মানবী
449
বার পঠিত amiloride hydrochlorothiazide effets secondairesআপুলিয়াসের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা পূর্বক
সেকালে হিমালয়ের ওপারে ছিল একটা ছোট্ট রাজ্য। কিন্তু, রাজ্য ছোট হলে কী হবে, সে রাজ্যের সৌন্দর্য কিন্তু ছোট ছিল না। সেখান দিয়ে বয়ে চলা ছোট্ট তটিনী নামের নদীটার পাড়ে যখন কেউ সন্ধ্যাবেলা বসে থাকত, তার মনে হত দিগন্তের আকাশ থেকে সূর্যটা গলে গিয়ে যেন নদীর পানিতে বয়ে যাচ্ছে। শীতল স্বচ্ছ জল বয়ে যেতে যেতে যখন দিগন্তে গিয়ে রক্তের মত লাল হয়ে যেত, তখন সেটা দেখে মনে হত, এই নদীর সৃষ্টি বোধহয় কুরুক্ষেত্র হতে। আর রাতের পর সকাল বেলা যখন সে রাজ্যের সব পাখি একসাথে কিচির মিচির করতে করতে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে যেত, আর তার সাথে যখন মৃদু বাতাসে পাতারাও গাইতে শুরু করত, মনে হত, এর চেয়ে সুমধুর সঙ্গীত বোধহয় আর কোথাও সৃষ্টি হয়নি। সেখানে দুপুর বেলা বটগাছ ছায়া দিত মেঘের মত। শ্রাবণ-বাদলার দিনে সেখানে বিকেল বেলাতেই সন্ধ্যা ঘনাতো। এত রূপ ছিল বলেই বুঝি সবাই সেই রাজ্যের নাম দিয়েছিল — রূপনগর। তবে, রূপনগরে যার রূপ সবাইকে সবচেয়ে বেশি মোহিত করে রাখত, তার নাম — রুক্মিণী, রূপনগরের রাজকন্যা।
রূপনগর নামেরই মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছিল যেন রুক্মিণী। তাকে দেখলে মনে হত যেন স্বর্গের কোন দেবী মর্তের মরণশীল মানুষদের মাঝে বসে আছে। তাকে একবার দেখার জন্য প্রাসাদের আঙ্গিনায় সার বেধে শালিকেরা বসে থাকতো। তার আন্দোলিত চুলের খেলা দেখার জন্য বাতাস বারবার তার পাশ দিয়ে বয়ে যেত। রূপনগরের বৃষ্টি হত যেন শুধু রুক্মিণী দু’হাত বাড়িয়ে তাকে ছুঁয়ে দেয়। তার রূপের কথকতা ছড়িয়ে পড়ল মর্তের প্রান্তে-প্রান্তরে। তাকে এক নজর দেখার জন্য কতশত রাজ্য থেকে মানুষ ছুটে আসতো। সপ্রশংস ও বিস্ময়াভিভূত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকতো। তারা এমনও কানাকানি করত যে, স্বয়ং দুর্গাও রূপে রুক্মিণীর সমকক্ষ নয়। আর এটাই দুর্গার মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠল।
মর্তের কোন মরণশীল মানুষকে স্বর্গীয় সত্ত্বার সমকক্ষ বা তার চেয়েও শ্রেষ্ঠ মনে করা, অবশ্যই দেবতাদের জন্য হানিকর। আর সে যদি হয় স্বয়ং দুর্গা, স্বর্গের সবচেয়ে রূপবতী দেবী, তাহলে তো কথাই নেই। এ সমগ্র দেবতাকূলেরই অপমান। তাই দুর্গা অভিযোগ করল স্বয়ং যে তাকে সৃষ্টি করেছে, সেই কৃষ্ণের কাছে। দুর্গার কথা লঙ্ঘন করে মহাদেবের বিরাগভাজন হবার কোন ইচ্ছেই ছিল না কৃষ্ণের। কৃষ্ণ তাকে আশ্বস্ত করল যে, সে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
কৃষ্ণ স্বচক্ষে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত নিলো। স্বর্গের ঋভু মর্তে নেমে এলো সাধারণ ভিনদেশী ব্রাহ্মণের বেশে। রুক্মিণী ততদিনে রূপনগরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তার সুবিশাল সৌন্দর্যমণ্ডিত মন্দির দেখেই যে কেউ অনুমান করে নিতে পারে এর দেবীর রূপ। প্রতি শনিবার সেখানে রুক্মিণীর পূজো অর্চিত হয়। পূজোর পরে রুক্মিণী নিজহাতে ব্রাহ্মণদের হাতে প্রসাদ তুলে দেয়। ব্রাহ্মণবেশী কৃষ্ণও তাদের মাঝে বসে পড়ল। যথাসময়ে এলো রুক্মিণী। তার পূজো অর্চনা শেষ হল। তারপর সে এলো প্রসাদ বিলি করতে। রুক্মিণী হয়তো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারত না, সেই ব্রাহ্মণদের মাঝে স্বয়ং একজন ঋভু বসে আছে!
রুক্মিণী প্রসাদ দিতে দিতে কৃষ্ণের সামনে আসতেই তাদের দু’জনের চোখাচোখি হল। কৃষ্ণের মাঝে কোন ভাবান্তর দেখা গেল না। কিন্তু, রুক্মিণী ব্রাহ্মণের দিকে অপলকে চেয়ে রইল। দরিদ্র ব্রাহ্মণদের মাঝে যে এমন অপরূপ সুপুরুষ থাকতে পারে, সেটা তার কল্পনায়ও ছিল না। মলিন পোশাকেও যেন তার দেহ থেকে উজ্জ্বল দ্যুতি উপচে পড়ছে। তার সেই উজ্জ্বলতাতেই আজকের এই পুরো মন্দির আলোকিত হয়ে আছে। কিন্তু, এই দৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না। পেছন থেকে প্রহরীরা তাড়া দিতেই রুক্মিণী সামনের দিকে এগিয়ে গেল। সে জানতেও পারলো না, তার সামনে কী অপেক্ষা করছে।
অবশ্য, অস্বাভাবিক কিছু যে ঘটে গেছে, সেটা সে বুঝতে পারলো খানিক বাদেই। সবেমাত্র সবাইকে প্রসাদ বিতরণ শেষ হয়েছে। রুক্মিণী এবার প্রাসাদের দিকে রওনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখনই, মন্দিরের সুউচ্চ চূড়া থেকে বজ্রনিনাদে দৈববাণী শোনা গেল — স্বর্গের দেবতাদের ফেলে সামান্য এক মরণশীল নারীর পূজো করায় রূপনগরের সকলে দেবতাদের ক্রোধে নিপতিত হয়েছে। এ থেকে মুক্তির একটাই উপায়। যে নারীর জন্য সকলের এই অধঃস্থলন, সেই রুক্মিণীকে তটিনী নদীর ওপাড়ে হিমালয়ে বিসর্জন দিয়ে আসতে হবে। সেখানে এক বিকটাসুর নামক এক ভয়ঙ্কর অসুর তাকে দাসী হিসেবে গ্রহণ করবে। সে শক্তিতে দেবতাদের চেয়েও বলীয়ান। তাকে অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করলে সে সম্পূর্ণ রূপনগর ধ্বংস করে দেবে।
এই কথা শুনে রাজ্যের সকল প্রজা ভয়ে কাঁপতে শুরু করল। একমাত্র আদরের মেয়েকে একাকী দুর্গম, হিমশীতল হিমালয়ে ছেড়ে আসতে হবে শুনে রুক্মিণীর মা কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা গেল। রুক্মিণীর সইরা প্রাসাদের মাঝে বিলাপের সুর তুলল। রূপনগরের বজ্রকঠোর রাজাও মেয়ের এই পরিণতির কথা ভেবে মুষড়ে পড়লেন। কিন্তু, দেবতাদের আজ্ঞা অস্বীকার করার সাহস তাদের কারোর ছিল না। তাদের মনে হল, তার মেয়ে পৃথিবীতে এত রূপ নিয়ে জন্ম না নিলেই বরঞ্চ ভাল হত। মর্তের মানুষদের দেবতাদের মত রূপ মানায় না।
শুধু রুক্মিণীকেই দেখা গেল নির্বিকার। যারা নারীদেহের মাঝে লুকিয়ে থাকা দৃঢ়তার কথা জানতো না, তারা মনে করল রুক্মিণী বুঝি অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছে। কিন্তু, যারা তাকে হৃদয় দিয়ে চিনত তারা বুঝতে পেরেছিল, সেই ভয়ঙ্কর জরাসংকুল পর্বতদেশেও রুক্মিণী ঠিকই বেঁচে থাকবে। সে যে মানুষের মাঝে দেবতার প্রকাশ।
তারপর রুক্মিণীকে সাদা পোশাকে সাজানো হল। তার শরীরের সকল অলংকার খুলে ফেলা হল। হলুদ আর চন্দন দিয়ে তার মুখ ধুয়ে দেয়া হল। তারপর, তাকে নিয়ে সকলে রওনা দিল হিমালয়ের উদ্দেশ্যে। শান্ত-স্নিগ্ধ তটিনী পার হয়ে হিমালয়ের তুষারশুভ্র নির্জনতায় সবাই মিলে তাকে রেখে এলো। রুক্মিণী সেখানে বসে রইলো। একাকী। আকাশের ঝাপসা সূর্যটা আস্তে আস্তে লাল হতে শুরু করলো। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করল শীতলতা। কিন্তু, সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল সেখানের আদিগন্ত নীরবতা। যতদূর চোখ যায়, কোন জনমানব নেই। খা খা নিস্তব্ধতা বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেয়। তার মাঝে হঠাৎ কোথাও শব্দ হলেই রুক্মিণী কেঁপে কেঁপে ওঠে। এই বুঝি বিকটাসুর এসে পড়ল। কিন্তু, কারও আসার কোন চিহ্ন দেখা গেল না। শুধু সূর্যটাকেই চলে যেতে দেখা গেল। রাত্রির মাঝে নির্জনতা তাকে আরও গ্রাস করল। এর মধ্যে হঠাৎ তার কাঁধে কিছুর স্পর্শ পেল সে। চমকে গিয়ে চিৎকার করে উঠলো রুক্মিণী। বিকটাসুর কী তবে এসে গেল! কতটা বিকট সে? কিন্তু, তার পেছন থেকে কোমল স্বরে উত্তর এলো, “ভয় পেও না। তোমার স্বামী আর যাই হোক, অসুর নয়।”
রুক্মিণীর ভয় তবু কাটল না। ভয়ার্ত গলায় বলল, “তবে কে আপনি?”
