ভালো থাকবেন, অনেক বেশি ভালো থাকবেন; পর্ব – ২ (শেষ পর্ব)
242
বার পঠিতএভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি। কিন্তু স্বাভাবিকতাকে বারবার বিরক্ত করে চলে কন্ঠটি- “ভালো থাকবেন, অনেক বেশি ভালো থাকবেন।” নাহ, আর পারা যাচ্ছে না এই কন্ঠটির সাথে। রুমের কোনায় পড়ে থাকতেও আজকাল বড় কষ্ট হচ্ছে তৃপ্ত’র। কোনভাবেই সে কন্ঠটিকে দূরে সরাতে পারছে না, আবার নিজেকেও ভালো রাখতে পারছেনা। যতটুকু সময় জেগে থাকে, ততটুকু সময়ই অশান্তি। ঘুমের মাঝেও যেন আজকাল অশান্তিটা হাতছানি দিয়ে যাচ্ছে। সে কোনভাবেই শান্তিতে থাকতে পারছেনা।
না পারছে কন্ঠটিকে ভুলতে, না পারছে হুট করে নিজেকে বদলে ফেলতে। কিন্তু বদলাতে প্রচুর ইচ্ছে হয় তার। যতটা সম্ভব বদলে ফেলতে ইচ্ছে করে নিজেকে। তাই ইদানীং, বিকেলের দিকটা বাসার কাছে কোথাও হাঁটতে যাচ্ছে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারার চেষ্টা করছে। আরো একটা ভীষন পরিবর্তন এসেছে তার মাঝে।
দিনদিন সে সিগারেট ধরে ফেলছে, আর ছেড়ে দিচ্ছে স্রষ্টাকে। অবশ্য স্রষ্টার অস্ত্বিত্ব নিয়ে তার মন আগা-গোঁড়াই যথেষ্ট সন্দেহ প্রবন। দিন দিন সেই সন্দেহটা অবিশ্বাসে রূপ নিচ্ছে। নেবেই বা না কেন? একটা প্রশ্নের উত্তর তো আজও পায়নি সে স্রষ্টার কাছ থেকে। একটা নতুন কুঁড়িতে বিষ না ঢাললে কি হচ্ছিল না স্রষ্টার? এই প্রশ্নের উত্তর সে আজও খুঁজে ফেরে। নিজেকে ব্যস্ত করে রাখার যথেষ্ট সুযোগ থাকতেও সুযোগগুলো তার কাছে স্বান্তনা বানীর মতন মনে হয়। শনিবার রাত বারোটা বাজলেই রাতুলের জন্মদিন। রাতুল ওর রুমমেট।
প্রতিটা রুমমেটের জন্মদিন খুব ঘটা করে পালন করে সবাই মিলে। বন্ধুর জন্মদিন ঘটা করে পালন না করতে পারলে কিসের বন্ধু? জন্মদিন উপলক্ষে কিছু একটা তো দেওয়া উচিত, আমি যতই অসুস্থ হই না কেন? গিফট তো দিতেই হবে। এমন কিছু চিন্তা মাথায় আসতেই শপিং মলের দিকে ছুঁটতে থাকে তৃপ্ত’র রিক্সা। জন্মদিনটা বেশ ভালোভাবেই পালন করে ওরা কয়েকজন। পরদিন আবারো হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে তৃপ্ত। এমন অসুস্থ সে খুব কম সংখ্যকই হয়েছে জীবনে। এতদিন ওষুধ খেয়েছে, কিছুটা দেরীতে হলেও ওষুধে কাজ করেছে। wirkung viagra oder cialis
কিন্তু এবার আর কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। লক্ষনটাও ভালো না। শরীর খুব বেশি দূর্বল হয়ে পড়েছে। মুখটা আর চোখটা কেমন যেন ফ্যাকাসে রং ধারন করে আছে। হাতটা কেমন প্রায় অনুভূতিহীন হয়ে আছে। গলায় জড়তাটা স্থায়ীরূপ নিতে চাইছে। সাহস পায়না সিগারেট ধরাতে। কিন্তু এভাবে কি বেঁচে থাকা সম্ভব? না- একশব্দেই উত্তর আসে পাশ থেকে। ঘুরে তাকাতেই রাতুলের দেখা পায় সে।
- “অনেক হয়েছে, চল এবার ডাক্তার দেখাতে হবে তোর। আমি নিয়ে যাব তোকে। কোন কথা বলবি না। তুই যদি আমার কথা না শুনিস, তাহলে আজ থেকে জানব তৃপ্ত নামে আমার কোন বন্ধু ছিল না।”
- আমি তো এমনিতেও থাকব না একসময়। অত অস্থির হস কেন? এর আগেও তো এমন হয়েছে। ঠিক হয়ে যাবে, চিন্তা করিস না।
- তুই যাবি আমার সাথে?
