ডাইন
1238 side effects of drinking alcohol on accutane
বার পঠিতআমি ডাইন।
আমার নাম ডাইন। আমার পরিচয় ডাইন।
আমি থাকি ধলপুকুরের পাশে একটা কুড়েতে। এই কুড়েতে আমার আগে আমার মা থাকত। তার আগে তার মা থাকত। তার আগে থাকত তারও মা। এই ঘরে কখনও কোনও পুরুষ থাকে না, থাকে নি। কারণ, আমি ডাইন। আমরা ডাইন।
আমার জন্মের তারিখ নেই কোনও। ধলপুকুরের ওপারে যে ক্ষেতটা আছে, সেই ক্ষেতটারও ওপারে যে বুড়ো বটগাছটা আছে, যে বটগাছটার ছায়ার নাম সোনাতলা, সেই বটগাছটার সবচেয়ে ছোট ছেলেটার সমান বয়স আমার। আমার যেদিন জন্ম হয়েছিল, সেদিন আমি বুড়ো বটগাছটা জড়িয়ে ধরে অনেক কেঁদেছিলাম। অনেক! তবু, আমি মরে যাই নি। আমার আমিত্ব মরে যায় নি। পরদিন সকালে উঠে গাছে বসে থাকতে গিয়ে দেখলাম নতুন একটা গাছ জন্মেছে তার পাশে। ওটাই আমার বয়সের হিসেব।
আমার জন্মের আগে আমি মায়ের সাথে থাকতাম না। জন্মের পরে তো থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমি তখন থাকতাম একা। আমি থাকি একা। সকালে আর সন্ধ্যায়। দুপুরে আর মাঝরাতে।
ভোরে যখন মোরগ ডাকতে শুরু করত, তখন আমি ঘুম থেকে উঠতাম। উঠে ধলপুকুরে মাছ ধরতে যেতাম। আমার মা তখন কুড়ের দাওয়ায় বসে রোদ পোহাত। মাঘ মাসে পোহাত, কড়া চৈত্তিরে পোহাত, ভরা ভাদরেও পোহাত। ডাইনদের নাকি সবসময় শীত লাগে। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম। সে নাকি আমার মা। সে নাকি ডাইন। যে নাকি মানুষের চোখের দিকে তাকিয়ে তার রক্ত শুষে নিতে পারে। অসম্ভব ঠাণ্ডা নাকি তার শরীর! সেই শরীর গরম করতে নাকি সে নাকি গরম রক্ত শুষে খায়! খেয়ে খেয়ে মানুষকে মেরে ফেলে। আমি এক দৃষ্টিতে তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। এত তীক্ষ্ণ তার চোখ; অথচ কত কোমল! এই চোখ দিয়ে আত্মা শুষে নেয়া যায়? আত্মা শুষে নিলে বুঝি চোখ ঘাসের মত কোমল হয়ে যায়?