অদ্ভুত গাম্ভীর্যময় কণ্ঠে উত্তর এলো, “আমি ঈশ্বরের রাজ্যের এক নগণ্য ঋষি। সিদ্ধি লাভের আকাঙ্ক্ষায় বারো বছর ধরে এই হিমালয়ে তপস্যা করছি। আজ বারো বছর পরে স্বয়ং কৃষ্ণ আমায় দেখা দিয়েছেন। আমায় তিনি বর হিসেবে পৃথিবীর সবচেয়ে রূপবতী তরুণীকে দিয়েছেন। তাই আজ তুমি এখানে।”
পুরোপুরি নিশ্চিত না হতে পারলেও রুক্মিণীর ভয় কাটতে শুরু করল। সে জিজ্ঞেস করল, “তবে, মিথ্যে দৈববাণী দিয়ে আমার পরিজনদের এত বড় আঘাত দিলেন কেন?”
ঋষির স্মিত হাসির শব্দ শোনা গেল। সে বলল, “হিমালয়ে যোগীরা তপস্যায় আসে এখানকার অনন্ত নির্জনতার মাঝে ঈশ্বরের বিশালতাকে অনুভব করার জন্য। যদি তোমার পরিজনেরা জানতোই তোমার একজন ঋষি স্বামী হবে, তার আশ্রমে তুমি সুখেই দিনাতিপাত করবে, তবে নিশ্চয়ই তারা তোমার খোঁজখবর নিতে ঘন ঘন এখানে আসতো। তখন আমার ধ্যানে মনোযোগ বিধানে তা সমস্যার সৃষ্টি করত।”
রুক্মিণী অবাক হয়ে বলল, “এখানে আপনার আশ্রম আছে? কই! যতদূর চোখ যায়, আমি তো কিছু দেখি নি।”
আবারও ঋষির স্মিত হাসির শব্দ শোনা গেল, “তোমার দৃষ্টিসীমার ঊর্ধ্বেও আরও অনেক কিছুই আছে। … … … পবনদেব! আসুন।”
সাথে সাথে প্রবল বায়ুর ঝটকা রুক্মিণীকে শূন্যে ভাসিয়ে নিলো। রুক্মিণী ভয়ে চিৎকার করে উঠল। আগন্তুক বলল, “ভয় পেয়ো না। আমরা এখন স্বয়ং পবনদেবের অতিথি। তিনি নিজে আমাদের সুস্থদেহে গন্তব্যে পৌঁছে দেবেন।”
রুক্মিণী নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারলো না। স্বয়ং একজন দেবতা তাকে বয়ে নিয়ে চলেছে!
খানিক বাদেই আবার তারা নিচে নেমে এলো। রুক্মিণী অনুভব করল, আগের সেই হাড়-কাঁপানো ঠাণ্ডাটা আর নেই। তার জায়গায় স্থান করে নিয়েছে কোমল এক উষ্ণতা। হেঁটে চলার সময়ে পায়ের নিচে মার্বেল পাথরের বাধানো পথ অনুভব করল সে। সেই নিকষ অন্ধকারের মাঝেই আগন্তুক তার হাত ধরে তাকে নিয়ে যেতে লাগল। রুক্মিণীর মনে হল, একে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এই কোমল হাত ধরে সে আগুনে ঝাপ দিতেও দ্বিধা করবে না। তার গলার স্বরের মাঝেই অদ্ভুত এক স্বর্গীয় স্নিগ্ধতা আছে। তপস্যা করে কি মানুষও দেবতা হয়ে উঠতে পারে? এ কি তেমনই কেউ?
