“ধর্ম !!! শুধুই কি স্বার্থ রক্ষার ঢাল !!??”
বার পঠিতযেকোনো ক্ষেত্রে ধর্মকে ব্যবহার করা এক কথায় বলতে গেলে “ধর্ম ব্যবসা” এখন আর আমাদের দেশে কিংবা সমাজে নতুন কিছু নয়। রাজনীতি, সমাজনীতি, নিজ নিজ জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা থেকে খেলার মাঠে পর্যন্ত ধর্মকে ব্যবহার করা হয় নিলজ্জভাবে।একদিন কিংবা দুদিনেই আমাদের সমাজে ধর্মকে এভাবে ব্যবহার করার প্রবণতা শুরু হয়নি। অনেকটা বিষাক্ত ভাইরাসের মত করেই আমাদের সমাকে অত্যন্ত কৌশলের সাথে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে এই ধর্মের অপব্যবহারকে। আমাদের দেশের জন্মের ইতিহাস থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত একটু একটু করে ধর্মের অপব্যহারকে মানুষের রক্তে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। যার কারণে খেলার মাঠের ইস্যু হোক কিংবা হোক কোন জাতীয় ইস্যু সব ক্ষেত্রেই ধর্মকে ব্যাবহার করা হয় প্রধান ঢাল হিসেবে।এমনকি ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধেও ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যন্ত সুকৌশলে। কিন্তু ধর্মের এই ব্যবহার কি শুধুমাত্র এর অপব্যবহার নয় !!!
আমাদের দেশের জন্মসূত্র থেকে আজ পর্যন্ত কিভাবে “ধর্ম ব্যবসাকে” মানুষের রক্তে মিশিয়ে দেবার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে তার কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেখে নেই-
যদিও ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের উপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের নৃশংস আক্রমন চালানোর প্রধান কারণ “ধর্ম” ছিল নাহ্। কিন্তু অত্যন্ত সুকৌশলে পাকি শাসকেরা বার বার আক্রমনের অন্যতম এক্তি প্রধান কারণ হিসেবে ধর্মকেই টেনে এনেছে। যেমন যুদ্ধের শুরুতেই পাকি শাসক ইয়াহিয়া খান সেনা কর্মকর্তাদেরকে বাঙালি নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন-
“আগে এদেরকে মুসলমান বানাও !!”
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ কোন হিন্দু-মুসলমান কিংবা অন্য ধর্মালম্বীদের সাথে কোন যুদ্ধ ছিল না। কিন্তু তাঁর এই উক্তিটির মাধ্যমে কিন্তু স্পষ্টতই ধর্মের একটি অপপ্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়; যদিও এই উক্তিটির আরও অনেক তাৎপর্য রয়েছে, যেটি আমার পূর্বের একটি লেখায় আলোচনা করা হয়েছে।
আর পাকিস্তানের আরেক স্বৈরশাসক আইয়ুব খান অত্যন্ত সচেতনতার সাথেই ধর্মকে ব্যবহার করেছিলেন ১৯৭১ সালে। পরবর্তিতে সামরিক শাসকেরা সেই ধারা অপরিবর্তিত রাখে। আব্বাস রাশীদ নামের একজন শিক্ষাবিদ তাঁর একটি বইতে লিখেছেন-
“উলামাগোষ্ঠীর নিকট আইয়ুব খানের নির্ভরশীলতার মধ্য দিয়ে সামরিক বাহিনী এবং সচেতনপন্থি সংগঠনের মাঝে অসম হলেও পারস্পারিক সম্পর্ক ফরে উঠে। ৭১ সালে ঐ সম্পর্কগুলো বিশেষ শক্তিশালি হয়ে উঠে। তবে সচেতনপন্থিদের প্রতিনিধি হিসেবে অগঠিত অসংবদ্ধ উলামাগোষ্ঠী নয়, তাদের স্থান ইতিমধ্যে দখল করে নেয় জামায়াত ইসলামী। পরে এরাই শান্তি বাহিনীতে যোগ দেয়।“
আর এভাবেই ইসলামপন্থি দলগুলো ধর্মকে ব্যবহার করে পাকি সামরিক বাহিনীর সাথে আঁতাত করে পরস্পরের স্বার্থ উদ্ধার করে। অনেক পাকি শিক্ষক এবন জেনারেল যুদ্ধ পরবর্তি সময়ে ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধকে ধর্মকেন্দ্রিক হিসেবে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন। এক্ষেত্রে ধর্ম ব্যবহারের আরও কয়েকটি উৎকৃষ্ট নিদর্শন পাওয়া যাবে আরো কয়েকজন পাকিস্তানি শিক্ষক ও জেনারেলদের কয়েকটি উক্তি দেখলেঃ- metformin er max daily dose
