অভিমানী ভালবাসা (পর্ব-১)
597
বার পঠিতহঠাৎ মোবাইলে ভাইব্রেশন হল। কেপে উঠলো মোবাইলটা। একটা ম্যাসেজ এসেছে। সেই সাথে সুপ্ত’র হৃদয় টাও যেন কেপে উঠলো। তৎক্ষণাৎ মোবাইলটা তুলে নিলো বিছানা থেকে। কার ম্যাসেজ!না সে যার ম্যাসেজের অপেক্ষা করছিল সে নয়, অন্য এক বন্ধুর ম্যাসেজ। আগ্রহ হারিয়ে মোবাইলটা আবার বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিল সে।
সুপ্ত, তন্দ্রা’র ম্যাসেজের অপেক্ষা করছিল। তন্দ্রা! তন্দ্রা হল সেই মেয়েটি যার জন্য ঘুম পাগল সুপ্ত রাতে পর রাত নির্ঘুম কাটিয়ে দিয়েছে। একবার ও বলে নি ঘুম পেয়েছে তার, বরং তন্দ্রা ঘুমাবার কথা বললে মন খারাপ করত। একটি মুহূর্ত তাকে ছাড়া ভাবতে পারতো না সুপ্ত। একদিন কথা বলা বন্ধ করা তো দূরের থাক ম্যাসেজের রিপ্লে দিতে দেরি হলেই হাজার চিন্তা সুপ্তর মাথায় বাসা বাঁধত। খুব ভয় পেত সুপ্ত, তন্দ্রাকে হারাবার ভয়। কিন্তু সেই সুপ্ত আজ তিন দিন হল তন্দ্রার সাথে কোন কথা বলে নি। এমনকি একটা ম্যাসেজও দেয় নি। হুম, অবাক হবার মতই কথা। সামান্য মনোমালিন্যের রেশ ধরেই তাদের মধ্যে এই অভিমান। ভালবাসা ও অভিমানের মধ্যে এখন অভিমানটাই বেশি আধিপত্য বিস্তার করে আছে দুজনের মাঝেই। তাইতো কেউই কাউকে কোন ম্যাসেজ অথবা ফোন দিচ্ছে না।
সুপ্ত যত চেষ্টা করছে তন্দ্রাকে ভুলে থাকবার তত বেশি যেন তন্দ্রাকে মনে পরছে তার। প্রতিটি কাজে, প্রতিটি কথায় যেন তন্দ্রার প্রতিবিম্ব হাজির হয়ে যাচ্ছে তার সামনে।সুপ্ত’র সব কিছু জুড়েই শুধু তন্দ্রা আর তন্দ্রা। এতক্ষণ বালিশে মুখ গুজে ছিল সে। এখন উঠেছে। উঠেই সময় দেখার জন্য মোবাইল টা হাতে নিলো। ধুর যা! মোবাইলের সময় টা ওলোট-পালোট হয়ে আছে। তাই বাধ্য হয়েই বিছানা ছাড়তে হল। এখন টেবিলের উপরে রাখা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখবে, সময় দেখলো। কিন্তু এতেও যে তন্দ্রার স্মৃতি!