খানিক বাদে একটা কক্ষে ঢুকে আগন্তুক তাকে বিছানায় বসিয়ে দিল। রুক্মিণী অনুভব করল, পাখির পালকে তৈরি তুলতুলে বিছানা। কিন্তু, অবাক হল — এখনও আলো জ্বালানো হচ্ছে না কেন? tome cytotec y solo sangro cuando orino
আগন্তুককে বলল, “আলোটা জ্বেলে দিন না। অন্ধকার আর ভাল লাগছে না।”
আগন্তুকের উত্তর এলো, “না না! তুমি আর যাই কর কিংবা না কর, কখনও ভুলেও আমার মুখ দেখার চেষ্টাটিও করো না। তাহলে মহা অনর্থ ঘটে যাবে।”
রুক্মিণী বুঝতে পারল না, মুখ দেখলে এমন কী অনর্থ ঘটে যেতে পারে। কিন্তু, আগন্তুকের ওপর আর কোন কথা বলল না। এই নির্জন প্রান্তরে তার একা একা ধুকে ধুকে মরার কথা ছিল। তার বদলে সে এখন প্রাসাদোপম বাড়িতে। সবকিছু তো তারই কৃপা। সে বলল, “ঠিক আছে। আমি আপনার বিপরীতে কিছুই বলব না। আপনার ইচ্ছেই আমার আজ্ঞা। আপনি আমাকে নতুন জীবন দান করেছেন। আমি তার বিনিময়ে চিরদিন আপনার চরণে আমার ভালবাসা নিবেদন করে যাব।”
ঋষি কোন উত্তর দিল না। বরং পরম আবেগে রুক্মিণী আলিঙ্গন করল। রুক্মিণীও তাকে জড়িয়ে নিলো পরম আবেগে। সারা রাত কেটে গেল কেবল তাদের দু’জনের হয়ে।
প্রত্যুষে যখন ভোরের আলো ফুটতে শুরু করল, তখন আগন্তুক বলল, “আমাকে এখন যেতে হবে।”
রুক্মিণী অবাক হয়ে বলল, “কোথায় যাবেন আপনি?” সে এতক্ষণ আশায় ছিল, ভোরের আলো ফুটতেই আগন্তুকের চেহারা দেখা যাবে।
ঋষি বলল, “এ তো কেবল তোমার ঘর। তাপসদের এই প্রাসাদোপম বাড়ি মানায় না। আমি এখন আমার নীড়ে ফিরে যাব। গোধূলিতে আবার ফিরে আসব।”
রুক্মিণী কোন উত্তর দিল না। শুধু মাথা নুয়ে তার স্বামীকে প্রণাম করল। ঋষি বেরিয়ে গেল।
দিন কাটাতে রুক্মিণীর কোন সমস্যা হল না। মার্বেল পাথরে বাঁধানো বাড়ির সামনেই ঘাট বাঁধানো পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে বড় বড় গাছে পুকুরের জলকে কাকচক্ষুর মতন মনে হয়। গাছগুলোতে সারাক্ষণ ডাকতে থাকে নাম না জানা হাজারো রকমের পাখি। সারাক্ষণ সেখানে অদ্ভুত স্নিগ্ধ এক বাতাস বয়ে যায়। হিমালয়ের রুক্ষতার মাঝে এমন জায়গা কিভাবে সৃষ্টি হল রুক্মিণী ভেবে পায় না। মনে হয়, স্বর্গ থেকে কেউ যেন এটুকু তুলে এনে হিমালয়ের মাঝে রেখে দিয়েছে। সমগ্র বাড়িটায় ঘুরতে ঘুরতেই সন্ধ্যা হয়ে যায়।
সন্ধ্যা বেলায় আঁধার ঘনালে আবার সে ফিরে আসে। চুপিচুপি রাতটা যে কিভাবে পার হয়ে যায়, রুক্মিণী টেরও পায় না। ভোরের আলো ফুটতেই ঋষি যাবার জন্যে প্রস্তুত হয়। রুক্মিণী তাকে আরও কিছুক্ষণ থাকার অনুরোধ করে। কিন্তু, ঋষি তাতে সায় দেয় না। বরং রুক্মিণীকে অদ্ভুত এক কথা শোনায়। তার সখীদের ভর করে অদ্ভুত এক বিপদ তার সামনে ঘনিয়ে আসছে। তার সখীদের প্রলোভনে পড়ে যে যেন মোটেও কোন ফাঁদে পা না দেয়। রুক্মিণী বলে, এই হিমশীতল দেশে যে তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছে, তার অবাধ্য হবার কোন প্রশ্নই আসে না। আশ্বস্ত হয়ে তাপস চলে যায়।
ক্রমে বিকেল ঘনালে রুক্মিণী হঠাৎ খেয়াল করে বাড়ির আঙ্গিনায় এক সুপুরুষের আবির্ভাব ঘটেছে। রুক্মিণী তার দিকে এগিয়ে গেলে সে বলে, “দেবী! আমি পবনদেব। এক বিশেষ প্রয়োজনে আপনার মতামত জানতে এলাম। আপনাকে হিমালয়ে রেখে যাবার পর আজ দু’দিন গত হয়েছে। আজ আপনার কয়েকজন সখী আপনি কী অবস্থায় আছেন জানতে, তারা আপনাকে যেখানে বিসর্জন দিয়ে গেছে সেখানে এসেছে। আপনি চাইলে আমি তাদের এখানে নিয়ে আসতে পারি।”
রুক্মিণী বিন্দুমাত্র দ্বিধা ছাড়াই বলল, “হ্যাঁ, তাদের নিয়ে আসুন। আমি তাদের না দেখে একদিনও পার করতে পারতাম না। আজ তারাই আমাকে দেখতে এসেছে। আমি অবশ্যই তাদের সাথে দেখা করব।”
পবনদেব বলল, “যথা আজ্ঞা!” এরপর তিনি সহসাই হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। প্রবল একটা বায়ুর ঝটকায় রুক্মিণী পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নিলো।
খানিকক্ষণ পরেই রুক্মিণীর সহচরীরা এসে পৌঁছুল। রুক্মিণীর নতুন আবাসের শান শওকত দেখে তারা বিস্ময়ে বিমূড় হয়ে গেল। যদিও তারা সবাই অভিজাত ঘরের মেয়ে, তবু এমন ঐশ্বর্য তারা কোনদিন দেখেনি। মুখে হাসি লেগে থাকলেও তাদের মনে হিংসার উদ্রেক হল। রুক্মিণীর সাথে পুরো প্রাসাদ ঘুরে দেখার পরে, তারা তার স্বামীর সাথে দেখা করতে চাইল। রুক্মিণী আমতা আমতা করে বলল, “সে বিশেষ কাজে বাইরে গেছে। ফিরতে রাত হবে।”
সখীরা বলল, “সমস্যা নেই। জামাইবাবু না আসা পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবে।”
রুক্মিণী চেষ্টা করল তাদের নিবৃত্ত করার। কিন্তু, পারলো না। নানা কথায় তাদের বোঝানোর চেষ্টা করল। তার সখীরা তার কাছে জানতে চাইলো, রুক্মিণীর স্বামী দেখতে কেমন। সে কি ভয়াল দর্শন? না’কি সুবর্ণকান্ত?