(০১) “মুসলমানদের বাঙালি পছন্দ করতো না, পছন্দ করতো হিন্দুদের”- ফজল মুকিম খান।
(০২) “শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণে। তারাই পাকিস্তান বিরোধী প্রচার করে তাই পাকিস্তানের পক্ষে সংহতির দানা বাঁধে নি”- সাদুল্লা।
(০৩)পূর্ববঙ্গের হিন্দুরা সব জমিদার(৭১ সালে)।তারা মুসলমানদের শোষণ করেছে”- সাদুল্লা।
(০৪) “বাঙালিরা ধুতি পরে অর্থাৎ হিন্দুদের অনুসরণ করে”-ফরমান আলী।
(০৫)”ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় “মুক্ত” করার সময় সবচেয়ে বেশি বাধা এসেছে জগন্নাথ “হিন্দু” হল থেকে”- সাদুল্লা। is viagra safe for diabetics
(০৬) “বাঙালিরা ছিল প্রচণ্ডভাবে হিন্দু প্রভাবিত”-মতিনুদ্দিন।
(০৭)“তাজউদ্দিন ছিল ব্রাহ্মণপুত্র, diehard indian”- ফরমান আলী।
উপরের উক্তিগুলো একটু খেয়াল করলেই আমরা বুঝতে পারি পাকিস্তানিরা অত্যন্ত সুনিপুণ ভাবে ধর্মকে একটি অন্যতম যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছিল। আবার কাইয়ুম নামের একজন পাকিস্তানি জেনারেল বলেছিনলেন-
“ঈমান, তাকওয়া, জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ্।জেনারেল জিয়াউল হোক নামের আরেকজন জেনারেল এই শব্দ তিনটিকে সেনাবাহিনীর মুল মন্ত্র হিসেবে দাবী করেন।”
এ প্রসঙ্গে আব্বাস রশীদ বলেছেন-
“জিয়াউল হোক সচেতন ভাবেই একটি মতাদর্শ গড়ে তোলেন এবং জামায়াত ইসলামী তাকে সাহায্য করেন। ‘ইসলামকে’ ঐ মতাদর্শে ব্যবহার করার উদ্দেশ্য ছিল জনগণকে সংগঠিত করা নয় বরং আদর্শহীন করে তোলা। ঐ মতাদর্শে রূপরেখা গ্রহন করা হয় জামায়াত ইসলামীর কাছ থেকে।”
আর এভাবেই ৭১ এ একটু একটু করে ব্যবহার করে সামরিক শাসকেরা থেকে শুরু করে জামায়াত ইসলামী পর্যন্ত নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধার করেছে অতি সুকৌশলের সাথে।
এবার আসি দেশ স্বাধীন হবার পরবর্তী পর্যায়ে যেভাবে আবারো ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে সেই প্রসঙ্গে। যদিও যুদ্ধের পর থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত এদেশ ধর্ম নিরপেক্ষতা আর অসাম্প্রদায়িকতার পথেই চলছিল কিন্তু ৭৫’ এ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর জিয়াউর রহমান আইয়ুব খানের মতোই ক্ষমতা দখল করে। এবং তাঁর আমল থেকেই মূলত আবারো এদেশে “ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের” উত্থান হয়। তিনিই প্রথমে “ধর্ম নিরপেক্ষতাকে” বাদ দিয়ে “বাঙালি জাতীয়তাবাদকে” পূর্ণসংজ্ঞায়িত করে। ক্ষমতা দখলের ২ বছর পর সংবিধান সংশোধন করে তিনি “বাঙালি জাতীয়তাবাদ” শব্দটি বাদ দিয়ে “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” শব্দটি ব্যবহার করে। আর এই শব্দটিই এদেশের মানুষকে দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছিলো আর সেই বিভক্তিটি এখনো চলে আসছে। এখানেও লক্ষণীয় যে, মূলত জিয়া এই বিভক্তিটি চেয়েছিলেন তাঁর নিজ ক্ষমতার স্বার্থে।
মুক্তিযুদ্ধের এবন যুদ্ধ পরবর্তী সংবিধানের মূল নীতির একটি ছিল “ধর্ম নিরপেক্ষতা”। আর জিয়াউর রহমানের প্রচারিত “বাংলাদেশী জাতিয়তাবাদ” ই এদেশের মানুষকে দু’ভাগে ভাগ করে দিয়েছিলো। আর এই জাতীয়তাবাদের অনুষঙ্গে এমন কিছু শব্দ প্রচলিত হল যা ছিল আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্লোগানের সম্পূর্ণ বিপরীত। আর এর উৎকৃষ্ট একটি উদাহরণ হল আমাদের প্রাণের স্লোগান “জয় বাংলা”কে পরিবর্তন করে “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ” স্লোগান প্রচার করা।
পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের প্রবর্তিত “ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের” পথ ধরেই হেটেছিলেন স্বৈরশাসক এরশাদও। তিনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করলেন, আধিপত্য বিস্তারে সুকৌশলে ব্যবহার করলেন ধর্মকে। আবারো আমরা পেলাম ধর্মকে কিভাবে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করা যায় তাঁর একটি চমৎকার উদাহরণ।
জিয়াউর রহমান যেমনি এ দেশে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে গিয়েছিলেন তেমনি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে জিয়াপত্নী সেই ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ধারা আরও পাকাপোক্ত করে জামায়াতের সাথে সরকার গঠন এমন জামায়াতী নেতা আর রাজাকারদের মন্ত্রীর আসনে বসিয়ে। তাঁদের গাড়িয়ে আমাদের দেশের পতাকা তুলে দিয়ে। আর সেই সময় থেকেই মূলত ধর্মীয় জঙ্গিবাদ বিকাশিত হতে থাকে। যার ধারা বর্তমানে প্রকাশ্যে অব্যাহত না থাকলেও অপ্রকাশ্যে ভীষণভাবে অব্যাহত রয়েছে।
সবশেষে ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে ঘটে যাওয়া রমরমা “ধর্ম ব্যবসায়ের” কিছু উদাহরণ তো দেয়া যেতেই পারে। মূলত ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেই এখন পর্যন্ত এই বিচার প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার একটি নোংরা প্রচেষ্টা চলেই যাচ্ছে। আর “আস্তিক নাস্তিক ইস্যু” নিশ্চয়ই আমরা কেউ ভুলে যায়নি, আমরা ভুলে যাইনি সেই ৫ই মে কেও। ধর্মকে সামনে এনে সেদিন ধর্মেরই যে চূড়ান্ত অপমান হয়েছিল সেটাও আমরা কেউ ভুলে যায় নি।
আমাদের দেশের জন্মলগ্ন থেকে ধর্মকে ব্যবহার করা হয়েছে শুধু মাত্র নিজ নিজ স্বার্থ হাসিলের তাগিদে। কখনো সেটা রাজনীতির মাঠে টিকে থাকবার জন্য, কখনো ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, কখন আধিপত্য বিস্তারের জন্য কখনো আবার অন্যকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করবার জন্য।
এসব ঘটনা জেনে বা দেখে মাঝে মাঝে মনেহয় যে, “ধর্ম !!! শুধুই কি স্বার্থ রক্ষার একটি উৎকৃষ্ট ঢাল নাকি ধর্ম ব্যবসায়ীদের বাবসায়ের একটি পণ্য ??!!”
তথ্যসূত্রঃ-
(০১)পাকিস্তানি জেনারেলদের মন
-মুনতাসীর মামুন।
(০২) উইকিপিডিয়া।
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
ধর্ম নামক জিনিসটা সৃষ্টিই হয়েছে, আধিপত্যবাদকে কেন্দ্র করে। পার্থক্য, তখন আধিপত্যবাদী ছিল পুরোহিতরা আর এখন রাষ্ট্রযন্ত্র।
অংকুর বলছেনঃ
ধর্মে কোথাও আধিপত্য নেই। কখনোই ছিল না। এটা সম্পূর্ণ দৃস্টিভঙ্গির ব্যাপার propranolol hydrochloride tablets 10mg
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ
=)) =)) =))
অংকুর বলছেনঃ exact mechanism of action of metformin
prednisone side effects moon faceহাসার কি হইল? X( X( accutane price in lebanon
অংকুর বলছেনঃ
জিয়া যে কুলাঙ্গার এইটা অনেকবার বলেছি। এইবার নতুন কিছু বলি। এঈ এরশাদকে আমি বাঙালীই মানিনা। যেই মানুষ একাত্তরে এত বড় ক্ষমতায় থাকার পরও বাঙালীদের সাহায্য করেনি তাকে কেন দেশে আনা হয়েছে তা আমি বুঝিনা