পুলিশের বর্বরতা ও প্রশাসনের ক্রমবর্ধমান ডানপন্থী মনোভাব
243
বার পঠিতগতকাল পত্রিকায় দেখলাম শাহবাগ মোড়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষার দাবিতে আন্দোলনরত এক ছাত্রীকে পিছন থেকে লাথি মারছে এক পুলিশ অফিসার। কি বীভৎস বর্বরতা। আমরা এ কোন সমাজে বাস করছি ? আমাদের দেশটা কোন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ? এরই নাম কি নারীর অধিকার যেখানে বিশ্ব বিদ্যালয়ের নীতির প্রতিবাদ করায় একজন নারীকে প্রকাশ্য দিবালোকে রাস্তায় দাড়িয়ে পুলিশের লাথি খেতে হয়? এরই নাম কি গণতন্ত্র ?
এই হতভাগ্য শিক্ষার্থীরা কোন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচী পালন করছে না। টেন্ডার বাজি ,চাঁদাবাজির সুবিধার্থে ক্ষমতায় যাওয়ার মরণপণ আন্দোলনও করছে না। তাদের এই আন্দোলন নিজামী , সাঈদীর মত কুখ্যাত রাজাকারদের মুক্তির দাবিতেও নয়। তাদের চাওয়া খুব সামান্য। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার একটু সুযোগ। এই সুযোগটির দাবিতে তারা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছে । করেছে মিছিল ,মানববন্ধন, অনশন ধর্মঘট। যেহেতু ১৩ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অনেকের দ্বিতীয় বারের পরীক্ষার কারনে ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় নাই সেহেতু তাদের দাবিকে ন্যায় সঙ্গত মনে না করার কোন কারন নেই ।তাদের প্রায় সবাই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ার আর্থিক ক্ষমতা তাদের প্রায় কারোরই নেই । দ্বিতীয় বার পরীক্ষার লক্ষ্যে তারা দীর্ঘ দিন ধরেই ঢাকায় অবস্থান করছে। বাবা মায়ের কষ্টের টাকায় কোচিং করে আরো একবার ভর্তি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে। একটা সেকেন্ড চান্স তাদের অবশ্যই প্রাপ্য। এখন হঠাত করে আগে থেকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বার পরীক্ষার সুযোগ বাতিল করাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হঠকারীতা , অমানবিকতার ছাড়া আর কিইবা বলা যেতে পারে।। বাজারে চালু আছে প্রাইভেট ভার্সিটির বিজনেসে মন্দাভাবের কারনে তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে এই নিয়ম চালু করা হয়েছে। যদি তাই হয় তবে তা হবে নিঃসন্দেহে লজ্জাজনক। যে কোন নীতির শান্তিপূর্ন প্রুতিবাদ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার । বিশ্ব বিদ্যালয়ের এই নীতির প্রতিবাদে এই শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমেছে, শান্তিপূর্ন আন্দোলন করছে এবং এটাই তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার । দেশের সংবিধানই তাদের এই অধিকার দিয়েছে। কিন্তু যখন এই গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর যখন আঘাত আসে তখন কি এই প্রশ্নটি আবারো সামনে চলে আসে না ,দেশের গণতন্ত্র কি সঠিক পথে চলছে ?
বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে গর্ববোধ করে তার একটি হচ্ছে দেশে ক্রম বর্ধমান নারী শিক্ষার হার । প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী ,স্পিকারের মত রাষ্ট্রযন্ত্রের শীর্ষ পদ গুলো এখন নারীদের অধিকারে এটাও আমাদের মধ্যে এক ধরনের সুখানুভূতি তৈরী করে বৈকি। এই সব অর্জন দিয়ে আমরা যতইকৃত্রিম গর্ব বোধ করি না কেন বৃহদার্থে নারীর অধিকার এখনো এই সমাজে ফাকা বুলির মত শোনায়।বাসে, ট্রেনে , স্কুলে, বিশ্ব বিদ্যালয়ে ,অফিসে কোথাও নারীর পুর্ন অধিকার নেই । আগে তো সম্মানের প্রশ্ন তারপরেই না অধিকারের প্রসঙ্গ আসে ।