রুক্মিণী তারও কোন সদুত্তর দিতে পারলো না। শেষ পর্যন্ত এ কথায় সে কথায় তার সহচরীরা বুঝে গেল, রুক্মিণী আসলে কখনও তার স্বামীকে দেখতেই পায়নি।
সখীদের কাছে এমন কথা লুকানোর জন্য তারা রুক্মিণীকে ভৎসনা করল। বলল, তার স্বামী নিশ্চয়ই সত্যিই কোন অসুর। নইলে মুখদর্শনে তার এত আপত্তি কেন? হয়তো এখন ইন্দ্রিয়সুখের তৃপ্তি নিচ্ছে। কে জানে, হয়তো পরে কোন দিন তৃপ্ত হয়ে গেলে, সে রুক্মিণীকে হেলায় হত্যা করবে।
সখীদের কাছে এমন কথা শুনে, রুক্মিণী ভয় পেয়ে গেল। সত্যিই তো! সে যদি অসুর নাই হবে, তাহলে চেহারা দেখাতে তার এত আপত্তি কেন?
সখীরা রুক্মিণীকে মন্ত্রণা দিল, আজ রাতে মিলনের শেষে যখন তার স্বামী ঘুমিয়ে পড়বে, তখন যেন রুক্মিণী একটা বাতি আর ছুরি নিয়ে তার মুখ দেখে আর ছুরিটা তার বুকে বসিয়ে দেয়।
রুক্মিণী এতই ভয় পেয়ে গিয়েছিল যে, আর কিছু চিন্তা করতে পারলো না। সে সম্মত হল সখীদের কথায়।
রাতে সবকিছু পরিকল্পনা মতই হল। যথাসময় রুক্মিণীর স্বামী ঘুমিয়ে পড়ল। রুক্মিণী একটা বাতি আর একটা ছুরি নিয়ে তার স্বামীর দিকে এগিয়ে গেল। কিন্তু, তার মুখে আলো পড়তেই রুক্মিণী চমকে উঠল। এ কি! এ যে মন্দিরে দেখা সেই সৌম্যদর্শন ব্রাহ্মণ! তবে কি, সে সেদিন রুক্মিণীকে দেখে পছন্দ করে তাকে নিজের করে পেতেই এত কিছু করেছে? এমন সুদর্শন স্বামীকে সে অসুর ভেবেছে চিন্তা করে রুক্মিণীর চিন্তা করার ক্ষমতাও লোপ পেল। কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশতঃ এই উত্তেজনার বশবর্তী হয়েই বাতি থেকে খানিকটা গরম তেল ছিটকে তার স্বামীর গায়ে পড়ে তার কাঁধের কাছে পুড়ে গেল। সে যন্ত্রণায় বিলাপ করে জেগে উঠতেই দেখতে পেল, রুক্মিণী এক হাতে বাতি আরেক হাতে ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রচণ্ড ঘৃণায় রুক্মিণীর দিকে তাকিয়ে তখনই সে অন্তর্হিত হল। রুক্মিণী চারিদিকে তাকিয়ে কোথাও তার স্বামীকে দেখতে পেল না। নিজের দুর্ভাগ্যের কথা চিন্তা করে সে বিলাপ করে কাঁদতে লাগল।
তার কান্নার আওয়াজ শুনে, একটু পরেই তার সামনে পবনদেব আবির্ভূত হল। রুক্মিণীকে সে বলল, স্বামী হিসেবে সে আসলে কত মহান সত্ত্বাকে পেয়েছিল। স্বয়ং কৃষ্ণ তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু, সে এমনই অভাগী, অবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে তাকেও হারাল।
এসব জানতে পেরে রুক্মিণীর অনুতাপ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেল। তা দেখে পবনদেব মমতা অনুভব করলেন। বললেন, রুক্মিণী যেন এই হিমালয়ে বসে তপস্যা করে দুর্গাকে সন্তুষ্ট করে। দুর্গার বিরাগভাজন হওয়াই তার সকল দুর্ভাগ্যের কারণ। দুর্গার কৃপা লাভ করলেই তার সকল দুঃখের অবসান ঘটবে।
উপায়ান্তর না দেখে, রুক্মিণী সেখানেই বসে দুর্গার তপস্যা শুরু করল। সাত দিন সাত রাত কেটে গেল একাধারে। রুক্মিণী সেখান থেক টলল না একচুলও। ক্ষুধা তৃষ্ণা কিছুই যেন তাকে স্পর্শ করল না। তার একাগ্র তপস্যা দেখে দুর্গা স্মিত হাসল। উপস্থিত হল রুক্মিণীর সামনে। রুক্মিণীকে তাকে আহ্বানের কারণ জিজ্ঞেস করল। রুক্মিণী তাকে জানালো তার দুঃখের কথা। এও বলল, সে দুর্গার বিরুদ্ধাচরণ করেছে নেহাতই নিজের অজান্তে। যদি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারত, দুর্গা তার কাজে অসন্তুষ্ট তবে ভুলেও সেদিকে পা বাড়াত না। সে দশভুজাকে বলল, সে যেন তার স্বামীকে ফিরে পেতে সহায়তা করে।
