আদীম আদর…
588 metformin gliclazide sitagliptin
বার পঠিতএলিনা দাঁড়িয়ে আছে ফ্যান্সি বারের সামনে, তার সাজপোশাক ততোটা রংচঙা নয়। দুই প্যাগ হুইস্কি গিলে ফেললে মেজাজটা কেমন ভারভার অথচ ফুরফুরে হয়ে যায়, মনের রঙটাই তখন সমস্ত অস্তিত্ব রঙিন করে দেয়। দুই প্যাগের বেশী কখনোই গেলেনা সে, যদিও এর একটা সঙ্গত কারনও আছে! হ্যাংওভার কাটানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, লেমনেড ওয়াটার বা সোর টমাটো জুস তেমন একটা কাজ দেয়না। পরদিন দুপুর পর্যন্ত ঝিমঝিমে আবেশে কেটে যায়। বিকেলের দিকে প্রবল বমি! তার’চে বরং সামলে গেলাই ভালো। আরো ভালো দিক হলো এলিনা নিজেকে ভালোভাবে নিয়ন্ত্রন করতে জানে। এই ছাব্বিশ বছরের জীবনে সে নিঃসঙ্গতা কখনোই অনুভব করেনি, এর পেছনে আত্মকেন্দ্রিকতা বিশাল ভুমিকা রেখেছে। নিজের সুখ আর আনন্দ ছাড়া সে কিছুই চিন্তা করতে পারেনা। এটাই ভালো মনে হয় তার। তার বান্ধবি ক্যাথরিনের দিকটা সে বিচার করে দেখেছে, নিজের বয়ফ্রেন্ডকে সে আরেকটি মেয়ের সাথে শুতে দেখে আত্মহত্যা করেছিলো। টিপিকাল থট, কম্পলিকেটেড লাইফ। এর মানে হয়? ক্যাথের জন্য মায়া হয় তার। সে চাইলেই এলিনার মতো সুখী হতে পারতো! এর একমাত্র পথ হলো কাউকে ভালো না বাসা। ভালোবাসা মানেই একগাদা আবেগ নিয়ে ঘোরাফেরা করা, অন্য একজনের হাতে নিজের হাসি কান্নার নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেয়া! হাউ রুড! এলিনা মনে মনে হাসে। দক্ষিন দিকের চেরী গাছের ওপর দিয়ে দেখা যায়, এলিনার ফ্ল্যাটের বাতি জ্বলছে, ওটা কখনো নেভেনা। সে অন্ধকার এরিয়ে চলে, সুন্দর জীবনের রসদ হলো আলো। একমাত্র আলোকিত মানুষেরাই সেবাশীল আর সুখী হয়।
‘হাই বিউটিফুল আই এম এলমো, এলমো ডি অগাষ্টাস… ফ্রম সাউথ স্কটল্যান্ড… আর ইউ লুকিং ফর মেইল হুকার?’
এলিনা ঢুলুঢুলু চোখে পেছনে তাকালো,
- হাই এলমো, আমি এলিনা। তুমি কি পেছন থেকে দেখেই মানুষের বিউটি নির্ধারন করতে পারো?
লোকটা একটু অস্বস্তিতে পড়লো,
‘না তা না!… কিন্তু সামনের দিক থেকে তুমি আরো বেশী সুন্দরী’
মুখ শুকনো করে কথাগুলো বললো এলমো। তার ফ্রেঞ্চকাট দাড়ি আর পেটানো শরীর দেখে প্রচন্ড আকর্ষন অনুভব করছিলো এলিনা, বুকের দাপটে এর পুরুষত্ব পিষে মারার তর সইছিলোনা তার।
- ধন্যবাদ এলমো
‘ধন্যবাদ কেনো?’
