পথ শিশুদের আম উৎসব’১৪
501
বার পঠিতময়নার বাবা জুতা সেলাই করে। কেউ তাকে “বাবা কী করে” জিজ্ঞেস করলে এভাবেই উত্তর দেয়- বাপে তো জুতা সিলায়! জুতা সেলাই করার কাজ যারা করে তাদেরকে বইয়ের ভাষায় মুচি বলে। এটা ময়নার বাবা হয়তো জানে কিন্তু ময়না জানে না। কারণ সে লেখাপড়ায় এখনও অতোদূর এগোয়নি। গত সপ্তাহ পর্যন্ত সে অ-আ-ই-ঈ স্বরবর্ণগুলো শিখেছে। এই সপ্তাহে ক-খ-গ-ঘ শেখাবে… ময়নাদের স্কুলটা সপ্তাহে একদিন বসে। বিকাল ৩টা থেকে ৫টা। ভার্সিটির কিছু স্বহৃদয়বান বড় আপু-ভাইয়ারা ওদের পড়ায়। কোন টাকা লাগে না! উপরন্তু মাঝে মাঝে উল্টা বই-খাতা কিনে দেয়। পড়তে ময়নার খুব ভাল লাগে। কত কিছু যে শেখা যায়!
কিন্তু ২ বছর বয়সী পিচ্চি ভাইটা খুব জ্বালায়! ওর আর কি দোষ? বোন ছাড়া যে ওকে রাখারও আর কেউ নেই! ময়নার যখন মা মারা যায় ছোট ভাইটার তখন মাত্র ৬মাস বয়স। বাবা আর বিয়ে না করায় ৫ বছরের ময়নাকেই ভাইয়ের দায়িত্ব নিতে হয় তখন থেকে। এই বয়সেই ময়না রান্না শিখে গেছে। বাবা বাড়িতে না থাকলে সে-ই রান্না করে। বাবা ছাড়া এতিম শিশুগুলোর চেয়ে মা ছাড়া এতিম শিশুগুলো বোধহয় একটু বেশিই অসহায়! ময়নার সারা দিন কাটে ভাইকে নিয়ে। অভাবের সংসারে বাবার রোজগারে পেটপুরে খেতেও পারে না দুই বেলা। বাবার সামান্য ক’টা টাকা রোজগার, ওদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে প্রতিদিন! বাবা বাজার না করে দিলে মাঝে মাঝেই দুপুরে না খেয়েই থাকে দুই ভাই-বোন। ময়না তাই ভাইকে নিয়ে চলে যায় চন্দ্রিমা উদ্যানে।
সেখানে এর ওর কাছে চেয়ে চিন্তে মাঝে মাঝে কয়েকটা টাকা পায়। ভাইকে নিয়ে এটা ওটা কিনে খায়। কিন্তু বাবা বলেছে ভিক্ষা করা খুব খারাপ! তাই সে ইদানিং আর ভিক্ষা করে না। চন্দ্রিমা উদ্যানে কিছু বকুল ফুল গাছ আছে। গাছের গোঁড়ায় প্রচুর ফুল পড়ে থাকে। ময়না মাঝে মাঝে ফুল কুঁড়িয়ে মালা গেঁথে বিক্রি করে। একটা মালা মাত্র দশ টাকা! তাও কেউ কিনতে চায় না। পার্কে মানুষ জোড়ায় জোড়ায় ঘুরতে আসে, তারা সামান্য বকুল ফুলের মালা কিনতে আগ্রহী না। দুই-এক জন নিলেও ২টাকা ৫টাকার বেশি দিতে চায় না। কেউ কেউ অবশ্য দশ টাকাই দেয়! এভাবে সারা দিনে ময়নার রোজগার হয় সর্বসাকুল্যে ২৫/৩০ টাকা। পার্কে সবাই এটা ওটা কিনে খায়। ছোট ভাইটা বায়না ধরে সেগুলো খাবার। সব কিছু কিনে দেবার সামর্থ ময়নার নেই। মাঝে মাঝে সে ঝালমুড়ি আচার কিনে। দুই ভাই বোনে বসে