সব শুনে দুর্গতিনাশিনী ক্রুর হাসল। ঠিক করল, জগতের সব দুর্গতি নাশ করে রুক্মিণীর সামনে হাজির করবে। বলল, সত্যিই যদি সে তার স্বামীকে ফিরে পেতে চায়, তবে তাকে এখন থেকে দুর্গার দাসী হতে হবে। দুর্গার সব আদেশ মাথা পেতে মেনে নিতে হবে। যদি সে দুর্গাকে সন্তুষ্ট করতে পারে, তবেই সে তার স্বামীকে ফিরে পাবে।
রুক্মিণীর হাতে ভিন্ন কোন পথ খোলা ছিল না। তাই সে দুর্গার কথামত কাজ করতে অঙ্গিকার করল।
সহসাই চোখের পলকে দুর্গার হাতে এক ধামা শস্য দেখা গেল। তার মধ্যে ধান, মসুর আর সরিষা একসাথে মেশানো। দুর্গা তার পুরোটা রুক্মিণীর সামনে ঢেলে দিয়ে বলল, আজকে দিনের মধ্যে রুক্মিণীকে এই মিশ্রণ থেকে ধান, মসুর আর সরিষা আলাদা করতে হবে। যদি সে তা না করতে পারে, তবে তার ভাগ্যে দুর্গতি আছে। এই বলে দুর্গার অন্তর্হিত হল। accutane prices
রুক্মিণী পুরোটার দিকে হতাশ চোখে তাকিয়ে থাকল। এর মাঝে থেকে একটা একটা করে ধান, মসুর, সরিষা বেছে বেছে আলাদা করা অসম্ভব। রুক্মিণী প্রবল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। হঠাৎ করে তার পায়ের কাছে সারি সারি পিঁপড়ার দল দেখা গেল। রুক্মিণী অবাক হয়ে তাদের দিকে তাকাতেই তাদের দলনেতা রুক্মিণীকে বলল, রুক্মিণীর প্রাসাদে সে যখন তাকে দেখতে সার বেঁধে বসে থাকা শালিকদের খাবার দিত, তখন সেখান থেকে এই পিঁপড়েরাও আহার করত। আজকে রুক্মিণীর এই দুঃখের সময়ে তারাও রুক্মিণীর সাথে সমব্যথী। তাই, রুক্মিণী চাইলে তারা সবাই মিলে এই স্তূপ থেকে ধান, সরিষা আর মসুর আলাদা করে দিতে পারে। রুক্মিণী সানন্দে তাদের কথায় রাজী হল। about cialis tablets
সন্ধ্যে বেলায় দুর্গা এসে হাজির হয়ে অবাক হয়ে দেখল, ধান-সরিষা-মসুরের স্তূপ থেকে সবগুলো আলাদা করা আছে। অবাক হলেও পরদিন তাকে আরও বড় পরীক্ষা দিতে হবে জানিয়ে দুর্গা অন্তর্হিত হল।
পরদিন দুর্গা এসে তাকে নিয়ে গেল এক শিমুল গাছের বাগানে। সেখানের গাছগুলো এত ঘন যে, সূর্যের আলো পৌছায় না। আর গাছের গায়ে কাঁটা এত বড় বড় যে, এক গাছের কাঁটা আরেক গাছের ভেতর অবধি ঢুকে থাকে। দুর্গা তাকে বলল, তাকে এই বাগানের ভেতরে গিয়ে সবচেয়ে বড় গাছ থেকে স্বর্ণের তুলা নিয়ে আসতে হবে। এই বলে দুর্গা অন্তর্হিত হল।
রুক্মিণী দেখল, এটাও একবারে অসম্ভব। এই কাঁটাময় জঙ্গলে ঢোকাই অসম্ভব। আর যদিও বা ঢোকে, কাঁটার আঘাতে প্রাণ সংশয় হবে নিশ্চিত। সে হতবিহ্বল হয়ে বসে পড়ল। তখনই চুপিচুপি তার কানে কে যেন কথা বলে উঠল। রুক্মিণী পাশ ফিরে কাউকে দেখতে না পেয়ে ভয় পেয়ে গেল। সে আবার শুনতে পেল ফিসফিস করে তার কানে বলছে, “আমি বাতাস। তোমার প্রাসাদে তুমি যখন বিকেল বেলা দাঁড়াতে তখন তোমার চুলের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়ে আমি আনন্দ লাভ করতাম। আজকে আমি তোমাকে তার প্রতিদান দেব।” একটু পরেই রুক্মিণী দেখল জঙ্গলের পেছন থেকে প্রবল বাতাস বইতে শুরু করেছে আর তার সাথে উড়ে আসতে শুরু করেছে স্বর্ণের মত উজ্জ্বল তুলা। রুক্মিণী অত্যন্ত আনন্দের সাথে তার সবটুকু সংগ্রহ করে রেখে দিল।