তৃপ্ত আর দ্বিতীয় বার
না বলতে সাহস করে না।
জড়তা কাটিয়ে না শব্দটা বলতেও
অনেক বেগ পেতে হয় তাকে। তাই
আর সাহস আসে না তৃপ্ত’র কন্ঠে।
ডাক্তার বলেছে, রক্ত নিতে হবে।
যত দ্রুত সম্ভব। রাতুল ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
২ ঘন্টার মধ্যেই রক্ত যোগাড়
হয়ে যায়। এবার
ভর্তি হতে হবে হাসপাতালে।
কিন্তু তৃপ্ত’র কাছে যথেষ্ট টাকাও
নেই।
রাতুল শুধু এটুকুই বলে- “দরকার
পড়লে সেমিস্টার
ফি না দিয়ে তোর
চিকিৎসা করাব। তাও তুই কোন
কথা বলবি না। বন্ধু কি এমনিতেই
হয়? বন্ধুর জন্য বন্ধুকেই
এগিয়ে আসতে হয়।”
কথাটা শুনে তৃপ্ত’র চোখ থেকে দু-
ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে। কিন্তু
হঠাৎ করেই মনে একটা প্রশ্ন জাগে।
আচ্ছা, রাতুল
তো আমাকে কোনদিন
ভালো থাকতে বলেনি। অথচ,
আমার ভালো থাকার জন্য নিজের
সব কিছু ত্যাগ করে দিতে প্রস্তুত
সে। তবে, সেটা কি শুধু বন্ধুত্বের
খাতিরে? নাকি মানবতার
খাতিরে? নাকি সত্যিই ও
আমাকে ভালোবাসে? অস্পষ্ট আর
দ্বিধাদ্বন্দে ভর্তি উত্তরটা তার
নিজের মাঝেই
দ্বৈততা সৃষ্টি করে। কিন্তু সেই
উত্তর খুঁজতে সাহস হয় না তার।
যদি আবারো শরীরটা ঝিমিয়ে পড়ে,
সেই ভয়ে।
কিন্তু শুধু এতটুকু নির্ভর উত্তর
খুঁজে পায় সে-
কাউকে ভালো থাকতে বললেই
ভালো থাকা যায়
না এবং যে কেউ বললেই সেটা মন
থেকে ভালো থাকতে বলা হয়
না। কখনো কখনো সেটা শুধু
ভদ্রতাকে খাতির করা হয় মাত্র।
এদিকে দাঁড়ি-গোঁফে মুখটা যেন
রবীন্দ্র ছুঁই ছুঁই করছে। কিন্তু শেভ
করবার মতন পয়সা আর সময়
হাতে নেই এখন। যাই হোক আধ-
ঘন্টা যেতেই ভর্তি হয়ে যায়
হাসপাতালে।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুধু
দুটো কথার মাঝে গভীরতা বের
করতে চেষ্টা করে সে। একটা সেই
অপরিচিত নারীর কন্ঠ, যার কাছ
থেকে সে জীবনে প্রথমবারের
মতন শুনেছিল- “ভালো থাকবেন,
অনেক বেশি ভালো থাকবেন।”
আর অন্য কন্ঠটি রাতুলের – “বন্ধু
কি এমনিতেই হয়? বন্ধুর জন্য বন্ধুকেই
এগিয়ে আসতে হয়।”
এই কন্ঠ
দুইটি কখনো একসাথে শুনতে পায়
নি সে। তাই কিছুটা অপুর্ণতা।
কিন্তু, চোখ বন্ধ করে কন্ঠ
মিলিয়ে মানুষ চিনে নিতে তার
এতটুকু কষ্ট হবে না- এ
ব্যাপারে নিশ্চিত।
রক্তের প্রবাহ বইছে ব্লাডব্যাগ
থেকে শরীরে।
রাতুল হঠাৎ করেই বলে বসে-
দোস্ত, পাঁচটা মিনিটের জন্য
বাইরে যাচ্ছি। নিচে আমার একজন
গেস্ট এসেছে।
তোকে দেখতে চায়।
কথাটা বলেই রাতুল চলে যায়
নিচে। আর এদিকে ঘুমে চোখ
ভারী আসতে থাকে রাতুলের।
মিনিট দুই বাদেই ঘুম আচ্ছন্ন
করে ফেলে তাকে।
৪০ মিনিট পর।
হঠাৎ দুটো কন্ঠের আওয়াজে ঘুমের
রেশ কেটে যায়। কিন্তু চোখ
মেলে না তৃপ্ত।
একটি তো রাতুলের কন্ঠ। আর
অন্যটি একটি মেয়ের। কিন্তু এই কন্ঠ
এর আগে তো সে শোনেনি।
আরো মিনিট দশেক বাদে চোখ
মেলে সে।
চারটি চোখ তার
দিকে তাকিয়ে আছে অজানা কোন
প্রশ্ন নিয়ে?