বসে খায়। পেটের ক্ষুধা না মিটলেও ভাইয়ের কান্না থামে সাময়িক ভাবে। পিচ্চিটা ইদানিং প্রচুর কথা বলা শিখেছে। যা দেখে তারই নাম জানতে চায়। সেদিন একটা ভ্যানের ওপর হলুদ হলুদ কিছু ফল দেখে আধো আধো বুলিতে বলল- ঐতা কী? ময়না বললঃ ঐগুলা আম! পিচ্চিটা বলেঃ আম?! আম খামু! ময়না মাথা চুলকায়। পার্কে কাচা আমের ভর্তা পাওয়া যায়। ৫/১০ দিলেই কিনে খাওয়া যায়। কিন্তু পাকা আম তো ৫/১০ টাকায় পাওয়া যাবে না! ময়না তবু সাহস করে একদিন আমের দাম জিজ্ঞেস করে। আমওয়ালা ধমকের সুরে বলে- ১২০ ট্যাকা! ১২০ টাকা ঠিক কত টাকা ময়না জানে না। তাদের স্কুলে ত্রিশ পর্যন্ত গননা শিখিয়েছে। আগামী সপ্তাহে পঞ্চাশ পর্যন্ত শেখাবে… ময়না তাই আমওয়ালার ধমকে চুপসে যায়। ভাবে ১২০টাকা বোধহয় অনেক টাকা। মালা বিক্রি করে এতো টাকা জোগার করা তার পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু পিচ্চিটা গণনা জানে না। সে প্রতিদিন ঘ্যানর ঘ্যানর করতেই থাকে- আম খামু! আমি খামু!
বিরক্ত হয়ে ময়না ধরে মার লাগায় পিচ্চিটাকে। চিৎকার করে কান্না জুড়ে দেয় পিচ্চিটা। ময়নাকেই কিছুক্ষণ পর থামাতে হয় সেই কান্না। ৫ টাকার বরই আচার দিয়ে শান্ত করতে হয় সেদিনের মত। কিন্তু ময়নাদের বস্তি থেকে চন্দ্রিমা উদ্যান আসতে রোজ আমের দোকানগুলো সামনে পড়ে। আর রোজই পিচ্চিটা ঘ্যানর ঘ্যানর করে- আম খামু! আম খামু!! ছোট ভাইয়ের আবদারের কথা বাবার কাছেও বলেছিল ময়না। বাবা সেটা কানে তুলেনি। অভাবের সংসারে অনেক কিছুই কানে তুলতে নেই। রোজকার ভাত-ভর্তা জুটাতেই যার কষ্ট হয় তার জন্য পাকা আম একটা বিলাসিতার নাম! এমনিতেই রাতে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরার পর মেজাজ ভীষণ খারাপ থাকে ময়নার বাবার। ময়না তাই ২য় বার সে কথা বলার সাহস পায়নি। শুধু ঐদিন রাতে বাবার প্লেটে ভাত বাড়তে বাড়তে মিন মিন করে একবার বলেছিল- আব্বা, আম আনো নাই? ময়নার বাবা নাক মুখ খিঁচে কী একটা বলতে গিয়ে শেষ মুহূর্তে নিজেকে সামলে বলেছে- আমের এইবার অনেক দামরে মা। তাছাড়া আমের মইদ্যে নাকি আইজ-কাইল কী সব বিষ দেয়। বিষ দিয়া আম পাকায়! খাইয়া কত মানুষ মরতাছে জানোস! ময়না ভয়ে ভয়ে বলে- মাইনসে যে কিনে! ময়নার বাবা অজুহাতের সুরে বলে- হ্যারা বড়লোক মানুষ! বিষও হজম করবার পারে। অসুখ হইলেও চিকিৎসা করায়… আইচ্ছা আনমুনে সামনের সপ্তায়… ময়না আর কথা বাড়ায় না। এই “সামনের সপ্তা” কথাটার অর্থ ময়না জানে। দারিদ্র তাকে অল্প বয়সে অনেক কিছু বুঝতে শিখিয়েছে। দারিদ্র “নজরুল”কে বানিয়েছিল মহান… আর ময়নাকে বানিয়েছে “বুঝমান”!!! আজকে স্কুলে একটা খুব খুশির খবর শুনতে পায় ময়না। আসছে ২১শে জুন নাকি তাদের স্কুলে আম বিতরণ করা হবে! তাও আবার বিষ দিয়ে পাকানো আম না, রিতিমত গাছ পাকা টাটকা আম! তার পিচ্চি ভাইকেও নাকি দেয়া হবে… তাও আবার দুইটা করে! খবরটা শোনার পর থেকে ময়নার বিশ্বাসই হচ্ছে না।
ফেসবুকের কী একটা “Amra Khati Gorib…” গ্রুপ আছে… তারাই নাকি এই আম দেবে! ময়না এই ফেসবুক জিনিসটা কী ঠিক বুঝতে পারে না। “খাঁটি গরীব” গ্রুপটাই বা কী জিনিস কে জানে! গরীব হইলে তো আম নিজেই খাইতে পারে না আবার বিলায় কেমনে? এসব কিছুই তার মাথায় ঢুকে না। শুধু মাথায় গেঁথে থাকে আম বিতরণের ব্যাপারটা! ময়নার বাসায় কোন ক্যালেন্ডার নেই। তবু সে আজকাল দিন তারিখের হিসাব রাখে। পার্কে সে রোজই অনেককে জিজ্ঞেস করে- আইজ কত তারিখ? তার পর গুণে গুণে বের করে ২১ তারিখ আসতে আর কত দিন বাকি! পিচ্চিটা এখন আর আমের জন্য ঘ্যানর ঘ্যানর করে না। ময়না তাকে বলেছে, তারা আম খাবে ২১ তারিখ! ময়না তাকে কখনও মিথ্যা কথা বলে না…! ২১ তারিখ কবে আসবে পিচ্চিটা জানে না। কিন্তু ময়না এবং ময়নার পিচ্চি ভাই অধির আগ্রহে ২১ তারিখের অপেক্ষায় আছে। ২১ তারিখ তাদের খুশির দিন। ২১ তারিখ তাদের আম খাওয়ার দিন…!
*** *** *** ময়নাদের আম খাওয়ানোর জন্য আমিও কিছু টাকা দিয়েছি “গরীবদের” ফান্ডে। আপনিও কি কিছু টাকা দিতে পারবেন? মৌসুমী ফল আমরা তো হর-হামেশাই খাই! নিজের বাসায়, বন্ধুদের আড্ডায় কিংবা আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গেলে। নিজেদেরই গাছ আছে অনেকের! কিন্তু ওদের কোন গাছ নেই। ওদের সেরকম কোন আত্মীয়ও নেই। “আমরা খাঁটি গরীব”রাই ওদের আত্মীয়… আপনিও না হয় হলেন! গত ৪ বছরের মতন ফেসবুক গ্রুপ “Amra Khati Gorib…” এবারো “পথশিশুদের আম উৎসব” এর আয়োজন করতে যাচ্ছে … এবারে আম উৎসব আগামী ২১শে জুন দেশের ৬ টি বিভাগে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে। বিভাগগুলো হলো যথাক্রমে – ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, সিলেট এবং বরিশাল… খুব বেশি টাকার দরকার নেই। আমি নিজেই কি খুব বেশি দিতে পেরেছি? ৫০/১০০/২০০ কিংবা হাজার টাকা… পরিমানটা ব্যাপার না। আপনি যদি একটি আমের দামও দিতে পারেন তবে আরেকজন ময়নার মুখে হাসি ফুটবে!