হঠাৎ বড়শিতে মাছের ঠোকর পড়ত। এক যুগ ধরে ধরতে ধরতে অভ্যেস হয়ে গেছে। টোপ দেখতে হত না। মাছ ঠোকর দিলে সুতো বেয়ে সে খবর আমার কাছে চলে আসত। আমি মা’কে ছেড়ে মাছের দিকে নজর দিতাম। মাছ ধরে খালইতে জমা করতাম। আর কিছু মাছ হত দোয়াড়িতে। সরু কোন নালায় আগের রাতে পেতে রাখতাম। মাছ ওই বাঁশের গোলকধাঁধায় ঢুকতে পারে, কিন্তু বেরোনোর পথ পায় না। ওটা থেকে কিছু মাছ পেতাম। শুকনোর মওসুমে মাছ ধরতাম পলো দিয়ে। অগভীর জলায় যেখানে মাছ আছে বুঝতে পারতাম, সেখানে ঝুপ করে চেপে ধরতাম। তারপর ওপরের ফাঁকা দিয়ে মাছ বের করে আনতাম। সব মাছ জমা করে যেতাম সকাইল্যা বাজারে।
গিয়ে বসে থাকতাম। বসে থাকতাম। মাছ কেউ কিনত না। কারণ, আমি ডাইনের মেয়ে। এর মাঝে কেউ কেউ ছিল, কম টাকাওয়ালা। ও তো ডাইনের মেয়ে। ডাইন তো নয়। ওর মাছ খেলে কিছু হবে না — এই বলে নিজেকে বুঝ দিয়ে মাছ কিনে নিত। কেউ ছিল খুব জরুরী দরকার। কিন্তু, সব মাছওয়ালার মাছ বিক্রি শেষ। তখন কিনত আমার থেকে। আর কিছু মাছ কখনই বিক্রি হত না। ওগুলো আমার জন্যে। আর মায়ের জন্য। হোক ডাইন! সে তো আমার মা। দু’জনে মিলে খেতাম। আমি ভেজে। আর মা কাঁচা। ডাইনদের রান্না করা মাছ খেতে হয় না। তাই মা’ও খেত না।
এভাবেই চলত আমাদের। শীতের পুকুরের মত শান্ত জীবন। মাঝে মাঝে তাতে বোশেখের ঝড় উঠত, যখন গাঁয়ের কেউ অসুস্থ হত। আশেপাশের দশ গ্রামে মা’ই ছিল একমাত্র ডাইন। তাই কেউ অসুস্থ হলে নিশ্চিতভাবেই সব দোষ গিয়ে পড়ত মায়ের ঘাড়ে। যে বাড়ির কেউ অসুস্থ হত, তাদের পুরুষ মানুষেরা এসে মা’কে আচ্ছামত মারত। মারতে মারতে আধমরা করে ফেলত। কখনও কখনও কেউ কেউ ঘরের দরজাও বন্ধ করে দিত। মা ভেতর থেকে চিৎকার করত। আমি বাইরে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতাম।
তারপর একসময় তারা চলে যেত। আমি মায়ের কাছে যেতাম। মাকে দেখে শিউরে উঠতাম। সারা শরীর ফুলে গেছে। কেটে গেছে কোথাও কোথাও। ওরা মাকে এভাবে মারতে পারে! ওরা কি মানুষ? মানুষ কি এতই নিষ্ঠুর? মানুষ কি তবে ডাইনের চেয়েও নিষ্ঠুর? ডাইন মানুষকে মেরে ফেলে চুপিচুপি; গোপনে। আর মানুষ মানুষকে মারে প্রকাশ্যে; বুক ফুলিয়ে। মা শুধু বিড়বিড় করে বলত, “আমার কোন দোষ নাই। বিশ্বাস করেন, আমার কোন দোষ নাই।” আমি পানিতে ন্যাকড়া ভিজিয়ে মায়ের সারা শরীর মুছে দিতাম। মায়ের শরীরে তখন আঙ্গুল লাগত। অসম্ভব ঠাণ্ডা সে শরীর। মৃত মানুষের মত ঠাণ্ডা। মৃত মানুষের শরীর কত ঠাণ্ডা হয়? তারা কী প্রথম শরতে ঘাসের ডগায় জমে থাকা মুক্তোর দানার মত শিশিরের চেয়েও ঠাণ্ডা হয়?