যথাসময়ে দুর্গা এসে হাজির হয়ে দেখল, রুক্মিণী এই কাজও করে ফেলেছে। কিন্তু, সে দমে গেল না। এবার তাকে আরও ভয়ঙ্কর কাজে প্রবৃত্ত করার সংকল্প করল। সেই শিমুল বাগানের পাশেই ছিল এক বিশাল ঝরনা। প্রবল বেগে সেখান থেকে পানি পড়তে থাকে যে তার কাছে ঘেঁষাই ভার। আর আশেপাশের পাথরগুলো এত পিচ্ছিল যে পা হড়কে সহজেই যে কেউ পড়ে যাবে। আর একবার পড়লেই মিলিয়ে যাবে খরস্রোতা জলে। দুর্গা রুক্মিণীর হাতে একটা ঘটি ধরিয়ে দিয়ে বলল, রুক্মিণী ওই ঝরনা থেকে জল নিয়ে আসতে হবে। এই বলে দুর্গা অন্তর্হিত হল।
রুক্মিণী দেখল, এও সম্ভব নয়। কিন্তু সে বুঝে গেছে, যেহেতু সে সবার প্রতি করুণাশীল ছিল তাই কেউ না কেউ তাকে নিশ্চিত সাহায্য করবে। হলও তাই। খানিক বাদেই শালিক পাখির বিশাল একটা ঝাঁক দেখা গেল। রুক্মিণী দেখে চিনতে পারল, এরাই প্রতিদিন বিকেলে রুক্মিণীর বারান্দায় বসে থাকত। তারা সবাই মিলে রুক্মিণীর হাত থেকে ঘটিটা নিয়ে উড়ে গিয়ে তাতে ঝরনা থেকে জল এনে দিল।
দুর্গা যখন এসে দেখতে পেল, রুক্মিণী এটাও করে ফেলেছে, তখন সে ক্রোধে ফেটে পড়ল। বলল, “বুঝতে পারছি, তোমাকে নিশ্চিত কেউ সাহায্য করছে। তাই, এবার তোমাকে এমন এক কাজ করতে হবে, যে কাজে তোমাকে সাহায্য করার কেউ নেই। তোমাকে ক্ষিরোদসাগর মন্থন করে নিয়ে আসতে হবে অমৃত। তবেই আমি তোমাকে তোমার কৃতপাপ থেকে নিষ্কৃতি দেব।”
রুক্মিণী এবার চূড়ান্তরূপে ভেঙ্গে পড়ল। এতদিন তাকে সাহায্য করেছে, পিঁপড়া, পাখি আর বাতাস। আর ক্ষিরোদসাগর মন্থন করে অমৃত তৈরি করতে দেবতারাও একা সক্ষম ছিল না। অসুরদের সহায়তা নিয়ে তবেই তারা অমৃত লাভ করেছিল। সেখানে রুক্মিণী একা অবলা নারী কী করবে? সে সেখানেই চুপচাপ বসে রইল। তার চোখ থেকে টপটপ করে জল পড়তে লাগল। সেই কষ্টে আকাশ কাঁদল, মেঘ কাঁদল, বাতাস কাঁদল, জল কাঁদল — কিন্তু, দুর্গার মন টলল না।
রুক্মিণী একাকী ইতস্তত হাঁটতে লাগল। তার কোন লক্ষ্য নেই, কোন গন্তব্য নেই। হতভাগীর বেশে সে চলতে লাগল। চলতে চলতে একসময় উপস্থিত হল তটিনী নদীর উৎসস্থলে। তটিনী নদী তাকে দেখেই চিনতে পারল। তার কাছ থেকে তার দুঃখের কথা শুনে বলল, সে চেনে ক্ষিরোদসাগরের পথ। রুক্মিণী চাইলে, তাকে সেখানে নিয়ে যেতে পারে। রুক্মিণী ভাবল, সেখানে গিয়েই বা কী হবে! তার তো সাধ্যি নেই ক্ষিরোদসাগর মন্থন করে সেখান থেকে অমৃত তুলে আনবে। তবু, সেখানে যেতে তো দোষ নেই। তটিনী নদী তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল ক্ষিরোদসাগরের কাছে।
ক্ষিরোদসাগরের বিশালতা দেখে রুক্মিণী হতোদ্যম হয়ে পড়ল। এই বিশাল সাগর থেকে অমৃত আনা কিভাবে সম্ভব? রুক্মিণী হতভাগীর মত ক্ষিরোদসাগরের তীরে বসে পড়ল। এবার আর কোন আশা নেই।
ঠিক তখনই তার সামনে হাজির হল স্বয়ং কৃষ্ণ। কৃষ্ণকে দেখে রুক্মিণী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল। বারবার নিজের কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ করল। কৃষ্ণ তাকে উঠিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরল। বলল, সেদিন গরম তেলে তার কাঁধ পুড়ে গিয়েছিল। তাই চিকিৎসার জন্য সে চলে গিয়েছিল স্বর্গের বৈদ্য অশ্বিনীকুমারদ্বয়ের কাছে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থাতেই সে দেখেছে, তাকে হারিয়ে রুক্মিণী কতটা ভেঙ্গে পড়েছিল। আর তারপর তাকে ফিরে পাওয়ার জন্য রুক্মিণীর কৃতসংকল্পতা আর অমানুষিক পরিশ্রমেও কৃষ্ণ অভিভূত। আর সে এটাও বুঝতে পেরেছে রুক্মিণী সত্যিই তাকে ভালবাসে। তাই এখন সে স্বয়ং চলে এসেছে রুক্মিণীকে সহায়তা করতে।
