যাহেস কা তাবেলা”র (মহিষের পাল) মালিক সে নয়, সে আসলে ঐ বাড়ির কাজের মানুষ। মহিষের রাখাল বলা যায়। ঐ বাড়ির মালিকের নাম “প্রমিলা জেইন”।
ইট পাথরে বানানো বাড়ির সামনে গেলে সুধা ভেতরে গিয়ে ডেকে আনলো মালকিন “প্রমিলা জেইন”কে। আমার রাতে ঐ বাড়িতে থাকার বনোবাঞ্ছা শুনে কিছুটা বিস্মিত হয়ে মা প্রমিলা ডাক দিল ছেলে ‘দিব্য’ আর মেয়ে ‘রিনকি জেইন’কে। হিন্দি কথা শুনে প্রথমে ভারতীয় ভাবলেও, আমার বাংলাদেশি পরিচয়, রাতে এ গ্রামিণ বাড়িতে থাকার ইচ্ছে ইত্যাদি শুনে সবাই বিস্মিত হলো। তারা থাকার কারণ জানতে চা্ইলো আমার কাছে। মানুষের জীবনধারাকে দেখতে চাই আমি কাছ থেকে এবং এ জন্যেই মুলত থাকতে চাওয়া ইত্যাদি কথা শুনে প্রথমে ১২ ক্লাস পড়ুয়া রিনকি এবং পরবর্তীতে বোনের অনুরোধে দিব্যও রাজি হলো আমায় অতিথি হিসেবে রাখতে। মাকেও তারা রাজি করালো আমার সামনেই অল্পতেই। ল্যাপটপ খুলে আমার ফেসবুকের পরিচয় দেখালাম দু-ভাইবোনকে। তারা বিশ্বাস করলো আমায়। ডানপাশে মহিষের তাবেলা (বাথান) রেখে পুরণো রূপহীন ঘরে দরিদ্র গ্রামিণ একটা জেইন পরিবারে ঢুকলাম আমি। viagra type medicine in india
রিনকি আর ছোটভাই দিব্য মহিষের দুধের “লাচ্ছি” এনে রাখলো আমার সামনে। ৩০ মিনিটের মধ্যে জানলাম, ৭-কিমি দুরের কলেজে ১২ ক্লাসে পড়ে রিনকি, আর দিব্য পড়ে পাশের স্কুলে ৯ম শ্রেণিতে। বাবা নেই তাদের মারা গেছে ৪-বছর আগে। মহিষের দুধ বিক্রি করে চলে এ পরিবার। খুব ভোরে আর বিকেলে দুবেলা মহিষের দুধ বিক্রি করে রিনকি আর দিব্য একত্রে। মহিষের পরিচর্যা করে সুধা আর প্রমিলা, দুধও্ দোহন করে এই ২ নারী। প্রতি লিটার দুধ ২৫-৩০ রুপি। ঘরে দারিদ্র্যের ছাপ ষ্পষ্টতর। খালি হাতে এসেছি এ দরিদ্র বাড়িতে, তাই কিছু কিনে দিতে ইচ্ছে হলো আমার। বললাম কাছে কোন দোকান আছে কিনা। জানালো “প্রধানখুন্তা” নামের বাজার কাছেই, সাথেই রেলওয়ে স্টেশন। আমার অনুরোধে আমার সাথে ২-ভাইবোন যেতে রাজি হলো দোকানে নিজের জন্য সিগারেট কিনবো এ কথা বলাতে। ধুমপানমুক্ত আমি দোকানে গিয়ে গ্রামীণ দোকানের স্থানীয় “মোরব্বা, বড় আকারের ‘থাম্পস আপ’ আর “মুরগীর রোস্ট” কিনলাম। কিন্তু ভাইবোন জানালো, তারা জৈন ধর্মের বলে কোন প্রাণি এমনকি ডিম পর্যন্ত খায়না। কেবল সবজি আর দুধ ফলই তাদের খাদ্য। কিন্তু এ রাতে কোন ফলই সেখানে পেলাম না। আমি সিগারেট না কেনাতে বিস্মিত হলো তারা। মুরগি ফেরত দিলাম ২০ রুপি লস দিয়ে। বিনিময়ে নিলাম হাতে বানাবো যবের রুটি আর সবজি, চাটনি।