সেই দিনটির কথা মনে পড়ে গেল তার। সেই দিনটি, যে দিন প্রথম তন্দ্রার হাত ধরে রাস্তায় হেঁটেছিল সে। সেই দিনই তন্দ্রা এই টেবিল ঘড়িটি দিয়েছে। হাটার সময় তন্দ্রার হাতে যখন হাতটা লেগেছিল, অন্য রকম এক অনুভূতির সম্মুখীন হয়েছিল সে। এ এক অন্য রকম অনুভূতি। হাতটি ধরে হেটে চলার তীব্র ইচ্ছা, সেই সাথে কেউ দেখে ফেলার কিঞ্চিত ভয়, দুয়ে মিলে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত এখানে তন্দ্রার প্রতি সুপ্ত’র তীব্র ভালবাসারই জয় হল। হাতটি ধরে ফেলল সে।তন্দ্রাও ভুল করে নি সেবেলা। সেও শক্ত করে ধরে ফেলল সুপ্তর হাতটি। হেটে চলল একে অপরের হাতটি ধরে। সময় যেন তীব্র গতিতে চলছিল তখন, একটু পরেই তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেল। সুপ্ত বলেছিল – কি ব্যপার এত তাড়াতাড়ি কি করে পৌঁছে গেলাম আজ! সাথে সাথেই তন্দ্রা’র হাসি। এ যে সে হাসি নয়, অনবরত হেসে যাওয়া। হাসতে হাসতে সুপ্তর শরীরে গড়িয়ে পরা। সুপ্ত ঈষৎ বিব্রত হয়েছিল, তবুও তন্দ্রার হাসি সেটাই তার কাছে অনেক। আসলে প্রিয় মানুষটির সব কিছুতেই ভাল লাগে। পরে তন্দ্রা তাকে জানালো যে তাদের আসতে পঁচিশ মিনিটি লেগেছে। যেখানে দশ মিনিটের বেশি লাগার কথা নয়, সেখানে পঁচিশ মিনিট! তন্দ্রার সাথে থাকাকালীন সময় গুলো কেন যে এত তাড়াতাড়ি চলে যায় বুঝে না।
এই যা আবার ও তন্দ্রা! ধুর, সব কিছুতেই যে কেন তন্দ্রার স্মৃতি। সময় কাটছে না, বিকেল পাঁচটায় বের হবে সুপ্ত। তিনটায় শুয়েছিল, উদ্দেশ্য ছিল ঘুমিয়ে সময় পার করা। কিন্তু ঘুম যেন অমবশ্যার চাঁদ দেখাই দেয় না।এতক্ষণ শুয়ে থাকার পর ও সময় পার হল না। মাত্র চারটা বাজে। আরও এক ঘণ্টা। ঘড়িটির দিকে তাকিয়ে আছে সুপ্ত। ঘড়িটির দুপাশে ছবি রাখার দুইটি ফ্রেম সংযুক্ত আছে। এতে তন্দ্রার ছবি ছিল, কিন্তু সেটাও রাগের মাথা গতকাল ছিরে ফেলে দিয়েছে সে।আর ছিঁড়বেই না কেন বলুন। যার জন্য নিজেকে এতটা বদলে দিয়েছে সুপ্ত, সেই যদি বলে “আমি এখন আর তোমাকে ভালবাসি না” তাহলে কেমন লাগে বলুন। গত সপ্তাহেই তো মানিক মিয়া এভিনিউ হয়ে জিয়া উদ্যান হাতে হাত রেখে হেঁটেছে তারা।কি হল এরই মধ্যে!
আবার ভাব্রেশন, ম্যসেজ এসেছে। না এবার তন্দ্রার ম্যসেজই। দুই দিন পর ম্যসেজ দিল- “তুমি কি আমার উপর রাগ করে আছো?” কিন্তু সুপ্ত এখন আর রিপ্লে দিবে না। তন্দ্রা কেন বলেছিল তাকে এখন আর ভালবাসে না সে। অভিমানের এবারও জয় হল।
তন্দ্রাকে নিয়ে এত ভাবনা কেন সুপ্ত’র? সুপ্ত তো সেই দিন ফোন কেটে দেয়ার পরই প্রতিজ্ঞা করেছিল, তন্দ্রাকে নিয়ে আর ভাববে না। কিন্তু এখন যে আরও বেশি ভাবছে সে।একবার তন্দ্রার কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করেছে,কিন্তু পরোক্ষনেই অভিমানের বোনা জালে আটকা পড়ে যাচ্ছে মনটা। ইচ্ছার বিরুদ্ধে মস্তিষ্কের তীব্র হস্তক্ষেপে মন থেকে তন্দ্রাকে ছুড়ে ফেলার এক ব্যর্থ প্রয়াস সুপ্তর।কিছু অভিমানের মাঝে দূরে থেকেও কাছে থাকা এটাই তো ভালবাসা।
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
তন্দ্রাকে মনে পরছে তার। এখানে পড়ছে হবে। পরিধান অর্থে ব্যবহার ছাড়া আর সবখানেই ড় ব্যবহৃত হয়।
গল্পটা মোটামুটি ভালই লেগেছে। তবে, সরাসরি চোখে আঙ্গুল দিয়ে সে তন্দ্রাকে ভুলতে পারছে না, এসব বলে না দিয়ে তার কাজ আর গল্পের উপস্থাপনার মাধ্যমে সেটাকে ফুটিয়ে তুললে আরও বেশি ভাল হত সম্ভবত।
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
সহমত রবিনের সাথে…
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
renal scan mag3 with lasixআপনার লেখার ধাঁচে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। =D> আরও লেখা চাই, লিখে যান ক্রমাগত… শুভকামনা রইল… :-bd