এভাবেই একদিন আমার মা মাঘের সকালে সরষে ফুলের মধ্যে জমে থাক বরফের চেয়েও শীতল হয়ে গিয়েছিল। মা যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছিল সেদিন। তার সারা শরীর রক্তে মাখামাখি হয়ে গিয়েছিল। মা গলাকাটা কৈ মাছের মত তড়পাচ্ছিল। কিন্তু, মরছিল না। ডাইনের আত্মা মরে না। ওটা কাউকে দিয়ে মরতে হয়। আমি বসে ছিলাম মায়ের শিয়রে। গলাটা ধরে এসেছিল। কোন শব্দ বেরুচ্ছিল না। মা শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আর্তনাদের মত বলছিল, “বিশ্বাস কর, আমার কোন দোষ নাই। আমার কোন দোষ নাই।” বলতে বলতে আমার মা’টা মরে গেল। দুপুরের শিশিরের মত উবে গেল। মুখ থেকে জিহ্বাটা একটুখানি বেরিয়ে থাকল বীভৎসভাবে। আমি ভয়ে চিৎকার করে উঠলাম। মা মরে যাবার জন্যে নয়। মা মরার সময় তার পাশে বসে ছিলাম আমি। তার মানে মা মরার আগে তার আত্মা আমাকে দিয়ে গেছে। তার মানে আমার ‘জন্ম হয়েছে।’ তার মানে আমি ডাইন!
আমি ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। সোনাতলায়। বটগাছটা জড়িয়ে ধরে কাঁদলাম। অনেকক্ষণ। যতক্ষণে আকাশের একটা জায়গা দু’বার লাল হয়। যতক্ষণে একটা শালিক দু’বার ঘুমোয়। যতক্ষণে একটা পুঁটি দু’বার কিনারে আসে। ততক্ষণ!
মায়ের লাশটা ঘরের ভেতরেই পড়ে ছিল। তারপর কী হয়েছে জানি না। শেয়াল কুকুরে টেনে নিতে পারে। মানুষও পারে। ওরা তো সব একই জাতের। walgreens pharmacy technician application online
তারপর আবার আমার জীবন চলতে শুরু করল। শীতের পুকুরের মত জীবন।
তারপর আবার সেখানে কালবৈশাখী। একটা ডাইনের জীবনে এর চেয়ে মহান কোন ঝড় আসতে পারে না।
সেদিনও আমি বসে ছিলাম সকাইল্যা বাজারে। কতগুলো খলশে, পুঁটি, ট্যাংরা ইত্যাদি পাঁচ-মিশালী মাছ নিয়ে। এখন আর কেউ মাছ কেনে না বললেই চলে। না কিনলেও আমার কিছু আসে যায় না। এখন আর তেল-নুন-লাকড়ির খরচ নেই। এখন আমি ডাইন। তাই এখন আমিও শুধু কাঁচা মাছ খাই।
সেদিনও বাজার প্রায় শেষ। এক ভাগা মাছও বিক্রি হয় নি। উঠে যাব কি যাব না চিন্তা করছি। এমন সময় যেন উঁচু গলায় কার আওয়াজ শুনতে পেলাম, “ধুর! ঢাকায় বড় মাছ খেতে খেতে মুখে মরচে পড়ে গেছে। এখন আর তোমাকে বড় মাছ কিনে বাহাদুরি দেখাতে হবে না। টেংরা-পুঁটি যা পাও কেন।”
তারপরই তার মুখটা দেখা গেল। এদিকেই আসছে। দেখিনি আগে কখনও তাকে এ গ্রামে। পেছন পেছন গোপাল আসছে। সে তালুকদার বাড়ির খাস চামচা। তার মানে আগন্তুক তালুকদার বাড়ির কেউ হবে। সোজা আমার কাছেই এলো সে। একেবারে রাজপুত্তুরের মত চেহারা। রাজপুত্তুরের চেহারা বুঝি এত সুন্দর হয়? শরতের মেঘের মত টকটকে রং। সেই রংয়ে কাশফুলের মত কোমলতা। চুলটা কেমন কেমন করে যেন পাহাড়ের মত সরু করে ফেলেছে ওপরে। ওই মুরগির ঝুঁটির মত চুলেই তাকে মানিয়ে গেছে দারুণ। রাজপুত্তুরের চেহারায় আর কী কী থাকে? ovulate twice on clomid
সেই রাজপুত্তুর এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল, “মাছ কত করে?”