খাবার সময় সম্পর্ক গভীর হলো পরিবারের ৪-সদস্যের সাথে। জৈন ধর্মের মানুষের অল্প খাওয়া, কোন প্রাণি হত্যা না করা, কারো সাথে ঝগড়া না করা, অল্পতে তুষ্ট থাকা, কারো কারো কেবল থান জাতিয় এক টুকরো সাদা কাপড় পরা, অবিলাসি জীবনধারা ইত্যাদি কথা শুনে ভাল লাগলো আমার। বললাম কোন ধর্ম পছন্দ করিনা আমি, করলে জৈন হতাম অবশ্যই।
রাতে ল্যাপটপে ফেসবুক খুলে আমার পোস্ট আর বন্ধুদের দেখালাম দুভাইবোনকে। ফেসবুক জানা ভারতীয় এ দুভাইবোন গভীর পুলকিত হলো আমার পোস্টের তরজমা শুনে। অনেক রাত পর্যন্ত গল্প করে খুব অল্পই ঘুমালাম আমি এক অপরিচিত গাঁয়ের অপরিচিত ঘরের ঘনান্ধকার কক্ষে। otc viagra uk
সকাল ৮টার দিকে ঘুম ভাঙলে টের পাই দুধ বিক্রি করতে ২ভাইবোন চলে গেছে “প্রধানখুন্তা” বাজারে। হাতমুখ ধুয়ে একাই রাতের পথ ধরে বাজারে ছুটলাম আমি। দুধ বিক্রি করে দুভাইবোন তখন ফিরছে বাড়ির দিকে। পথে পেয়ে ধরে নিয়ে গেলাম “প্রধানখুন্তা” রেলস্টেশনে। দুপুর ১২-টার এলাহাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকেট পেয়ে গেলাম কোলকাতা ফেরার।
ঘরে ফিরে অনেক গল্প তাদের সাথে। রোববার থাকাতে দুজনেরই আর স্কুল-কলেজ ছিলনা সেদিন। আশে পাশের কটি ঘর ঘুরে দেখালো আমায়। কাচা সড়ক ধরে ফসলের মাঠে যবের ক্ষেতে হেঁঁটে বেড়ালাম আমি। আরো নাম না জানা কত গাছ আর ঘাসের সমারোহ। ছোট চিকচিকে নালার মত শুকনো নদী, ঝাড়খন্ডের ঘুঘুর ডাকও বাঙালি ঘুঘুর মতই মনে হলো।
বেলা সাড়ে এগারোটায় বিদায় নিয়ে “প্রধানখুন্তা” স্টেশনে আসি আমি, সাথে রিনকি আর দিব্য। ১২টার পাঁচ মিনিট আগেই এলাহাবাদ এক্সপ্রেস এসে দাঁড়ালো “প্রধানখুন্তা”র ২ নং প্লাটফর্মে। আমি ট্রেনে উঠেও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে রইলাম। ট্রেন চলতে শুরু করলো, এবার কেন যেন খুব মায়া লাগলো আমার বাবা হারানো রিনকি আর দিব্যর জন্যে। এই প্রথম দুজনের হাত ধরলাম আমি। ওরা হাঁটছে আমার সাথে হাত ধরা অবস্থায়। ট্রেনের গতি দ্রুততর হলো। রিনকি আর দিব্যর হাত ছেড়ে দিতে ইচ্ছে হলনা আমার। আমি ষ্পষ্ট দেখলাম, ওদের দুজনের চোখে জল চিকচিক করছে। ওরা কি জানে আমার চোখে জলের সাথে বুকের কষ্টও একাকার হয়েছে তখন?