- কিরে এখন কি অবস্থা? রাতুল
জিজ্ঞেস করে
- এইত।
কথাটা বলেই রাতুলের
পাশে দাঁড়ানো মেয়েটির
দিকে দৃষ্টি যায় তৃপ্ত’র।
- ভাইয়া ভালো আছেন?
মেয়েটি আগ বাড়িয়ে প্রশ্ন করে।
- হ্যা, আপনি?
মেয়েটি কিছু বলবার আগেই
রাতুল- “ও তোর সাথে পরিচয়
করিয়ে দিই। ও আমার ফ্রেন্ড
চৈতী। আমার সাথেই পড়ে। আর
চৈতী, ও হচ্ছে আমার বন্ধু তৃপ্ত।”
নামটা শুনে কিছুটা অপ্রস্তুত
হয়ে গেল মেয়েটি। অন্তত ওর
চোখের চাহনীটা তারই ইঙ্গিত
দিতে শুরু করল। আর বেশি কথা হল
না ওদের মাঝে।
আরো প্রায় ঘন্টা খানেক পরে রক্ত
নেওয়া শেষ। এবার যেতে হবে।
তৃপ্ত রাতুলকে উদ্দেশ্য করে বলে-
“শোন, আমি একাই যেতে পারব। তুই
বরং আপুমনিকে পৌঁছে দে।”
‘আপুমনি’ শব্দটা শুনে মূহুর্তের জন্য
থমকে দাঁড়ায় মেয়েটি।
কিছুটা গোয়েন্দাদের মতন
করে তাকায় তৃপ্ত’র মুখপানে।
কি যেন
একটা খুঁজে বেরাচ্ছে সে। কিন্তু
মূহুর্তটি পার হতেই তার
চোখে মুখে পালিয়ে বেড়ানোর
ভাবমূর্তি ফুঁটে উঠে।
মূহুর্তের মাঝেই চাহনীর এই
পরিবর্তন তৃপ্ত’র
মাঝে কিছুটা সন্দেহ
জাগিয়ে তোলে। কিন্তু বন্ধুর
বান্ধবী দেখে সন্দেহটাকে থামিয়ে দেয়
সে।
রাতুল রিক্সা ডাকে।
চৈতীকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে হবে।
বিদায় নেবার
মূহুর্তে তৃপ্ত’কে উদ্দেশ্য
করে চৈতী- “আসি ভাইয়া,
নিজের দিকে খেয়াল রাখবেন।
ঠিক মতন ওষুধ খাবেন। আর ডাক্তার
যেভাবে বলেছে, সেভাবেই
চলবেন।”
- আচ্ছা, ঠিক আছে। আবার
দেখা হবে।
- আচ্ছা, ভাইয়া আসি তাহলে?
ভালো থাকবেন, অনেক
বেশি ভালো থাকবেন।
কথাটা কানে আসতেই কিছুক্ষনের
জন্য থমকে যায় তৃপ্ত। শুধু ঠাঁয়
দাঁড়িয়ে থাকে তৃপ্ত।
দাঁড়িয়ে থাকে তার
হাতটি ধরে থাকে হাজারটা প্রশ্ন।
কিন্তু উত্তর গুলো আজ
এলোমেলো করে দিয়ে যায়
মূহুর্তটি। আর কন্ঠটা শুধু নিরুত্তাপ
হয়ে বয়ে চলে পরের কয়েকটা দিন।
মাশিয়াত খান বলছেনঃ
এবার পরের পর্বের জন্য আগ্রহ আরো বেশি বেড়ে গেল ।
ভাল লাগছে
বাউন্ডুলে বাতাস বলছেনঃ buy kamagra oral jelly paypal uk
কিন্তু ইহাই যে শেষ ছিল
মাশিয়াত খান বলছেনঃ
দু;খ পাইলাম
ফাতেমা জোহরা বলছেনঃ
ভালো লিখছেন ভাইয়া। তবে সেই আপুমনিরে এইভাবে চলে যেতে দেয়াটা ঠিক হয়নাই
বাউন্ডুলে বাতাস বলছেনঃ accutane prices
all possible side effects of prednisoneইহাঈ সাহিত্যের খেলা আপু :v
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
বুঝিলাম না হে মহাশয়!!! গল্প শেষ!! levitra 20mg nebenwirkungen