কৃষ্ণের কথা শুনে রুক্মিণী ভরসা ফিরে পেল। ক্ষিরোদসাগর মন্থন করে অমৃত লাভের পরামর্শ কৃষ্ণই তো দেবতাদের দিয়েছিল। পরম আবেগে কৃষ্ণকে তার বুকে জড়িয়ে ধরল। তারপর কৃষ্ণ মন্দার পর্বতকে আদেশ করল, নিজে থেকে উঠে এসে ক্ষিরোদসাগরের মাঝে বসে যেতে আর বাসুকিকে বলল, নিজেই মন্থন দড়ি হিসেবে কাজ করতে। কৃষ্ণের আদেশ তার শিরোধার্য করে নিলো। এরপর সেখান থেকে অমৃত উঠে এলো। রুক্মিণী তা তুলে নিলো।
তারপর কৃষ্ণ রুক্মিণীকে নিয়ে গেল স্বর্গের সভাস্থলে। এই অসম্ভব শর্তও পালন করে ফেলেছে দেখে, দুর্গা রুক্মিণীর ওপর যারপরনাই সন্তুষ্ট হল। আর কৃষ্ণের কৃপালাভ করায় রুক্মিণীর বিরুদ্ধাচরণ করার সাহসও তার আর হল না। অতঃপর দুর্গা স্বয়ং সেখানে প্রস্তাব করল, রুক্মিণীর নিয়ে আসা অমৃত যেন যে নিজেই পান করে দেবতাদের অংশ হয়ে যায়। দেবতাকুলের কেউও এতে দ্বিমত পোষণ করল না। মানবকুলে জন্ম নিয়েও রুক্মিণী যা করে দেখিয়েছে, তাতে তার মাঝের দেবত্বই প্রকাশ পায়। তাই রুক্মিণী সেই অমৃত পান করে নিজেও অমরত্ব লাভ করে দেবী হয়ে উঠল।
রূপনগরের মন্দিরের মানবিক দেবীর স্থানে সত্যিকারের দৈব মানবী অধিষ্ঠাত্রী হল।
ইলোসিয়া মৌনিন বলছেনঃ doctorate of pharmacy online
এই গল্পটার সাথে গ্রীক একটা গল্পের খুব মিল। সেখানে কৃষ্ণের বদলে কিউপিড থাকে নায়িকার নাম মনে নাই। আর রুকমিনী আর কৃষ্ণের গাথা তো এমন না এর আলাদা স্টোরি আছে!
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
প্রথম লাইন দ্রষ্টব্য।
এটা আপুলিয়াসের কাহিনীর অনুকরণে লেখা ভারতীয় পুরাণের চরিত্রদের নিয়ে।
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
can levitra and viagra be taken togetherওখানে নায়িকার নাম ছিল সাইকি।
উদ্ভ্রান্ত পথিক বলছেনঃ
venta de cialis en lima peruগ্রীক পুরাণের তত্ত্ব আর ভারতীয় পুরাণের উপকরণ, চরিত্র…..! বেশ ভাল লাগল। আদর্শিক একটা টান আছে…….
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ side effects of quitting prednisone cold turkey
ধন্যবাদ। বেশ চিন্তায় ছিলাম গ্রীক একটা কাহিনীকে ভারতীয় প্রেক্ষাপটে ফুঁটিয়ে তুলতে পারব কি’না। ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল।
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
ভালো লাগলো গল্পটা
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ zithromax azithromycin 250 mg
ধন্যবাদ আপনাকে।
তারিক লিংকন বলছেনঃ
ovulate twice on clomidএকবার দুবার তিনবার শুরু করে অবশেষে শেষ করতে পেরেছি! তবে এখনও ভাল করে বুঝি নি। আরও একবার পড়তে হবে দেখছি!! মনেহয় দুর্বোধ্য একটা কাজ করেছেন…
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
তিনবার পড়েও বুঝেন নাই!!! ক্যামনে কী? আর হ্যাঁ, এই পোস্টের কিন্তু কোন গুপ্ত অর্থ নাই কিন্তু! আবার তেমন কিছু বের করে ফেইলেন না।