তীব্র হুইসেল তুলে ট্রেন এগুতে থাকে। মহাকালের পথচলায় আমি রিনকি আর দিব্যর ভালোবাসার সীলমোহরে জড়ানো একটা খাম হাতে নিয়ে কোলকাতায় পথে ঝাড়খন্ড ছাড়তে থাকি। আমার শরীরের নিঃশ্বাসের মতো ওরা দুরে হারিয়ে যেতে থাকে। দুপুরের ঝলসে যাওয়া রোদ বিকেলের কান্না হয়ে আমার মননে আঘাত করতেই থাকে। ইচ্ছে হয় আবার পরের স্টেশনে নেমে দেখে আসি রিনকি আর দিব্যকে। কিন্তু জীবন দহনে তা আর হয়না, আমার জীবন ট্রেন বাঙলা আর বাঙালির দিকেই ধাবিত হয় সপ্তপদি মানুষ আর স্টেশন ফেলে। acheter viagra pharmacie en france
দুর্বার প্রলয় বলছেনঃ
রিংকি দিব্যর সাথে কি আর যোগাযোগ হয়েছিল??
শিশিরস্নাত দ্রোহি বলছেনঃ
আর যাইনি ভারতে, গেলে আবার হয়তো দেখা হতে পারে। তবে পুনরায় গিয়ে মানুষকে ভুল বোঝার অবকাশ দিতে চাইনা আমি। তাই হয়তো আর দেখা নাও হতে পারে।
দুর্বার প্রলয় বলছেনঃ
ও বুঝতে পারছি ব্যপারটা। glaxosmithkline levitra coupons
শিশিরস্নাত দ্রোহি বলছেনঃ
আমি আসলে মানুষের জীবনবোধ দেখতে চাই, স্থায়ী সম্পর্ক পাতাতে চাইনা কারো সাথে। তাতে দুখবোধ বাড়ে উভয়পক্ষেরই। ধন্যবাদ দাদা
তারিক লিংকন বলছেনঃ
দ্রোহী ভাই মানুষ হিসেবে কেবল মাত্র মানব ধর্মকেই বিবেচনায় রাখতে চাই। এই জন্যেই বলা হয় একটা উপন্যাস পড়া থেকেও একটা ভ্রমণ গুরুত্বপূর্ণ কেননা পর্যবেক্ষণক্ষম মানুষ ভ্রমণ থেকেই সবচে বেশী জ্ঞান অর্জন করে। তাই ভাই সময় পেলেই ঘুরতে বের হই মানুষের জীবন-যাপন থেকে বুঝার বা শেখার জন্য আর কোন ভাল উপায় হতে পারে না… চমৎকার লাগলো আপনার উপলব্ধির যায়গাটা
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
সহমত… ampicillin susceptible enterococcus
শিশিরস্নাত দ্রোহি বলছেনঃ
get viagra nowসহমতি মাইকেলের জন্যে শুভেচ্ছা
শিশিরস্নাত দ্রোহি বলছেনঃ
অনেক ধন্যবাদ তারিক মানবিক উপলব্ধির জন্যে।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
সবাইরে বলি আমি লিংকন লোকজন খালি তারিক বলে…
শিশিরস্নাত দ্রোহি বলছেনঃ
zithromax trockensaft 600 mg preisসরি লিংকন, ধন্যবাদ লিংকন
দুর্বার প্রলয় বলছেনঃ
viagra para mujeres costa ricaএমন লিখা আরো চাই, দ্রোহিদা। ভ্রমন কাহিনী পড়তে ভালই লাগে।
শিশিরস্নাত দ্রোহি বলছেনঃ mycoplasma pneumoniae et zithromax
হ্যা পাবেন। আমার এমন লেখা আছে ৫০০ এর মত !