- তোমার কম্পলিমেন্টের জন্য। যাইহোক আজ রাতের জন্য কতো নেবে? আই মিন…
‘ওহ ইটস ওকে, তুমি বললে ফ্রিতে আদর করে দিতে পারি, আদর জিনিসটাই এমন, যতো ফ্রি ততো মজা’
এলিনা না হেসে পারলোনা।
- ফ্রি জিনিসের প্রতি আমার অরুচি আছে, কুয়ালিটিফুল কিছুই ফ্রিতে মেলেনা।
‘অবশ্যই মেলে, যেমন ন্যাচারাল অক্সিজেন। ‘
- তার জন্য কার্বনডাইঅক্সাইড খরচ করতে হয়।
‘ওহ তোমার সাথে তর্কে পারবোনা। টু হান্ড্রেড পাউন্ডস যদি তুমি চাও।’
- ইউ ডিজার্ভ ইট এলমো।
চোখে চাপা কামনা আর দুষ্টুমি নিয়ে এলো এলিনা। এলমো কাছ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে চাপা গলায় বললো,
‘কাজটা কি এখানেই সারবো আমরা? মেকিং লাভ অন দা রোডসাইড? আই হোপ খারাপ হবেনা বিষয়টা’
হা হা করে হাসতে লাগলো এলমো। লোকটার হাসি অনেক সুন্দর। সবচে বড় ব্যাপার হলো, তার বন্ধুসুলভ আচরন তার সেক্সওয়ার্কার পরিচয়টাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। সে কেনো এ পথ বেছে নিয়েছে কে জানে! প্লেবয় মেন্টালিটি নাকি ফিন্যান্সিয়াল ডিমান্ড?
হলুদ আলোয় সাজানো গোছানো ফ্ল্যাটটা অন্যরকম সুন্দর লাগছিলো, ফ্ল্যাটের পশ্চিম দিকে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর বিশাল পেইন্টিং, জানালার তাকগুলোতে নানারকম ক্যাকটাস, পর্দাগুলো কোমল কমলা রং এর। উপরের দিকে তাকাতে তাকাতে বিশাল সোফায় দপ করে বসে পরলো এলমো,
‘ওয়াও, ইটস ওয়ান্ডারফুল ‘
- ইজ ইট? আবারো ধন্যবাদ।
‘ওহ তুমি তো দেখছি আজ আমাকে ধন্যবাদের বন্যায় ভাসাবে।’
- আর তুমি কম্পলিমেন্টের বন্যায়। কি খাবে বলো, বিয়ার নাকি ডার্ক কফি?
‘আপাতত চুমু খাব’
আবারো হাহা করে হেসে উঠলো এলমো,
‘বিয়ার।’
ফ্রিজের ঢাকনা খুলতে খুলতে এলমোর দিকে তাকালো এলিনা এবং আশ্চর্য্য হয়ে খেয়াল করলো দুজনের নামের প্রথম দুইটি আলফাবেট একইরকম। বিয়ার ক্যানের ঢাকনা খুলতে খুলতে এলমো বললো,
‘আমি জানি তুমি কি ভাবছো’
- কি?
‘তুমি তোমার বয়ফ্রেন্ডের কথা ভাবছো’
- তোমার ধারনা অবশ্যই ভুল, আমার সেরকম কেউ নেই। থাকলে তুমি এখন এখানে থাকতেনা।
‘হা হা, আমি সেকেন্ড চান্সটা নিতে পারি, তুমি আমাদের নামের মিল নিয়ে ভাবছিলে!’
এলিনা খানিকটা চমকালো! ইজ ইট কো-ইন্সিডেন্স? এলমো মুচকি মুচকি হাসছে। তার চোখে অদ্ভুত আনন্দের ঝিলিক। দেখলেই বোঝা যায় আনন্দটা কতোটা নির্মল, এমন আনন্দিত চোখ বহুদিন দেখেনি এলিনা। এই লোকটার আনন্দের উৎস কি হতে পারে? সে কি কোন দুঃখ ভুলে থাকার চেষ্টা করছে?
নির্মল আনন্দের একটা প্রভাবক ক্ষমতা আছে, এলিনা নিজের ভেতর সেটা টের পেলো।
‘আমরা কি শুরু করতে পারি?’