আমি তার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম। এক দৃষ্টিতে। মুখ দিয়ে শব্দ বেরুলো না কোনও। সাথে সাথে গোপাল তাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিল। বলল, “অনন্তদা, অর দিকে তাকায়েন না। অয় ডাইন। চক্ষের ফিরিত তাকায়া রক্ত শুইষা নেয়।”
অনন্ত নামের সেই রাজপুত্তুর খানিকক্ষণ অবাক হয়ে গোপালের দিকে তাকিয়ে থাকল। তারপর এত জোরে হাসতে শুরু করল যে, বাজার শুদ্ধ লোক ফিরে তার দিকে তাকিয়ে রইল। গোপালকে সে বলল, “এ ডাইনী? আচ্ছা! আমি এর মাছই খাব… মাছ কত করে?” আমি শুধু কলের মেশিনের মত করে বললাম, “পঁচিশ টেকা ভাগা।” সে বলল, “ভাগা মানে কী?” একে আমি ভাগা কি, সেটা কী করে বোঝাবো? একটু পরে এক সাথে রাখা এক ভাগা মাছ দেখিয়ে বললাম, “এইটুকুন এক ভাগা।” -ও আচ্ছা! এক ভাগ? তাই বল। কয় ভাগা আছে? -চাইর ভাগা। -আচ্ছা! পুরোটা দিয়ে দাও।
সাথে সাথে গোপাল আটকে উঠল, “দাদা করেন কী! ওর মাছ খাইলে মরবেন!” সে বলল, “মরলে আমি মরবো। তোমার কী? তোমরা এখনও সেই আদ্যিকালেই পড়ে রইলে এখনও।” বলতে বলতে সে একশ টাকার নোট বের করল।
গোপাল আবার আটকে উঠল, “দাদা এই মাছের ভাগা তো পনরো টেকাও না।” “ভাল হয়েছে! আমি ষাট টাকার মাছ একশ টাকা দিয়ে কিনব। তোমার কোনও সমস্যা?” বলে সে আমার দিকে টাকা বাড়িয়ে দিল।
আমি ইতস্তত হাত বাড়িয়ে সেটা নিলাম। একবার ভাবলাম বলি, এই মাছের ভাগা পনেরো টাকা করেই বিক্রি হয়। কখনও কখনও দশ-বারো টাকায়ও। পরে ভাবলাম, থাক! দরকার কী? টাকা নিয়ে চলে এলাম।
সেও চলে গেল। কিন্তু, গেল না।
আমার তার পরের দিন গুলো কিভাবে কেটেছে, আমি জানি না। স্বপ্ন যেমন আধো আধো খাপছাড়া স্মৃতি দিয়ে গড়া, আমার তার পরের দিনগুলোও ঠিক তেমনি। কেউ আমার সাথে কথা বলবে, এটুকু আশাই আমি যেখানে কখনও করি নি, সেখানে কেউ কখনও নিজে থেকে এসে আমার সাথে কথা বলবে, সেটা আমার সুদূরতম ভাবনাতেও ছিল না। সে যখন আমার সামনে আসত, আমি গড়গড় করে আমার সবকথা বলতে শুরু করতাম। সব! সে কথা খুব বেশি বলত না। কিন্তু, যেটুকু বলত আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতাম। সে সামনে বসে থাকলে ইচ্ছে হত, এভাবেই বসে থেকে চিরকাল কাটিয়ে দেয়া যায়! তার সাথে ধলপুকুরের পাড়ে হাঁটার সময় মনে হত, এভাবে হাঁটতে হাঁটতেই যদি চিরকাল কাটিয়ে দেয়া যায়!
