অমূল্য
473
বার পঠিতনিহাল। বছর আটেক বয়স ছেলেটির। অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে। সারাদিনে তার ব্যস্ততার অন্ত নেই। কখনও স্কুল, কখনও কোচিং, কখনও বা প্রাইভেট টিউটর। এ এক টাইট শিডিউল! আজকালকার আর পাঁচটা শিশুর মতই নিহালও অবসরে বিনোদনের জন্য বেছে নিয়েছে কার্টুন আর গেমস। এভাবেই রুটিন মাফিক চলে তার পুরো সপ্তাহ।
আজ নিহাল পড়েছে বিশাল ঝামেলায়। রুটিন অনুযায়ী আজ কোন কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউটর নেই। আজ কার্টুন ও নেই। সপ্তাহের এই দিনে সব পুরাতন পর্বগুলোই পুনঃপ্রচার করে। এই দিনটা সে কম্পিউটারে গেমস খেলে পার করে। কিন্তু আজ কম্পিউটার নষ্ট।
স্কুল থেকে ফিরেছে বেলা বারোটায়। ফ্রেশ হয়ে টিভির সামনে বসেছে অনেকক্ষণ হল। কোন চ্যানেলে স্থির হতে পারছে না। বার বার চ্যানেল ঘুরাতে ঘুরাতে বিরক্ত সে। কারণ সব পর্ব গুলোই আগে দেখা। রহিম মিয়া এরই মাঝে নাস্তা দিয়ে গেল। সে খেয়ে নিলো। রহিম মিয়া? রহিম মিয়া হল নিহালদের গ্রামের লোক। বয়স্ক এ লোকটাই নিহালদের বাসার সব কাজের দেখাশোনা করে। সাথে নিহালেরও। রহিম মিয়াকে নিহাল দাদু বলে ডাকে।
টিভি বন্ধ করে নিহাল অনেকক্ষণ ভাবল কি করবে। কিন্তু কিছুই ঠাহর করতে পারলো না। হঠাৎ কি ভেবে তার মাকে ফোন দিল-
-হ্যালো আম্মু।
-হ্যাঁ! বল নিহাল। হঠাৎ ফোন দিয়েছ কেন? ইজ এনিথিং রং?
-আম্মু, কি করবো বলতো। কম্পিউটার নষ্ট গেম খেলতে পারছি না। টিভিতেও…
-আহ! নিহাল দুদিন পরই কম্পিউটার এসে পরবে। আপাতত কয়েকদিন একটু মানিয়ে চল।
-কিন্তু আমি…
-আচ্ছা রাখছি বাসায় এসে কথা হবে আমি ব্যস্ত আছি।
নিহালের মা ফোন কেটে দিল। তার মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। সে এবার তার বাবাকে ফোন করলো
-হ্যালো আব্বু।
-হুম! বল। হঠাৎ ফোন করলে যে!
-তুমি কি খুব ব্যস্ত?
-নাহ বল কি হয়েছে?
-আমার ভাল লাগছে না…
-কেন বাবা নতুন কোন গেমস এসেছে? নাকি তুমি পিএসপি চেয়েছিলে সে জন্যে?