প্রশ্নটা শোনে দ্বিতীয়বারের মতো চমকালো এলিনা, এভাবে কেউ একজন এর আগেও তার সাথে কথা বলতো। অজস্র স্মৃতি তাকে নিয়ে। নিজেকে সুখে রাখতে মিথ্যার আচ্ছাদনে এক বিশাল সত্য ঢেকে রেখেছে সে। কিছু কিছু অতীত আছে একদম ভুলে থাকা যায়না, কিছুদিন পরপর কোন না কোন ছুঁতোয় মনের কোনে এসে টুপ করে উঁকি দিয়ে যায়। অতীতের কিছু খন্ডদৃশ্যে ক্ষনিকের ভেতর হারিয়ে গেলো এলিনা।
এলবার্টকে ভালোবাসতো সে, হয়তো এলবার্টও বাসতো! কতো কতো সুন্দর দিন কেটেছে একসাথে। ভালোবেসে নিজেকে অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছিলো এলিনা, জীবনের রঙিনতম মুহূর্তগুলো কেটেছে একসাথে। নিজেকে চিনতে পারার সময়গুলোতে এলিনা জেনেছিলো এলবার্টকে সে চেনে, জানে এবং ভালোবাসে, এ ভালোবাসায় নুন্যতম খাদ নেই। তারা কখোনই বিচ্ছিন্ন হবেনা।
কিন্ত এলবার্টের লোভ ছিলো প্রথমত এলিনার শরীর আর তার বাবার রেখে যাওয়া প্রোপার্টির দিকে, এটা সে বুঝতে পেরেছিলো অনেক পরে।
শুরু থেকেই সেক্সুয়াল ব্যাপারগুলোতে এলবার্টের মাঝে ভালোবাসা দেখেনি এলিনা, কেমন জান্তব ছিলো সবকিছু। যা পরবর্তীতে রূপ নিয়েছিলো টর্চারে, সেই সাথে মানসিক নিপিড়ন। সেদিন পর্যন্ত এলিনা প্রতিবাদ করেনি যেদিন বীর্যপাত মুহূর্তের উত্তেজনায় এলবার্ট তার স্তনের বোটা কামড়ে ধরে রক্ত এনে ফেলেছিলো।
একে একে এলিনা আবিষ্কার করেছিলো তার ঘরেই জুয়া আর মদের আসর বসিয়েছে লোকটা, তার বন্ধুগুলো চোখ দিয়ে গিলে খেত তাকে। এলিনা বুঝতে পারতো আর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতো যখন মদে চুর হয়ে জ্ঞানশূন্য এলবার্ট সোফায় পরে থাকতো। ধীরে ধীরে শুরু হলো বাইরে রাত্রি যাপন। শেষ রাতে ফিরে আসতো এলবার্ট, এসেই হামলে পড়তো শরীরের উপর, খামচে খাবলে রক্তাক্ত করে দিতো। এলিনা ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতো মুক্তির জন্য। এভাবেই একরাতে আর ফিরে এলোনা এলবার্ট। অতিরিক্ত মদ্যপানের ফলে মরে পড়ে থাকলো রাস্তার পাশে। সেদিন তার লাশের পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে কেঁদেছিলো এলিনা, ব্যাথায় নয়, মুক্তির আনন্দে।
এলমো ততক্ষনে তার শরীরের উপরে অবস্থান নিয়েছে, ধীরে ধীরে মোলায়েম পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে ছেলেটা। অন্যরকম অনুভুতি পাচ্ছিলো এলিনা। একটা প্রফেশনাল মানুষের স্পর্শে এতো ভালোবাসা কেনো কাজ করবে! ভালোবাসা? পরমুহূর্তে চিন্তাটা ঝেড়ে ফেললো এলিনা। সে বসে আছে এলমোর দুই উড়ুর মধ্যখানে, নিয়মিত ছন্দে উঠানামা করছে। এলিনা বুঝতে পারলো তার অর্গাজম সন্নিকটে, ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে গায়ের লোম, নিতম্বে চিরচেনা অদ্ভুত আলোড়ন। পায়ের বুড়ো আঙুল থেকে বিদ্যুৎ গতিতে মাথা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলো প্রচন্ড সুখের অনুভুতিটা। এলিনা ক্ষিপ্রগতিতে লুটিয়ে পড়লো এলমোর বুকে, বুকের বাঁপাশটা কামড়ে ধরতেই জিভে নোনা রক্তের স্বাদ পেলো সে। এলমোর চিৎকার ছাপিয়েও এলিনা টের পেলো সে সুখ পাচ্ছে। সে প্রচন্ড সুখ পাচ্ছে।
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
পড়িলাম কোন কথা কার গুলিয়ে ফেলেছি!!
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
আর রাজু দা আরও গল্প চাই আপনার্। মিস করি আপনার লেখা গুলো
মাশিয়াত খান বলছেনঃ
অনেকদিন পর আপনার গল্প! ভাল লাগল
শ্রাবনের রক্তজবা বলছেনঃ
সব গল্প একই রকম !। একটু ভিন্নতা আনেন।