গ্রামে আমাদের দু’জনকে নিয়ে নানা কথা ছড়িয়ে পড়ল। তালুকদার বাড়ির ছেলের এত বড় অধঃপতন কিভাবে হল! গ্রামের আর মানসম্মান কিছু রইলো না। যা করার রাতের বেলা করলেই চলে, দিনে সবার সামনে করার দরকারটা কী? শহরের বড় ইশকুলে পড়ে বিদ্যা বেশি বেড়েছে। বেশি বিদ্যা বাড়লে এমনই হয়। আরে ধর্ম বলেও তো একটা জিনিস আছে! আরে বুড়োদের মান্যি না করে, অত লাফানো কি ভাল! এত বছর ধরে তো কিছু দেখেছি, কিছু জেনেছি, বাছা!
কথা ছড়াল আমাকে নিয়েও। নতুন করে কিছু নয়। বরাবর যা ছড়ায় তাই। আমি ডাইন। আমি অনন্তদাকে বশ করেছি। আমার সাথে অত ‘ঘেঁষাঘেঁষি’র পর থেকেই অনন্তদা শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। চোখের নিচে কালি জমেছে। আমি অনন্তদাকে একটু একটু করে মেরে ফেলছি। তাকে তাড়াতাড়ি শহরে পাঠিয়ে দেয়া দরকার। তালুকদার বাড়ির বড় গিন্নি মানে অনন্তদার মা তো উঠানে গড়াগড়ি খেয়ে কাঁদল। চিৎকার করে বলল, “তোমরা কে কোথায় আছো? গুনিন ডাকো। ওই ডাইনের হাত থেকে আমার ছেলেকে বাঁচাও।” will metformin help me lose weight fast
অনন্তদা তার কিছুতেই গা করত না। বরং আমিই যখন তাকে বলতাম, “আমি ডাইন। আমার কাছে আসবেন না।” তখন সে হাসতে হাসতে বলত, আমি নাকি ওসব কিছুই না। আর দশটা সাধারণ মানুষের মতই মানুষ। সবার কাছে এই কথা শুনতে শুনতে আমি বিশ্বাস করে নিয়েছি আমি ডাইন।
আমি ভাবতাম। আর ভাবতাম। সত্যিই কি আমি ডাইন নই? আমিও কি আর সবার মত মানুষ? আমার মাও কি মানুষ? মনে হতে শুরু করল, মায়ের ঘাসের মত কোমল চোখের কথা। ও চোখ দিয়ে কি রক্ত শুষে নেয়া যায়? মা মারা যাবার সময় কি তবে আমার জন্ম হয় নি? আমি কি ডাইন হই নি? হাজারটা প্রশ্ন নিয়ে নতুন করে ভাবতাম। অনন্তদা যাই বলত, তাই বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হত। সে বলত, আমি মানুষ। আমি তাই বিশ্বাস করেছিলাম। যে যদি বলত, আমি পরী, তবে আমি তাই বিশ্বাস করতাম। যদি বলত, আমি ঘাসফুল, আমি তাই বিশ্বাস করতাম। আমি তার শরতের মেঘের মত কোমল চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। অমন চোখ যার আছে, সে কি মিথ্যে বলতে পারে?