১৮ জুনের মধ্যে আপনার আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিন নিচের ঠিকানায়:
A/C Name: Redwan Ahmed
A/C Number: 110.101.319931, Dutch-Bangla Bank Limited
এছাড়াও প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা নাম্বারে বিকাশ করেও আম উৎসবের জন্য আর্থিক সাহায্য পাঠানো যাবে। নাম্বারগুলো হলোঃ
ঢাকাঃ 01759 501 222 (Personal) 01674 488 096 (Personal) 01719 185 237 (Personal) চট্টগ্রামঃ 01814 783 692 (Personal) রংপুরঃ 01717 276 637 (Personal) সিলেটঃ 01723 434 784 (Personal) খুলনাঃ 01911 602 550 (Personal) বরিশালঃ 01772 558 939 (personal)
এছাড়াও আম উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং যেকোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন নিম্নোক্ত নাম্বারে :
রাকিব কিশোর — ০১১৯০ ১৩৭ ২৮৩ রেদওয়ান রিদন — ০১৭৫৯ ৫০১ ২২২ soulcysters net metformin
“পথশিশুদের আম উৎসব ২০১৪” এর ইভেন্ট লিঙ্ক : https://www.facebook.com/events/825754280786843/
গ্রুপের লিংকঃ https://www.facebook.com/groups/amrakhatigorib/ পেজের লিংকঃ https://www.facebook.com/amra.khati.gorib?fref=nf
অংকুর বলছেনঃ mycoplasma pneumoniae et zithromax
prednisolone for cats diarrheaভালো উদ্যোগ । তবে আশা করি যে টাকাটা উঠানো হবে তা গরিবদের আম কিনে দেওয়ার জন্যই ব্যবহৃত হবে । শুভ কামনা রইল ।
স্পীকার বলছেনঃ sildenafil basics 100 mg filmtabletten
সহমত :-bd :-bd :-bd
ক্লান্ত কালবৈশাখি বলছেনঃ get viagra now
গ্রুপটা অনেক দিন ধরে বেশ স্বচ্ছতার সাথেই কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বাস রাখতে পারেন, তাদের ওপর।
স্পীকার বলছেনঃ efek samping minum obat viagra
~x( %-( %-( %-(
স্পীকার বলছেনঃ
acheter viagra pharmacie en franceভালো একটি পদক্ষেপ :-bd :-bd :-bd :-bd
ডন মাইকেল কর্লিওনি বলছেনঃ
ভালো উদ্যোগ, স্বাগত জানাই… :-bd :-bd
স্পীকার বলছেনঃ
:-bd :-bd :-bd :-bd :-bd :-bd %%- %%- %%-
তারিক লিংকন বলছেনঃ
:-bd :-bd :-bd m/ m/ m/
স্পীকার বলছেনঃ
m/ m/ m/
দুরন্ত জয় বলছেনঃ
ভাল উদ্যোগ সাহায্যের জন্য চেষ্টা করব…
স্পীকার বলছেনঃ
m/ glaxosmithkline levitra coupons
ইলেকট্রন রিটার্নস বলছেনঃ prednisolone dosing chart
ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। অভিনন্দন আর শুভ কামনা রইলো। otc viagra uk
সফিক এহসান বলছেনঃ cialis online pharmacy forum
ধন্যবাদ সবাইকে।
দানের টাকা বিফলে যাবে না- এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
মানুষের প্রতি এইটুকু বিশ্বাস তো আমরা করতেই পারি, তাই না?
দক্ষি বলছেনঃ
এই উৎসব এর আগে আরো তিনবার হয়েছে, কোন অভিযোগ নেই এদের নিয়ে। বরং এরা নিজেদের পকেট থেকেই টাকা ঢালে এখানে।
সফিক এহসান বলছেনঃ
হুম… ঠিকই বলেছেন। ধন্যবাদ। :-bd
>:D< ampicillin susceptible enterococcus
স্পীকার বলছেনঃ
:-bd :S :-bd
অনুস্বার বলছেনঃ
শুনে খুবই ভালো লাগলো… :-bd :-bd অভিনন্দন জানাই মানুষের এ ভালোবাসাকে >:D:D< @};-