-না বাবা। সে জন্য নয়। কম্পিউটার তো সার্ভিস সেন্টারে, আমি বাসায় খুব বোর হচ্ছি।
-অহ তাই! আমি তো অফিসে তা নাহলে তোমায় ঘুরতে নিয়ে যেতাম। এক কাজ কর তুমি বরং তোমার রহিম দাদুকে সাথে নিয়ে কোন বন্ধুর বাসায় যেয়ে ঘুরে আসো, অথবা কোন রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে মজার কিছু খেয়ে আসো।
-আ…
-এখন রাখি, বস আমাকে ডাকছে। বাসায় এসে কথা হবে।
নিহালের বাবাও ফোন কেটে দিলেন। নিহালের মন আরও খারাপ হয়ে গেল। সে রুমের গেল কিছু ক্ষণ বিছানায় শুয়ে রইলো। কি ভেবে যেন বারান্দায় গেল। বারান্দায় বসে নিহাল দেখতে লাগলো- সামনে বিশাল একটা মাঠ, সেখানে তার বয়সের কিছু ছেলে ক্রিকেট খেলছে। নিহাল তাদের খেলা দেখছে। যে ছেলেটি ব্যাটিং করছিল সে জোড়ে একটা শর্ট খেলল। বলটা উড়ে গেল, সম্ভবত ছয় হয়েছে। সাথে সাথেই একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন হাততালি দিতে দিতে ছেলেটির দিকে দৌড়ে গেল। ছেলেটিও তাদের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। হয়তো তারা ম্যাচ টি জিতেছে। তাই এ উল্লাস। নিহাল ভাবতে লাগলো – ‘আমারও যদি এমন বন্ধু থাকতো! আমিও মাঠে গিয়ে খেলতে পারতাম। কত মজাই না হতো! আচ্ছা রহিম দাদুকে বলি যদি তিনি মাঠে নিয়ে যান’। নিহাল রহিম মিয়ার কাছে যাচ্ছিল, হঠাৎ থেমে গেল ‘না মা বকবে। বাবাও রাগ করবে। মা তো বলেই, ‘ওদের কম্পিউটার পিএসপি নেই তাই ওরা ওখানে খেলে। পরে আবার আমার পিএসপি কিনার প্ল্যান ক্যান্সেল হবে’। নিহাল বারান্দায় ফিরে গেল। আবার খেলছে ছেলেগুলো। নতুন ম্যাচ শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। নিহাল অপলক দেখছে খেলা। রহিম মিয়া হঠাৎ পেছন থেকে নিহালকে ডেকে বললেন-
-নিহাল বাবু, সাহেব ফোন করেছিলেন। বললেন তোমাকে নিয়ে তোমার কোন বন্ধুর বাসা দিয়ে ঘুরে আসতে অথবা কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে কিছু খাইয়ে আনতে। তুমি কি তোমার কোন বন্ধুর বাসায় যাবে?
নিহাল তখনও মাঠের ছেলেদের খালা দেখছে। খেলা দেখতে দেখতেই উত্তর দিল – ‘না দাদু আমি যাব না’।
রহিম মিয়া আবার বলল-
-কেএফসি কিংবা পিজা হাটে গিয়ে কিছু খেয়ে আসবে তাহলে?
নিহাল হঠাৎ লাফিয়ে উঠলো –
-ইয়েস!!!! রহিম দাদু দেখ ঐ ছেলেটা আউট হয়েছে।
রহিম মিয়া অবাক হয়ে বলল-
-কোন ছেলেটা?
-আরে ঐ যে ঐ নিলো জামা পড়া ছেলেটা।
মাঠের দিকে আঙ্গুল করে দেখাল নিহাল। রহিম মিয়া হাসল, নিহাল রহিম মিয়ার দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল
-না দাদু আমি কোন বন্ধুর বাসায়ও যাব না, রেস্টুরেন্টেও যাব না। আমাকে তুমি ঐ মাঠে নিয়ে চল।
-ঐ মাঠে!
-হ্যাঁ ঐ মাঠে। আমি ওদের সাথে খেলবো।
-ওরা যদি না নেয়?
-ওরা খেলায় না নিলে বসে বসে ওদের খেলা দেখবো। কম্পিউটারে গেমস খেলার চেয়ে ওদের খেলা দেখাও অনেক বেশি মজার।
নিহাল এখন তার রহিম দাদুর সাথে মাঠে যাচ্ছে। নিহাল মাঠে খেলছে, সে এখন অনেক খুশি। নিহাল ভাবছে বাবার কাছে পিএসপির বদলে বরং একটা মাঠ চাইবে। একটা সবুজ মাঠ। বাবা কি দিতে পারবে? সবুজ মাঠ নিশ্চয়ই পিএসপির চেয়ে অনেক বেশি দামী।
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ
ধীরে ধীরে তোর উন্নতিটা চোখে পড়ছে। জাস্টি কিপিটাপ বাড্ডি।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
kamagra pastillasধন্যবাদ পড়বার জন্য
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
ইলেকট্রন ঠিক বলছে। আসলেই আপনার লেখার উন্নতি হচ্ছে দিন দিন …
রবিন রেজোয়ান বলছেনঃ
ভালোই।
para que sirve el amoxil pediatrico