অনন্তদা বলত, ঈশ্বর নাকি মানুষকে পৃথিবীতে পাঠানোর আগে দুটো আত্মাকে একসাথে বেঁধে দেয়। দু’টো আত্মা সারা জীবন ধরে একে অন্যকে খুঁজে ফেরে। যখন একজন আরেকজনকে পেয়ে যায়, তখন তারা একসাথে বাঁচে, একসাথে মরে। অনন্তদা বলত, আমি নাকি হাসনাহেনা ফুলের মত। রাতের অন্ধকারে সে যেমন করে মানুষকে মাদকতায় আচ্ছন্ন করে ফেলে, আমি নাকি তেমনই।
আর তাই, একদিন তার মধ্যে থেকে সেই আচ্ছন্নতা দূর করতে গুনিন এলো। তালুকদার বাড়ির সামনে বিশাল তোড়জোড় শুরু হল। অনন্তদা তার সামনে আসতেই রাজি হচ্ছিল না। সবাই জোর করে অনন্তদাকে ধরে উঠোনে একটা খুঁটির সাথে বাঁধল।
আমাকে আমার কুড়ে থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসা হল। আমাকে বাঁধা হল উঠোনেই আরেকটা খুঁটির সাথে। গুনিনের চিকিৎসা শুরু হল লাঠির বাড়ি দিয়ে। আমি সাথে সাথে চিৎকার করে উঠলাম। প্রতিটা আঘাত যেন রক্ত-মাংস-চামড়া ভেদ করে হাড়ে গিয়ে লাগল। অনন্তদাও চিৎকার করে উঠল আমাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য। থামল না।
একটু পরে গুনিন তার ঝোলা থেকে সরিষা বের করে নাকের কাছে ধরল। সরিষার ঝাঁঝে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। গুনিন বলল, “বল! আর কোনোদিন কোন মনিষ্যির ফিরিত চোখ তুইলা তাকাবি?” আমি মাথা নাড়লাম – না বোধক। “অক্ষনি এই গাঁও ছাইড়া চইলা যাইবি?” আমি অনন্তদার দিকে তাকালাম। তার দু’চোখে প্রচণ্ড আর্তি জমে উঠল, যেন আমি না বলি। গুনিন আবার গর্জে উঠল, “যাবি?” আমি বিড়বিড় করে বললাম, “যামু”।
অনন্তদা আবার চিৎকার করে উঠল, “তুমি যেও না।” venta de cialis en lima peru
আমি শুধু একবার অনন্তদার দিকে তাকালাম। দু’জন চোখে চোখে কতটা যন্ত্রণা বিনিময় করলাম, আমি নিজেও জানি না। তারপর দাঁতে ঠোঁট চেপে নিচের দিকে তাকালাম। আমার বাঁধন খুলে দেয়া হল। হাঁটু ভেঙ্গে নিচে পড়ে গেলাম। একটু পরে অনন্তদার বাঁধনও খুলে দিল।
সবাইকে অবাক করে দিয়ে অনন্তদা ছুটে ঘরের ভেতর ঢুকে গেল। পিছু পিছু তাকে ধরতে আরও কয়েকজন গেল। একটু পরে ভেতর থেকে আর্তনাদ শোনা গেল, “ছোট বাবু বটি দিয়া নিজের গলায় কোপ দিছে!”
সাথে সাথে আমার পৃথিবীটা দুলে উঠল। ফাঁদে ধরা পড়া একটা শালিকের মত মনে হতে লাগল নিজেকে। যে কেবল প্রবল যন্ত্রণায় কাতর হয়, কিন্তু মরে না। সে বেঁচে বেঁচে মৃত্যুর চেয়েও বেশি যন্ত্রণা ভোগ করে।
হঠাৎ কী ভেবে বাড়ির ভেতরের দিকে দৌড় দিলাম। সবাই অনন্তদাকে নিয়েই ব্যস্ত। তাই আমার দিকে কেউ খেয়াল করল না। হই-হট্টগোলের পাশ কাটিয়ে অনন্তদাকে শুধু এক পলক দেখলাম। তার চোখের দিকে তাকালাম। তার শরতের মেঘের মত কোমল চোখ। আমার দৃষ্টি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করল। তীব্রতম! অনন্তদা প্রবল অবিশ্বাস নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল। আমার গলা দিয়ে একদলা কান্না বেরিয়ে আসতে চাইল। কিন্তু, অনন্তদাকে বাঁচানোর আর যে কোন পথ নেই। অনন্তদাকে ‘জন্ম দিলে’ই কেবল সে বেঁচে যাবে। ডাইনের যে মৃত্যু নেই।
হঠাৎ, কে যেন চিৎকার করে উঠল, “ডাইন বাড়ির মদ্দি ঢুইকা গেছে।”
সাথে সাথে সবার আমার দিকে খেয়াল হল। হঠাৎ কে যেন প্রচণ্ড জোরে কিছু দিয়ে মাথার পেছনে আঘাত করল। মুহূর্তে পুরো পৃথিবী ঝাপসা হয়ে এলো। আমি শেষবারের মত অনন্তদার দিকে তাকালাম। তার শরতের মেঘের মত চোখের দিকে তাকালাম। সেই শরতের মেঘের মত কোমলতা এখন ঘাসের মত কোমল হয়ে গেছে। সেই কোমলতা ভেদ করে একটা প্রখর তীক্ষ্ণতা!