বাস্তবতা হল নারীকে সম্মান দিতেই শিখিনি এখনো আমরা । হাবিল হোসেন নামের এই পুলিশ অফিসারটি তা আবারো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে আরও একটি গুরত্বপূর্ণ প্রশ্ন সামনে চলে আসে তা হল যে পুরুষ প্রকাশ্য দিবালোকে সকলের সামনে একজন যুবতী নারীর গায়ে হাত দিতে পারে সেই পুরুষ ঘরে তার স্ত্রী কন্যার সাথে কি রকম আচরন করে ? সেই হতভাগ্য নারীগুলো হয়তো নীরবেই চোখের জল ফেলে যায়। তাদের বাষ্প রুদ্ধ কান্না আর হাহাকার হয়তো ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে গুমরে মরে, ইট কাঠের এই দেয়াল ভেদ করে পৌছায় না হয়তো রাষ্ট্র যন্ত্রের কারো কানে । এরকম আরও কত নারীর কান্না আর হাহাকারে যে ভারি হয়ে আছে আমাদের এই সভ্যতার আকাশ বাতাস কে জানে । আমরা তা দেখি না হয়তো দেখেও না দেখার ভান করি। হয়তো আমাদের অবচেতন মনে লুকিয়ে থাকা পুরুষতান্ত্রিক স্বত্তাটি তা অনুভব করতে বাধা দেয়। কালের পর কাল জমা হতে থাকে তাদের সীমাহীন দীর্ঘশ্বাস
এই পুলিশ অফিসারটির মনস্তত্ব ঘাটলে হয়তো দেখা যাবে যে নারী বিদ্বেষ তার মনস্তত্বের একেবারে গভীর শিকড়ে অবস্থান করছে। সে তার ছোটবেলায় দেখেছে বাবাকে মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে। এখন সে করে তার স্ত্রীর সাথে । তার ধারনা ভবিষ্যতে তার ছেলেও করবে তার স্ত্রীর সাথে। পুরুষ তান্ত্রিক কতৃত্বাকে দেখে সে নির্মম উত্তরাধিকার হিসেবে। অনুশোচনাবোধের সামান্য ছিটে ফোটাও হয়তো তার মধ্যে নেই । শফি ওরফে তেতুল হুজুরের সেই বিখ্যাত (নাকি কুখ্যাত) বাণীটিও তার মনস্তত্বে গভীর ভাবে আছে। কুরান হাদিস পড়ার অভ্যাস যেহেতু খুব একটা নেই এক্ষেত্রে হুজুরের বাণীই তাদের প্রধান ভরসা। খোজ নিলে দেখা যেতে পারে হয়তো কোন পীরের মুরিদও সে। পীর হুজুরেরা যে কোরান-হাদীসের বাইরের কিছু বলেন না, বলবেনও না এই বিশ্বাসটুকু অন্তত তার আছে। তাইতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দাবীতে নারীদের আন্দোলন তার কাছে বেলেল্লাপনা আর অশালীনতার নামান্তর বলে মনে হয়। যেহেতু রাষ্ট্রীয় মোড়কে তার হাতে অস্ত্র ও ক্ষমতা রয়েছে সেহেতু এই বেলেল্লাপনার উপযুক্ত শাস্তি বিধান করা তার কাছে ধর্মীয় দায়িত্ব । এই “বেলেল্লাপনা আর অশালীনতার” বিচার করা তার জন্য অশেষ পূন্য হাসিলের এক অপূর্ব সুযোগ । এই সুযোগ কি আর সে হাতছাড়া করে ? খোজ নিলে দেখা যাবে যে জনপ্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এরকম আরো অনেক বিকৃত মনস্তত্বের পুরুষ বসে আছে নিঃসন্দেহে যা উদ্বেগ বাড়ায় বৈকি কমায় না ।
আজকাল অনেক বুদ্ধিজীবীই আক্ষেপ করে বলেন যে আওয়ামী লীগ ধর্ম নিরেপেক্ষতার রাজনীতি থেকে দূরে সরে দিন কে দিন ডান পন্থার দিকে ঝুকছে। আজকাল প্রায় সব আওয়ামী নেতাই নিজের নামের শেষে আলহাজ লাগায়। নিজেকে ইসলামিষ্ট হিসেবে তুলে না ধরলে ভোটে জেতা যায় না এই বোধ টুকু আজকালকার প্রায় সকল রাজনীতিবিদ দের মধ্যেই আছে । এমন কি এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইনু -মেননের মত এক কালের বাম রাজনীতির ফেরি ওয়ালারাও। কিন্তু রাজনীতিবিদের চেয়ে প্রশাসনের ডান পন্থার দিকে ঝুঁকে পড়া হয়তো এর থেকেও অনেক বেশি উদ্বেগ জনক। অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশ গড়ার পথে অনেক বড় একটা হুমকি। dosage of zoloft for severe depression
un diabetico e hipertenso puede tomar viagra
কোলাহল
Mohd Shahanoor Alam Bhuiyan Titu @ বীরশ্রেষ্ঠ, বীর উত্তম, বীর বিক্রম এবং বীর প্রতীকদের তালিকা
shapan @ প্রসঙ্গ নারী : ধর্মীয় আর সামাজিক বর্বর আইন নারী খৎনা Female Circumcision
Mkjk @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
পারভেজ আহমেদ @ বাংলা কবিতায় ছন্দ কত প্রকার ও কি কি?
Md forid mia @ পা চাটা কুত্তার জলকেলি
Juel @ বিদ্রোহী কবি নজরুল ; একটি বুলেট কিংবা কবিতার উপাখ্যান
Juel @ জলচর মৎস্য হতে স্তন্যপায়ী মানুষ; বিবর্তনবাদের মহা নাটকীয়তার পরিণতি
Ask2ans @ The Boy In The Striped Pajamas