তার সেই কোমল চোখের দিকে তাকিয়ে আমি চোখ বন্ধ করলাম।
অংকুর বলছেনঃ
অনেক সুন্দর একটা লেখা । পড়ে ভালো লাগল । এই লেখাটার কি কোন ভিত্তি আছে না পুরোটাই কাল্পনিক ?
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
না! কোন বাস্তব ভিত্তি নেই। পুরোটাই কাল্পনিক।
রাজু রণরাজ বলছেনঃ
অসাধারন হয়েছে দাদাভাই
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
ধন্যবাদ আপনাকে!
তারিক লিংকন বলছেনঃ
viagra in india medical storesআপনি যে কীভাবে এতো সুন্দর করে ছোট গল্প লিখেন। আমি যতই পড়ি ততই মুগ্ধ হই। চমৎকার লাগলো ক্লান্ত-দা!! ^:)^ ^:)^ ^:)^ ^:)^ ^:)^ =D> =D> =D> =D> =D>
অংকুর বলছেনঃ
irbesartan hydrochlorothiazide 150 mgক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
about cialis tabletsক্লান্ত আবার দা’এর ব্রান্ড হওয়া শুরু করল কবের থেকে?
মাশিয়াত খান বলছেনঃ
অসাধারণ বললেও কম বলা হবে ^:)^ ^:)^ ^:)^
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
:”> :”> :”>
তারিক লিংকন বলছেনঃ
আসলেই অসাধারণ বললেও কম হবে…
চৌধুরী তামিম বলছেনঃ
ক্লান্ত দাদা ফাটাই দিছেন। আমিও অল্প বিস্তর গল্প লিখার চেষ্টা করি! আপনার লিখাটা গতকালই পড়েছি। আজ আইডি খুলে মন্তব্য করলাম।
দারুণ দুর্দান্ত আর অনবদ্য কাব্যিক ^:)^ ^:)^ ^:)^ ^:)^ ^:)^
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
zovirax vs. valtrex vs. famvirঅসংখ্য ধন্যবাদ! %%- %%- %%-
অংকুর বলছেনঃ amiloride hydrochlorothiazide effets secondaires
:গোলাপ নিন: :গোলাপ নিন: :গোলাপ নিন:
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ
কালবৈশাখী ইজ অ্যা ক্লাস। অসাধারন লাগলো স্যার!
তারিক লিংকন বলছেনঃ
:দে দে তালি: :দে দে তালি: :দে দে তালি:
সহমত… ইলেকট্রনের সাথে!!
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
কালবৈশাখি! buy kamagra oral jelly paypal uk
X( X( X(
ইলোসিয়া মৌনিন বলছেনঃ
মারছে রে মারছে।
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ renal scan mag3 with lasix
কে কারে মারল!!!
zithromax azithromycin 250 mg
মাসরুফ হোসেন বলছেনঃ can levitra and viagra be taken together
অদ্ভুত!!!! খুব, খুব, খুব ভালো লাগলো!
ঐষী- দ্য বিচ্ছু বলছেনঃ puedo quedar embarazada despues de un aborto con cytotec
বাহ!
গল্পের চরিত্রটার মধ্যে চমৎকারভাবে ঢুকে গেছেন লেখক।
বর্ণনাভঙ্গিও যেন হাতপাকানো কলমধারকের!
তারাশঙ্গকরকে মনে পড়ছে…